এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে? বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে? বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে?
বিষাক্ত বর্জ্য –
যে সমস্ত বর্জ্য মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীদেহে প্রবেশ করলে বিপাকীয় ও শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কাজে গোলযোগ বা বাধা সৃষ্টি করে নানারকম রোগ সৃষ্টি, শারীরিক ক্ষতি, এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে, সেইসব বর্জ্যকে বিষাক্ত বর্জ্য বলে। জীব-অবিশ্লেষ্য সমস্ত বর্জ্য পদার্থই সাধারণভাবে বিষাক্ত। বিষাক্ত বর্জ্য জল, মাটি, বায়ুকে কলুষিত করে।
বিষাক্ত বর্জ্যের উদাহরণ – বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রবণ, লেড, পারদ, ক্যাডমিয়াম, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড প্রভৃতি।
বিষহীন বর্জ্য –
যে সমস্ত বর্জ্য পদার্থ জীবজগৎ তথা পরিবেশের তেমন ক্ষতি করে না, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে প্রাকৃতিক নিয়মেই যেসব বর্জ্য সাধারণত নির্বিষ পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে যায়, তাদের বিষহীন বর্জ্য বলে। অধিকাংশ জীব-বিশ্লেষ্য বর্জ্য পদার্থ বিষহীন বর্জ্য।
বিষহীন বর্জ্যের উদাহরণ – উদ্ভিদ ও প্রাণীজাত বর্জ্য পদার্থ।
বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য –
পার্থক্যের বিষয় | বিষাক্ত বর্জ্য | বিষহীন বর্জ্য |
ধারণা | যে সকল বর্জ্য পরিবেশ ও জীবজগতের ক্ষতিধারণ করে, সেগুলি হল বিষাক্ত বর্জ্য। | যে সকল বর্জ্য পরিবেশ ও জীবজগতের ক্ষতিসাধন করে না, সেগুলি হল বিষহীন বর্জ্য। |
পরিবেশ মিত্রতা | বিষাক্ত বর্জ্য পরিবেশের ক্ষতি করে। | বিষহীন বর্জ্য পরিবেশের তেমন ক্ষতি করে না। |
প্রকৃতি | বিষাক্ত বর্জ্য জীব দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয় না, তাই এটি জীব অবিশ্লেষ্য প্রকৃতির। | বিষহীন বর্জ্য জীব বিশ্লেষ্য প্রকৃতির হওয়ায় এটি জীব দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়। |
মাটির উর্বরতা | বিষাক্ত হওয়ায় মাটি দূষিত হয় এবং অনুর্বর হয়ে পড়ে। | বিষহীন হওয়ায় মাটি দূষিত হয় না এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। |
উদাহরণ | প্লাস্টিক, কীটনাশক, রাসায়নিক সার প্রভৃতি। | খাবারের অবশিষ্টাংশ, সবজির খোসা প্রভৃতি। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
বিষাক্ত বর্জ্য কাকে বলে?
যে সমস্ত বর্জ্য পদার্থ মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং বিপাকীয় বা শারীরবৃত্তীয় সমস্যা সৃষ্টি করে, তাকে বিষাক্ত বর্জ্য বলে। যেমন — লেড, পারদ, প্লাস্টিক, কীটনাশক ইত্যাদি।
বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে?
যে সমস্ত বর্জ্য পরিবেশ ও জীবজগতের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় এবং প্রাকৃতিকভাবে পচে যায়, তাকে বিষহীন বর্জ্য বলে। যেমন — ফলমূলের খোসা, উদ্ভিদের পাতা, প্রাণীর মল ইত্যাদি।
বিষাক্ত বর্জ্যের কিছু উদাহরণ দাও।
1. ইলেকট্রনিক বর্জ্য (ই-ওয়েস্ট)।
2. প্লাস্টিক ও পলিথিন।
3. কীটনাশক ও রাসায়নিক সার।
4. পারদ, লেড, ক্যাডমিয়ামযুক্ত বর্জ্য।
বিষহীন বর্জ্যের কিছু উদাহরণ দাও।
1. ফল ও সবজির খোসা।
2. কাগজ ও কার্ডবোর্ড।
3. গোবর ও জৈব সার।
4. কাঠ ও পাতা।
বিষাক্ত বর্জ্য কীভাবে পরিবেশের ক্ষতি করে?
1. মাটি ও জলের দূষণ ঘটায়।
2. জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে।
3. মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে (ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি)।
বিষহীন বর্জ্য কীভাবে পরিবেশের উপকার করে?
1. জৈব সারে পরিণত হয়ে মাটির উর্বরতা বাড়ায়।
2. পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব।
3. প্রাকৃতিকভাবে পচে গিয়ে দূষণ কমায়।
বিষাক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপায় কী?
1. পুনর্ব্যবহার (রিসাইক্লিং)।
2. নিরাপদ নিষ্কাশন (ল্যান্ডফিল বা ইনসিনারেশন)।
3. রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষকরণ।
বর্জ্য কমানোর জন্য আমরা কী করতে পারি?
1. প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে কাপড় বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার।
2. জৈব বর্জ্য কম্পোস্ট করে সার তৈরি।
3. ইলেকট্রনিক বর্জ্য রিসাইক্লিং সেন্টারে দেওয়া।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে? বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে? বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন