সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।

Rohit Mondal

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।
সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।

সংজ্ঞা – দিনের বিভিন্ন সময়ে বা বছরের বিভিন্ন ঋতুতে স্থল ও জলভাগের ওপর তাপ ও চাপের পার্থক্যে যে বায়ুপ্রবাহ সাময়িকভাবে গতিপথ পরিবর্তন করে প্রবাহিত হয় তাকে ‘সাময়িক বায়ুপ্রবাহ’ বলে।

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ –

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ – কিছু কিছু বায়ুপ্রবাহ আছে যেগুলি সারা বছর প্রবাহিত না হয়ে দিনের বা বছরের কোনাে নির্দিষ্ট সময়ে কোনাে নির্দিষ্ট স্থানে প্রবাহিত হয়। এদের বলে সাময়িক বায়ুপ্রবাহ। সাময়িক বায়ু প্রধানত চার প্রকার —

  • সমুদ্রবায়ু
  • স্থলবায়ু
  • মৌসুমি বায়ু
  • পার্বত্য বায়ু ও উপত্যকা বায়ু ।

মৌসুমি বায়ু –

‘মৌসুমি’ শব্দটি আরবীয় ‘মৌসিম’ বা মালয়ালম ‘মনসিন’ থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ হল ঋতু। ঋতু অনুসারে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে মৌসুমি বায়ু বলে। মৌসুমি বায়ুকে দুইভাগে ভাগ করা যায়, যথা –

  1. গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু।
  2. শীতকালীন মৌসুমি বায়ু।
মৌসুমি বায়ু

গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু –

গ্রীষ্মকালে গভীর নিম্নচাপের ফলে ভারত মহাসাগর থেকে সৃষ্ট জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন মহাদেশের অভ্যন্তর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে দিক থেকে প্রবাহিত হয়, তখন তাকে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু বলে।

শীতকালীন মৌসুমি বায়ু –

শীতকালে মহাদেশের অভ্যন্তরভাগে কম উষ্ণতার জন্য উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল বিরাজ করে। ফলে ভারত মহাসাগরের জল অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং শীতকালে স্থলভাগ থেকে ঠান্ডা বায়ু সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। একে শীতকালীন মৌসুমি বায়ু বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • বায়ুপ্রবাহের দিক – গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এবং শীতকালীন মৌসুমি বায়ু উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
  • ঋতু পরিবর্তন – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর জন্য চক্রাকারে ঋতু পরিবর্তিত হয়।
  • আর্দ্রতা – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুতে জলীয়বাষ্প বেশি থাকায় আর্দ্র প্রকৃতির এবং উত্তর-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু জলীয়বাষ্পহীন হওয়ায় শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
  • অনিয়মিত বৃষ্টিপাত – মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বায়ুর স্থান পরিবর্তন হলে কখনোই একটানা বৃষ্টিপাত হয় না।
  • বৃষ্টিপাত – মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হয়।
  • খরা – মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত কোনো বছর কম হলে বিভিন্ন স্থানে খরা সৃষ্টি হয়।
  • বন্যা – মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত কোনো বছর অতিরিক্ত হলে বিভিন্ন স্থানে বন্যা সৃষ্টি হয়।
  • শীতকালীন বৃষ্টিপাত – শীতকালে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ও বঙ্গোপসাগরীয় ঘূর্ণবাতের ফলে কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টিপাত হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

সাময়িক বায়ুপ্রবাহ কী?

দিনের বিভিন্ন সময় বা বছরের বিভিন্ন ঋতুতে স্থল ও জলভাগের তাপ ও চাপের পার্থক্যের কারণে যে বায়ুপ্রবাহ সাময়িকভাবে গতিপথ পরিবর্তন করে প্রবাহিত হয়, তাকে সাময়িক বায়ুপ্রবাহ বলে।

সাময়িক বায়ুকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

সাময়িক বায়ুকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় –
1. দিনরাত্রি ভেদে প্রবাহিত সাময়িক বায়ু (যেমন – সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ু)।
2. ঋতু ভেদে প্রবাহিত সাময়িক বায়ু (যেমন – মৌসুমি বায়ু)।

মৌসুমি বায়ু কী? এটি কয় প্রকার?

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে যে বায়ু প্রবাহের দিক পরিবর্তন করে, তাকে মৌসুমি বায়ু বলে। এটি দুই প্রকার –
1. গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু (দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত, আর্দ্র প্রকৃতির)।
2. শীতকালীন মৌসুমি বায়ু (উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত, শুষ্ক প্রকৃতির)।

গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু কীভাবে সৃষ্টি হয়?

গ্রীষ্মকালে স্থলভাগ দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে নিম্নচাপ সৃষ্টি করে, ফলে ভারত মহাসাগর থেকে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এটি ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

শীতকালীন মৌসুমি বায়ুর বৈশিষ্ট্য কী?

1. এটি উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
2. শুষ্ক ও ঠান্ডা প্রকৃতির হয়।
3. স্থলভাগের উচ্চচাপ থেকে সমুদ্রের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয়।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে কী কী সমস্যা দেখা যায়?

1. অতিবৃষ্টি → বন্যা।
2. অনিয়মিত বৃষ্টিপাত → খরা।
3. অনিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া → কৃষিতে প্রভাব।

মৌসুমি বায়ুর গুরুত্ব কী?

1. কৃষিকাজের জন্য অপরিহার্য (ধান, গম ইত্যাদি চাষে সাহায্য করে)।
2. জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক।
3. প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Job Posts

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহের সংজ্ঞা দাও

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে? আকস্মিক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

সাময়িক বায়ুর সংজ্ঞা দাও। সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।

সাময়িক বায়ু কাকে বলে? সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

About The Author

Rohit Mondal

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কেন? রবীন্দ্রনাথ কীভাবে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থা

বাংলার অধিকাংশ ছাপাখানা কলকাতায় গড়ে উঠেছিল কেন? বাংলার সাংস্কৃতিক জীবনে ছাপাখানার বিকাশের প্রভাব

পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত কেন? বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের ভূমিকা

বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী? মুদ্রণের ইতিহাসে 1800 খ্রিস্টাব্দের গুরুত্ব

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটির সম্বন্ধে চিত্রসহ আলোচনা করো।