নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজের ভূমিকা

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল?

নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল?

জে. জে. লিংকে, ফ্রেডারিক সুর, বামওয়েচ প্রমুখ খ্রিস্টান মিশনারিগণ সর্বপ্রথম নীলকরদের কার্যকলাপের প্রকাশ্য সমালোচনা করে শিক্ষিত সমাজকে জাগরিত করেছিলেন। আলেকজান্ডার ডাফ প্রমুখ মিশনারিদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। রেভারেন্ড জেমস্ লং নামক জনৈক ভারত প্রেমিক খ্রিস্টান পাদ্রী নিজের নামে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরাজি অনুবাদ প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকারের কোপে পড়েন।

নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল?

নীল বিদ্রোহ মূলত কৃষকবিদ্রোহ হলেও কলকাতার শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজের মধ্যে তা প্রবল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। নীলচাষিদের প্রতি নীলকরদের অবর্ণনীয় অত্যাচার, দাঁদন প্রথা, উর্বর জমিতে নীলচাষে কৃষকদের বলপূর্বক বাধ্য করা প্রভৃতি বিষয়ে নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করে ‘সমাচার চন্দ্রিকা’, ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’, ‘সোমপ্রকাশ’, ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ প্রভৃতি নীলচাষিদের মুখপত্রে পরিণত হয়েছিল। নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্র ‘নীলদর্পণ’ নাটক রচনা করে নীল বিদ্রোহের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

নীল বিদ্রোহ কী?

নীল বিদ্রোহ ছিল বাংলার কৃষকদের (1859 – 1860) নীলকর ইউরোপীয় শাসকদের বিরুদ্ধে একটি গণ-আন্দোলন। নীলচাষের জোরপূর্বক চাপানো পদ্ধতি ও শোষণের বিরুদ্ধে কৃষকরা বিদ্রোহ করে।

নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা কী ছিল?

খ্রিস্টান মিশনারিরা (যেমন জে. জে. লিংক, ফ্রেডারিক সুর, রেভারেন্ড জেমস লং) নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। জেমস লং “নীলদর্পণ” নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকারের রোষের শিকার হন।

শহুরে শিক্ষিত সমাজ নীল বিদ্রোহে কীভাবে অংশ নেয়?

কলকাতার শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা সংবাদপত্র (যেমন ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’, ‘সোমপ্রকাশ’), নাটক (‘নীলদর্পণ’) ও জনমত গঠনের মাধ্যমে নীলচাষীদের সমর্থন করে। দীনবন্ধু মিত্রের “নীলদর্পণ” নাটক নীলকরদের অত্যাচার ফাঁস করে দেয়।

নীলদর্পণ নাটকের গুরুত্ব কী?

দীনবন্ধু মিত্রের “নীলদর্পণ” নাটকে নীলকরদের অত্যাচারের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছিল। এটি ইংরেজিতে অনূদিত হলে ব্রিটিশ সরকার নীল ব্যবসার কুফল সম্পর্কে সচেতন হয়।

নীল বিদ্রোহের ফলাফল কী ছিল?

নীল বিদ্রোহের পর নীলচাষ কমতে থাকে এবং কৃষকদের ওপর জোরজুলুম কিছুটা হ্রাস পায়। শেষে জার্মানিতে কৃত্রিম নীল উৎপাদন শুরু হলে নীলকরদের ব্যবসা ধ্বংস হয়।

নীলকর কারা ছিল?

নীলকররা ছিল মূলত ইউরোপীয় (ব্রিটিশ, ফরাসি) বণিক ও জমিদার, যারা কৃষকদের জোর করে নীল চাষ করাত এবং ঋণের ফাঁদে ফেলে শোষণ করত।

দাঁদন প্রথা কী?

দাঁদন প্রথা ছিল একপ্রকার অত্যাচারী ঋণ ব্যবস্থা, যেখানে কৃষকদের জোর করে নীলচাষের জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া হত, পরে তা শোধ করতে না পেরে তারা চিরঋণীতে পরিণত হত।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের কীরূপ ভূমিকা ছিল? নীল বিদ্রোহে শহুরে শিক্ষিত সমাজ কীরূপ ভূমিকা পালন করেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

ভারতের জনজীবনে নদনদীর প্রভাব আলোচনা করো।

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য লেখো।