এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের তৃতীয় বিভাগ ‘নদীর বিদ্রোহ’ নিয়ে কিছু বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়শই মাধ্যমিক পরীক্ষায় দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

Table of Contents

নদীর বিদ্রোহ – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
নদীর বিদ্রোহ – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক। — নদেরচাঁদের নদীর প্রতি এত ভালোবাসার কারণ কী? সেই ভালোবাসার পরিচয় দাও।

নদীর প্রতি ভালোবাসার কারণ – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাঁদের নদীর প্রতি ছিল অস্বাভাবিক মায়া। তাই স্টেশনমাস্টারের গুরুদায়িত্ব সামলেও নদীকে দেখার জন্য সে আকুল হয়ে ওঠে। প্রবল বর্ষণে পাঁচ দিন নদীকে না দেখতে পাওয়ায়, বৃষ্টি থামলেই সে নদীকে দেখার জন্য ছুটে যায়। নদীর জন্য এমনভাবে পাগল হওয়া তার মানায় না, কিন্তু বুঝেও সে নিজেকে বোঝাতে পারে না। বরং নিজের এই পাগলামিতে আনন্দ উপভোগ করে। এর একটা কারণও সে খুঁজে নেয়। নদীর ধারেই তার জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা — তাই চিরদিনই নদীর প্রতি তার এত ভালোবাসা।

ভালোবাসার পরিচয় –

  • নদীর জন্য কান্না – ছোটবেলায় দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে, নদেরচাঁদ কেঁদে ফেলেছিল।
  • নদীর প্রতি আকুলতা – কর্মক্ষেত্রে এসেও পাঁচ দিন প্রবল বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পাওয়ায় আকুল হয়ে ওঠে সে। বৃষ্টি একটু থামতেই তার মনে হয় — ব্রিজের একপাশে চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না। বর্ষায় উন্মত্ত নদীর সঙ্গে সে খেলা করে। স্ত্রীকে লেখা চিঠিও সে নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়।
  • নদীকে সমর্থন – আবার ব্রিজ দিয়ে নদীকে বেঁধে রাখার চেষ্টাও মানতে পারে না সে। নদীর বিদ্রোহী চরিত্রকে সে মনে মনে সমর্থন করে। এভাবেই নদীর প্রতি তার ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে।

নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে। – কার, কোন্ পাগলামির কথা এখানে বলা হয়েছে? কীভাবে সে পাগলামিতে আনন্দ উপভোগ করে লেখো।

অথবা, নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে। – কার পাগলামি-র কথা বলা হয়েছে? গল্প অনুসরণে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাগলামির পরিচয় দাও।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ও তার পাগলামি – কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাঁদের পাগলামির পরিচয় পাওয়া যায়। তিরিশ বছর বয়সেও নদীর প্রতি তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল, যা অনেকের কাছে অদ্ভুত বলে মনে হতো। নদেরচাঁদের এই অদ্ভুত ভালোবাসাকেই ‘পাগলামি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাগলামিতে আনন্দ উপভোগ –

  • আপন হয়ে ওঠা – নদেরচাঁদের দেশ ছিল নদীর তীরবর্তী। সেই নদীই ছিল তার শৈশবের নিত্যসঙ্গী। স্টেশনমাস্টারের চাকরিতে আসার পর তার সঙ্গে আরেকটি নদীর পরিচয় ঘটে, এবং সেই নদীও তার আপন হয়ে ওঠে।
  • চিন্তায় মগ্ন থাকা – ব্যস্ত কাজের মাঝেও নদেরচাঁদ নদী নিয়ে চিন্তায় ডুবে থাকত। বর্ষার সময় নদী যখন জলে ভরপুর হয়ে উঠত, তখন তার প্রবল স্রোত দেখে সে বিস্ময়ে অভিভূত হতো। নদেরচাঁদের মনে হতো, নদীর এই উচ্ছলতা যেন তার আনন্দেরই প্রতিফলন।
  • একাত্ম হয়ে ওঠা – সারাদিন প্যাসেঞ্জার ও মালগাড়ির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও নদেরচাঁদের মনে নদীর প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল। যদিও সে নিজেও জানত যে তার এই অদ্ভুত ভালোবাসা অস্বাভাবিক, তবে মনকে কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারত না। আসলে, সে মনের গভীরে নদীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিল।
  • সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে থাকা – নদীর সুখ-দুঃখের সঙ্গী হতে পেরে নদেরচাঁদ নিজেকে পরম ভাগ্যবান মনে করত।
  • শেষের কথা – নদেরচাঁদ তার এই পাগলামিতে উপভোগ করত এক অদ্ভুত আনন্দ, যা ছিল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং একান্তই তার নিজের।

নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটি কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে। – কী কৈফিয়ত দিতে পারে? এই ভালোবাসার কীরূপ পরিণতি হয় লেখো।

কৈফিয়তের বিষয় – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদীকে ভালোবাসার একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ ভেবেছিল। নদীর ধারে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। তাই নদীর প্রতি তার এই ভালোবাসা চিরন্তন। অনাবৃষ্টির কারণে দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে নদেরচাঁদ কেঁদেছিল। আবার কর্মক্ষেত্রেও নদীর সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল।

ভালোবাসার পরিণতি – নদীর প্রতি এই ভালোবাসার চূড়ান্ত মূল্য নদেরচাঁদকে দিতে হয়েছিল। বর্ষায় নদীর যে উন্মত্ত রূপ তা তার মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল, তাকেই নদীর বিদ্রোহ বলে মনে হয়েছিল নদেরচাঁদের। মানুষ ব্রিজ তৈরি করে নদীকে বাঁধতে চেয়েছে, কিন্তু নিজের স্বাভাবিক গতির এই রোধ নদী সহ্য করতে পারেনি। ব্রিজ ভেঙে ভাসিয়ে দিয়ে সে নিজের চলার পথ তৈরি করতে চেয়েছে। নদেরচাঁদ জানে, ব্রিজ ভাঙলেও মানুষ আবার তা গড়ে নেবে। তার মনে হয়েছিল, এই ব্রিজের কোনো প্রয়োজন ছিল না। নদেরচাঁদ যখন এসব চিন্তায় ডুবে ছিল, ঠিক তখনই একটি চলন্ত ট্রেন তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। যন্ত্রসভ্যতার প্রয়োজনীয়তাকে প্রশ্ন করার স্পর্ধা দেখিয়েছিল সে। প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসার চূড়ান্ত মূল্য এভাবেই জীবন দিয়ে মিটিয়ে দিতে হয়েছিল নদেরচাঁদকে।

মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে? – নদেরচাঁদের এ কথা মনে হওয়ার কারণ বর্ণনা করো।

  • নদীর প্রতি ভালোবাসা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে এক সাধারণ স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ নদীকে ভালোবেসেছিল পরমাত্মীয়, বন্ধুর মতো। নদীর প্রতি সে এক অসম্ভব টান অনুভব করত। তার জীবনের অর্ধেক জুড়ে যেন ছিল নদী। যেখানেই সে থেকেছে, সেখানকার নদীকেই ভালোবেসেছে।
  • নদীর বিদ্রোহের উপলব্ধি – স্টেশনমাস্টারের কাজ করতে গিয়ে সে পরিচিত হয় প্রশস্ত, জলপূর্ণ অথচ বন্দি এক নদীর সঙ্গে। মানুষ ব্রিজ আর বাঁধ দিয়ে ওই নদীকে বন্দি করেছে। একবার প্রবল বৃষ্টির পর নদীর উচ্ছ্বসিত ফেনিল জলরাশি দেখে নদেরচাঁদের মনে হয়েছিল, নদী যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে।
  • নদীর প্রতিবাদী সত্তার অনুভব – ব্রিজ আর বাঁধ ভেঙে নদী যেন ফিরে পেতে চাইছে তার স্বাভাবিক গতি। নদী যন্ত্রসভ্যতার বিরোধিতা করে প্রকৃতির লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করছে বলে নদেরচাঁদের মনে হয়।
  • মানুষের স্বার্থপরতা – এইরকম পরিস্থিতিতে নদেরচাঁদের মনে হয়েছে, আজ যদি নদী ব্রিজ আর বাঁধ ভেঙে নিজের বন্দিদশা কাটিয়ে ওঠে, তবুও মানুষ তাকে রেহাই দেবে না। নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে তারা আবারও নদীকে বন্দি করবে। মানুষ আবারও ব্রিজ, বাঁধ গড়ে তুলবে, প্রশস্ত নদীকে পরিণত করবে এক ক্ষীণস্রোতা নদীতে।

জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল। – কার জলপ্রবাহকে জীবন্ত মনে হল? জীবন্ত মনে হওয়ার কারণ কী ছিল তা বর্ণনা করো।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ ছোটোগল্পে নদেরচাঁদের নদীকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল।

জীবন্ত মনে হওয়ার কারণ –

  • নদীর প্রতি টান অনুভব – ইতিপূর্বে তার দেশের নদীটির সঙ্গে নদেরচাঁদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠলেও সেই নদীটি ছিল ক্ষীণ, রুগ্ণ। স্টেশনমাস্টারি করতে এসে নদেরচাঁদ এক নতুন নদীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। সে নদী ছিল প্রশস্ত, বর্ষায় তার জলপ্রবাহ হয়ে উঠত উদ্দাম, উন্মত্ত। আর এক অদ্ভুত ভালোবাসার টানে নদেরচাঁদ প্রতিদিন ওই নদীকে দেখতে ছুটে যেত। ব্রিজের ধারে বসে সে নদীকে দেখত।
  • নদীর উন্মত্ততা – এইরকমই এক বর্ষার দিনে নদীর উদ্দাম জলস্রোত ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে ফেনিল আবর্ত রচনা করছিল। নদীর সেই আবর্তে নদেরচাঁদ খেলার ছলে তার স্ত্রীকে লেখা একটি চিঠি ছুঁড়ে ফেলল। সঙ্গে সঙ্গেই তার মনে হলো চিঠিটা পেয়েই নদী যেন সেটা তার নিজের স্রোতের মধ্যে লুকিয়ে ফেলল। নদেরচাঁদের মনে হলো নদীও যেন তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিয়েছে। উন্মত্ত হয়ে উঠেছে নদীর জলপ্রবাহ। নদীর এই খেলায় যোগ দেওয়া এবং জলপ্রবাহের এমন উন্মত্ততা – এই সব কিছু দেখেই নদেরচাঁদের নদীকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল।

আজ তার মনে হইল কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের? – নদেরচাঁদের কেন ব্রিজটিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়েছিল?

  • নদীর সঙ্গে বন্ধুত্ব – নদেরচাঁদ ছেলেবেলা থেকেই নদীকে ভালোবাসত। নদী তার জীবনের সঙ্গে যেন জড়িয়ে গিয়েছিল। কর্মসূত্রে যে নদীটির সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল, সেই নদীটি ছিল প্রশস্ত; তার জলস্রোত ছিল উদ্দাম। এই নদীর সঙ্গে এক অদ্ভুত বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল নদেরচাঁদের। প্রতিদিন নদেরচাঁদ এক অদ্ভুত টানে ছুটে যেত এই নদীর কাছে।
  • নদীর ভয়ংকর রূপ – একবার বর্ষায় নদীকে পাঁচ দিন দেখতে না পেয়ে তার মন ছটফট করেছিল। ছেলেমানুষের মতো আবার নদীকে দেখার জন্য সে উতলা হয়ে উঠেছিল। পাঁচ দিন প্রবল বর্ষণের পর সে আবার নদীকে দেখার সুযোগ পেল। নদীর কাছে গিয়ে সে দেখল, নদী এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।
  • নদীর উন্মত্ততা – নদেরচাঁদের মনে হল, রোষে, ক্ষোভে নদী যেন উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। সে যেন ব্রিজটাকে ভেঙে চুরমার করে ফেলবে। কারণ, এই ব্রিজের জন্যই তার ওই স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ রয়েছে।
  • বন্দিদশা থেকে মুক্তি – নদীটিকে দেখে তার মনে হল, সে যেন বন্দিদশা থেকে মুক্ত হতে চাইছে। তাই নতুন রং করা যে ব্রিজের জন্য একসময় নদেরচাঁদ গর্বিত ছিল, সেই ব্রিজটাকেই এ সময়ে তার অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হল।

তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল। – সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? তার মানসিক অবস্থাটি পাঠ্যাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।

সে-র পরিচয় – নদীর বিদ্রোহ গল্পের উল্লেখিত অংশে সে বলতে নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।

মানসিক অবস্থার বর্ণনা –

  • খেলাসুলভ আচরণ – পাঁচ দিন নদীকে না দেখতে পাওয়ার পরে নদেরচাঁদ যেদিন নদীর কাছে আসে, নদীর উন্মত্ত চেহারা দেখে প্রথমে সে স্তব্ধ হয়ে যায়। তারপর নদীর উচ্ছ্বসিত স্রোতের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে। বৃষ্টির অবিরাম ধারা থাকলেও সে নদীর পাড় ছাড়তে চায় না।
  • আচ্ছন্নতা – নদীর গভীর থেকে উঠে আসা এক অচেনা শব্দ বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে মিশে নদেরচাঁদকে আচ্ছন্ন করে তোলে। সেই ‘ভীষণ মধুর’ শব্দ তার শরীরকে অবশ করে দেয়। ধীরে ধীরে দিনের আলো ফুরিয়ে গিয়ে চারপাশ অন্ধকারে ঢেকে যায়। বৃষ্টি থেমে কিছুক্ষণ পর আবার প্রচণ্ড বেগে শুরু হয়।
  • দিশেহারা হয়ে ওঠা – ব্রিজের উপর দিয়ে চলে যাওয়া ট্রেনের শব্দ নদেরচাঁদকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে। হঠাৎ কোনো চমকপ্রদ ঘটনার মতো, তার মানসিকতায় একটা বড় আঘাত লাগে এবং সে কিছুক্ষণের জন্য দিশেহারা হয়ে পড়ে।
  • ভীত ও অবিশ্বাসী – অতিকষ্টে নদেরচাঁদ উঠে দাঁড়ায় এবং তার মনে ভয় ধরে যায়। সে ভাবে, এমন উন্মত্ত জলরাশির এত কাছে বসে থাকা উচিত হয়নি। এমনকি যে নদী এত ক্ষিপ্রভাবে বয়ে যেতে পারে, তাকে যেন সে আর বিশ্বাস করতে পারে না।

নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে। — নদী কখন বিদ্রোহ করেছিল? এই বিদ্রোহের কোন্ কারণ নদেরচাঁদের বোধগম্য হয়েছিল লেখো।

নদীর বিদ্রোহের সময় –

  • উন্মত্ত রূপ – নদীর বিদ্রোহ গল্পে পাঁচ দিনের অবিরাম বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার উৎসাহে নদেরচাঁদ নদীর কাছে যায়। ব্রিজের কাছাকাছি এসে যে নদীকে সে দেখে, তাতে সে পরিপূর্ণতার বদলে উন্মত্ততা দেখতে পায়। চেনা নদীর এই মূর্তি তার ভীষণ ভয়ংকর লাগে।
  • মুষলধারায় বৃষ্টি – ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষভাগে বসে নদেরচাঁদ অন্য দিনের মতোই নদীকে দেখে, এবং তার সঙ্গে খেলা করিতে থাকে। এই সময়ই মুষলধারে বৃষ্টি নামে। মনে হয়, তিন ঘণ্টার বিশ্রামে মেঘে যেন নতুন শক্তির সঞ্চার হইয়াছে। নদেরচাঁদের মনের ছেলেবেলার আমোদ ক্রমশ মিলাইয়া যায়, এবং তাহার সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হইয়া উঠে।
  • চেহারার পরিবর্তন – ক্রমে দিনের আলো মিলাইয়া গিয়া অন্ধকার গাঢ় হইতে থাকে। কিছুক্ষণ বৃষ্টি থামিয়া আবার প্রবলভাবে শুরু হয়। নদীর সেই ক্রোধে উন্মত্ত চেহারা দেখে নদেরচাঁদ ভয়ে পেয়ে যায়। এই সময়ে নদীর সেই ভয়ংকর রূপকেই নদেরচাঁদের ‘বিদ্রোহ’ বলিয়া মনে হয়।

নদীর বিদ্রোহের কারণ –

  • মানুষের বাধা সৃষ্টি – নদেরচাঁদ নদীর এই বিদ্রোহের কারণ বুঝিবার চেষ্টা করে। তাহার মনে হয় মানুষ নদীকে বাঁধার চেষ্টা করিয়াছে, তাহার তৈরি করা ব্রিজের সাহায্যে। নদী যেন সেই বাধাকে ভাঙিয়া ভাসাইয়া লইয়া যাইতে চায়। দুই পাশে মানুষের হাতে গড়া বাঁধকে চুরমার করিয়া সে তাহার স্বাভাবিক গতিতে চলিতে চায়।
  • স্বাভাবিক মুক্তগতি – নিজের স্বাভাবিক মুক্ত গতি ফিরে পাওয়ার জন্যই যেন নদীর এই বিদ্রোহ।

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের তৃতীয় বিভাগ ‘নদীর বিদ্রোহ’ নিয়ে বিশ্লেষণমূলক ও রচনাধর্মী প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে টেলিগ্রামে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়াও, এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন বা যার প্রয়োজন হতে পারে তার সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন