জীবনের প্রবাহমানতা অধ্যায়টি দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়টিতে জীবের বংশগতি ও পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষায় এই অধ্যায় থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই এই অধ্যায়টি ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।
জনন কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার জনন পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
জনন হল মানব প্রজনন এবং সম্পর্কিত জ্ঞানের মাধ্যমে পুরুষ এবং মহিলা দুটি লিঙ্গের সংখ্যাগুলির সম্পর্ক নির্ধারণ করার বিজ্ঞান।
জনন
যে জৈবনিক পদ্ধতিতে জীব নিজ আকৃতি ও প্রকৃতিবিশিষ্ট এক বা একাধিক অপত্য জীব সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের প্রজাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে বজায় রাখে, তাকে জনন বলে।
জননের পদ্ধতি
জীবজগতে প্রধানত দু প্রকার জনন দেখা যায়, যথা — 1. অযৌন জনন এবং 2. যৌন জনন
- অযৌন জনন – যে জনন প্রক্রিয়ায় জননকোশ বা গ্যামেট উৎপন্ন না হয়ে রেণুর সাহায্যে বা সরাসরি দেহকোণ বিভাজনের মাধ্যমে অপত্য জীবের সৃষ্টি হয়, তাকে অযৌন জনন বলে। এক্ষেত্রে একটিমাত্র জনিত্ব জীবের প্রয়োজন হয়। অনিচ্ছ জীবটির সমস্ত বৈশিষ্ট্য উৎপন্ন সকল অপতো সধারিত হয়। অপত্যগুলি জিনগতভাবে জনিতৃ জীবের সমপ্রকৃতির হয়।। স্পোর যেমন – অ্যামিবা, ব্যাকটেরিয়া, মিউকর প্রভৃতির জনন পদ্ধতি।
- যৌন জনন – যে জনন পদ্ধতিতে দুটি ভিন্নধর্মী গ্যামেট বা অননকোদ মিলিত হয়ে অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে যৌন জনন বলে। এই প্রকার জননে একই প্রজাতির দুটি জীবের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে দুটি ভিহনী গ্যামেট বা জননকোশের মিলন হয়, অর্থাৎ পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলন ঘটে। পুংজনন মাতৃকোশ বা স্ত্রীজনন মাতৃকোশে মিয়োসিস। পদ্ধতিতে হ্যাপ্লয়েড (n) পুং বা স্ত্রী জননকোশে তৈরি করে।
যেমন – ব্যাং, মানুষ, সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রভৃতির জনন পদ্ধতি।
জননের সাধারণ বৈশিষ্ট্য লেখো। জননের প্রয়োজনীয়তা বা জননের গুরুত্ব উল্লেখ করো।
জনন সংশ্লিষ্ট মহিলা এবং পুরুষের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য, উভয়কে সমন্বয় করে প্রজনন করতে সক্ষম হওয়া একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।
জননের সাধারণ বৈশিষ্ট্য
1. মাইটোসিস, মিয়োসিস অথবা উভয় পদ্ধতিতেই কোশ বিভাজনের মাধ্যমে জননের বিভিন্ন পর্যায় জননকোশ তথা গ্যামেট সৃষ্টি থেকে শুরু করে, ভ্রুণের উৎপত্তি তথা অপতা জীব সৃষ্টি প্রতিক্ষেত্রেই কোশ বিভাজন ঘটে। 2. জননের আণবিক ভিত্তি হল DNA-র প্রতিলিপিকরণ বা রেপ্লিকেশন। 3. জননকোশ বা গ্যামেট অথবা রেণু থেকে অপত্য জীব সৃষ্টি হয়।
জননের প্রয়োজনীয়তা বা জননের গুরুত্ব
জীবজগতে জননের গুরুত্ব অপরিসীম। যেসব কারণে জনন প্রয়োজনীয় সেগুলি হল নিম্নরূপ।
- প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি – জননের সাহায্যে জীব নতুন অপতা সৃষ্টি করে। ফলে, তার নিজ প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।এবং প্রজাতির অস্তিত্ব বজায় থাকে।
- বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা – জননের ফলে নতুন অপত্য জীব সৃষ্ট হওয়ায় জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
- জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা – জীবের মৃত্যুর ফলে জীবের সংখ্যার যে হ্রাস ঘটে, জননের ফলে নতুন জীব সৃষ্টি হয়ে পৃথিবীতে জীবের ভারসাম্য তথা বাস্তুতান্ত্রিক সাম্য বজায় থাকে।
- প্রকরণ – যৌন জননের দ্বারা জীবদেহে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি ঘটে। আবার, মিউটেশনের ফলে জীবদেহের মধ্যে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য বা ভেদ বা প্রকরণের উদ্ভব হয়। প্রকরণকে জীবের অভিযোজন ও অভিব্যক্তির অন্যতম উপাদান বলে গণ্য করা হয়।
অঙ্গজ বংশবিস্তার বা অম্লজ জনন কাকে বলে? উদ্ভিদের প্রাকৃতিক অঙ্গজ বংশবিস্তার বা প্রাকৃতিক অম্পন্ন জনন পদ্ধতি সম্পর্কে লেখো।
অঙ্গজ জনন হল যে প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সন্তান উত্পন্ন হয় এবং যেখানে সন্তান উত্পন্ন হওয়ার সময় মাতৃগর্ভের ভেতরের প্রাণীর অঙ্গ বিস্তার করে।
অঙ্গজ বংশবিস্তার বা অঙ্গজ জনন
যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে উদ্ভিদেহের যে-কোনো অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ জনিত উদ্ভিদদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোশ বিভাজন ও বৃদ্ধির দ্বারা নতুন অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে অাজ বংশবিস্তার বা অঙ্গজ জনন বলে।
প্রাকৃতিক অঙ্গজ বংশবিস্তার বা প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন পদ্ধতি
প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে অকাজ জনন বিভিন্ন প্রকারের হয়। এগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল।
- পাতার মাধ্যমে – কিছুকিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে, যেমন – পাথরকুচি, বিগোনিয়া প্রভৃতি উদ্ভিদের পাতার কিনারা থেকে অস্থানিক মুকুল জন্মায়। একে পত্রাশয়ী মুকুল বলে। এই পরাশ্রয়ী মুকুলের নীচের দিক থেকে আবার প্রচুর অস্থানিক মূল বের হয়। পরে মূলসহ প্রতিটি পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে অনুকূল পরিবেশে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়।
- মূলের মাধ্যমে – কিছুকিছু উদ্ভিদে, যেমন — পটল, মিষ্টি আলু বা রাঙা আলু প্রভৃতি উদ্ভিদের রসালো মূল থেকে অস্থানিক মুকুল জন্মায়। একে মূলজ মুকুল বলে। পরে এই মুকুলসহ মূল খণ্ড খণ্ড করে মাটিতে রোপণ করলে নতুন উদ্ভিদ জন্মায়।
- কাণ্ডের মাধ্যমে – পরিবর্তিত কান্ডের দ্বারা অাজ জনন দুভাবে সম্পন্ন হয়। এগুলি হল — 1. মূদগত কাণ্ডের সাহায্যে আদা, পেঁয়াজ, আলু প্রভৃতি উদ্ভিদের কাণ্ড মাটির নীচে খাদ্য সময় বা প্রতিকূল পরিবেশের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার থানা পরিবর্তিত হয়ে বিশেষ আকার ধারণ করে। একে মূদ্গত কান্ড বলে। এই মুদ্গত কাজের গা থেকে মুকুল উৎপন্ন হয় এবং geপন্ন মুকুল অাজ জননের মাধ্যমে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়। বিভিন্ন প্রকারের মুদ্গত কান্ড হল — আলুর ক্ষীরকন্দ, আদার এগ্রিকান্ড, পেঁয়াজের কন্দ এবং গুলের গুঁড়িকম্প। 2. অর্ধবায়বীয় কান্ডের সাহায্যে – থানকুনি, পুদিনা, শুশনি, চন্দ্রমল্লিকা, কচুরিপানা প্রভৃতি উদ্ভিদের অর্ধবায়বীয় কান্ড থেকে কতগুলি শাখা বের হয়, যা মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করে।
অঙ্গজ বংশবিস্তারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
অঙ্গজ বংশবিস্তারে সুবিধা
1. অঙ্গজ বংশবিস্তারে একই রকম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। 2. এইপ্রকার বংশবিস্তারে একটি উদ্ভিদ থেকেই অনেক উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়। 3. কম সময়ের মধ্যে অপত্য সৃষ্টি করা যায়। 4. বছরের যে-কোনো ঋতুতে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়। 5. অপত্যদেহে কাঙ্ক্ষিত বেশিষ্ট্য অপরিবর্তিত থাকে।
অঙ্গজ বংশবিস্তারের অসুবিধা
1. অঙ্গজ বংশবিস্তারে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উন্নত উদ্ভিদ পাওয়া যায় না। 2. এইপ্রকার বংশবিস্তারে অভিব্যক্তি ঘটা সম্ভব নয়। 3. অপত্য উদ্ভিদগুলির অভিযোজন ক্ষমতা কমে যায় বলে অবলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার কাকে বলে? উদ্ভিদের কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার হল যে প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আদর্শ বা অরূপ সন্তান উত্পন্ন করা হয় যা মানব জীবনের সুবিধার্থে উপযুক্ত হতে পারে।
কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার
হটিকালচার বা উদ্যানপালন বিদ্যায় ব্যবহৃত মানবসৃষ্ট অঙ্গজ বংশবিস্তারের পদ্ধতিসমূহকে কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার বা কৃত্রিম আফাজ জনন বলে।
কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতি
উদ্ভিদের কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার বিভিন্ন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। সেগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল।
- কাটিং বা শাখাকলমের দ্বারা – যে কৃত্রিম অজ জনন পদ্ধতিতে উদ্ভিদের শাখা কেটে ভিজে মাটিতে রোপণ করা হয়, প্রয়োজনমতো জল দিতে থাকলে পর্ব থেকে নতুন অস্থানিক মূল বের হয় এবং ক্রমশ ওই শাখা থেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদের জন্ম হয়, তাকে কাটিং বা শাখাকলম বলে। গোলাপ, জবা, গাদা, সজনে ইত্যাদি উদ্ভিদে এইভাবে জনন সম্ভব।
- গ্রাফটিং বা জোড়কলম দ্বারা – যে কৃত্রিম অঙ্গজ জনন পদ্ধতিতে দুটি ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদকে বা উদ্ভিদের দুটি শাখাকে পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে কয়েক মাস রেখে দিলে সেই জোড়া অংশ মিশে যায় এবং নতুন ধরনের উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রাফটিং বা জোড়কলম বলে। এই পদ্ধতিতে উন্নততর যে উদ্ভিদটিকে জোড়া লাগানো হয়, তাকে সিয়ন বলে এবং যার ওপর জোড়া লাগানো হয় তাকে স্টক বলে। সিয়ন সাধারণত অপেক্ষা উন্নতমানের হয়। সিয়ন ও স্টক-এর সংযোগস্থলটিকে মাত দিয়ে আবৃত করে কাপড় বা খড়ের সাহায্যে বেঁধে দেওয়া হয়। উন্নতমানের উদ্ভিদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। আম জাম, লেবু, কুল প্রভৃতি উদ্ভিদে এইভাবে জনন সম্ভব।
- মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ দ্বারা – যে কৃত্রিম অঙ্গ জনন পদ্ধতিতে ল্যাবরেটরিতে কোশ, কলা বা অঙ্গ কর্ষণ মাধ্যমে পালন দ্বারা দ্রুত নতুন উদ্ভিদ তৈরি করা হয়, তাকে মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ বলে। এক্ষেত্রে উদ্ভিদের উপযুক্ত দেহাংশ বা এক্সপ্ল্যান্ট নির্বীজ করে পুষ্টি মাধ্যমে কর্ষণ করা হয়। এর ফলে নতুন চারা গাছ সৃষ্টি হয়। মূলত সজ্জা উদ্ভিদ (ornamental plant), যেমন — অর্কিড, কলাজাতীয় ফল উৎপাদক উদ্ভিদ, কফি, সেগুন প্রভৃতি অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন উদ্ভিদ অণুবিস্তারণ পদ্ধতির অধিক ব্যবহার হয়ে থাকে।
যৌন জননের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
যৌন জনন সুবিধার্থে মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলেও এর সাথে অসুবিধার্থেরও অনেকগুলি রয়েছে।
যৌন জননের সুবিধা
1. যৌন জননের মাধ্যমে পিতা-মাতার বহু গুণাবলী সন্তান-সন্তুতির মধ্যে সঞ্চারিত হয়, ফলে তারা সহজেই নতুন পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। 2. যৌন জননের মাধ্যমে যে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত অপত্য জীবের উদ্ভব ঘটে, তাদের অভিব্যক্তি ঘটাও সম্ভব হয়। 3. যৌন জননের মাধ্যমে পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যাবলী সন্তান-সন্ততির মধ্যে সঞ্চারিত হওয়ার ফলে পুরুষানুক্রমে বংশের ধারা অক্ষুণ্ণ থাকে। 4. যৌন জননের ফলে যেসব জীব বংশবিস্তার করে তাদের কিছুসংখ্যক প্রতিনিধি যে-কোনো রকম প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে পুনরায় বংশবিস্তার করে।
যৌন জননের অসুবিধা
1. এটি ধীর গতির প্রক্রিয়া তাই যৌন জননের মাধ্যমে বংশবিস্তারের জন্য বেশিমাত্রায় সময় ব্যয়িত হয়। 2. এই পদ্ধতিতে দুটি ভিন্ন লিঙ্গের জীবের (পুরুষ ও স্ত্রী) প্রয়োজন হয়, যা সর্বদা পাওয়া নাও যেতে পারে। 3. এই পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও অসংখ্য গ্যামেটের অপচয় ঘটে, ফলে সাফল্য লাভের সম্ভাবনাও কম থাকে।
যৌন জনন কত প্রকার ও কী কী? জীবদেহে দেখা যায় অযৌন জনন পদ্ধতিগুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
যৌন জনন হল একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে স্ত্রী বা পুরুষ সন্তান উত্পন্ন করে।
যৌন জননের প্রকারভেদ
গ্যামেটের আকৃতির ওপর নির্ভর করে যৌন জনন তিন প্রকারের হয়, যথা — 1. অ্যানাইসোগ্যামি, 2. আইসোগ্যামি ও 3. উগ্যামি।
অযৌন জনন পদ্ধতিসমূহ
জীবদেহে যেসব অযৌন জনন পদ্ধতি দেখা যায়, সেগুলি হল — 1. বিভাজন (অ্যামিবা, প্লাসমোডিয়াম), 2. কোরকোদ্গম (ঈস্ট, হাইড্রা), 3. খণ্ডীভবন (স্পাইরোগাইরা), 4. রেণু উৎপাদন (মস, ফার্ন, ছত্রাক)। 5. পুনরুৎপাদন (প্ল্যানেরিয়া)।
অযৌন জননের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
অযৌন জনন হল এমন সন্তান উৎপাদনের পদ্ধতি যাতে সেক্সুয়ালি যোগাযোগ ছাড়াই সন্তান উৎপন্ন হয়।
অযৌন জননের সুবিধা
1. অযৌন জনন পদ্ধতিতে কেবলমাত্র একটি জীব অংশগ্রহণ করে, ফলে সহজে জনন সম্ভব হয়। 2. এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে বহু অপত্য জীব সৃষ্ট হয়। 3. অযৌন জননে কম শক্তি ব্যয়িত হয়। 4. এই পদ্ধতি সরল, নিশ্চিত এবং এতে সময় কম লাগে। 5. অপত্য জীবে বর্তমান কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাবার আশঙ্কা থাকে না। অপত্যগুলি তাদের পরিচিত পরিবেশে সহজে মানিয়ে নিতে পারে।
অযৌন জননের অসুবিধা
1. অযৌন জননে প্রকরণের (variation) কোনো সম্ভাবনা থাকে না। 2. এই পদ্ধতিতে সৃষ্ট অপত্য জীবের মধ্যে অভিযোজন ক্ষমতা কমে আসে এবং ফলে অবলুপ্তির সম্ভাবনা থাকে। 3. এই জননে গ্যামেট বা জননকোশের প্রয়োজন হয় না, তাই গ্যামেট গঠনকালে মিয়োসিসের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয় না।
জীবনের প্রবাহমানতা হল জীবের অস্তিত্বের জন্য একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। অযৌন জনন এবং যৌন জনন হল জীবনের প্রবাহমানতার দুটি প্রধান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়।