দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা নদীর বিদ্রোহ গল্পটি প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর একটি অসাধারণ রচনা। গল্পটিতে নদীর বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

Table of Contents

দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক। — নদেরচাঁদের নদীর প্রতি এত ভালোবাসার কারণ কী? সেই ভালোবাসার পরিচয় দাও।

নদীর প্রতি ভালোবাসার কারণ – মানিক বন্দোপাধ্যায়েই ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাঁদের নদীর প্রতি ছিল অস্বাভাবিক মায়া। তাই স্টেশনমাস্টারের গুরুদায়িত্ব সামলেও নদীকে দেখার জন্য সে আকুল হয়ে ওঠে। প্রবল বর্ষণে পাঁচদিন নদীকে না দেখতে পাওয়ায় বৃষ্টি থামলেই সে নদীকে দেখার জন্য ছুটে যায়। নদীর জন্য এমনভাবে পাগল হওয়া তার মানায় না বুঝেও সে নিজেকে বোঝাতে পারে না। বরং নিজের এই পাগলামিতে আনন্দই উপভোগ করে সে। এর একটা কারণও সে খুঁজে নেয়। নদীর ধারেই তার জন্ম এবং বড়ো হয়ে ওঠা-তাই চিরদিনই নদীর প্রতি তার এত ভালোবাসা।

ভালোবাসার পরিচয় –

  • নদীর জন্য কান্না – প্রথম জীবনে দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে নদেরচাঁদ কেঁদে ফেলেছিল।
  • নদীর প্রতি আকুলতা – একইভাবে কর্মক্ষেত্রে এসেও পাঁচ দিন প্রবল বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পাওয়ায় আকুল হয়ে ওঠে সে। বৃষ্টি একটু থামতেই তার মনে হয়- ব্রিজের একপাশে আজ চুপচাপ বসিয়া কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না। বর্ষায় উন্মত্ত নদীর সঙ্গে সে খেলা করে। স্ত্রীকে লেখা চিঠিও সে নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়।
  • নদীকে সমর্থন – আবার ব্রিজ দিয়ে নদীকে বেঁধে রাখার চেষ্টাও মানতে পারে না সে। নদীর বিদ্রোহী চরিত্রকে সে মনে মনে সমর্থন করে। এভাবেই নদীর প্রতি তার ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে।

নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে। – কার, কোন্ পাগলামির কথা এখানে বলা হয়েছে? কীভাবে সে পাগলামিতে আনন্দ উপভোগ করে লেখো।

অথবা, নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে। – কার ‘পাগলামি’-র কথা বলা হয়েছে? গল্প অনুসরণে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাগলামির পরিচয় দাও।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ও তার পাগলামি – কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে তিরিশ বছর বয়সেও নদীর জন্য। নদেরচাঁদের অতিরিক্ত মায়াকে একটু অস্বাভাবিক বলেই মনে হত। নদেরচাঁদের নদীর প্রতি এই ভালোবাসাকেই ‘পাগলামি’ বলা হয়েছে।

পাগলামিতে আনন্দ উপভোগ –

  • আপন হয়ে ওঠা – নদীর ধারেই নদেরচাঁদের দেশ। নদীই তার আবাল্য বন্ধু। স্টেশনমাস্টারের কাজে এসে আর-এক নদীর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। এই নদীটিও তার আপন হয়ে ওঠে।
  • চিন্তায় মশগুল থাকা – কাজের ব্যস্ততার মাঝেও সে এই নদীর চিন্তায় মশগুল হয়ে থাকত। এই নদীটি বর্ষার জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠলে সে বিস্মিত হয়ে নদীর জলস্রোতের চঞ্চলতা দেখত। নদেরচাঁদের মনে হত নদীর এই চঞ্চলতা যেন তার আনন্দেরই প্রকাশ।
  • একাত্ম হয়ে ওঠা – দিবারাত্রি প্যাসেঞ্জার ও মালগাড়ির তীব্রবেগে ছোটাছুটি নিয়ন্ত্রণ করা যার কাজ, তার নদীর জন্য এমন পাগল হওয়া সাজে কি না সে প্রশ্ন নদেরচাঁদের মধ্যে প্রায়ই জাগত। নদেরচাঁদ নিজেও এ কথা বোঝে, কিন্তু মনকে কিছুতেই বোঝাতে পারে না। আসলে মানসিকভাবে সে নদীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিল।
  • সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়ে থাকা – নদীর সুখ-দুঃখের অংশীদার হতে পেরে সে নিজেকে ধন্য মনে করত।
  • শেষের কথা – নদীপ্রীতির এই পাগলামিতে নদেরচাঁদ উপভোগ করত এক অদ্ভুত আনন্দ, যা ছিল একান্তই তার নিজস্ব।

নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটি কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে। – কী কৈফিয়ত দিতে পারে? এই ভালোবাসার কীরূপ পরিণতি হয় লেখো।

কৈফিয়তের বিষয় – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদীকে ভালোবাসার একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ ভেবেছিল। নদীর ধারে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। তাই নদীর প্রতি তার এই ভালোবাসা চিরদিনের। অনাবৃষ্টির কারণে দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে নদেরচাঁদ কেঁদেছিল। আবার কর্মক্ষেত্রেও নদীর সঙ্গে তার সখ্যের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

ভালোবাসার পরিণতি – নদীর প্রতি এই ভালোবাসার চূড়ান্ত মূল্য নদেরচাঁদকে দিতে হয়েছিল। বর্ষায় নদীর যে উন্মত্ত রূপ তার মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল, তাকেই নদীর বিদ্রোহ বলে মনে হয়েছে নদেরচাঁদের। মানুষ ব্রিজ তৈরি করে নদীকে বাঁধতে চেয়েছে। কিন্তু নিজের স্বাভাবিক গতির এই রোধ নদী মানতে পারেনি। ব্রিজ ভেঙে ভাসিয়ে দিয়ে সে নিজের চলার পথ করে নিতে চেয়েছে। নদেরচাঁদ জানে যে ব্রিজ ভাঙলেও মানুষ আবার তা গড়ে নেবে। তার মনে হয়, এই ব্রিজের কোনো প্রয়োজন ছিল না। নদেরচাঁদ যখন এসব চিন্তায় ডুবেছিল ঠিক তখনই একটি চলন্ত ট্রেন তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। যন্ত্রসভ্যতার প্রয়োজনীয়তাকে প্রশ্ন করার স্পর্ধা দেখিয়েছিল সে। প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসার চূড়ান্ত মূল্য এভাবেই জীবন দিয়ে মিটিয়ে দিতে হয় নদেরচাঁদকে।

মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে? – নদেরচাঁদের এ কথা মনে হওয়ার কারণ বর্ণনা করো।

  •  নদীর প্রতি ভালোবাসা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পটিতে একজন সাধারণ স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ নদীকে ভালোবেসেছিল পরমাত্মীয়, বন্ধুর মতো। নদীর প্রতি সে এক অসম্ভব টান অনুভব করত। তার জীবনের যেন অর্ধেকটা জুড়েই ছিল নদী। যেখানেই সে থেকেছে, সেখানকার নদীকেই সে ভালোবেসেছে।
  • নদীর বিদ্রোহের উপলব্ধি – স্টেশনমাস্টারের কাজ নিয়ে এসে সে পরিচিত হয় প্রশস্ত জলপূর্ণ অথচ বন্দি এক নদীর সঙ্গে। ব্রিজ, বাঁধ দিয়ে ওই নদীকে বন্দি করে রেখেছে মানুষ। একবার প্রবল বৃষ্টির পর নদীর উচ্ছ্বসিত ফেনিল জলরাশি দেখে নদেরচাঁদের মনে হয়েছিল নদী যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে।
  • নদীর প্রতিবাদী সত্তার অনুভব – ব্রিজ আর বাঁধকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে নদী যেন ফিরে পেতে চাইছে তার স্বাভাবিক গতি। নদী যেন যন্ত্রসভ্যতার বিরোধিতা করার মাধ্যমে পরোক্ষে প্রকৃতির লাঞ্ছনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
  • মানুষের স্বার্থপরতা – এইরকম পরিস্থিতিতে নদেরচাঁদের মনে হয়েছে, আজ যদি নদী ব্রিজ, বাঁধ ভেঙে নিজের বন্দিদশা কাটিয়েও ওঠে, তবুও মানুষ তাকে রেহাই দেবে না। নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে আবারও নদীকে বন্দি করবে তারা। আবার মানুষ গড়ে তুলবে ব্রিজ, গড়ে তুলবে বাঁধ। প্রশস্ত নদীকে পরিণত করবে এক ক্ষীণস্রোতা নদীতে।

জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল। – কার জলপ্রবাহকে জীবন্ত মনে হল? জীবন্ত মনে হওয়ার কারণ কী ছিল তা বর্ণনা করো।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ ছোটোগল্পে নদেরচাঁদের নদীকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল।

জীবন্ত মনে হওয়ার কারণ –

  • নদীর প্রতি টান অনুভব – ইতিপূর্বে তার দেশের নদীটির সঙ্গে নদেরচাঁদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠলেও সেই নদীটি ছিল ক্ষীণ, রুগ্ণ। স্টেশনমাস্টারি করতে এসে নদেরচাঁদ এক নতুন নদীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। সে নদী ছিল প্রশস্ত, বর্ষায় তার জলপ্রবাহ হয়ে উঠত উদ্দাম, উন্মত্ত। আর এক অদ্ভুত ভালোবাসার টানে নদেরচাঁদ প্রতিদিন ওই নদীকে দেখতে ছুটে যেত। ব্রিজের ধারে বসে সে নদীকে দেখত।
  • নদীর উন্মত্ততা – এইরকমই এক বর্ষার দিনে নদীর উদ্দাম জলস্রোত ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে ফেনিল আবর্ত রচনা করছিল। নদীর সেই আবর্তে নদেরচাঁদ খেলার ছলে তার স্ত্রীকে লেখা একটি চিঠি ছুঁড়ে ফেলল। সঙ্গে সঙ্গে তার মনে হল চিঠিটা পেয়েই নদী যেন সেটা তার নিজের স্রোতের মধ্যে লুকিয়ে ফেলল। নদেরচাঁদের মনে হল নদীও যেন তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিয়েছে। উন্মত্ত হয়ে উঠেছে নদীর জলপ্রবাহ। নদীর এই খেলায় যোগ দেওয়া এবং জলপ্রবাহের এমন উন্মত্ততা-এই সব কিছু দেখেই নদেরচাঁদের নদীকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল।

আজ তার মনে হইল কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের? – নদেরচাঁদের কেন ব্রিজটিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়েছিল?

  • নদীর সঙ্গে বন্ধুত্ব – নদেরচাঁদ ছেলেবেলা থেকেই নদীকে ভালোবাসত। নদী তার জীবনের সঙ্গে যেন জড়িয়ে গিয়েছিল। কর্মসূত্রে যে নদীটির সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল সেই নদীটি ছিল প্রশস্ত, তার জলস্রোত ছিল উদ্দাম। এই নদীর সঙ্গে এক অদ্ভুত বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল নদেরচাঁদের। প্রতিদিন নদেরচাঁদ এক অদ্ভুত টানে ছুটে যেত এই নদীর কাছে
  • নদীর ভয়ংকর রূপ – একবার বর্ষায় নদীকে পাঁচ দিন দেখতে না পেয়ে তার মন ছটফট করেছিল। ছেলেমানুষের মতো আবার নদীকে দেখার জন্য সে উতলা হয়ে উঠেছিল। পাঁচ দিন প্রবল বর্ষণের পর সে আবার নদীকে দেখার সুযোগ পেল নদীর কাছে গিয়ে সে দেখল নদী এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।
  • নদীর উন্মত্ততা – নদেরচাঁদের মনে হল রোষে, ক্ষোভে নদী যেন উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। সে যেন ব্রিজটাকে ভেঙে চুরমার করে ফেলে দেবে।কারণ এই ব্রিজের জন্যই তার ওই স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ রয়েছে।
  • বন্দিদশা থেকে মুক্তি – নদীটিকে দেখে তার মনে হল সে যেন বন্দিদশা থেকে মুক্ত হতে চাইছে। তাই নতুন রং করা যে ব্রিজের জন্য একসময় নদেরচাঁদ গর্ব ছিল সেই ব্রিজটাকেই এ সময়ে তার অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হল।

তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল। – ‘সে’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? তার মানসিক অবস্থাটি পাঠ্যাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।

সে-র পরিচয় – ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের উল্লিখিত অংশে ‘সে’ বলতে নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।

মানসিক অবস্থার বর্ণনা –

  • খেলাসুলভ আচরণ – পাঁচ দিন নদীকে না দেখতে পাওয়ার পরে নদেরচাঁদ যেদিন নদীর কাছে এল, নদীর উন্মত্ত চেহারা দেখে প্রথমে সে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কিন্তু তারপরে নদীর উচ্ছ্বসিত জলস্রোতের সঙ্গে সে খেলায় মেতে ওঠে। এরই মধ্যে অবিশ্রান্ত ধারায় বৃষ্টি শুরু হলেও সে নদীর ধার থেকে ওঠে না।
  • আচ্ছন্নতা – নদীর ভিতর থেকে আসা একটা অপরিচিত শব্দ বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে মিলে তাকে আচ্ছন্ন করে তোলে। সেই ‘ভীষণ মধুর’ শব্দ তার সর্বাঙ্গকে অবশ ও অবসন্ন করে দেয়। ক্রমে দিনের আলো মিলিয়ে গিয়ে চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে। বৃষ্টি কিছুক্ষণ থেমে আবার প্রবলবেগে শুরু হয়।
  • দিশেহারা হয়ে ওঠা – ব্রিজের উপর দিয়ে চলে যাওয়া একটা ট্রেনের শব্দ নদেরচাঁদকে বাস্তব জগতে ফিরিয়ে আনে। হঠাৎ কোনো আঘাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো একটা মানসিক বেদনা কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাঁদকে দিশেহারা করে তোলে।
  • ভীত ও অবিশ্বাসী – অতিকষ্টে নদেরচাঁদ উঠে দাঁড়ায় এবং তার মনে ভয়ের জন্ম হয়। তার মনে হয় যে, ক্ষোভে উন্মত্ত এই জলরাশির এত কাছে তার এমনভাবে বসে থাকা উচিত হয়নি। যে নদী এমনভাবে খেপে যেতে পারে নদেরচাঁদ তাকে যেন আর বিশ্বাস করতে পারে না।

নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে। — নদী কখন বিদ্রোহ করেছিল? এই বিদ্রোহের কোন্ কারণ নদেরচাঁদের বোধগম্য হয়েছিল লেখো।

নদীর বিদ্রোহের সময় –

  • উন্মত্ত রূপ – ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে পাঁচ দিনের অবিরাম বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার উৎসাহে নদেরচাঁদ নদীর কাছে যায়। ব্রিজের কাছাকাছি এসে যে নদীকে সে দেখে, তাতে সে পরিপূর্ণতার বদলে উন্মত্ততা দেখতে পায়। চেনা নদীর এই মূর্তি তার ভয়ংকর লাগে।
  • মুশলধারায় বৃষ্টি – ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষভাগে বসে অন্যদিনের মতোই নদেরচাঁদ নদীকে দেখে, তার সঙ্গে খেলা করতে থাকে। এইসময়ই মুশলধারে বৃষ্টি নামে। মনে হয়, তিন ঘণ্টার বিশ্রামে মেঘে যেন নতুন শক্তির সঞ্চার হয়েছে। নদেরচাঁদের মনের ছেলেবেলার আমোদ ক্রমশ মিলিয়ে গিয়ে তার সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হয়ে ওঠে
  • চেহারার পরিবর্তন – ক্রমে দিনের আলো মিলিয়ে অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসে। বৃষ্টি কিছুক্ষণ থেমে আবার প্রবলভাবে শুরু হয়। নদীর সেই ক্ষোভে উন্মত্ত চেহারা দেখে নদেরচাঁদ ভয় পেয়ে যায়। এই সময়ে নদীর ওই ভয়ংকর রূপকেই নদেরচাঁদের ‘বিদ্রোহ’ বলে মনে হয়।

নদীর বিদ্রোহের কারণ –

  • মানুষের বাধা সৃষ্টি – নদেরচাঁদ নদীর এই বিদ্রোহের কারণ বোঝার চেষ্টা করে। তার মনে হয় মানুষ নদীকে বাঁধার যে চেষ্টা করেছে তার তৈরি করা ব্রিজের সাহায্যে। নদী সেটাকে ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায়। দু-পাশে মানুষের হাতে-গড়া বাঁধকে চুরমার করে সে স্বাভাবিক গতিতে বয়ে যেতে চায়।
  • স্বাভাবিক মুক্তগতি – নিজের স্বাভাবিক মুক্ত গতি ফিরে পাওয়ার জন্যই যেন নদীর এই বিদ্রোহ।

নদীর বিদ্রোহ গল্পটি একটি অসাধারণ রচনা। গল্পটি প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়। গল্পটি আমাদের প্রকৃতির প্রতি সচেতন হতে এবং প্রকৃতির সাথে সুন্দরভাবে বসবাস করতে বলে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer