নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ
নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ –

গিরিখাত বা ‘V’ আকৃতির উপত্যকা –

আর্দ্র জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে নদীর পার্বত্য প্রবাহে নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে যে ‘V’ আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয় তাকে গিরিখাত বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • ‘V’ আকৃতির উপত্যকা নদীখাতের প্রস্থ বরাবর গড়ে ওঠে।
  • ভূমিরূপের ঢাল বৃদ্ধি পাওয়ায় জলের শক্তি, ও বৃদ্ধি পায়।
  • গভীরতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শক্তি আনুপাতিকহারে পরিবর্তিত হয়।
  • উপত্যকার তলদেশ সংকীর্ণ হয়।

উদাহরণ – নেপালের কালি গণ্ডকী গিরিখাত।

ক্যানিয়ন বা ‘I’ আকৃতির উপত্যকা –

সংজ্ঞা – শুষ্ক জলবায়ু যুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রচণ্ড নিম্নক্ষয়ে যে ‘I’ আকৃতির সংকীর্ণ উপত্যকার সৃষ্টি হয় তাকে ক্যানিয়ন বলে।

সৃষ্টির কারণ – শুষ্ক জলবায়ু হওয়ায় পার্শ্বক্ষয় হয় না কিন্তু দু-দিকে কঠিন শিলাগাত্র থাকায় ব্যাপক নিম্নক্ষয় হয়।

বৈশিষ্ট্য –

  • নিম্ন ক্ষয় খুব বেশি হলেও পার্শ্বক্ষয় হয় না বললেই চলে।
  • মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে ক্যানিয়ন গড়ে ওঠে।

উদাহরণ – কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

জলপ্রপাত –

উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে ঢালের ব্যাপক তারতম্য ঘটলে নদীর জল ওপর থেকে নীচের দিকে হঠাৎ করে পড়ে তাকে জলপ্রপাত বলে।

উৎপত্তি – কঠিন ও কোমল শিলার পরপর অবস্থান, লাভাপ্রবাহ, ভূ-আন্দোলন, ঝুলন্ত উপত্যকা প্রভৃতি কারণে ঢালের পার্থক্যে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।

বৈশিষ্ট্য –

  • নদীর উচ্চগতিতে বা পার্বত্য প্রবাহে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।
  • কঠিন ও কোমল শিলা পরপর পাশাপাশি অবস্থান করে।

শ্রেণিবিভাগ – প্রকৃতি অনুযায়ী জলপ্রপাত তিন ধরনের যথা –

  • র‍্যাপিড
  • কাসকেড
  • ক্যাটারাক্ট

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

নদীর ক্ষয়কার্য কী?

নদীর ক্ষয়কার্য বলতে নদীর প্রবাহের মাধ্যমে ভূমির ক্ষয় হওয়া এবং সেই ক্ষয়জাত পদার্থ বহন করে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি নদীর তিনটি প্রধান কাজের মধ্যে একটি (ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়)।

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ কী কী?

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি প্রধান ভূমিরূপ হলো –
1. গিরিখাত বা ‘V’ আকৃতির উপত্যকা
2. ক্যানিয়ন বা ‘I’ আকৃতির উপত্যকা
3. জলপ্রপাত

গিরিখাত কী?

গিরিখাত হলো নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট ‘V’ আকৃতির উপত্যকা। এটি সাধারণত আর্দ্র জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে নদীর পার্বত্য প্রবাহে গঠিত হয়।

গিরিখাতের বৈশিষ্ট্য কী?

গিরিখাতের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো –
1. ‘V’ আকৃতির উপত্যকা
2. নদীখাতের প্রস্থ বরাবর গঠিত
3. ঢাল বৃদ্ধি পাওয়ায় জলের শক্তি বৃদ্ধি পায়
4. উপত্যকার তলদেশ সংকীর্ণ হয়
উদাহরণ – নেপালের কালি গণ্ডকী গিরিখাত

ক্যানিয়ন কী?

ক্যানিয়ন হলো শুষ্ক জলবায়ুযুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রচণ্ড নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট ‘I’ আকৃতির সংকীর্ণ উপত্যকা।

ক্যানিয়ন গঠনের কারণ কী?

শুষ্ক জলবায়ু হওয়ায় পার্শ্বক্ষয় কম হয়, কিন্তু নদীর নিম্নক্ষয় বেশি হয়। ফলে দু-দিকে কঠিন শিলাগাত্র থাকায় ‘I’ আকৃতির উপত্যকা গঠিত হয়।

ক্যানিয়নের বৈশিষ্ট্য কী?

ক্যানিয়নের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো –
1. নিম্নক্ষয় বেশি, পার্শ্বক্ষয় কম
2. মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে গঠিত
উদাহরণ – কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন

জলপ্রপাত কী?

জলপ্রপাত হলো উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে ঢালের ব্যাপক তারতম্য ঘটলে নদীর জল ওপর থেকে নীচের দিকে হঠাৎ করে পড়ার ঘটনা।

জলপ্রপাতের উৎপত্তির কারণ কী?

জলপ্রপাতের উৎপত্তির কারণগুলো হলো –
1. কঠিন ও কোমল শিলার পরপর অবস্থান
2. লাভাপ্রবাহ
3. ভূ-আন্দোলন
4. ঝুলন্ত উপত্যকা

জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্য কী?

জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো –
1. নদীর উচ্চগতিতে বা পার্বত্য প্রবাহে গঠিত
2. কঠিন ও কোমল শিলা পরপর অবস্থান করে
3. শ্রেণিবিভাগ – র‍্যাপিড, কাসকেড ও ক্যাটারাক্ট


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান - চলতড়িৎ - রোধের সমবায়

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – চলতড়িৎ – রোধের সমবায়

একটি অ্যামিটারকে কোনো তড়িৎ বর্তনীর রোধের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এবং একটি ভোল্টমিটারকে শ্রেণিতে রাখা হল। এর ফল কী হবে?

অ্যামিটারকে তড়িৎ বর্তনীর রোধের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এবং ভোল্টমিটারকে শ্রেণিতে রাখা হলে কী হবে?

একটি তামার তারের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ অপরিবর্তিত রেখে তারটিকে গরম করলে তারের রোধের কী পরিবর্তন ঘটবে? তামার তারের পরিবর্তে কার্বন তন্তু ব্যবহার করলে রোধের কোনো পরিবর্তন দেখা যাবে কি?

একটি তামার তারের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ অপরিবর্তিত রেখে তারটিকে গরম করলে তারের রোধের কী পরিবর্তন ঘটবে?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – চলতড়িৎ – রোধের সমবায়

অ্যামিটারকে তড়িৎ বর্তনীর রোধের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এবং ভোল্টমিটারকে শ্রেণিতে রাখা হলে কী হবে?

একটি তামার তারের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ অপরিবর্তিত রেখে তারটিকে গরম করলে তারের রোধের কী পরিবর্তন ঘটবে?

সমান দৈর্ঘ্যের একটি সরু এবং একটি মোটা তামার তার একই ব্যাটারির সঙ্গে যুক্ত করা হলে, কোন্ তারে বেশি তড়িৎ প্রবাহিত হবে?

পরিবাহীর রোধ কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?