এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

বিশ্ব উষ্ণায়ন কী? বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Contents Show

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।

পরিবেশের ওপর বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব –

বিশ্ব উষ্ণায়ন বা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবজগৎ তথা পরিবেশের ওপর এক সুদুরপ্রসারি ক্ষতিকারক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। যেমন –

মেরু অঞ্চলে বরফের গলন ও পার্বত্য হিমবাহের গলন –

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের (গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা) সঞ্চিত বরফ স্তূপের গলন শুরু হয়েছে এবং পার্বত্য হিমাবাহগুলির বরফের আয়তন ক্রমশ কমছে। সমীক্ষাতে দেখা গেছে, 70 -এর দশকে গঙ্গোত্রী হিমবাহের প্রতি বছর হ্রাসের পরিমাণ ছিল প্রায় 25 মিটার।

সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধি –

গ্রিনহাউস প্রভাব বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত কারণে মেরু অঞ্চলে ও পার্বত্য অঞ্চলের বরফ বেশি মাত্রায় গলে গিয়ে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি করছে। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর গড় উষ্ণতা প্রায় 1.5° সে বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্র জলতলের উচ্চতা প্রায় 10-12 সেমি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই ভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে এই শতাব্দীর শেষে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা 50-90 সেমি বৃদ্ধি পাবে।

অধঃক্ষেপণের প্রকৃতি পরিবর্তন –

পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন উৎসের জল অধিকতর দ্রুত ও বেশি পরিমাণে বাষ্পীভূত হচ্ছে তার ফলে বৃষ্টিপাত বা অধঃক্ষেপণের পরিমাণ সামগ্রিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাষ্পীভবন বেশি হওয়ার ফলে কোথাও প্রবল বর্ষণ অন্যত্র খরা আবার উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শস্য উৎপাদনে হ্রাসবৃদ্ধি –

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে ফসলের উৎপাদন হ্রাস বা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা। তবে এক্ষেত্রে এই হ্রাসবৃদ্ধি বিষয় দুটি অনেকগুলি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যেমন – নির্দিষ্ট অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়ার পরিবর্তন, CO2 বৃদ্ধির পরিমাণ, মৃত্তিকার আর্দ্রতা বা শুষ্কতা, ফসলের ধরন প্রভৃতি। যেমন – উত্তর গোলার্ধে গ্রিনহাউস এফেক্টের ফলে গ্রীষ্মকালে বারংবার খরা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সেক্ষেত্রে উত্তর আমেরিকা, প্রাক্তন সোভিয়েত রাশিয়ার উৎপাদনশীল অঞ্চলে ফসলের উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে।

কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তন –

গ্রিনহাউস প্রভাবের জন্য পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে কৃষিকাজের ওপর তার প্রভাব পড়বে। যেমন – কৃষি বলয়ের স্থান পরিবর্তিত হয়ে উচ্চ অক্ষাংশের দিকে বিস্তৃত হচ্ছে। আবার চাষযোগ্য জমিতে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ, আগাছা ও রেশম পোকার উপদ্রব বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষিকাজের পরিবর্তে শিল্প, বসতি, ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হবে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বিশ্ব উষ্ণায়ন কী?

বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার প্রক্রিয়া, যা মূলত গ্রিনহাউস গ্যাস (CO₂, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি) বৃদ্ধির কারণে ঘটে।

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান কারণ কী?

1. জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো (কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল)।
2. বন উজাড়।
3. শিল্পায়ন ও যানবাহনের ধোঁয়া।
4. কৃষিকাজে রাসায়নিক সার ও পশুসম্পদ থেকে মিথেন নির্গমন।

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলে কী ঘটছে?

1. মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলছে (গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা)।
2. হিমবাহ (যেমন – গঙ্গোত্রী) সংকুচিত হচ্ছে (প্রতি বছর ~25 মিটার হ্রাস)।

সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণ ও প্রভাব কী?

কারণ – বরফ গলে সমুদ্রে অতিরিক্ত জল যোগ হচ্ছে।
 
প্রভাব-
1. উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি (যেমন – বাংলাদেশ, মালদ্বীপ)।
2. 2100 সালের মধ্যে জলস্তর 50-90 সেমি বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃষ্টিপাতে কী প্রভাব ফেলছে?

1. কোথাও অতিবৃষ্টি (বন্যা), কোথাও খরা দেখা দিচ্ছে।
2. উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি ও পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বাড়ছে।

কৃষির ওপর বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কী?

ফসল উৎপাদন –
1. কিছু অঞ্চলে উৎপাদন কমবে (খরার কারণে)।
2. কিছু অঞ্চলে বাড়তে পারে (উত্তর গোলার্ধে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে)।

কৃষি পদ্ধতি পরিবর্তন –
1. নতুন কীটপতঙ্গ ও রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে।
2. চাষযোগ্য জমি শিল্প বা বসতিতে পরিণত হতে পারে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে কী করা যেতে পারে?

1. নবায়নযোগ্য শক্তি (সৌর, বায়ু) ব্যবহার বৃদ্ধি।
2. বনায়ন ও বন সংরক্ষণ।
3. গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণ (যানবাহনে ইলেকট্রিক কার ব্যবহার)।
4. সচেতনতা বৃদ্ধি ও সরকারি নীতি প্রণয়ন।

বিশ্ব উষ্ণায়নের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হতে পারে?

1. প্রাকৃতিক বিপর্যয় (সাইক্লোন, দাবানল) বৃদ্ধি।
2. জীববৈচিত্র্য ধ্বংস (প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি)।
3. মানব স্বাস্থ্যে প্রভাব (তাপপ্রবাহ, রোগবালাই)।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – বায়ুমণ্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন