এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনের পার্থক্য লেখো। নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভূত হওয়ার কারণ কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনের পার্থক্য লেখো। নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভূত হওয়ার কারণ কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনের পার্থক্য লেখো।
নিউক্লিয় বিভাজন | নিউক্লিয় সংযোজন |
এই বিক্রিয়ায় কোনো ভারী নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে দুটি কাছাকাছি ভরের নিউক্লিয়াস উৎপন্ন হয়। | এই বিক্রিয়ায় দুটি অপেক্ষাকৃত হালকা পরমাণুর কেন্দ্রক যুক্ত হয়ে একটি ভারী পরমাণুর কেন্দ্রক গঠন করে। |
এটি একটি শৃঙ্খল বিক্রিয়া। | এটি শৃঙ্খল বিক্রিয়া নয়- সংযোজন বিক্রিয়া |
এই বিক্রিয়ায় উৎপন্ন বিপুল পরিমাণ শক্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে মানবকল্যাণ কাজে ব্যবহৃত হয়। | এই বিক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। |
নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভূত হওয়ার কারণ কী?
নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনে উদ্ভূত শক্তির কারণ হল ভরত্রুটি। উভয় প্রকার বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে বিক্রিয়ার শেষে উৎপন্ন নিউক্লিয়াসগুলির মোট ভর বিক্রিয়ক অথাৎ প্রাথমিক নিউক্লিয়াসগুলির মোট ভরের থেকে কম হয়। এই ভরত্রুটিই আইনস্টাইনের E = mc² সমীকরণ অনুযায়ী শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই কারণেই নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভুত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনে এত বিপুল শক্তি কীভাবে উৎপন্ন হয়?
এই শক্তির মূল কারণ হল ভরত্রুটি (Mass Defect)। উভয় বিক্রিয়ায়, বিক্রিয়ার পরে উৎপন্ন নিউক্লিয়াসগুলোর মোট ভর, বিক্রিয়ার আগের নিউক্লিয়াসগুলোর মোট ভর থেকে সামান্য কম হয়। আইনস্টাইনের বিখ্যাত সূত্র E = mc² অনুসারে, এই হারানো ভরই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। যেহেতু c² (আলোর বেগের বর্গ) এর মান অত্যন্ত বিশাল, তাই অল্প ভরও বিপুল পরিমাণ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
‘ভরত্রুটি’ বলতে কী বোঝায়?
ভরত্রুটি হলো একটি নিউক্লিয়াসের প্রকৃত ভর এবং সেই নিউক্লিয়াসটি গঠিত হলে তার প্রোটন ও নিউট্রনের পৃথক ভরের যোগফলের মধ্যে পার্থক্য। যখন একটি নিউক্লিয়াস গঠিত হয়, তখন কিছু ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে নিউক্লিয়াসটিকে বাঁধাই করে রাখে। এই ‘হারানো’ ভরই ভরত্রুটি।
E = mc² সূত্রটি নিউক্লিয় বিক্রিয়ায় কীভাবে প্রযোজ্য?
E = mc² সূত্র আমাদের জানায় যে ভর (m) এবং শক্তি (E) একে অপরের মধ্যে রূপান্তরযোগ্য। নিউক্লিয় বিক্রিয়ায় যে ভরত্রুটি বা ভরের ক্ষয় ঘটে, তা এই সূত্র অনুযায়ী শক্তিতে (E) রূপান্তরিত হয়। যেহেতু আলোর বেগ (c) একটি অত্যন্ত বড় সংখ্যা, তার বর্গ (c²) আরও বিশাল, তাই সামান্য ভরের ক্ষয় থেকেও বিপুল শক্তি উৎপন্ন হয়।
নিউক্লিয় সংযোজনের শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা এত কঠিন কেন?
নিউক্লিয় সংযোজন ঘটার জন্য দুটি ধনাত্মক আধানযুক্ত নিউক্লিয়াসকে খুব কাছাকাছি আসতে হয়। কিন্তু ধনাত্মক আধানের কারণে তাদের মধ্যে প্রবল কুলম্ব বিকর্ষণ বল থাকে। এই বাধা অতিক্রম করার জন্য নিউক্লিয়াসগুলোর অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপ (কোটি কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস) প্রয়োজন, যাতে তারা যথেষ্ট শক্তি নিয়ে একে অপরের কাছে আসতে পারে। পাশাপাশি, এমন চরম অবস্থায় সৃষ্ট প্লাজমাকে স্থিতিশীলভাবে ধরে রাখা (যেমন চৌম্বক ক্ষেত্রের সাহায্যে) একটি বিরাট প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ।
নিউক্লিয় বিভাজন একটি শৃঙ্খল বিক্রিয়া কেন?
নিউক্লিয় বিভাজন একটি শৃঙ্খল বিক্রিয়া কারণ নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়ায় উৎপন্ন নিউট্রনগুলি নিকটবর্তী অন্যান্য ভারী নিউক্লিয়াসে আঘাত করে এবং তাদের বিভাজন ঘটায়। এর ফলে আবার নতুন নিউট্রন বের হয়। এই নতুন নিউট্রনগুলো আবার অন্য নিউক্লিয়াসকে বিভাজিত করে। এভাবে একটির পর একটি বিক্রিয়া চলতে থাকে। তাই এটি একটি শৃঙ্খল বিক্রিয়া।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনের পার্থক্য লেখো। নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভূত হওয়ার কারণ কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নিউক্লিয় বিভাজন এবং নিউক্লিয় সংযোজনের পার্থক্য লেখো। নিউক্লিয় বিভাজনে বা নিউক্লিয় সংযোজনে প্রচুর পরিমাণ শক্তি উদ্ভূত হওয়ার কারণ কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন