এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “পলিমার ও মনোমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও। পলিমারের সঙ্গে মনোমারের পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

পলিমার ও মনোমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
পলিমার (Polymer) –
অনেকগুলি ছোটো অণুর বহুবার রাসায়নিক সংযোগের ফলে সৃষ্ট দীর্ঘশৃঙ্খল যুক্ত বৃহদাকার অণুকে (Macromolecule) পলিমার বলে। যেমন – অনেকগুলি ইথিলিন অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিইথিলিন বা পলিথিন গঠন করে।
সুতরাং, পলিইথিলিন বা পলিথিন হল ইথিলিনের পলিমার।
মনোমার (Monomer) –
পলিমারের অণুগুলিকে বা একক অণুগুলিকে মনোমার বলে। যেমন – অনেকগুলি ইথিলিন অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিইথিলিন বা পলিথিন অণু উৎপন্ন করে। সুতরাং ইথিলিন অণুটি পলিথিনের মনোমার।
পলিমারের সঙ্গে মনোমারের পার্থক্য কী?
পলিমারের সঙ্গে মনোমারের পার্থক্য হল –
পলিমার | মনোমার |
অনেকগুলি ছোটো অণুর বহুবার রাসায়নিক সংযোগের ফলে সৃষ্ট দীর্ঘশৃঙ্খল যুক্ত বৃহদাকার অণুকে পলিমার বলে। | যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু থেকে পলিমার অণু সৃষ্টি হয় তাদের প্রত্যেকটিকে মনোমার বলে। |
পলিমারের আণবিক গুরুত্ব মনোমার অপেক্ষা বেশি। | এর আণবিক গুরুত্ব কম। |
পলিমারিজেশন পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এদের আণবিক সংকেত ও আণবিক গুরুত্ব বিভিন্ন হয়। | মনোমারের আণবিক সংকেত ও আণবিক গুরুত্ব নির্দিষ্ট। |
নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক নেই। | এদের গলনাঙ্ক নির্দিষ্ট। |
রাসায়নিকভাবে এগুলি নিষ্ক্রিয় হয়। | রাসায়নিকভাবে এগুলি সক্রিয় হয়। |
উদাহরণ – PVC, পলিথিন ইত্যাদি। | উদাহরণ – ভিনাইল ক্লোরাইড, ইথিলিন ইত্যাদি। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
পলিমারাইজেশন কী?
যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মনোমার অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে বৃহদাকার পলিমার অণু গঠন করে, তাকে পলিমারাইজেশন বলে।
প্রাকৃতিক পলিমার ও কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
প্রাকৃতিক পলিমার – প্রকৃতিতে যে সকল পলিমার স্বাভাবিকভাবে উৎপন্ন হয়, তাদের প্রাকৃতিক পলিমার বলা হয়। উদাহরণ – সেলুলোজ, স্টার্চ, প্রোটিন, রাবার, উল ইত্যাদি।
কৃত্রিম পলিমার – মানুষ যে সকল পলিমার গবেষণাগারে বা কারখানায় তৈরি করে, তাদের কৃত্রিম বা সিন্থেটিক পলিমার বলা হয়। উদাহরণ – পলিথিন, PVC, নাইলন, টেফলন, পলিস্টাইরিন ইত্যাদি।
সমাবয়ব পলিমার ও অপসমাবয়ব পলিমার কাকে বলে?
সমাবয়ব পলিমার – যে পলিমার শুধুমাত্র এক ধরনের মনোমার থেকে তৈরি হয়, তাকে সমাবয়ব পলিমার বলা হয়। উদাহরণ – পলিথিন (শুধু ইথিলিন মনোমার থেকে), পলিভিনাইল ক্লোরাইড বা PVC (শুধু ভিনাইল ক্লোরাইড মনোমার থেকে)।
অপসমাবয়ব পলিমার – যে পলিমার দুই বা ততোধিক ভিন্ন ধরনের মনোমার থেকে তৈরি হয়, তাকে অপসমাবয়ব পলিমার বলা হয়। উদাহরণ – নাইলন–6,6 (হেক্সামেথিলিন ডাইঅ্যামাইন ও অ্যাডিপিক অ্যাসিড থেকে), টেরিলিন (ইথিলিন গ্লাইকল ও টেরিফথ্যালিক অ্যাসিড থেকে)।
পলিথিনের মনোমার কী?
পলিথিনের মনোমার হলো ইথিলিন (IUPAC নাম – Ethene, রাসায়নিক সংকেত C₂H₄)।
PVC পলিমারের মনোমারটির নাম ও সংকেত লেখো।
PVC পলিমারের মনোমারটির নাম হলো ভিনাইল ক্লোরাইড (IUPAC নাম – Chloroethene)। এর রাসায়নিক সংকেত হলো C₂H₃Cl।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “পলিমার ও মনোমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও। পলিমারের সঙ্গে মনোমারের পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন