এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে টীকা লেখো।
ধারণা – জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা বলতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নদীর ধারণ অববাহিকার পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র, জলসম্পদ, জলের প্রবাহ প্রভৃতির উন্নতিসাধনকে বোঝায়।
উদ্দেশ্য –
- অববাহিকা অঞ্চলের জলসম্পদের সঠিক ব্যবহার।
- ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধি করা।
- নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বনসৃজনের মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা।
- ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ।
- নদীখাতে পলল সঞ্চয় কমানো ইত্যাদি।
জলবিভাজিকার ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি –
- আর্দ্র অঞ্চলের জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা –
- আর্দ্র অঞ্চলের জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিপর্যয় বা দুর্যোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলিকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নদীখাতকে পলিমুক্ত রাখা।
- বন্যার অতিরিক্ত জলকে সঞ্চয় করার জন্য বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করা।
- ধসপ্রবণ পাহাড়ি অঞ্চলে ইঞ্জিনিয়ারিং দেয়াল তৈরি, ড্রেন নির্মাণ করা ইত্যাদি আর্দ্র অঞ্চলের জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনার অন্তর্গত।
- শুষ্ক অঞ্চলের জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা –
- শুষ্ক অঞ্চলে জলের পরিমিত ব্যবহার।
- কৃষিতে আধুনিক বীজ ব্যবহারের দ্বারা জলের চাহিদা কমানো।
- বড়ো জলাশয়ের নিম্নভাগ সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করতে হবে; যাতে জল চুঁইয়ে মাটিতে না প্রবেশ করে।
- শুষ্ক অঞ্চলে বাষ্পীভবনের পরিমাণ কমাতে কৃষিজমির ওপর আচ্ছাদন ব্যবহার করতে হবে।
- শুষ্ক অঞ্চলে জলের ব্যবহার কমাতে ভুট্টা ও মিলেট জাতীয় ফসলের চাষ বাড়াতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা কী?
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা হলো একটি বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নদীর অববাহিকা অঞ্চলের পরিবেশ, জলসম্পদ, বাস্তুতন্ত্র এবং জলের প্রবাহের উন্নতি সাধন করা হয়।
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনার প্রধান উদ্দেশ্য কী?
এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হলো —
1. অববাহিকা অঞ্চলের জলসম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
2. ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধি করা।
3. নদীতীরে বনায়নের মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা।
4. ভূমিক্ষয় ও পলি সঞ্চয় নিয়ন্ত্রণ করা।
আর্দ্র অঞ্চলে জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি কী?
1. নদীখাত পলিমুক্ত রাখা।
2. বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ।
3. ধসপ্রবণ অঞ্চলে ইঞ্জিনিয়ারিং দেয়াল ও ড্রেন নির্মাণ।
শুষ্ক অঞ্চলে জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা কীভাবে করা হয়?
1. সীমিত জল ব্যবহার নিশ্চিত করা।
2. কৃষিতে কম জল প্রয়োজন এমন ফসল (ভুট্টা, মিলেট) চাষ করা।
3. জলাশয়ের নিচের অংশ সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা।
4. বাষ্পীভবন কমানোর জন্য মাটিতে আচ্ছাদন ব্যবহার।
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব কী?
এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, কৃষি উৎপাদন বাড়ায়, ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং জলসম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করে।
জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনায় বনায়নের ভূমিকা কী?
বনায়ন ভূমিক্ষয় রোধ করে, নদীর পলি সঞ্চয় কমায় এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ভৌমজল সঞ্চয় বৃদ্ধিতে জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা কীভাবে সাহায্য করে?
জল সংরক্ষণ কৌশল (জলাধার, চেক ড্যাম) ব্যবহার করে ভৌমজলের স্তর উন্নত করা যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন