ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব লেখো।

Rohit

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব লেখো। হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের ভূপ্রকৃতি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ
হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ-]
Contents Show

ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব লেখো।

ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব –

বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা –

ভারতের উত্তর সীমানায় হিমালয় পর্বত প্রাচীরের মতো দন্ডায়মান থেকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করছে।

বৃষ্টিপাত –

গ্রীষ্মকালীন দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হিমালয়ে বাধা পেয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা –

শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আগত শীতল বায়ু হিমালয়ে বাধা পাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে না।

চিরপ্রবাহী নদীর উৎস –

হিমালয়ের সুউচ্চ হিমবাহ থেকে বিভিন্ন নদনদীর (সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে।

শিল্পে কাঠের জোগান –

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের একাধিক সরলবর্গীয় ও চিরহরিৎ গাছের কাঠ কাষ্ঠ শিল্পে ব্যবহৃত হয়।

জলবিদ্যুৎ উৎপাদন –

হিমালয় থেকে সৃষ্ট খরস্রোতা নদীগুলিতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

পশুপালন ও চাষবাস –

হিমালয় পর্বতের পার্বত্য ঢালে পশুপালন করা হয় এবং বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ, চা, সিঙ্কোনা, ফল প্রভৃতি চাষ করা হয়।

পর্যটন কেন্দ্র –

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।

হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ লেখো।

হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি –

হিমালয় পর্বত উত্তর-পশ্চিমে পামির গ্রন্থির পূর্বদিক থেকে নির্গত হওয়ার পর অর্ধচন্দ্রাকারে পশ্চিম ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের নামচাবারওয়া শৃঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

হিমালয় পর্বতের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ – পশ্চিম থেকে পূর্বে এর দৈর্ঘ্য প্রায় 2500 কিমি এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে এই পর্বতের প্রস্থ 150-400 কিমি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব কী?

হিমালয় পর্বত ভারতীয় জনজীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলে, যেমন —
1. বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
2. বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে (মৌসুমি বায়ুকে বাধা দিয়ে)।
3. শীতের প্রকোপ কমায় (সাইবেরিয়ার শীতল বায়ুকে আটকে দিয়ে)।
4. চিরপ্রবাহী নদীর উৎস (গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি)।
5. শিল্পে কাঠের যোগান দেয় (শাল, পাইন, দেবদারু ইত্যাদি গাছ থেকে)।
6. জলবিদ্যুৎ উৎপাদন (খরস্রোতা নদীগুলিতে বাঁধ নির্মাণ করে)।
7. পশুপালন ও কৃষিকাজ (আলু, আপেল, চা, ভেষজ উদ্ভিদ চাষ)।
8. পর্যটনশিল্পের বিকাশ (দার্জিলিং, শিমলা, মানালি ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্র)।

হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি কেমন?

হিমালয় উত্তর-পশ্চিমে পামির গ্রন্থি থেকে শুরু হয়ে জম্মু-কাশ্মীরের নাঙ্গা পর্বত থেকে অরুণাচল প্রদেশের নামচাবারওয়া শৃঙ্গ পর্যন্ত প্রায় 2500 কিমি জুড়ে বিস্তৃত। এটি অর্ধচন্দ্রাকারে ভারতের উত্তর সীমান্ত জুড়ে রয়েছে।

হিমালয়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত?

1. দৈর্ঘ্য – প্রায় 2500 কিমি (পশ্চিম থেকে পূর্বে)।
2. প্রস্থ – 150 থেকে 800 কিমি (উত্তর থেকে দক্ষিণে)।

হিমালয় কীভাবে ভারতের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে?

1. গ্রীষ্মে মৌসুমি বায়ুকে বাধা দিয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
2. শীতে সাইবেরিয়ার ঠান্ডা বায়ুকে আটকিয়ে শীতের তীব্রতা কমায়।

হিমালয় থেকে উৎপন্ন প্রধান নদীগুলি কী কী?

গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু, সতলজ, রবি, চেনাব ইত্যাদি।

হিমালয়ের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কী?

1. কৃষি – চা, আপেল, আলু, ভেষজ উদ্ভিদ চাষ।
2. জলবিদ্যুৎ – ভাকরা নাঙ্গাল, টিহরি বাঁধ ইত্যাদি।
3. পর্যটন – হিল স্টেশন ও ট্রেকিংয়ের জন্য বিখ্যাত।
4. বনজ সম্পদ – কাঠ, ঔষধি গাছ ইত্যাদি।

হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?

মাউন্ট এভারেস্ট (8848.86 মিটার), যা নেপাল ও তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত।

হিমালয়ের তিনটি প্রধান শ্রেণি কী কী?

1. বৃহৎ হিমালয় (হিমাদ্রি) – সর্বোচ্চ অংশ।
2. মধ্য হিমালয় (হিমাচল) – দার্জিলিং, শিমলা এখানে অবস্থিত।
3. শিবালিক (বহিঃহিমালয়) – সর্বদক্ষিণের নিচু পাহাড়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব লেখো। হিমালয় পর্বতের বিস্তৃতি, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের ভূপ্রকৃতি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ বলতে কী বোঝো

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্র বলতে কী বোঝো

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্র কী? ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্রের পার্থক্য

About The Author

Rohit

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

প্রিজমের মধ্য দিয়ে সাদা আলোর বিচ্ছুরণ চিত্রসহ আলোচনা করো।

উত্তল লেন্স কীভাবে সদ্‌, অবশীর্ষ ও খর্বাকার প্রতিবিম্ব গঠন করে তা রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখাও।

অবতল লেন্সকে কিছু প্রিজমের সমন্বয়রূপে কল্পনা করে অপসারী ক্রিয়ার ব্যাখ্যা করো।

স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?

দীর্ঘদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কী? এই ত্রুটি কীভাবে দূর করা যায়?