দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

Gopi

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নদীর বিদ্রোহ গল্পটি প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচারের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ। গল্পে দেখা যায়, মানুষ নদীর উপর নির্যাতন চালায়। তারা নদীর বুকে বাঁধ দেয়। এর ফলে নদী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং বিদ্রোহ করে।

দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

নদীর বিদ্রোহ গল্প অবলম্বনে নদীর প্রতি নদেরচাঁদের অকৃত্রিম ভালোবাসার পরিচয় দাও।

অথবা, ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাঁদের নদীর প্রতি যে ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব চিত্রিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

  • জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদের জন্ম থেকেই যেন নদী তার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে। তাই বর্ষায় পাঁচ দিন নদীকে দেখতে না পেলে তার মন ছটফট করত, ছেলেমানুষের মতো উৎসুক হয়ে উঠত সে নদীর দেখা পাওয়ার জন্য।
  • জীবনের অতিবাহক ও পরমাত্মীয় – নদীর ধারেই তার শৈশব, কৈশোর এবং যৌবন কেটেছে। স্টেশনমাস্টারের কাজ নিয়ে এসে তার পরিচয় হয় এক প্রশস্ত ও জলপূর্ণ এক নদীর সঙ্গে। নদীটিকে সে যেমন ভালোবেসেছিল তেমনই সে তার দেশের ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটিকেও নিজের পরমাত্মীয়ারূপে ভালো বেসেছিল। অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে যাওয়া নদীর জন্য ছেলেবেলায় সে এমনভাবে কেঁদেছিল যেন কঠিন রোগে তার কোনো পরমাত্মীয়া মৃত্যুমুখে পড়েছে।
  • খেলায় মেতে ওঠা – বর্ষার জলে তার কর্মস্থলের কাছে অবস্থিত পরিপুষ্ট নদীটির উচ্ছল আনন্দের ছোঁয়া নদেরচাঁদের মনেও লেগেছিল। সেই নদীর পঙ্কিল জলস্রোতের আবর্তে সে তার স্ত্রীকে লেখা চিঠি ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলে এক অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছিল, তার মনে হয়েছিল নদী যেন সেই চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের স্রোতের গভীরে তা লুকিয়ে ফেলছে।
  • বন্দিদশা থেকে মুক্তি কামনা – বাঁধ আর ব্রিজের মধ্যে বন্দি থাকা নদীর মুক্তিলাভের কামনা করেছিল নদেরচাঁদ। নদীর বন্দিদশা নদেরচাঁদকেও নিদারুণ কষ্ট দিয়েছিল।
  • উপসংহার – এইভাবে নদী কখনও নদেরচাঁদের পরমাত্মীয়, কখনও-বা বন্ধু হয়ে উঠেছিল। কিন্তু নদীর কথা ভাবতে ভাবতে এক সময় অজান্তেই চলন্ত ট্রেন পিষে দিয়েছিল নদেরচাঁদকে। নদেরচাঁদ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে নদীর প্রতি তার ভালোবাসার দাম চুকিয়ে দিয়ে গিয়েছিল।

নদেরচাঁদ নদীকে ভালোবাসার প্রতিদান কীভাবে পেয়েছিল গল্পের প্রেক্ষিতে তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

  • প্রাককথন – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদের জীবনে ছেলেবেলা থেকেই জড়িয়ে আছে নদী।
  • নদীর প্রতি টান অনুভব – স্টেশনমাস্টার হিসেবে কর্মসূত্রে সে যেখানে এসেছে সেখানেও ব্রিজ, বাঁধ দিয়ে ঘেরা এক নদীর জন্য সে এইরকম টান অনুভব করেছে। ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি, সিমেন্টে গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে প্রতিদিন সে নদীকে দেখেছে।
  • নদীর বিদ্রোহ অনুভব – বর্ষার কারণে ওই নদীকে পাঁচ দিন দেখতে না পেয়ে সে ছেলেমানুষের মতো ছটফট করেছে।
  • নদীর মুক্তি কামনা – বাঁধে ঘেরা নদীর জলোচ্ছ্বাস দেখে তার মনে হয়েছে নদী যেন বিদ্রোহ করছে। নদীর যন্ত্রণা সে-ও যেন মন থেকে অনুভব করেছে। তাই সে নদীর মুক্তি কামনা করেছে। যে রং করা ব্রিজের জন্য সে একদিন গর্ব অনুভব করেছে পরে নদীর বন্দিদশার কারণে সেই ব্রিজকেই তার অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়েছে।
  • নদীকে ভালোবাসার প্রতিদান – এসব ভাবতে ভাবতে নদেরচাঁদ যখন রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে স্টেশনের দিকে এগিয়ে গেছে, তখনই একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন তাকে পিষে দিয়ে চলে গেছে। যন্ত্রসভ্যতার বিরুদ্ধে গিয়ে নদীরই পক্ষ নিয়েছিল নদেরচাঁদ। তাই গল্পের শেষে নদীকে ভালোবাসার ফলস্বরূপ তার জীবনে নেমে এসেছে করুণ পরিণতি। নদীকে ভালোবাসার প্রতিদান সে এইভাবেই পেয়েছে।

নদীর বিদ্রোহ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

যে-কোনো সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামকরণের মাধ্যমেই কোনো সাহিত্যের বিষয়বস্তু বা ভাবটি পাঠকের কাছে ফুটে ওঠে। সাধারণত সাহিত্যের নামকরণ হয় তার বিষয়বস্তুকেন্দ্রিক, চরিত্রধর্মী বা ভাব অনুযায়ী। আবার কখনও তা হয় ব্যঞ্জনাধর্মী।

নদীর বিদ্রোহ নামকরণটি ব্যঞ্জনাধর্মী। এখানে মানুষ এবং নদীর মধ্যেকার এক অদ্ভুত সখ্যের বর্ণনা পাই আমরা। গল্পে দুটি নদীর কথা জানা যায়। এদের একটি হল নদেরচাঁদের দেশের ক্ষীণস্রোতা নদী আর অন্যটি হল সেই নদী যার সঙ্গে স্টেশনমাস্টারি করতে এসে নদেরচাঁদের আলাপ হয়। ওই নদীটি ছিল বন্দি। বাঁধ দিয়ে মানুষ তাকে বন্দি করেছিল। ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদী এক জীবন্ত সত্তা হিসেবে ধরা দিয়েছে। বর্ষার জলে এই নদীর পঙ্কিল জলস্রোতে দেখা দিয়েছে উন্মাদনা, চঞ্চল হয়ে উঠেছে তার স্রোত।

মানুষ নিজেদের সুবিধার জন্য বাঁধ দিয়ে এই নদীকে বন্দি করেছে, তৈরি করেছে ব্রিজ। সব কিছুই মানুষ করেছে যন্ত্রসভ্যতার সাহায্যে, নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে। নিজেদের প্রয়োজনে তারা নদীর স্বাভাবিক গতিকে আটকে রেখেছে। আর সেই কারণেই এই গল্পে নদী যেন বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে। সে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে যন্ত্রসভ্যতার বিরুদ্ধে। যারা তাকে বন্দি করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে সে এই ব্রিজ আর বাঁধ ভেঙে ফেলে সে যেন তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে চেয়েছে। আর তাই সে তার উন্মত্ত জলস্রোতের মধ্য দিয়ে সেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। তখন ‘বাঁধ ভেঙে দাও’ মন্ত্রে যে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে নদীটি। তাই গল্পের প্রেক্ষিতে বিচার করলে ‘নদীর বিদ্রোহ’ নামকরণটি যথার্থ ও সার্থক হয়েছে বলা যায়।

নদীর বিদ্রোহ গল্পে নদেরচাঁদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে লেখক পাঠকের উদ্দেশে যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

  • নদীপ্রীতি – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে জন্মভূমির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটিকে দিয়েই নদেরচাঁদের নদীপ্রীতির সূচনা। আর কর্মস্থলের নদীটি তার সেই আবেগের পরবর্তী পর্যায়। রবীন্দ্রনাথের বলাই যেমন গাছের কথা ভাবতে ভাবতে নিজেই মনেপ্রাণে একটা গাছ হয়ে উঠেছিল, এই গল্পে নদেরচাঁদও নদীর কথা ভাবতে ভাবতে যেন নিজে নদী হয়ে গেছিল।
  • নদী নিয়ে ভাবনা – নদীর শুষ্কতা, জলোচ্ছ্বাস যেন নদেরচাঁদেরই জীবনের জোয়ারভাটা। তার কাছে নদীকে বাঁধ দেওয়ার অর্থ জীবনের গতি রুদ্ধ করা। নদীর ওপর নির্মিত সেতু দেখতে সুন্দর; কিন্তু তাতে নদীর স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ হয়ে যায়। নদেরচাঁদের কাছে নদীর ব্রিজ বা সেতু আগ্রাসী মানুষের ঔদ্ধত্যের প্রতীক। বর্ষায় নদীর জলোচ্ছ্বাস যেন সেই যন্ত্রসভ্যতার বিরুদ্ধেই নদীর বিদ্রোহের প্রকাশ। নদেরচাঁদ সেটাই অনুভব করে। ফলস্বরূপ নদীর ওপরের ব্রিজটির তখন নদেরচাঁদের কাছে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।
  • যন্ত্রসভ্যতার প্রতিশোধ – গল্পের উপসংহারে এসব কথা ভাবতে ভাবতেই নদেরচাঁদ রেললাইনের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ট্রেনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়। নদেরচাঁদের মৃত্যুর ঘটনার মধ্য দিয়ে যন্ত্রসভ্যতা যেন প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসা এবং পক্ষপাতের মধুর প্রতিশোধ নেয়।

নদীর বিদ্রোহ গল্পে নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের যে সম্পর্ক প্রকাশিত হয়েছে, তার রূপটি বর্ণনা করো।

  • কথামুখ – ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সম্পর্কের রূপটি গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে।
  • সমর্পিত ভালোবাসা – নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে একটি বেদনাপূর্ণ চিঠি লিখেছিল, এ কথা যেমন সত্যি, তেমনভাবেই আরও বড়ো সত্যি হল, শুধু নদীর সঙ্গে খেলার তুচ্ছ ছেলেমানুষি নেশায় পড়ে সে সেই চিঠিটি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়েও দিয়েছিল। এভাবে স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসাকে সে যেন নদীর ভালোবাসার মধ্যে সমর্পণ করেছিল।
  • হৃদয়-যন্ত্রণার প্রকাশ – প্রিয় নদীটিকে একবার চোখের দেখা না দেখলে সে শান্তি পেত না। নদীর কুলুকুলু শব্দ আর বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজ সংগীতের ঐকতান হয়ে নদেরচাঁদের দেহ-মনকে অবসন্ন করে, বিভোর করে তুলত। নদীর ওপরে ব্রিজ তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিকে রুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে নদেরচাঁদের হৃদয়ও যন্ত্রণায় ফেটে পড়তে চায়।
  • ভালোবাসার প্রতিশোধ – কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস, তাকেও মরতে হয় যন্ত্রসভ্যতার কাছেই। চলন্ত রেলগাড়ি যন্ত্রদানবের মতোই মুহূর্তে নদেরচাঁদকে পিষে দিয়ে চলে যায়-প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসার চরম প্রতিশোধ যেন নেয় যন্ত্রসভ্যতা।

নদীর বিদ্রোহ গল্পের নদেরচাঁদ চরিত্রটি আলোচনা করো।

  • কথামুখ – নদীর বিদ্রোহ গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ। তাকে অবলম্বন করেই কাহিনির বিকাশ। সেখান থেকে নদেরচাঁদের বৈশিষ্ট্য ও নিজস্বতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
  • পরিচয় – নদেরচাঁদের বয়স তিরিশ বছর এবং সে স্টেশন মাস্টারের পদে চাকরি করে। দিনরাত মেল, প্যাসেঞ্জার আর মালগাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব তার।
  • প্রকৃতি প্রেমিক – পেশাগত দায়িত্বের বাইরে নদেরচাঁদ আদ্যন্ত নদীপ্রেমিক। নদীর প্রতি তার এই ভালোবাসার সূচনা শৈশব-কৈশোরে দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কেন্দ্র করে। আর পরবর্তীতে তার বিকাশ কার্যক্ষেত্রের বড়ো নদীটিকে নিয়ে।
  • রোমান্টিকতা – নদীর প্রতি নদেরচাঁদের ভালোবাসা প্রায় অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়, এবং তার প্রকাশ দেখা যায় নদেরচাঁদের ছোটোবেলা থেকেই। দেশের নদী শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে নদেরচাঁদ প্রায় কেঁদে ফেলেছিল। – দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগিতে ভুগিতে পরমাত্মীয়া মরিয়া যাওয়ার উপক্রম করিলে মানুষ যেমন কাঁদে। পরবর্তীতে কর্মক্ষেত্রে থাকাকালীন প্রবল বৃষ্টির কারণে পাঁচদিন নদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হলে সে পাগলের মতো হয়ে যায়। বৃষ্টি থামলেই সে নদীর কাছে যায়। এমনকি স্ত্রী-কে লেখা চিঠির পৃষ্ঠা জলে ভাসিয়ে সে নদীর সঙ্গে খেলা করে।
  • নিজস্বতা – নদীকে নিয়ে নদেরচাঁদের ভাবনা একেবারেই তার নিজস্ব। বর্ষায় উন্মত্ত নদীকে দেখে তার মনে হয় মানুষের তৈরি বাঁধকে চূর্ণ করে সে নিজের বয়ে যাওয়ার পথ করে নিতে চায়। মানুষের সঙ্গে সভ্যতার এই লড়াই-এ নদীর জয়লাভ নিয়ে চিন্তিত হয় নদেরচাঁদ। ব্রিজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তার মনে প্রশ্ন জাগে।
  • ভাবুক – নদীর কথা ভাবতে ভাবতে ট্রেনের চাকায় পিষে যায় নদেরচাঁদ। প্রকৃতির পক্ষ নেওয়ায় যন্ত্রসভ্যতা যেন তার প্রতিশোধ নেয়। যেন বুঝিয়ে দেয় যে, নদেরচাঁদের মত মানুষরা এই সভ্যতায় টিকে থাকতে পারে না।

ছোটোগল্প হিসেবে ‘নদীর বিদ্রোহ’ কতদূর সার্থক বিচার করো।

  • ছোটোগল্পের মূলকথা – ছোটোগল্পে লুকিয়ে থাকে বৃহত্তর জীবনের ব্যঞ্জনা। ‘ছোটো প্রাণ, ছোটো ব্যথা/ছোটো ছোটো দুঃখকথা’ হলেও ছোটোগল্প ছোটো পরিসরে সমগ্র জীবনের ঘটনাকে তুলে ধরে। এর গতি হয় সোজা ও একমুখী। গল্পের শেষে মনে হয় – শেষ হয়েও হইল না শেষ। এই সংক্ষিপ্ত বৈশিষ্ট্যের আলোয় ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পটি বিচার করা যেতে পারে।
  • ছোটোগল্প হিসেবে ‘নদীর বিদ্রোহ’-এর সার্থকতা – নদেরচাঁদের নদীপ্রীতিই গল্পের মূল বিষয়। আর গল্পের ব্যঞ্জনায় উঠে এসেছে নদীর বিদ্রোহ। নদীকে মানুষ বাঁধ দিয়ে বন্দি করে। নদীর ওপর তৈরি করে কংক্রিটের ব্রিজ। যন্ত্রসভ্যতার তার প্রবল পেষণে পিষ্ট করে, রুদ্ধ করে, নদীর স্বাভাবিক গতিকে। নদেরচাঁদ মনে করেছে, এটাই নদীর শিকল। বর্ষায় নদী প্রাণ ফিরে পায়। তাই নদীর প্রবল স্রোতই তার বিদ্রোহের প্রকাশ। তার জলের ঘূর্ণিপাকই তার বন্দিদশার যন্ত্রণার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে। নদেরচাঁদের মনে হয়েছে, পরিপূর্ণ নদী প্রাণশক্তির প্রতীক। মনে করলে নদী এই সব কিছু চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারে, ভেঙে ফেলতে পারে কংক্রিটের ব্রিজ। নদীর দুরন্ত প্রবাহের মধ্যে নদেরচাঁদ নদীর বন্দিদশা থেকে মুক্তির চেষ্টা দেখতে পেয়েছে। একটিই মাত্র চরিত্রের ভাব ও ভাবনাকে কেন্দ্র করে পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে। গল্পের শেষে নদেরচাঁদ চরিত্রটির করুণ পরিণতি পাঠককে অতৃপ্তির বেদনায় অভিভূত করে। এভাবেই ছোটোগল্প হিসেবে ‘নদীর বিদ্রোহ’ স্বতন্ত্র ও ব্যতিক্রমী।

নদীর বিদ্রোহ একটি চিন্তাশীল গল্প। এই গল্পটি আমাদের প্রকৃতির প্রতি সচেতন হতে এবং প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer