উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে?

Rohit Mondal

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে? উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে? উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে
উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে?

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার –

বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিমি উচ্চতায় তাপমাত্রা 6.5° সে হারে কমতে থাকে। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উষ্ণতা হ্রাস পাওয়াকে Lapse Rate বা উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাস হার বলে।

বৈপরীত্য উষ্ণতা –

সাধারণত বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে প্রতি 1000 মিটারে 6.5°C হারে উষ্ণতা কমতে থাকে। কিন্তু কখনো এর ব্যতিক্রম ঘটে। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা না কমে বাড়তে থাকে। এই ঘটনাকে বৈপরীত্য উত্তাপ বলা হয়।

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য –

পার্থক্যের বিষয়উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হারবৈপরীত্য উত্তাপ
ধারণাএক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা হ্রাস পায়।এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটে, উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা না কমে বেড়ে যায়।
সংঘটনের কারণউষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার অনুযায়ী প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিমি উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্ণতা 6.5°C হারে কমতে থাকে। ফলে উপরের দিকে উষ্ণতা হ্রাস পায়।নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের পার্বত্য অঞ্চলে শীতল, ভারী ক্যাটাবেটিক বায়ু উপত্যকার ঢাল বেয়ে নীচে নেমে আসে, এবং নীচের উষ্ণ বায়ু ওপরে উঠে যায়। ফলে উপরের দিকে উষ্ণতা বেড়ে যায়।
সংঘটন স্থলঘটনাটি নিম্ন বায়ুমণ্ডল বা ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে সংঘটিত হয়।এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের পার্বত্য অংশে সংঘটিত হয়।
সময়এটি দিনেরাতে সবসময় হয়।এটি সাধারণত রাতের বেলা হয়।
প্রভাবএর ফলে সুউচ্চ পর্বত শৃঙ্গগুলি তুষারাবৃত হয়। ওপরের বায়ু শীতল থাকে, বায়ুর চাপ-কম থাকে।এর ফলে পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চ স্থানে গরম অনুভূত হয়। কখনো কুয়াশার সৃষ্টি হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কাকে বলে?

বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতি 1000 মিটার (1 কিমি) উচ্চতায় তাপমাত্রা 6.5°C হারে কমতে থাকলে তাকে উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বা Lapse Rate বলে।

বৈপরীত্য উষ্ণতা (Temperature Inversion) কী?

সাধারণত উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে তাপমাত্রা কমে, কিন্তু কিছু বিশেষ অবস্থায় উচ্চতা বাড়লেও তাপমাত্রা কমার বদলে বেড়ে যায়। এই অবস্থাকে বৈপরীত্য উষ্ণতা বলে।

বৈপরীত্য উষ্ণতা কেন হয়?

প্রধান কারণগুলো হলো —
1. রাত্রিকালীন বিকিরণ – শীতকালে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়ে গেলে নিচের বায়ুস্তরও ঠান্ডা হয়, কিন্তু উপরের বায়ু অপেক্ষাকৃত গরম থাকে।
2. ক্যাটাবেটিক বায়ুপ্রবাহ – পার্বত্য অঞ্চলে শীতল ও ভারী বায়ু নিচে নেমে এলে নিম্নস্তরের বায়ু ঠান্ডা হয়, কিন্তু উপরের বায়ু গরম থাকে।
3. উষ্ণ বায়ুর আগমন – উষ্ণ বায়ুস্তর কোনো ঠান্ডা বায়ুস্তরের ওপর অবস্থান করলে বৈপরীত্য উষ্ণতা সৃষ্টি হয়।

বৈপরীত্য উষ্ণতা কোথায় বেশি দেখা যায়?

1. নাতিশীতোষ্ণ পার্বত্য অঞ্চলে (যেমন – আল্পস, হিমালয়ের কিছু অংশ)।
2. মরুভূমি অঞ্চলে রাতেরবেলা ভূপৃষ্ঠ দ্রুত ঠান্ডা হলে।
3. শীতকালে সমতল ভূমিতে যখন কুয়াশা ও শীতল বায়ুস্তর জমে।

বৈপরীত্য উষ্ণতার প্রভাব কী?

1. বায়ুদূষণ বৃদ্ধি – উষ্ণ বায়ুস্তর নিচের ঠান্ডা বায়ুকে আটকে রাখে, ফলে ধোঁয়া, ধুলো ও দূষিত পদার্থ বায়ুমণ্ডলে জমে।
2. কুয়াশা সৃষ্টি – আর্দ্র বায়ু ঠান্ডা হয়ে ঘন কুয়াশা তৈরি করে।
3. কৃষির ক্ষতি – শীতকালে বৈপরীত্য উষ্ণতার কারণে তুষারপাত বা হিম পড়ে ফসল নষ্ট হতে পারে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে? উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে? উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার ও বৈপরীত্য উষ্ণতার মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Job Posts

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহের সংজ্ঞা দাও

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে? আকস্মিক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

সাময়িক বায়ুর সংজ্ঞা দাও। সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।

সাময়িক বায়ু কাকে বলে? সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

About The Author

Rohit Mondal

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে? আকস্মিক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

সাময়িক বায়ু কাকে বলে? সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় ও মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণ লেখো।

পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলির সঙ্গে নিয়ত বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক আলোচনা করো।