বায়োগ্যাস কাকে বলে? বায়োগ্যাসের ব্যবহার ও বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “পরিবেশের জন্য ভাবনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?

বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো।

বায়োগ্যাস –

বিভিন্ন জৈব পদার্থ বা জীবভর, যেমন – মানুষ ও বিভিন্ন পশু পাখির মলমূত্র (প্রধানত গোবর), শাকসবজির খোসা, কচুরিপানা, ফলের খোসা ও ছিবড়া, খামারজাত বর্জ্য, কৃষিজাত বর্জ্য ইত্যাদি জৈব আবর্জনা বিশেষ কক্ষে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে পচিয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করা হয়। এই মিথেন গ্যাসকে বায়োগ্যাস বা গোবর গ্যাস বলে। এই পদ্ধতিতে প্রায় 60% মিথেন ও বাকি 40% CO2 উৎপন্ন হয়।

বায়োগ্যাস ব্যবহার –

বায়োগ্যাস রান্নার কাজে গ্যাসীয় জ্বালানিরূপে সরাসরি ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বায়োগ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা গৃহস্থলির বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।

বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?

বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?

বায়োগ্যাস উৎপাদন প্ল্যান্টে বিভিন্ন জৈব পদার্থ বা জীবভর, যেমন – মানুষ ও বিভিন্ন পশুপাখির মল (প্রধানত গোবর) শাকসবজির খোসা, কচুরি পানা, ফলের খোসা ও ছিবড়া, খামার জাত বর্জ্য, কৃষিজাত বর্জ্য ইত্যাদি ও সমপরিমাণ জল মিশিয়ে মিশ্রণ আধারে ফেলা হয়, যা ডাইজেস্টার বা পচন আধারে গিয়ে জমা হয়। অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে এই বায়োগ্যাস বা জীবভর 20-30 দিনের মধ্যে ডাইজেস্টার আধারে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে বায়োগ্যাস উৎপন্ন হয়, যা ডাইজেস্টার আধারের Compost tank ওপরে জমা হয়। যত বেশি পরিমাণে বায়োগ্যাস জমা হতে থাকে, তত অবশিষ্ট জৈব আবর্জনা নিষ্কাশন পাইপের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় বর্জ্য আধারে জমা হয়। এই জৈব অবশিষ্ট আর্বজনা ক্রমাগত বের করে নেওয়া হয়।

বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বায়োগ্যাস কী?

বিভিন্ন জৈব পদার্থ (যেমন গোবর, কৃষিজ বর্জ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি) অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে পচিয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করা হয়। এই গ্যাসকেই বায়োগ্যাস বা গোবর গ্যাস বলে।

বায়োগ্যাসের প্রধান উপাদান কী?

বায়োগ্যাসে প্রায় 60-70% মিথেন (CH4) এবং 30-40% কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) থাকে। এছাড়া অল্প পরিমাণে হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S) ও জলীয় বাষ্প থাকতে পারে।

বায়োগ্যাস কীভাবে তৈরি করা হয়?

বায়োগ্যাস প্ল্যান্টে গোবর, কৃষি বর্জ্য, জৈব আবর্জনা ইত্যাদির সাথে জল মিশিয়ে ডাইজেস্টারে (পচন চেম্বারে) রাখা হয়। অক্সিজেনবিহীন পরিবেশে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া এই বর্জ্যকে 10-30 দিনে পচিয়ে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করে।

বায়োগ্যাসের ব্যবহার কী?

বায়োগ্যাসের ব্যবহার হল –
1. রান্নার কাজে গ্যাসের বিকল্প হিসেবে।
2. বিদ্যুৎ উৎপাদনে জেনারেটরে জ্বালানি হিসেবে।
3. জৈবসার তৈরি (বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের অবশিষ্টাংশ সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়)।

বায়োগ্যাস প্ল্যান্টে কী কী বর্জ্য ব্যবহার করা যায়?

বায়োগ্যাস প্লান্টে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ব্যবহার করা হয় যেমন –
1. গোবর, মুরগির বিষ্ঠা,
2. কৃষি বর্জ্য (ধান, গমের খড়, ফলের খোসা),
3. গৃহস্থালি জৈব বর্জ্য (শাকসবজির অবশিষ্টাংশ),
4. শিল্পজাত জৈব বর্জ্য।

বায়োগ্যাসের সুবিধা কী?

বায়োগ্যাসের সুবিধা হল –
1. পরিবেশবান্ধব, কার্বন নিঃসরণ কম।
2. জৈব বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সহায়ক।
3. জ্বালানি সাশ্রয় করে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
4. জৈবসার তৈরি করা যায়, যা মাটির উর্বরতা বাড়ায়।

বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের ধরণ কী কী?

বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের ধরণ হল –
1. ফিক্সড ডোম প্ল্যান্ট (সরল ও স্থায়ী ডিজাইন)
2. ফ্লোটিং ড্রাম প্ল্যান্ট (গ্যাস সংরক্ষণের জন্য ভাসমান ড্রাম)
3. ব্যাচ টাইপ প্ল্যান্ট (ছোট আকারের, পর্যায়ক্রমে বর্জ্য দেওয়া হয়)

বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের জন্য কতটা জায়গা প্রয়োজন?

সাধারণত 2-5 কিউবিক মিটার ক্ষমতার প্ল্যান্টের জন্য 10-15 বর্গমিটার জায়গা প্রয়োজন।

বায়োগ্যাস ব্যবহারে সতর্কতা কী?

বায়োগ্যাস ব্যবহারে সতর্কতা হল –
1. গ্যাস লিক হলে আগুন বা ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে
2. গ্যাস সিলিন্ডার বা পাইপলাইন নিয়মিত চেক করতে হবে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বায়োগ্যাস কাকে বলে? এর ব্যবহার উল্লেখ করো। বায়োগ্যাস কীভাবে সৃষ্টি করা হয়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “পরিবেশের জন্য ভাবনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ু কী? সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ু কী? সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে কী বোঝো? স্থিতিশীল উন্নয়নের তিনটি প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করো।

স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে কী বোঝো? স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রধান লক্ষ্য

অচিরাচরিত বা অপ্রচলিত বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও। অচিরাচরিত শক্তি উৎস ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণ কী?

অপ্রচলিত শক্তির উৎস বলতে কী বোঝো? অচিরাচরিত শক্তি উৎস ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ভারতে আখ চাষের সমস্যা ও সমাধানগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চল চা চাষে প্রসিদ্ধ কেন?

ভারতে তুলা চাষের সমস্যাগুলি লেখো।

সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ু কী? সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

ভারতীয় কৃষির সমস্যাগুলি আলোচনা করো।