তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীতে ওহমের সূত্র ও এর গাণিতিক রূপ লেখো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্র এবং এর গাণিতিক রূপ লেখো। তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহম সূত্র বর্ণনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্র এবং এর গাণিতিক রূপ লেখো। তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহম সূত্র বর্ণনা করো।
Contents Show

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্র এবং এর গাণিতিক রূপ লেখো।

দ্রবণের উষ্ণতা, দ্রবণের গাঢ়ত্ব, দুই তড়িৎদ্বার ইত্যাদি অপরিবর্তিত থাকলে কোনো তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর মধ্য দিয়ে আয়নগুলির প্রবাহ অর্থাৎ তড়িৎপ্রবাহ তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের মধ্যে নিমজ্জিত দুই তড়িৎদ্বারের মধ্যে বিভবপ্রভেদের সমানুপাতিক হয়।

গাণিতিক রূপ – মনে করি, দ্রবণের উষ্ণতা, দ্রবণের গাঢ়ত্ব, দুই তড়িৎদ্বার ইত্যাদি অপরিবর্তিত অবস্থায় কোনো তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা I, তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের মধ্যে নিমজ্জিত দুই তড়িৎদ্বারের মধ্যে বিভবপার্থক্য V এবং ওই উভয় তড়িৎদ্বারের মধ্যেকার রোধ R। সুতরাং, ওহমের সূত্রানুসারে, V ∝ I বা, V = IR।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহম সূত্র বর্ণনা করো।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের পরিবাহিতা – তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহম সূত্রানুসারে—

V = I × R

বা, \(\frac1R=\frac IV\) দুই তড়িৎদ্বারের মধ্যে বিভবপ্রভেদ (V) নির্দিষ্ট থাকলে 1/R ∝ I হবে।

একটি নির্দিষ্ট বিভবপ্রভেদে R বাড়লে অর্থাৎ \(\frac1R\) কমলে তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের তড়িৎপ্রবাহ অর্থাৎ সেটির পরিবাহিতা কমে এবং R কমলে অর্থাৎ \(\frac1R\) বাড়লে সেটির পরিবাহিতা বাড়ে। অতএব, \(\frac1R\) -এর মান দ্বারা তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের তড়িৎ পরিবাহিতার পরিমাপ করা সম্ভব। এজন্য \(\frac1R\) দ্বারা তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের তড়িৎপরিবাহিতার পরিমাপ করা হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্রটি কী?

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্রটি হল – দ্রবণের উষ্ণতা, গাঢ়ত্ব ও তড়িৎদ্বার অপরিবর্তিত থাকলে, তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎপ্রবাহ (I), দুটি তড়িৎদ্বারের মধ্যকার বিভবপ্রভেদের (V) সমানুপাতিক হয়। এর গাণিতিক রূপ হল V = I × R, যেখানে R হল দ্রবণের রোধ।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যে ওহমের সূত্র প্রযোজ্য হওয়ার শর্তগুলি কী কী?

ওহমের সূত্র প্রযোজ্য হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলি অপরিবর্তিত থাকতে হবে –
1. দ্রবণের উষ্ণতা,
2. দ্রবণের গাঢ়ত্ব (সাংদ্রতা),
3. ব্যবহৃত দুই তড়িৎদ্বারের প্রকৃতি ও আকার।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের তড়িৎ পরিবাহিতা বলতে কী বোঝায় এবং এক কীভাবে পরিমাপ করা হয়?

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের তড়িৎ পরিবাহিতা হল তার মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালানোর সামর্থ্য। একে রোধ (R) -এর বিপরীত রাশি (1/R) দ্বারা পরিমাপ করা হয়। রোধ (R) কম হলে পরিবাহিতা (1/R) বেশি হয় এবং তড়িৎপ্রবাহও বেশি হয়।

তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের রোধ (R) ও তড়িৎপ্রবাহ (I) -এর মধ্যে সম্পর্কটি কী?

একটি নির্দিষ্ট বিভবপ্রভেদে (V), তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের রোধ (R) ও তড়িৎপ্রবাহ (I) -এর মধ্যে একটি ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক থাকে। অর্থাৎ, I ∝ 1/R। রোধ বাড়লে তড়িৎপ্রবাহ কমে এবং রোধ কমলে তড়িৎপ্রবাহ বাড়ে।

ধাতব পরিবাহী ও তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহমের সূত্রের প্রয়োগে কী কোনো মৌলিক পার্থক্য আছে?

গাণিতিক রূপ (V = IR) এবং আনুপাতিক সম্পর্ক (V ∝ I) উভয় ক্ষেত্রেই একই। মৌলিক পার্থক্যটি lies পরিবাহীর প্রক্রিয়ায়। ধাতুতে ইলেকট্রনের প্রবাহে তড়িৎপ্রবাহ হয়, অন্যদিকে তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যে আয়নগুলির (ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন) প্রবাহের ফলে তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।

যদি দ্রবণের গাঢ়ত্ব বৃদ্ধি পায়, তাহলে তার রোধ ও পরিবাহিতার উপর কী প্রভাব পড়বে?

সাধারণত, দ্রবণের গাঢ়ত্ব বাড়লে (অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকলে) দ্রবণে আয়নের সংখ্যা ঘনত্ব বাড়ে। এর ফলে দ্রবণের রোধ (R) কমে এবং পরিবাহিতা (1/R) বৃদ্ধি পায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িদ্‌বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে ওহমের সূত্র এবং এর গাণিতিক রূপ লেখো। তড়িদ্‌বিশ্লেষ্য পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহম সূত্র বর্ণনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C উষ্ণতায় 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুটি বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় একটি ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাস উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন গ্যাসটি লঘু HCl -এ সিক্ত কাচদণ্ডের সংস্পর্শে সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। গ্যাস তিনটিকে শনাক্ত করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

অ্যামোনিয়া জলে অত্যন্ত দ্রাব্য এবং এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারধর্মী—একটি পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করো।

অ্যামোনিয়ার প্রধান ভৌত ধর্মগুলি লেখো। অ্যামোনিয়ার ব্যবহার উল্লেখ করো।