উচ্চতা ও বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো।

Rohit Mondal

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো। বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো। বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুরচাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

উচ্চতা ও বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো -
উচ্চতা ও বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো –
Contents Show

উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো।

ঊর্ধ্বাকাশে বায়ুমণ্ডলের বিস্তার প্রায় 10,000 কিমি। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের 99% স্তর ভূপৃষ্ঠের প্রায় 32 কিমির মধ্যে অবস্থিত। ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুতে ভারী গ্যাসসমূহের আধিক্য থাকায় বায়ুর ওজন ও চাপ উভয়ই বেশি হয়। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হালকা গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘনত্ব হ্রাস পায়। ফলে বায়ুরচাপ ও হ্রাস পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুরচাপ 1013.25 মিলিবার। প্রতি 300 ফুট উচ্চতায় বায়ুরচাপ 1 ইঞ্চি বা 36 মিলিবার হারে হ্রাস পায় অর্থাৎ উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক ব্যাস্তানুপাতিক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, 70 কিমি উচ্চতায় বায়ুরচাপ 0.06 মিলিবার, 40 কিমি উচ্চতায় বায়ুরচাপ 2.87 কিমি, 10 কিমি উচ্চতায় 256 মিলিবার এবং 0 কিমি উচ্চতায় 1013.25 মিলিবার।

বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

পৃথিবী নিজ অক্ষে 66½° কোণ করে অবস্থান করে বলে ভূপৃষ্ঠের সব স্থান সমানভাবে সূর্যরশ্মি পায় না, কোথাও লম্বভাবে সূর্যরশ্মি পতিত হয়, আবার কোথাও তির্যকভাবে সূর্যরশ্মি পতিত হয়। ফলে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতাগত তারতম্যের প্রভাব বায়ুর চাপের ওপর পড়ে। পৃথিবীতে বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুর চাপের সম্পর্ক হয় ব্যাস্তানুপাতিক। যেমন —

উষ্ণ বায়ুর সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক –

বায়ু উষ্ণ হলে আয়তনে বাড়ে এবং বায়ুর ঘনত্ব হ্রাস পায়। ফলে বায়ুরচাপ কমে যায়। যেমন – নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় বায়ু উষ্ণ থাকে এবং হালকা ও প্রসারিত হয়ে ওপরে উঠে যায়। ফলে এখানে স্থায়ীভাবে নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

শীতল বায়ুর সঙ্গে বায়ুচাপের পার্থক্য –

বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ু সংকুচিত হয় এবং ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে ওই স্থানে বায়ুরচাপ বাড়ে। সুতরাং বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস পেলে বায়ুরচাপ বৃদ্ধি পায়। যেমন – মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছর তির্যকভাবে পতিত হওয়ায় ওই স্থানে শীতলতার জন্য উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়েছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে বায়ুচাপ কীভাবে পরিবর্তিত হয়?

উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে বায়ুচাপ কমে যায়। কারণ, উচ্চতায় বায়ুর ঘনত্ব হ্রাস পায় এবং হালকা গ্যাসের পরিমাণ বাড়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুচাপ সর্বাধিক (1013.25 মিলিবার), কিন্তু প্রতি 300 ফুট উচ্চতায় এটি 1 ইঞ্চি (36 মিলিবার) হারে হ্রাস পায়।

বিভিন্ন উচ্চতায় বায়ুচাপের পরিবর্তন দেখাও।

1. 0 কিমি (সমুদ্রপৃষ্ঠ) – 1013.25 মিলিবার।
2. 10 কিমি – 256 মিলিবার।
3. 40 কিমি – 2.87 মিলিবার।
4. 70 কিমি – 0.06 মিলিবার।

বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের সম্পর্ক কী?

বায়ুর উষ্ণতা ও চাপের মধ্যে ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে –

1. উষ্ণ বায়ু – প্রসারিত হয়, ঘনত্ব কমে → চাপ কমে (যেমন – নিরক্ষীয় নিম্নচাপ)।
2. শীতল বায়ু – সংকুচিত হয়, ঘনত্ব বাড়ে → চাপ বাড়ে (যেমন – মেরু অঞ্চলের উচ্চচাপ)।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্থায়ী নিম্নচাপ বলয় কেন সৃষ্টি হয়?

নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে, ফলে বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। এতে বায়ুরচাপ কমে এবং স্থায়ী নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়।

মেরু অঞ্চলে উচ্চচাপ বলয় কেন সৃষ্টি হয়?

মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে, ফলে বায়ু শীতল ও ঘন হয় এবং নিচে নেমে আসে। এতে বায়ুরচাপ বাড়ে এবং স্থায়ী উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়।

বায়ুমণ্ডলের কত শতাংশ ভূপৃষ্ঠের 32 কিমির মধ্যে অবস্থিত?

বায়ুমণ্ডলের 99% স্তর ভূপৃষ্ঠের 32 কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত, কারণ মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিচের বায়ুকে বেশি আকর্ষণ করে।

উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে বায়ুর ঘনত্ব কেন কমে?

1. ভূপৃষ্ঠে ভারী গ্যাস (অক্সিজেন, নাইট্রোজেন) বেশি থাকে।
2. উচ্চতায় হালকা গ্যাস (হাইড্রোজেন, হিলিয়াম) বেশি থাকে, ফলে ঘনত্ব কমে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো। বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “উচ্চতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক আলোচনা করো। বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুরচাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সুইডেনের কিরুনা উত্তর গোলার্ধের তুন্দ্রা জলবায়ুর অন্তর্গত - ব্যাখ্যা করো -

সুইডেনের কিরুনা উত্তর গোলার্ধের তুন্দ্রা জলবায়ুর অন্তর্গত – ব্যাখ্যা করো।

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো -

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

About The Author

Rohit Mondal

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ (উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত): বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ (উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত): বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

মাধ্যমিক ইতিহাস – বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ (উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত): বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা – বিষয়সংক্ষেপ

মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর