দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য “মধ্য ভারতের উচ্চভূমির অবস্থান ও ভূপ্রকৃতি” একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগে এই প্রশ্নটি বারবার দেখা যায়।
মধ্য ভারতের উচ্চভূমির অবস্থান –
পশ্চিমে আরাবল্লি, দক্ষিণে নর্মদা নদী ও দাক্ষিণাত্যের মালভূমি, পূর্বে ‘পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি’ এবং উত্তরে ‘উত্তর ভারতের সমভূমি’র মধ্যবর্তী স্থানে যে উচ্চভূমি অঞ্চলটি অবস্থিত, তাকে বলা হয় মধ্যভারতের উচ্চভূমি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যের উচ্চভূমি নিয়ে এই অঞ্চলটি গঠিত।
মধ্য ভারতের উচ্চভূমির ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য –
- এই উচ্চভূমির পশ্চিমাংশে আরাবল্লি পর্বত অবস্থিত। আরাবল্লি ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত। বহুযুগ ধরে ক্ষয় হওয়ার ফলে এর উচ্চতা অনেক কমে গেছে। গুরুশিখর (1722 মি) ও মাউন্ট আবু (1158 মি) এর দুটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ।
- আরাবল্লি পর্বতের পূর্বে অবস্থিত রাজস্থান মালভূমি প্রধানত একটি সমপ্রায়ভূমি। এর দক্ষিণে রয়েছে মধ্যভারতের পাথর অঞ্চল।
- এই উচ্চভূমির প্রধান পর্বতমালার নাম বিন্ধ্য পর্বত (1050 কিমি দীর্ঘ)। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত বিন্ধ্য পর্বতের গড় উচ্চতা 550 মিটার এবং এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম মানপুর (881 মি)। বিন্ধ্য পর্বত থেকে চম্বল ও মাহী নদীর উৎপত্তি হয়েছে।
- বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণে নর্মদা নদী কোথাও উন্মুক্ত উপত্যকা, আবার কোথাও গ্রস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে পশ্চিমদিকে প্রবাহিত হয়েছে।
- বিন্ধ্য পর্বতের উত্তরে অবস্থিত মালব মালভূমি এবং এর উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত বুন্দেলখণ্ড মালভূমি মাহী, নর্মদা ও অন্যান্য ছোটো ছোটো নদী দ্বারা ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে মেসা (mesa) ভূভাগের সৃষ্টি করেছে।
- বিন্ধ্য পর্বতের পূর্বাংশের নাম রেওয়া মালভূমি।
আরও পড়ুন –
- ভারতের মরুস্থলীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও
- ভারতের প্রধান প্রাকৃতিক বিভাগগুলি কী কী?
- ভারতের উপকূলের সমভূমির গুরুত্ব কী?
মধ্য ভারতের উচ্চভূমি তার বৈচিত্র্যপূর্ণ ভূপ্রকৃতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই অঞ্চলের ভূগোল দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অঞ্চলের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভূ-প্রকৃতি এটিকে পর্যটকদের জন্যও একটি আকর্ষণীয় স্থান করে তোলে।