এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “রাউরকেল্লায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলোচনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের শিল্প” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

রাউরকেল্লায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলোচনা করো।
ওড়িশার সুন্দরগড় জেলায় ব্রাহ্মণী নদীর তীরে রাউরকেল্লায় জার্মানির ‘ক্রুপস অ্যান্ড ডেমাগ’ কোম্পানির সহায়তায় লৌহ-ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। রাউরকেল্লায় এই শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার কারণগুলি হল –
- আকরিক লৌহ – রাউরকেল্লায় আকরিক লৌহের সহজলভ্যতা ঘটে কারণ ময়ূরভঞ্জ, বোনাই ও কেওনঝড়ের লৌহ-আকরিক পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
- কয়লা – রাউরকেল্লায় কয়লার সহজপ্রাপ্যতা ঘটে কারণ ঝরিয়া, রানিগঞ্জ ও তালচেরের কয়লার জোগান রয়েছে।
- অন্যান্য খনিজ সম্পদ – রাউরকেল্লায় অন্যান্য খনিজ সম্পদ সহজলভ্য হয় কারণ বীরমিত্রপুর থেকে চুনাপাথর ও কালাহান্ডি থেকে ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়।
- জল সরবরাহ – রাউরকেল্লায় জল সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকে কারণ ব্রাহ্মণী ও কোয়েল নদীর জল থেকে পর্যাপ্ত জল পাওয়া যায়।
- বিদ্যুৎ শক্তির যোগান – রাউরকেল্লায় বিদ্যুৎ শক্তির অবিচ্ছিন্ন যোগান থাকে কারণ হীরাকুঁদ প্রকল্পের জলবিদ্যুৎ ও রাউরকেল্লায় তাপবিদ্যুতের যোগান অব্যাহত থাকে।
- পরিবহণ ব্যবস্থা – রাউরকেল্লায় উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা রয়েছে কারণ জাতীয় সড়কপথ ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথের মাধ্যমে পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়।
- বন্দরের সান্নিধ্য – রাউরকেল্লায় বন্দরের সান্নিধ্য সুবিধাজনক কারণ পারাদ্বীপ, বিশাখাপত্তনম, কলকাতা-হলদিয়া বন্দর বিশেষভাবে বাণিজ্যের সহায়তা করেছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
রাউরকেল্লা লৌহ-ইস্পাত শিল্প কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
ওড়িশার সুন্দরগড় জেলায়, ব্রাহ্মণী ও কোয়েল নদীর তীরে রাউরকেল্লা লৌহ-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রটি অবস্থিত।
রাউরকেল্লায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার প্রধান কারণ কী?
রাউরকেল্লায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার প্রধান কারণ হল –
1. কাঁচামালের সহজলভ্যতা – ময়ূরভঞ্জ, বোনাই ও কেওনঝড় থেকে লৌহ-আকরিক পাওয়া যায়।
2. জ্বালানির যোগান – ঝরিয়া, রানিগঞ্জ ও তালচেরের কয়লা ব্যবহার করা হয়।
3. জল সরবরাহ – ব্রাহ্মণী ও কোয়েল নদী থেকে পর্যাপ্ত জল পাওয়া যায়।
4. পরিবহন সুবিধা – জাতীয় সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে পরিবহন সহজ।
রাউরকেল্লা ইস্পাত কারখানার জন্য বিদ্যুৎ কীভাবে সরবরাহ করা হয়?
রাউরকেল্লা ইস্পাত কারখানার জন্য –
1. হীরাকুঁদ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ আসে।
2. রাউরকেল্লায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে।
রাউরকেল্লা ইস্পাত শিল্পের জন্য কাঁচামাল কোথা থেকে আসে?
রাউরকেল্লা ইস্পাত শিল্পের জন্য কাঁচামাল আসে –
1. লৌহ-আকরিক – ময়ূরভঞ্জ, বোনাই, কেওনঝড়।
2. চুনাপাথর – বীরমিত্রপুর।
3. ম্যাঙ্গানিজ – কালাহান্ডি।
4. কয়লা – ঝরিয়া, রানিগঞ্জ, তালচের।
রাউরকেল্লার ইস্পাত শিল্পে বন্দরের ভূমিকা কী?
পারাদ্বীপ, বিশাখাপত্তনম ও কলকাতা-হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম সহজ হয়েছে।
রাউরকেল্লা ইস্পাত কারখানা স্থাপনে কোন বিদেশি কোম্পানি সাহায্য করে?
রাউরকেল্লা ইস্পাত কারখানা স্থাপনে জার্মানির ‘ক্রুপস অ্যান্ড ডেমাগ’ কোম্পানি প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে।
রাউরকেল্লার ইস্পাত শিল্পের পরিবহন ব্যবস্থা কেমন?
রাউরকেল্লার ইস্পাত শিল্পের পরিবহন ব্যবস্থা –
1. রেলপথ – দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত।
2. সড়কপথ – জাতীয় সড়ক (NH-143, NH-49) দ্বারা যুক্ত।
রাউরকেল্লা ইস্পাত শিল্পের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কী?
রাউরকেল্লা ইস্পাত শিল্পের অর্থনৈতিক গুরুত্ব –
1. ওড়িশার শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
2. কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
3. ভারতে ইস্পাত উৎপাদনে অবদান রাখে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “রাউরকেল্লায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলোচনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের শিল্প” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন