যে কোনো তীব্র, কর্কশ, বা বিরক্তিকর শব্দ, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং শরীর ও মনের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে, তাকে শব্দ দূষণ বলে। সহজভাবে বলতে গেলে, যে শব্দ মানুষের সহন ক্ষমতার বাইরে এবং যা অপ্রয়োজনীয় ও বিরক্তিকর, সেটাই শব্দ দূষণ।
শব্দ এক ধরনের শক্তি, যা কানে প্রবেশ করে আমাদের শুনতে সাহায্য করে। কোনো বস্তুতে ঘর্ষণের ফলে বাতাসে যে তরঙ্গ তৈরি হয়, তা থেকে শব্দ সৃষ্টি হয়। আমাদের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্যে একটি হলো কান, যা দিয়ে আমরা শব্দ শুনি। কিন্তু কান দিয়ে কতটা শব্দ শুনতে পারি, তারও একটা সীমা আছে।
শব্দদূষণের প্রধান কারণ
শব্দ দূষণ আমাদের চারপাশের পরিবেশকে দূষিত করে এবং এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আসুন শব্দ দূষণের কারণগুলো এবং প্রতিরোধের উপায়গুলো সহজভাবে জানি।
শব্দ দূষণের প্রধান কারণ
- কল-কারখানা – কল-কারখানাগুলোতে যেমন ছাপাখানা, পাথর ভাঙার মেশিন, সার কারখানা, এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মেশিনগুলো থেকে অনেক বিকট শব্দ বের হয়। এই শব্দ আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করে।
- বাড়ি তৈরির কাজ – শহরে দালান-কোঠা তৈরির সময় যেমন পাইলিং, পাথর ভাঙা বা কংক্রিট মেশানো হয়, তাতে অনেক উচ্চ আওয়াজ হয় যা আশপাশে শব্দ দূষণ তৈরি করে।
- যানবাহন – ট্রেন, বাস, ট্রাক, লঞ্চ, বিমান প্রভৃতি যানবাহনের ইঞ্জিন এবং হর্ণ থেকে অনেক শব্দ হয়। বিশেষ করে ট্রাফিক জ্যামে অনেক গাড়ির হর্ণ বাজলে শব্দ দূষণ আরও বেড়ে যায়।
- সাইরেন ও যুদ্ধের সময়কার শব্দ – ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ এবং যুদ্ধের সময় গোলাবারুদ, বোমার শব্দ আশপাশে শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে।
- গান-বাজনা ও মাইক – অনেক সময় উচ্চ শব্দে মাইকে গান বাজানো হয়, যা শব্দ দূষণ তৈরি করে। বিশেষ করে বিয়ে, পূজা বা বড় অনুষ্ঠানগুলিতে মাইকের শব্দ আশেপাশের মানুষকে বিরক্ত করে।
- প্রাকৃতিক বিপর্যয – বজ্রপাত, ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় তীব্র শব্দ হয়, যা পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দূষণ সৃষ্টি করে।
- পশুপাখির শব্দ – অনেক এলাকায় কুকুরের ঘেউ ঘেউ, কাকের কা কা, কিংবা বন্য পশুর গর্জন শব্দ দূষণের কারণ হতে পারে।
- মানুষের ভিড় – রাজনৈতিক সভা, মিছিল, বড় বাজার বা সামাজিক অনুষ্ঠানে মানুষের জটলা এবং চিৎকার শব্দ দূষণের কারণ হয়।
- বিবাহ বা উৎসবের অনুষ্ঠান – বিয়ের অনুষ্ঠান, পার্টি বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান এবং নাচানাচি শব্দ দূষণ বাড়িয়ে দেয়।
শব্দ দূষণের ক্ষতি
শব্দ দূষণ আমাদের অনেকভাবে ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে কান ব্যথা, শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া, মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া এবং মানসিক চাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায় এবং বয়স্কদের স্বাস্থ্যও খারাপ হতে পারে।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধের উপায়
- যানবাহনের শব্দ কমানো – গাড়ির সাইলেন্সার ঠিক রাখতে হবে এবং যত্রতত্র হর্ণ বাজানো যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আদালতের মতো এলাকায় হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ করতে হবে।
- রেডিও, টিভি ও মাইকের শব্দ নিয়ন্ত্রণ – রেডিও, টিভি বা মাইকের আওয়াজ কমিয়ে দিলে শব্দ দূষণ কমানো যায়। উচ্চ শব্দে এগুলো চালালে কানের ক্ষতি হতে পারে।
- বাসস্ট্যান্ড দূরে রাখা – বাসস্ট্যান্ড বা ট্রেন স্টেশন লোকালয় থেকে দূরে রাখলে শব্দ দূষণ কমবে।
- কল-কারখানার শব্দ নিয়ন্ত্রণ – কল-কারখানার যন্ত্রপাতির আওয়াজ কমানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে এবং তীব্র শব্দ সৃষ্টি করা যন্ত্রের উপর ঢাকনা ব্যবহার করতে হবে।
- আতশবাজি নিয়ন্ত্রণ – জনবহুল স্থানে আতশবাজি ব্যবহার না করা উচিত। বিশেষ করে উৎসবে আতশবাজির শব্দ অনেক বেশি হয় যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিরক্তিকর।
শব্দ দূষণ রোধে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সচেতনতার মাধ্যমেই শব্দ দূষণ অনেকটা কমানো সম্ভব। এছাড়া সরকারীভাবে আইন তৈরি করে হর্ণ বাজানো, মাইকের ব্যবহার, এবং কল-কারখানার শব্দ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
সুতরাং, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিত যাতে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে পারি।
শব্দ দূষণের প্রভাব
শব্দ দূষণের প্রভাবকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় – অস্থায়ী এবং স্থায়ী প্রভাব।
অস্থায়ী প্রভাব –
- কানের সাময়িক ক্ষতি – উচ্চ আওয়াজ কানের পর্দায় সাময়িক ক্ষতি করে, যার ফলে সাময়িকভাবে শুনতে অসুবিধা হয়।
- কানে যন্ত্রণা – দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ আওয়াজের সংস্পর্শে থাকলে কানের ভেতর ব্যথা অনুভব হয়।
- শ্রবণে বাধা – উচ্চ আওয়াজ অন্য শব্দ শুনতে বাধা দেয়, একে মাস্কিং বলে। যেমন, জেট বিমানের শব্দ।
স্থায়ী প্রভাব –
- শ্রবণ শক্তির ক্ষতি – দীর্ঘদিন ধরে বেশি আওয়াজে থাকা শ্রবণ শক্তি ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। এমনকি খুব বেশি আওয়াজে কানের পর্দা ছিঁড়ে যায়, যা স্থায়ী বধিরতার কারণ হতে পারে।
- হৃদযন্ত্রে প্রভাব – বিকট আওয়াজ হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয় বা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা – শব্দ দূষণের কারণে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় তীব্র আওয়াজে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়।
- মস্তিষ্কের উপর চাপ – যন্ত্রণাদায়ক শব্দ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এতে মাথা ধরার সমস্যা, মানসিক চাপ, এমনকি বমি ভাবও দেখা দেয়।
- চোখের ক্ষতি – শব্দ দূষণ অনেক সময় চোখের রং চেনার ক্ষমতা নষ্ট করে এবং দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়।
পরিবেশের উপর প্রভাব –
শব্দ দূষণ শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখির ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত শব্দে অনেক পাখি ও পশু প্রজননে অংশ নিতে পারে না, যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব
শব্দ দূষণ আমাদের শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি কেবল বিরক্তির সৃষ্টি করে না, বরং বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিচে শব্দ দূষণের প্রধান ক্ষতিকর প্রভাবগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হলো –
শ্রবণশক্তির ক্ষতি – আমাদের কান সাধারণত 1 থেকে 75 ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ সহ্য করতে পারে। এর বেশি শব্দে কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ শব্দে থাকতে হয়, তাহলে আমরা ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারি এবং বধির হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
স্নায়ুতন্ত্রের ওপর চাপ – তীব্র শব্দ স্নায়ুতন্ত্রের ওপর চাপ ফেলে। স্নায়ুতন্ত্র আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, এবং এই অতিরিক্ত চাপের ফলে রক্ত সঞ্চালন, শ্বাস-প্রশ্বাস ও হরমোনের কার্যকারিতার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে।
রক্তচাপ বৃদ্ধি – শব্দ দূষণের কারণে অনেক সময় রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তীব্র শব্দে হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারে না, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
শিশুদের বিকাশে বাধা – যেসব এলাকায় শব্দ দূষণ বেশি, সেখানে থাকা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সমস্যা দেখা দেয়। এতে তাদের শোনার ক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা – শব্দ দূষণ শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করে। এতে শ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
স্মৃতিশক্তি ও মেজাজের ওপর প্রভাব – শব্দ দূষণের কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে পারে এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে শব্দ দূষণে থাকা মানুষের মন অস্থির ও বিরক্তিকর হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি – অধিক শব্দ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষ করে যানবাহনের শব্দ, নির্মাণ কাজের শব্দ, এবং অন্যান্য তীব্র শব্দ আমাদের মনে চাপ সৃষ্টি করে। এতে ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।
ঘুমের ব্যাঘাত – শব্দ দূষণ আমাদের ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে। উচ্চমাত্রার শব্দে ঘুম ঠিকমতো হয় না, যার ফলে সারাদিন ক্লান্তি ও অলসতা অনুভূত হয়। এটি আমাদের কাজের দক্ষতাও কমিয়ে দেয়।
হৃদরোগের ঝুঁকি – তীব্র শব্দে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি শব্দে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় এবং এটি স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ ব্যাহত করে।
বন্যপ্রাণীর জীবনযাত্রার ক্ষতি – শব্দ দূষণ শুধু আমাদের নয়, বন্যপ্রাণীদের জীবনেও বড় প্রভাব ফেলে। বন্যপ্রাণীরা শব্দের ওপর বেশি নির্ভরশীল, তাই শব্দ দূষণ তাদের চলাচল ও খাদ্য সংগ্রহে সমস্যা তৈরি করে।
অন্যান্য সমস্যা – শব্দ দূষণের কারণে ঘুম কমে যাওয়া, মাথাব্যথা, বমিভাব, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা এবং মনোযোগের অভাব দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে।
শব্দ দূষণ থেকে বাঁচতে আমাদের উচিত শব্দ কমানো, বিশেষ করে যানবাহনের হর্ন, লাউডস্পিকার এবং অন্যান্য শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্রগুলো ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায়
শব্দ দূষণ হলো এমন এক সমস্যা, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শহর এলাকায় এর প্রভাব বেশি। শব্দ দূষণ রোধে কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় আছে। নিচে সহজভাবে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
1. প্রযুক্তিগত উপায়
- যন্ত্রপাতির উন্নতি – পুরনো যন্ত্রপাতি যা বেশি শব্দ করে, সেগুলোর আধুনিক সংস্করণ ব্যবহার করা। যেমন, অনেক কলকারখানায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে শব্দ কমানো যায়।
- শব্দ নিয়ন্ত্রণ আচ্ছাদন – যেসব যন্ত্রপাতি থেকে অতিরিক্ত শব্দ বের হয়, সেগুলোর উপর শব্দ নিয়ন্ত্রণকারী আবরণ দেওয়া। এটি শব্দ শোষণ করে।
- ব্যক্তিগত সুরক্ষা – যেসব কর্মচারী উচ্চ শব্দের পরিবেশে কাজ করেন, তাদের জন্য ইয়ার প্লাগ বা ক্যানাল কাপ ব্যবহার করা। এটি তাদের কানে শব্দের ক্ষতিকর প্রভাব কমায়।
- শব্দ প্রতিরোধী অঞ্চল – খুব শব্দযুক্ত শিল্প এলাকায় শব্দ কমানোর জন্য বিশেষ এলাকা তৈরি করা উচিত।
2. আইনসম্মত উপায়
- শব্দ নিয়ন্ত্রণ আইন – বিভিন্ন দেশে শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে আইন আছে। যেমন, ভারতের হাসপাতালে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 100 মিটারের মধ্যে শব্দ করা নিষিদ্ধ।
- গাড়ির হর্ন নিয়ন্ত্রণ – আবাসিক এলাকায় গাড়ির হর্ন ব্যবহারের জন্য আইন আছে, যাতে শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
3. পরিবেশগত উপায়
- গাছপালা লাগানো – গাছ শব্দ শোষণ করতে পারে। তাই শহরে রাস্তার পাশে গাছ লাগিয়ে শব্দ দূষণ কমানো যায়। বিশেষ করে তেতুল, বট, অশোক এবং নারকেল গাছ শব্দ শোষণে ভালো।
- নিরোধক দেয়াল – বাড়ির দেয়াল ও ছাদে শব্দ নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান ব্যবহার করা। এটি ঘরের ভিতরের শব্দকে কমায়।
4. জনশিক্ষার মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ
- গণমাধ্যমে সচেতনতা – টেলিভিশন, রেডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শব্দ দূষণের ক্ষতি সম্পর্কে মানুষকে জানানো।
- সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ম – অনুষ্ঠানে 65 ডেসিবেলের নিচে মাইক ব্যবহার করা হলে শব্দ দূষণ কমে।
- আতশবাজি ও পটকা ফাটানো বন্ধ – মানুষকে আতশবাজি পোড়ানো এবং পটকা ফাটানো বন্ধ করতে সচেতন করা।
- গাড়িতে অযথা হর্ন ব্যবহার না করা – যেকোনো ধরনের গাড়িতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকলে শব্দ দূষণ কমবে।
শব্দের মাত্রা ও প্রভাব
শব্দের তীব্রতা বা শক্তি ডেসিবল (dB) নামে একটি এককে পরিমাপ করা হয়। মানুষের শ্রবণ ক্ষমতার সীমার মধ্যে থাকলে শব্দ সহনীয় হয়, কিন্তু বেশি তীব্র হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। নিচে কিছু ডেসিবল মাত্রা এবং তাদের প্রভাব দেওয়া হলো –
শব্দের মাত্রা (ডেসিবল) | শব্দের প্রভাব |
---|---|
1-10 | খুবই হালকা শব্দ |
10-30 | শান্ত পরিবেশ |
30-50 | স্বাভাবিক শব্দ |
50-75 | সাধারণ আওয়াজ |
75-100 | বিরক্তিকর আওয়াজ |
100-130 | অসহনীয় আওয়াজ |
130-150 | কান ব্যথা করে |
150 এর বেশি | শ্রবণ শক্তি নষ্ট করে |
এই ছক থেকে বোঝা যায় যে, সাধারণত 1 থেকে 75 ডেসিবল শব্দ আমাদের জন্য সহনীয়। এর উপরের মাত্রার শব্দ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।