Madhyamik Bengali Question Paper 2018 With Answer

নমস্কার বন্ধুরা! আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো মাধ্যমিক পরীক্ষার পুরাতন বছরের প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তোমরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় আগের বছর কেমন কেমন প্রশ্ন এসেছিলো তার একটি স্পষ্ট ধারণা পাবে। বিশেষ করে, আমরা মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র ২০১৮ সহ উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। মাধ্যমিক ২০১৮ সালের প্রশ্নগুলো পরবর্তী বছরের শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে পরীক্ষার ধরণ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং প্রশ্ন করার ধরন সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি পড়ার পর তোমরা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে। তাই, পরীক্ষার আগে অবশ্যই মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র ২০১৮ সহ উত্তরটি মনোযোগ দিয়ে দেখে নাও।

Table of Contents

Madhyamik Bengali Question Paper 2018 With Answer

১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করাে : ১৭x১=১৭

১.১ সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান –

(ক)একদিন

(খ) দুদিন

(গ) চারদিন

(ঘ) পাঁচদিন

উত্তর – (ক) একদিন

১.২ তপনের মেসোমশাই কোন পত্রিকার সম্পাদককে চিনতেন?

(ক) শুকতারা

(খ) আনন্দমেলা

(গ) সন্ধ্যাতারা

(ঘ) দেশ

উত্তর : (গ) সন্ধ্যাতারা

১.৩ “দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে” – বক্তা হলেন –

(ক) জগদীশবাবু

(খ) নিমাইবাবু

(গ) অপূর্ব

(ঘ) গিরীশ মহাপাত্র

উত্তর : (ক) জগদীশবাবু

১.৪ ‘সমুদ্রনৃপতি সুতা’ – কে?

(ক) লক্ষ্মী

(খ) পদ্মা

(গ) উমা

(ঘ) বারুণী

উত্তর : (খ) পদ্মা

১.৫ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ – কবিতাটি কবির কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

(ক) নিহিত পাতাল ছায়া

(খ) পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ

(গ) দিনগুলি রাতগুলি

(ঘ) জলই পাষাণ হয়ে আছে

উত্তর : (ঘ) জলই পাষাণ হয়ে আছে

১.৬ “সেই হােক তােমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী” – ‘সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’ হল –

(ক) বিদ্বেষ ত্যাগ করা

(খ) ক্ষমা করাে

(গ) ভালবাসো

(ঘ) মঙ্গল করাে

উত্তর : (খ) ক্ষমা করাে

১.৭ “Sensitized Paper’ – এর অনুবাদ কী লিখলে ঠিক হয় বলে প্রাবন্ধিক মনে করেছেন –

(ক) স্পর্শকাতর কাগজ

(খ) সুবেদী কাগজ

(গ) সুগ্রাহী কাগজ

(ঘ) ব্যথাপ্রবণ কাজ

উত্তর : (গ) সুগ্রাহী কাগজ

১.৮ চার খণ্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতকে কত টাকা পেয়েছিলেন?

(ক) সাত টাকা

(খ) আট টাকা

(গ) ন-টাকা

(ঘ) দশ টাকা

উত্তর : (ক) সাত টাকা

১.৯ ‘শ্রীপান্থ’ ছদ্মনামে লিখেছেন –

(ক) অন্নদাশংকর রায়

(খ) বলাইচাঁদ মুখােপাধ্যায়

(গ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

(ঘ) নিখিল সরকার

উত্তর : (ঘ) নিখিল সরকার

১.১০ রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় – এই বাক্যের কর্তাটি

(ক) প্রযােজ্য কর্তা

(খ) সহযােগী কর্তা

(গ) ব্যতিহার কর্তা

(ঘ) সমধাতুজ কর্তা

উত্তর : (গ) ব্যতিহার কর্তা

১.১১ পরপদটি প্রধান হয় যে সমাসে সেটি –

(ক) অব্যয়ীভাব

(খ) তৎপুরুষ

(গ) দ্বিগু

(ঘ) বহুব্রীহি

উত্তর : (খ) তৎপুরুষ/দ্বিগু

১.১২ রামদাস আর কোনো প্রশ্ন করিল না – নিম্নরেখ পদটি যে সমাসের উদাহরণ সেটি হল

(ক) তৎপুরুষ

(খ) অব্যয়ীভাব

(গ) কর্মধারয়

(ঘ) দ্বিগু

উত্তর : (ক) তৎপুরুষ

১.১৩ “তােরা সব জয়ধ্বনি কর”- এটি কোন্ বাচ্যের উদাহরণ?

(ক) কর্তৃবাচ্য

(খ) কর্মবাচ্য

(গ) ভাববাচ্য

(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য

উত্তর : (ক) কর্তৃবাচ্য

১.১৪ ‘হায়, তােমার এমন দশা কে করলে!’ – এটি কী ধরনের বাক্য?

(ক) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য।

(খ) বিস্ময়সূচক বাক্য

(গ) নির্দেশক বাক্য

(ঘ) প্রশ্নবােধক বাক্য।

উত্তর : (খ) বিস্ময়সূচক বাক্য

১.১৫ ‘বয়স ত্রিশ-বত্রিশের অধিক নয়, কিন্তু ভারি রােগা দেখাইল।’ – এটি কোন শ্রেণির বাক্য?

(ক) সরল বাক্য

(খ) জটিল বাক্য

(গ) মিশ্র বাক্য

(ঘ) যৌগিক বাক্য

উত্তর : (ঘ) যৌগিক বাক্য/মিশ্র বাক্য

১.১৬ ‘মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা’ – নিম্নরেখ পদটি কোন্ কারকের উদাহরণ?

(ক) কর্তৃ কারক

(খ) করণ কারক

(গ) অপাদান কারক

(ঘ) অধিকরণ কারক

উত্তর : (ঘ) অধিকরণ কারক

১.১৭ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতাঞ্জলি লিখে নোবেল পুরস্কার পান – এই বাক্যের নিম্নরেখ অংশটি হল –

(ক) উদ্দেশ্য

(খ) উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক

(গ) বিধেয়

(ঘ) বিধেয়ের সম্প্রসারক

উত্তর : (গ) বিধেয়

২. কম-বেশি 20 টি শব্দে প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : 1×19=19

২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×4=4

২.১.১ “তবে এ বস্তূটি পকেটে কেনো”? – কোন বস্তূটি পকেটে ছিল?

উত্তর : গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে যে ‘বস্তুটি’ থাকার কথা বলা হয়েছে তা হল গাঁজার কলকে।

২.১.২ “হরিদার জীবন এই রকম বহুরূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে।” – কী রকম খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে?

উত্তর : সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে নানারকম ছদ্মবেশ ধারণ করে বহুরূপী সেজে খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে।

২.১.৩ “নদেরচাঁদ সব বোঝে” – নদেরচাঁদ কী বোঝে?

উত্তর : নিজের বয়স অনুযায়ী (৩০ বছর) আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং নিজের দায়দায়িত্বের কথা নদেরচাঁদ বোঝে।

২.১.৪ “একটু কারেকশন’ করে ইয়ে করে দিলেই ছাপাতে দেওয়া চলে।” – কে কী ছাপানোর কথা বলেছেন?

উত্তর : তপনের নতুন মেসোমশাই, যিনি একজন অধ্যাপক ও লেখক, তিনি ‘প্রথমদিন’ নামে তপনের লেখা প্রথম গল্পটি ছাপানোর কথা বলেছেন।

২.১.৫ “এসো আমরা কুস্তি লড়ি।” – কে, কাকে বলেছিল?

উত্তর : পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল বদল’ গল্পে উল্লিখিত মন্তব্যটি কালিয়া অমৃতকে করেছিল।

২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×4=4

২.২.১ বিদ্রুপ করেছিলে ভীষনকে, – কিভাবে বিদ্রুপ করেছিল?

উত্তর : আফ্রিকা প্রতিকূলতার বেশ ধারণ করে অর্থাৎ ‘বিরূপের ছদ্মবেশে’ প্রকৃতির ভয়ংকর রূপকে বিদ্রুপ করছিল।

২.২.২ “কে কবে শুনেছে পুত্র, ভেসে শিলা জলে” – বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তর : বক্তার বিশ্বাস জন্মেছে বিধাতা তাঁর প্রতি বিরূপ। প্রসঙ্গত তিনি রামচন্দ্রের পুনর্জীবন লাভের কথা বলেছেন।

২.২.৩ “ওরে ওই স্তব্ধ চরাচর!” – ‘চরাচর’, স্তব্ধ কেন?

উত্তর : প্রলয়ঙ্কর শিবের অট্টরোলের হট্টগোলে চরাচর স্তব্ধ।

২.২.৪ “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে” – কথাটির অর্থ কী?

উত্তর : কবি মনে করেন হিংসা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও রক্তপাত থেকে মুক্তির খোঁজ রয়েছে গানে।

২.২.৫ “কন্যারে ফেলিলো যথা” – কন্যাকে কোথায় ফেলা হল?

উত্তর : কন্যাকে সমুদ্রমধ্যে এক দিব্যপুরীতে ফেলা হলো।

২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×3=3

২.৩.১ “আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধি কথা বলছেন” – শব্দের ‘ত্রিবিধি কথা’ কী?

উত্তর : অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা।

২.৩.২ “যাদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ লেখা হয় তাদের মোটামুটি দুই শ্রেণীতে ভাগ্য করা যাতে পারে।” – শ্রেণী দুটি কী?

উত্তর : শ্রেণি দুটি হল (১) যারা ইংরেজি জানে না বা খুব অল্প জানে। (২) যারা ইংরেজি জানে এবং ইংরেজি ভাষায় কমবেশি বিজ্ঞান পড়েছে।

২.৩.৩ দুজন সাহিত্যিক এর নাম করো যাদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা।

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়।

২.৩.৪ লেখক শ্রীকান্ত ছোটো বেলায় কিসে ‘হোম টাস্ক’ করতেন?

উত্তর : কলাপাতাকে কাগজের মাপে কেটে নিয়ে হোম-টাস্ক করতেন।

২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×8=8

২.৪.১ নির্দেশক বাক্যর একটি উদাহরণ দাও?

উত্তর : নির্দেশক বাক্যর একটি উদাহরণ হল – বিকালেই ঝড়বৃষ্টি হবে।

২.৪.২ শব্দ বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও?

উত্তর : রামকে ডাকা হোক। এখানে চিহ্নিত পদটির ‘কে’ হলো শব্দ বিভক্তি।

২.৪.৩ প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে?

উত্তর : অপরের প্রেরণায় যে কাজ করে, তাকে বলা হয় প্রযোজ্য কর্তা।

২.৪.৪ নিন্মরেখ শব্দটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো : কহো দাশে লঙ্কার ‘কুশল’?

উত্তর : কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।

২.৪.৫ সম্বন্ধ পদ কাকে বলে?

উত্তর : বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কহীন যে-পদ পরবর্তী নামপদের সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন করে তাকে সম্বন্ধপদ বলে।

২.৪.৬ গৌর অঙ্গ যাহার – ব্যাসবাক্যটির সমাষবদ্ধ করে সমষের নাম লেখো?

উত্তর : গৌরাঙ্গ, সাধারণ বহুব্রীহি সমাস/বহুব্রীহি/সমানাধিকরণ বহুব্রীহি।

২.৪.৭ কর্মকর্তৃবাচ্য কাকে বলে?

উত্তর : যে বাচ্যে কর্তা অনুপস্থিত থাকে এবং কর্মই কর্তারূপে প্রতীয়মান হয়। যেমন – ঘন্টা বাজে।

২.৪.৮ বাবুটির স্বাস্থ্যগেছে, কিন্তু শখ ষোলোআনা বজায় আছে। – সরল বাক্য পরিণত করো?

উত্তর : বাবুটির স্বাস্থ্য গেলেও শখ ষোলো আনাই বজায় আছে।

২.৪.৯ আর কোনো ভয় নেই। – প্রশ্নবোধকবাক্য পরিবর্তন করো?

উত্তর : আর কি কোনো ভয় আছে?

২.৪.১০ বুড়ো মানুষের কথা শুনো। – কর্ম বাচ্য পরিণত করো?

উত্তর : বুড়ো মানুষের কথাটা শোনা হোক।

৩. কমবেশি ৬০টি শব্দে নিচের প্রশ্নগুলি উত্তর দাও :

৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×3=3

৩.১.২ “উনি দশ বছরের অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন।” – ‘উনি’ কে? কেন অমৃতকে উনি জড়িয়ে ধরলেন?

উত্তর : উনি-র পরিচয় – ‘অদল বদল’ গল্পে ‘উনি’ বলতে ইসাবের বাবাকে বোঝানো হয়েছে।

অমৃতকে জড়িয়ে ধরার কারণ – ইসাবের জামা ছিঁড়ে যাওয়ায়, ইসাবকে তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য অমৃত নিজের জামার সঙ্গে তার জামা বদলে নিয়েছিল। কারণ অমৃত বুঝেছিল তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে কিন্তু ইসাবের মা নেই, তার রয়েছে শুধু বাবা। আড়াল থেকে অমৃতের মনের উদারতার এই পরিচয় পেয়ে আনন্দে ইসাবের বাবা অমৃতকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন।

৩.১.২ ”বাবাই একদিন এর চাকরি করে দিয়েছিলেন।” – বক্তা কে? তার বাবা কাকে কী চাকরি দিয়েছিলেন?

উত্তর : কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের থেকে গৃহীত পথের দাবী রচনায় প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি রয়েছে।

এখানে বক্তা হলেন পথের দাবী রচনার চরিত্র নায়ক অপূর্ব।

অপূর্ব-এর বাবা অপূর্বদের থানার বড়বাবু নিমাইবাবুর চাকরির ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছিলেন। অপূর্বর বাবা নিমাইবাবুর পুলিশের চাকরি করিয়ে দেন।

৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×3=3

৩.২.১. ”সব চূর্ণ হয়ে গেলো জলে গেলো আগুনে।” – কোন কোন জিনিসের কথা বলা হয়েছে? এই পরিণীতির কারণ কী?

উত্তর : চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা- রচিত ‘Extra vagaria’ কাব্যের অন্তর্গত ‘La disdichada’-এর নবারুণ ভট্টাচার্য-কর্তৃক বাংলা অনুদিত ‘অসুখী একজন’ কবিতাটিতে প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি রয়েছে।

কবির দেশে যুদ্ধের ফলে কবির মিষ্টি বাড়ি, বারান্দা যেখানে তিনি ঝুলন্ত বিছানার ঘুমোতেন, গোলাপি গাছে, ছড়ানো করতলের মতো পাতা, চিমনি, প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ হয়ে যায়, জ্বলে যায় আগুনে।

এর পরিণতির কারণ ছিল ভয়ানক যুদ্ধ যাকে কবি বলেছেন –

“তারপর যুদ্ধ এল রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো।”

৩.২.২ আমাদের ইতিহাস নেই – কে, কেন এ কথা বলেছেন?

উত্তর : উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – কবি শঙ্খ ঘোষ স্বয়ং সাধারণ মানুষের হয়ে কথাটি বলেছেন।

এ কথা বলার কারণ – ইতিহাস আসলে জাতির আত্মবিকাশের গৌরবময় কাহিনি, তার ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার। কিন্তু যখন সেই ইতিহাস নিয়ন্ত্রিত হয় কোনো ক্ষমতাবান গোষ্ঠী, ধর্মসম্প্রদায় কিংবা রাজনীতির দ্বারা, তখন ইতিহাসের বিকৃতি ঘটে। ক্ষমতাবানরা নিজেদের স্বার্থে ইতিহাসকে নিজেদের মতো করে গড়ে তোলে। মানুষ একসময় ভুলে যায় তার প্রকৃত ইতিহাস, আর চাপিয়ে দেওয়া ইতিহাসকেই নিজের বলে মেনে নেয়। এই পরিপ্রেক্ষিতকে তুলে ধরতে গিয়েই কবি এ কথা বলেছেন।

৪. কমবেশি 150 শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×5=5

৪.১ “তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে।” – তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো?

উত্তর : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের লেখা গল্প তার ছোটোমেসোমশায়ের উদ্যোগে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি গল্পটিকে প্রকাশযোগ্য করে তোলার জন্য যে সংশোধন করেছেন সেকথা সুকৌশলে প্রচার করে দেন। তপনের লেখার থেকে মেসোমশায়ের সংশোধনের কথাটাই বেশি আলোচিত হতে থাকে। আর এর মধ্য থেকে গল্প ছাপার আনন্দটা তপন যেন আর খুঁজে পায় না। কিন্তু এর থেকেও বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা তার হয়, যখন তার মা তপনকে নিজের মুখে গল্পটা পড়তে বলেন। লজ্জা ভেঙে তপন যখন গল্পটা পড়তে যায় দেখে তার প্রত্যেকটি লাইন ‘নতুন আনকোরা, তপনের অপরিচিত।’ সে গল্পের মধ্যে তপনের নিজের লেখা কোথাও নেই। সংশোধনের নামে ছোটোমেসো তপনের গল্পটিকে নতুন করে লিখেছেন, ‘তাঁর নিজের পাকা হাতের কলমে।’ নিজের গল্পের এই পরিণতিই তপনকে বাকরুদ্ধ করে দেয়। সে আর পড়তে পারে না, বোবার মতো স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে।

৪.২ “অমৃত সত্যি তার বাবা মা কে খুব জ্বালিয়েছিল।” – অমৃত কিভাবে বাবা-মাকে জ্বালাতন করেছিল? অবশেষে অমৃতের মা কী করেছিলেন?

উত্তর : ইসাবের নতুন জামার মতো জামা চেয়ে অমৃত প্রবল বায়না শুরু করল। সে তার প্রায় নতুন জামাটির একটা ছেঁড়া জায়গায় আঙুল ঢুকিয়ে আরো ছিঁড়ে দেয়। তাকে বেঁধে রেখে মারতে বলে, স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়, খাওয়া ছেড়ে দেয় এবং রাতেও বাড়ি ফিরতে রাজি হয় না।

অবশেষে অমৃতের মা তার স্বামীকে বলে ওর জন্য নতুন জামা কেনার ব্যবস্থা করে।

৫. কমবেশি 150 শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×5=5

৫.১ “আমরাও তবে এইভাবে/এ মুহূর্তে মরে যাবো নাকি?” এমনটা মনে হচ্ছে কেন?

উত্তর : শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় সমাজ- সভ্যতার অস্থির স্বরূপকে তুলে ধরেছেন। যুদ্ধ, ভেদবুদ্ধি, আদর্শহীনতা ইত্যাদি সভ্যতার গতিপথকে রুদ্ধ করে তুলেছে। ‘ডান পাশে ধ্বস’ আর ‘বাঁয়ে গিরিখাদ’ চলার পথকে করেছে বিপৎসংকুল। মাথার উপরে যুদ্ধবিমান ধ্বংস ও মৃত্যুর ছায়াকে দীর্ঘতর করে তুলেছে। বরফ যেমন চলার পথকে দুর্গম করে তোলে সেভাবেই যুদ্ধ, আদর্শের অভাব, স্বার্থপরতা ইত্যাদি এগিয়ে চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুদ্ধের তাণ্ডবে মানুষ নিরাশ্রয় হয়। বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে – আমাদের ঘর গেছে উড়ে/আমাদের শিশুদের শব/ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে। ধ্বংসের এই প্রচণ্ডতা শিহরিত করে সাধারণ মানুষদেরকেও। সর্বনাশের আশঙ্কা সংক্রমিত হয়। জীবনের অগ্রগতিই শুধু অবরুদ্ধ হয় না। তার অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে পড়ে। মৃত্যুভয় ছুঁয়ে যায় সকলকেই। আশঙ্কিত মানুষদের তখনই মনে হয়- আমরাও তবে এইভাবে/এই মুহূর্তে মরে যাব না কি?

৫.২ “নমি পুত্র পিতার চরণে, করজোড় কহিলা;” – পিতাও পুত্রের পরিচয় দাও? পাঠ্যাংশের অবলম্বনে পিতা পুত্রের কথোপকথন নিজের ভাষায় লিখো?

উত্তর : পিতা ও পুত্র বলতে লঙ্কাধিপতি রাবণ ও তার প্রিয় পুত্র মেঘনাদের কথা বোঝানো হয়েছে।

পুত্রের কথায় পুত্রবৎসল এক পিতার হৃদয়ের প্রকৃত স্বরূপটি প্রকাশিত হয়। সেখানে ধ্বনিত হয় স্নেহ হাহাকার ও অসহায়তা। রক্ষোকুলের শ্রেষ্ঠ সম্পদকে বিপদের মুখোমুখি হতে দিতে তিনি চাননা –

“এ কাল সমরে,/নাহি চাহে প্রাণ মম পাঠাইতে তোমা/বারংবার।” কারণ তিনি জানেন স্বয়ং বিধাতাও তার প্রতি বিমুখ। নইলে শিলা যেমন জলে ভাসেনা, তেমনই মৃত কখনই পুনরুজ্জীবিত হয় না। অথচ ভাগ্যবিড়ম্বিত দশাননের জীবনে তাই ঘটেছে। পৌরুষে উদ্দীপিত ইন্দ্রজিৎ অগ্নিদেবকে রুষ্ট করতে কিম্বা ইন্দ্রদেবের উপহাসের পাত্র হতে চান না। তাই তিনি বলেন –

“আর একবার পিতঃ দেহ আজ্ঞা মোরে;
দেখিব এবার বীর বাঁচে কি ঔষধে!”

বিক্ষত হৃদয়ে রাবণের দৃষ্টির সামনে ভূপতিত পর্বতসম কুম্ভকর্ণ। তিনি প্রাণাধিক প্রিয় ‘বীরমণিকে’ প্রথমে ইষ্টদেবের পূজা ও তারপর নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সঙ্গ করে পরদিন সকালে যুদ্ধযাত্রা করতে বলেন। যথাবিহিত উপচারে ‘গঙ্গোদক’ রাবণ সেনাপতি পদে মেঘনাদকে অভিষিক্ত করেন।

৬. কমবেশি 150 শব্দে একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×5=5

৬.১ ‘বাংলা ভাষার বিজ্ঞান’ শীর্ষক প্রবন্ধটিতে পরিভাষা রচনা সম্পর্কে লেখক যে বক্তব্য প্রকাশ করেছেন তা আলোচনা করো?

উত্তর : বাংলা ভাষায় যাঁরা বিজ্ঞান পড়েন, আলোচ্য প্রবন্ধে রাজশেখর বসু তাঁদের দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। যাঁরা ইংরেজি জানেন না বা খুব অল্প জানেন, তাঁরা রয়েছেন প্রথম শ্রেণিতে। অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েরা এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক মানুষেরা এই শ্রেণিতে পড়েন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে আছেন সেইসব মানুষেরা যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজি ভাষায় সামান্য হলেও বিজ্ঞান পড়েছেন।

প্রথম শ্রেণির পাঠকদের সঙ্গে বিজ্ঞানের বিশেষ পরিচয় নেই, যদিও কয়েকটি সাধারণ পারিভাষিক শব্দ ও মোটাদাগের বৈজ্ঞানিক তথ্য তাঁদের জানা থাকতে পারে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি তথ্য সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন। তাঁরা যখন বাংলা ভাষায় লেখা কোনো বৈজ্ঞানিক রচনা পড়েন, তখন বৈজ্ঞানিক বিষয়টি শিখে নিলেই তাদের চলে, ভাষা সেখানে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণিতে যাঁরা আছেন, অর্থাৎ যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজিতেই বিজ্ঞান পড়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে বাংলায় লেখা কোনো বাক্য সহজ মনে হয় না, অর্থও পরিষ্কার হয় না। এর কারণ হল ইংরেজি ভাষার প্রতি পক্ষপাত। এই শ্রেণির পাঠকদের যেহেতু ভাষাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এবং সেই সমস্যা এড়িয়ে বিষয়টি জানতে হয়, তাই এই পাঠকদের বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান পড়তে হলে অন্য পাঠকদের তুলনায় বেশি প্রচেষ্টা করতে হয়।

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় কয়েকটি বাধার কথা প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন। প্রথম বাধা হল পরিভাষার সমস্যা। বাংলায় পারিভাষিক শব্দের অভাব দূর করতে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছিল। সেখানে পন্ডিত লেখকরা নানা বিষয়ের পরিভাষা রচনা করেছেন। কিন্তু তাঁরা একসাথে কাজ না করায় নতুন রচিত পরিভাষায় সংগতি থাকেনি। এরপরে ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক, ভাষাতত্ত্ববিদ, সংস্কৃতজ্ঞ ও কয়েকজন লেখককে নিয়ে পরিভাষা রচনার একটি প্রচেষ্টা চালায় এবং সেটি অনেক বেশি সফল হয়। লেখকের মতে বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনমতো বাংলা শব্দ না পাওয়া গেলে ইংরেজি শব্দই বাংলা বানানে ব্যবহার করা যায়। যেমন, অক্সিজেন, প্যারাডাইক্লোরোবেনজিন ইত্যাদি।

পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় অত্যন্ত কম। ফলে বাংলায় পপুলার সায়েন্স লেখা সহজ কাজ নয়। তবে প্রাবন্ধিক মনে করেন, এদেশে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বিজ্ঞান আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় রচনাপদ্ধতি অনেক লেখকই আয়ত্ত করতে পারেননি। অনেকক্ষেত্রে তাঁদের ভাষা আড়ষ্ট ও ইংরেজি শব্দের আক্ষরিক অনুবাদ হয়ে দাঁড়ায়। ইংরেজি শব্দের অর্থের ব্যাপ্তির সঙ্গে মিলিয়ে বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার করতে গিয়ে তাঁরা অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ প্রয়োগ করেন। ইংরেজিতে কোনো বাক্য ভেবে নিয়ে তা বাংলায় প্রকাশ করতে গিয়ে রচনার ভাষা উৎকট হয়ে পড়ে। When sulphur burns in air the nitrogen does not take part in the reaction -এই বাক্যের বাংলা অনুবাদ যখন গন্ধক হাওয়ায় পোড়ে তখন নাইট্রোজেন প্রতিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। -এইরকম না করে ‘নাইট্রোজেনের কোনো পরিবর্তন হয় না’ লিখলে বিষয়টি অনেক বেশি স্পষ্ট হয়।

আবার অনেকে মনে করেন যে পারিভাষিক শব্দ একেবারে বাদ দিয়ে দিলে বিষয়টি বেশি সহজ হয়। কিন্তু সবসময় তা ঘটে না। যেমন, ‘আলোকতরঙ্গ’-এর বদলে ‘আলোর নাচন’ বা ‘কাঁপন’ লিখলে তা বৈজ্ঞানিকভাবে যথাযথ হয় না। বাক্যের অর্থও স্পষ্ট হয় না। এ-প্রসঙ্গেই প্রাবন্ধিক শব্দের ‘ত্রিবিধ’ (তিনপ্রকার) শক্তির কথা বলেছেন। তিনি অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা-এই তিনপ্রকার শক্তির মধ্যে বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে ‘অভিধা’-র ব্যবহারই যথাযথ বলে মনে করেছেন। প্রবন্ধের শেষে রাজশেখর বসু বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রচয়িতাদের আর-একটি দোষের কথা বলেছেন। অল্পবিদ্যার ওপর নির্ভর করে বিজ্ঞান রচনার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভুল থেকে যায়। তাই সম্পাদকের উচিত কোনো বৈজ্ঞানিক রচনা প্রকাশের আগে অভিজ্ঞ লোককে দিয়ে তা যাচাই করিয়ে নেওয়া।

৬.২ “আশ্চর্য’, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।” – কোন জিনিস আজকে অবলুপ্তির পথে? এই অবলুপ্তির কারণ কী? এই বিষয়ে লেখকের মতামত কী?

উত্তর : নানাধরনের ফাউন্টেন পেন, কালি, দোয়াত, কলমদানি এ সবই আজ অবলুপ্তির পথে।

কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার এই অবলুপ্তির কারণ।

লেখক এতে বিপন্ন বোধ করেন। কলমের দ্বারা নিজের হাতে লেখাটা লেখকের কাছে প্রীতিকর। কিন্তু বিজ্ঞানের চরম উন্নতিতে লেখালেখির কাজকে অতি সহজসাধ্য ও উপযোগী করতে কম্পিউটারের ব্যবহার আজ সর্বত্র। তাই লেখক নস্টালজিক হয়ে পড়েন কলমের অবলুপ্তির কথা ভেবে। তিনি আরও চিন্তিত এই কারণে যে হাতে লেখা হয়তো চিরতরে মুছে যাবে, কী হবে ক্যালিগ্রাফিস্টদের অস্তিত্ব? এ সকল ভাবনায় লেখক বিপন্নবোধ করেন।

৭. কমবেশি 125 শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×4=4

৭.১ “বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাংলা শুধু মুসলমানের নয় – মিলিত হিন্দু–মুসলমানের মাতৃভূমি এই গুলবগ এই বাংলা।” – কাদের উদ্দেশ্য করে এ কথা বলা হয়েছে? এই বক্তব্যর মধ্যে দিয়ে বক্তার কী চারিত্রিক বৈশিষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে?

উত্তর :

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে নবাব সিরাজদ্দৌলা রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ প্রমুখের উদ্দেশে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

বক্তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য –

  • উদারনৈতিক মানসিকতা – সিংহাসনে বসার পর থেকেই নবাবের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। রাজসভার মধ্যেই মীরজাফরের নেতৃত্বে বিত্ত ও ক্ষমতাবানদের আলাদা একটা দল গড়ে ওঠে। এসব জানতে পেরেই সিরাজ রাজা রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ প্রমুখকে হিন্দু-মুসলমান বিভেদ না করতে আহ্বান জানান।
  • সম্প্রীতির বার্তাবাহক – আলোচ্য উক্তিটির মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলিম দুটি জাতির মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরেছেন সিরাজ। তাঁর প্রজারা যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তারই চেষ্টা করেছিলেন এই তরুণ নবাব।
  • অসাম্প্রদায়িকতা – সিরাজ বলেন বাংলা কোনো বিশেষ ধর্ম বা ধর্মগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য নয়। হিন্দু-মুসলমানের মিলিত বাসভূমি গুলবাগ এই বাংলা। ইংরেজরা বিদেশি জাতি।
  • ঐক্যবোধ – তাই তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করতে চাওয়া মানে তা দেশদ্রোহ। নিজেরা পারস্পরিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে কোম্পানির কাছে বাংলা দখল করাটা সহজ হয়ে যাবে। সেই কারণেই ধর্মকে দূরে সরিয়ে রেখে সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটির মধ্য দিয়ে সিরাজের উদারনৈতিক অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের প্রকাশ ঘটেছে।

৭.২ “মুন্সিজি, এই পত্রের মর্ম সভাসদ্দের বুঝিয়ে দিন।“ – কে, কাকে পত্র লিখেছিলেন? এই পত্রে কী লেখা ছিল?

উত্তর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-রচিত সিরাজউদ্দৌল্লা নাটকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি রয়েছে।

ইংরেজ অ্যাডমিরাল ওয়াটসন পত্র লিখেছিলেন মুর্শিদাবাদে থাকে ইংরেজ প্রতিনিধি ওয়াটসনকে।

এই পত্রে লেখা ছিল –

“কর্নেল ক্লাইভ যে সৈন্যের কথা উল্লেখ করেছেন তা দ্রুত কলকাতা পৌঁছবে। আমি আর একটা জাহাজ মাদ্রাজে পাঠাইয়া খবর দিব বাংলায়, আরও জাহাজ ও সৈন্য আবশ্যিক। আমি এমন আগুন জ্বালাইবো যা সমগ্র গঙ্গার জল দিয়েও নেভানো যাইবে না।”

এইভাবে ব্রিটিশরা ভারতে কলকাতা জয়ের পর সমগ্র ভারত হাতে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সিরাজ এই পত্রের সম্বন্ধে জানার পর এর বিহিত হিসাবে ওয়াটসনকে রাজদরবার ত্যাগ করতে বলেন এবং এও বলেন

“আমরা তোমাকে তোপের মুখে উড়িয়ে দিতে পারি জানও।”

৮. কমবেশি 150টি শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 2×5=10

৮.১ ‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতিশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো?

উত্তর : বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক মতি নন্দী রচিত ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্রের নিম্নরূপ –

  • জাতশিক্ষক – ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন একজন জাতশিক্ষক তাই তিনি যেকোনো প্রকারে বা মূল্যে কোনিকে স্বপ্ন পূরণের রাস্তায় তুলে দেন।
  • প্রতিভা চেনার ক্ষমতা – তিনি একজন প্রকৃত শিক্ষক বলেই গঙ্গার ঘাটে পাওয়া মেয়েটির সুপ্ত প্রতিভাকে দেখতে পান ও তা বিকশিত করার চেষ্টা করেন।
  • স্নেহশীল – ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন স্নেহশীল শিক্ষক যিনি কোনিকে মেয়ের মতো দেখতেন ও ভালোবাসতেন।
  • দায়িত্ববোধ – তিনি কোনির শিক্ষক হওয়ায় কোনিকে নিজ খরচে, নিজ দায়িত্বে খাওয়াতেন, রাখতেন ও তার বাড়ির কথা জেনে লীলাবতীর দোকানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন।
  • গরিব দরদি – ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন একজন গরিব ও দরদি ব্যক্তি তিনি গরীব মানুষের কাছে যেচে সাহায্যের হাত বাড়াতে দ্বিধা করতেন না।
  • সততা – ক্ষিতীশ ছিলেন সৎ। তিনি জুপিটার থেকে বেরিয়ে আসার পরও জুপিটারের প্রতি তার ভালবাসা একটুকু কমাননি। তিনি তার জীবনে এই সততা বজায় রেখেছিলেন।
  • তীক্ষ্ণ বুদ্ধি – ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী। তিনি কোনির মানসিক অবস্থা দেখে তাকে খাটানোর জন্য টোস্ট, রুটি ও কলার লোভ দেখান।
  • কোনি চরিত্রের পরিপূরক চরিত্র – কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশ চরিত্র ছিলে কোনি চরিত্রের পরিপুরক। কোনি সারাজীবন একজন শিক্ষক ও ক্ষিতীশ একজন ছাত্রের খোঁজে জীবন অতিবাহিত করেছেন।

এইভাবে সমগ্র উপন্যাস জুড়ে আশা, নিরাশার দোলাচলে দুলতে দুলতে কল্পনা বাস্তবের সম্মুখ সফরে পড়ে জীবনের বিচিত্র স্বাদ লাভ করে উক্ত চরিত্রটি।

৮.২ “ওইটাই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি” – বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো?

উত্তর :

উৎস – আলোচ্য উক্তিটি মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাস থেকে গৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গ – মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ দিনের ৪×১০০ মিটারে রমা যোশির মতো প্রখ্যাত সাঁতারুকে হারিয়ে কোনি জয়লাভ করে। কোনিকে অভিনন্দন জানাতে আসা বহু মানুষের ভিড়ে সে ক্ষিতীশকে দেখতে পায়নি। শেষে ক্ষিতীশকে দেখতে পেয়ে সে রেগে গিয়ে তার বুকে দুমদুম করে ঘুসি মারতে থাকে আর বলে যে, সে যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছিল। এই কথার প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

তাৎপর্য বিশ্লেষণ –

  • ব্যক্তিসুখ বিসর্জন – দীর্ঘদিনের কঠিন পরিশ্রমের ফল পেয়েছে কোনি। এই কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্যই ক্ষিতীশ সংসার ভুলেছেন, নিজের ব্যক্তিসুখ বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁকে বহু লাঞ্ছনা-অপমান সহ্য করতে হয়েছে। তবু তিনি কখনও ভেঙে পড়েননি।
  • অপমানের তীব্র যন্ত্রণা – ক্ষিতীশ সবসময় বুকের মধ্যে অনুভব করেছেন জুপিটারের সতীর্থদের কাছ থেকে পাওয়া অপমানের তীব্র যন্ত্রণা। হয়তো এই যন্ত্রণাটা না থাকলে ক্ষিতীশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারতেন না, তৈরি করতে পারতেন না কোনিকে। ক্ষিতীশ নিজেই যেন একটা প্রতিজ্ঞার নাম।
  • সংগ্রামী চেতনার বহিঃপ্রকাশ – লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ক্ষিতীশের প্রচেষ্টা আর ধৈর্য ছিল অবিচল। যন্ত্রণার আগুনে পুড়ে ক্ষিতীশ হয়ে উঠেছেন ইস্পাতকঠিন। আলোচ্য উক্তিটি প্রকৃতপক্ষে ক্ষিতীশের সংগ্রামী চেতনারই উদ্ভাসিত রূপ।

৮.৩ ”অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল।” – কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা সংক্ষেপে লেখো?

উত্তর : মতি নন্দী-রচিত কোনি উপন্যাসে বাস্তবে কোনির সাঁতার কাটার শুরু গঙ্গায়। সেখান থেকে বাংলা দলে জায়গা করে নেওয়া নেহাত সোজা ছিল না। দরিদ্রতা ও অশিক্ষার কারণে তাকে হেনস্থা হতে হয়েছে তথাকথিত শিক্ষিত ও সভ্য সমাজের কাছে।

কোনির নাম প্রথম বাংলা দলে তুলে ধরেন প্রণবেন্দু বিশ্বাস। তিনি কোনির প্রতিদ্বন্দ্বী হিয়ার প্রশিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও বলেন “কনকচাঁপা পালকে বাংলা দলে রাখতে হবে।” মাদ্রাজের BASA নির্বাচনী সভায় তাই কোনির কথা বলেন। কিন্তু জুপিটারের ক্ষিতীশ বিরোধিতার জন্য তারা কোনিকে দলে রাখতে অসম্মত হয়। এর আগে কম্পিটিশনে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করা ও প্রথম হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করেন। হরিচরণ, ধীরেন ঘোষ গোপন শলাপরামর্শে এসব করা হয়। তবে প্রণবেন্দু বাবু বুঝতে পারেন মহারাষ্ট্রের রমা যোশিকে হারানোর ক্ষমতা কারও থাকলে তা কোনির। তিনি এটাও বলেন যে কোনিকে বাদ দিলে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবকে বাদ দিয়ে বাংলা সাঁতার দল গঠিত হবে। তখন ধীরেন ঘোষ ভাবে একটা মেয়ের জন্য এত সমস্যা হলে তাকে নেওয়াই ভালো।

এইভাবে নানাবিধ বাগবিতণ্ডার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ সামলে প্রণবেন্দুবাবুর সুবিচারের মাধ্যমে বঙ্গবাসীর নয়ণের মণি হওয়ার সুযোগ পায় কোনি।

৯. চলিত গদ্য বঙ্গানুবাদ করো : 1×4=4

The teachers are regarded as the backbone of the society. They build the future citizens of country. They love students as their children. The teachers always encourage and inspire us to be good and great in life.

উত্তর : শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড হিসেবে শ্রদ্ধার পাত্র হন। তাঁরা দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের তৈরি করেন। তাঁরা ছাত্রদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। শিক্ষকরা সর্বদাই আমাদের উৎসাহ দেন জীবনে ভালো এবং মহৎ হওয়ার জন্য।

১০. কমবেশি 150 শব্দে একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×5=5

১০.১ কুসংস্কার প্রতিরোধে বিজ্ঞানমনস্কতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।

উত্তর :

বৃষ্টি – কিরে মেঘা, হাসপাতালের সামনে আজ খুব ভিড় দেখলাম।

মেঘা – আরে একজন লোককে সাপে কামড়ে ছিল-লোকটি মারা গিয়েছে বলে হাসপাতালে ভাঙচুড় হল।

বৃষ্টি – কেন চিকিৎসা কি ঠিকঠাক হয়নি!

মেঘা – আরে চিকিৎসা হবে কি! শুনলাম তো লোকটাকে যখন আনা হয়েছে তখনই তার মরোমরো অবস্থা। ওঝার কাছে একদিন ফেলে রেখেছিল।

বৃষ্টি – তাহলে আর রুগি বাঁচবে কী করে।

মেঘা – আমাদের দেশের এই হল মুশকিল। মানুষ এখনও সচেতন হল না। কুসংস্কার একেবারে মনে বাসা বেঁধে আছে।

বৃষ্টি – সর্বত্র। নাহলে চ্যানেলে চ্যানেলে জ্যোতিষীর ছয়লাপ হয়।

মেঘা – কত সর্বস্বান্ত হওয়া, কত মৃত্যু আরও যে অপেক্ষা করে আছে! মানুষ আর কবে বুঝবে!

১০.২ তোমার এলাকায় একটি পাঠাগার উদবোধন হল – এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর :

শিরোনাম – সকলের জন্য উন্মুক্ত হল পাঠাগার।

উদ্ভোদন – স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ছাড়া এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট লেখক শ্রী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন – “বই পড়ার অভ্যাস ক্রমশই কমে যাচ্ছে। পাঠাগারের মাধ্যমে নিশ্চয়ই স্থানীয় মানুষের মনে আগ্রহ জন্মাবে।”

১১. কমবেশি ৪০০ শব্দে একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : 1×10=10

১১.১ বইপড়া

উত্তর :

বইপড়া

“He who loves reading has everything within his reach”

– William Godwin

ভূমিকা –

আজকের জেটগতির জীবনে মানুষের সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। সাফল্যকে পাখির চোখ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই করে যাচ্ছে সকল ছাত্রছাত্রী থেকে আমজনতা। যেটুকু সময় তারপরেও থাকে তা চুরি করে নিচ্ছে টিভি বা মোবাইল ফোন। বই যেন এক প্রান্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে আজকের জীবনে। অথবা নিতান্তই তা ঘর সাজানোর উপকরণ হয়ে গেছে। অথচ বই সেই বাতিঘর যা আমাদের পৌঁছে দেয় অন্ধকারের পথ ধরে আলোর দেশে।

বই যখন কাজের জন্য –

ছাত্রছাত্রীদের কাছে বই এগিয়ে চলার প্রধান উপকরণ। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্যের হাতিয়ার হল বই। মা বই দেখে শিখে নেন নানান ধরনের রান্না। বাবার হাতে থাকে “হোমিও ওষুধে নিরাময়।” বছরের শেষে একবার ভ্রমণসঙ্গী হাতে নিয়ে চলে পায়ের তলার সর্ষের খোঁজ। আর পরীক্ষার ভালো ফল করার জন্য দিদি হাতে ধরিয়ে দেয় “The brief history of time” – ঠাকুমাকে দেখেছি ‘কথামৃত’ নিয়ে বসতে। এভাবেই চাওয়া-পাওয়ার মনের শুদ্ধিতে, রসনায় এবং সাধনায় বই সেতুর মতো কাজ করে চলেছে।

রইব তোমার ফসল খেতের কাছে –

রুশো থেকে রবীন্দ্রনাথ, শেকসপিয়র থেকে সতীনাথ ভাদুড়ি, জেমস্ জয়েস থেকে জীবনানন্দ-বইয়ের হাত ধরেই আমাদের ঘরের মধ্যে এসে হাজির হন। পথের পাঁচালির অপুর হাত ধরে যেমন আমরা পৌঁছে যাই চিরকৈশোরে। দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান সবই আমাদের কাছে পৌঁছায় বইয়ের সৌজন্যে।

অবসরে বই –

বইয়ের থেকে ভালো অবসরের বন্ধু নেই। একঘেয়ে পড়াশোনা কিংবা জীবনযাত্রার মধ্যে বই এক অন্য দিগন্ত নিয়ে আসে। পরশুরাম কিংবা শিবরাম-আনন্দের বহুবিচিত্র আয়োজন সবই পাওয়া যায় বইয়ের মধ্যে।

উপসংহার –

আধুনিক যন্ত্রজীবনে বই এক কঠিন সংকটের মুখোমুখি। মানুষ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত, বইয়ের জন্য সামান্য মাত্র সময়ও সে ব্যয় করে না। ভোগবাদের তাড়নায় সৃষ্টিশীলতা যত বিপন্ন হচ্ছে বইও ততই প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবনে। তবুও মন ও সমাজের সুস্থতার জন্য বইপড়ার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করতে পারবেন না কেউই।

১১.২ বাংলার উৎসব

উত্তর :

এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ
তবু রঙ্গে ভরা

– ঈশ্বর গুপ্ত

বাঙালির ভাগ্যাকাশে দুর্যোগের মেঘ, বারবার ঘনিয়েছে। কখন দুর্ভিক্ষ মহামারি মেতেছে বীভৎস মারণ যজ্ঞে। কখনও রাষ্ট্রীয় বিপর্যয় তাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেছে স্থান থেকে স্থানান্তরে। তবু আনন্দ স্রোতে ভাটা পড়েনি কারণ বাঙ্গালি উৎসব প্রিয় জাতি।

মেলামেশার প্রাঙ্গণ –

আমার আনন্দে সবার আনন্দ হউক, আমার সুখে সবাই সুখী হউক, এই কল্যানী ইচ্ছাই উৎসবের প্রাণ। মানুষ চায় গতানুগতিক একঘেয়েমির জীবন থেকে মুক্তির উৎসব ছাড়া ভালো উপায় কী?

উৎসবের শ্রেণিকরণ –

এই উৎসবকে চারটি ভাগে মূলত ভাগ করা যায় যথা –

  • ঋতু উৎসব
  • ধর্মীয় উৎসব
  • সামাজিক-পারিবারিক উৎসব
  • জাতীয় উৎসব

ঋতু উৎসব – বিশেষ বিশেষ ঋতুর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বাঙালিরা মেতে ওঠে নানা ঋতু উৎসবে। বছরের শুরুতে নববর্ষ উদ্যাপন হয় নানারকমভাবে। নবান্ন ও পৌষপার্বণ দুটি উৎসব নতুন ফসল কাটার সময় হয়। শীত ঋতুতে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নানারকম পিঠেপুলি ও মিষ্টান্ন তৈরি হয়। দোলযাত্রা হয় বসন্ত ঋতুকে কেন্দ্র করে। রঙের উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বৃক্ষরোপণ উৎসব, বর্ষামঙ্গল, বসন্তোৎসব-এর প্রচলন করেন, যা আজ বাঙালির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ধর্মীয় উৎসব – বাঙালি জাতি নানারকম ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী। তাই ধর্মকেন্দ্রিক নানা উৎসবের আয়োজন চলে বা বিভিন্ন সময়ে। হিন্দুদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা। এ ছাড়া কালীপূজা, সরস্বতী পূজা, লক্ষ্মী পূজা, বিশ্বকর্মা পূজার আয়োজন করা হয়। মুসলমানদের ঈদ, মহরম, শবেবরাত কিংবা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গুড ফ্রাইডে, বড়দিন, ইস্টার স্যাটারডে পালিত হয় বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে। ধর্ম আলাদা হলেও বাঙালিরা কিন্তু একে অন্যের ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে, একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

সামাজিক-পারিবারিক উৎসব – বেশ কিছু উৎসব আছে যেগুলিতে পরিবারের কোনো আনন্দ অথবা দুঃখের অনুভূতিকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়। বিবাহ, অন্নপ্রাশন, জামাইষষ্ঠী, ভাইফোঁটা- এই সকল অনুষ্ঠান আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীর মিলনানুষ্ঠানে পরিণত হয়। এই সকল অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পারস্পারিক মনোমালিন্য যেমন দূর হয়, তেমনি দূরের আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিলনের সুযোগ তৈরি হয়।

জাতীয় উৎসব – আমরা যে রাষ্ট্রে বাস করি সেই ভারতবর্ষে বিভিন্ন মনীষীদের জন্মদিবস-রবীন্দ্রজয়ন্তী, মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন, নজরুল জয়ন্তী এবং বিশেষ কিছুদিন যেমন- স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসও সারা ভারতবাসীদের সঙ্গে বাঙালিরা যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করে থাকে।

উপসংহার – যতই কৃত্রিমতা চেপে বসুক না-কেন বাঙালি আজও উৎসবমুখর থাকতেই ভালোবাসে। তাই আজ নতুন প্রজন্ম অনেক হারিয়ে যাওয়া উৎসব নতুন করে পালন করছে। লাইট, প্যান্ডেল, প্রতিমা নির্মাণে যে প্রতিযোগিতা চলে তার মধ্যেও বাঙালির শিল্পভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। কর্মব্যস্ত মানুষও আজকাল উৎসবের দিনগুলিতে কাজ থেকে দূরে থাকতে চায়। ফিরে আসতে চায় নিজভূমিতে। তাই অদূর ভবিষ্যতে বাঙালির উৎসব প্রাণের উৎসব হয়ে উঠবে এই প্রত্যয় জাগে।

  • শিক্ষকেরা সমাজের মেরুদণ্ড হিসাবে বিবেচিত হয়।
  • দেশের ভবিষ্যত নাগরিক গড়ে তোলেন।
  • তাঁরা শিক্ষার্থীদের নিজেদের সন্তানের মতো ভালোবাসেন।
  • শিক্ষকেরা আমাদের জীবনে ভালো এবং মহৎ হওয়ার জন্য সবসময় সাহস ও অনুপ্রেরণা দেন।

১১.৩ পরিবেশ সুরক্ষার ছাত্র সমাজের ভূমিকা

উত্তর :

পরিবেশ সুরক্ষার ছাত্র সমাজের ভূমিকা

ভূমিকা –

উদ্ভিদ ও জীবজগৎ-সহ যে প্রাকৃতিক ঘেরের মধ্যে আমরা বাস করি, তা-ই হল পরিবেশ। প্রাকৃতিক নিয়মে এই পরিবেশের মধ্যে যুগ যুগ ধরে ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে আসছে বলে জীবকুল আজও পৃথিবীতে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারছে। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষার একটি অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে।

আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য –

আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যে সংকটের সূচনা ঘটেছে। জীবনযাপনের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আমরা হাতের কাছে পেয়েছি অজস্র উপকরণ, গড়ে উঠেছে বড়ো বড়ো কলকারখানা। যত বেশি আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে উল্লসিত হয়েছি তার থেকে অনেক কম মনোযোগ দিয়েছি পরিবেশের ভারসাম্যের দিকে।

ভারসাম্যের সংকট –

পরিবেশের প্রতি মনোযোগের অভাবের জন্য পরিবেশে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিকূলতা। বাতাসে, জলে, মাটিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দূষণ। অজস্র যানবাহন আর কলকারখানা থেকে প্রতি মুহূর্তে বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। বনজঙ্গল কেটে নগরায়ণ করতে গিয়ে এবং শিল্পের প্রসার ঘটাতে গিয়ে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসে ভরে গেছে বাতাস। রাসায়নিক সার, কীটনাশক ওষুধ এবং কলকারখানা থেকে যে বর্জ্য পদার্থ বের হচ্ছে, তা থেকে দূষিত হচ্ছে নদী, সমুদ্র ও ভূগর্ভের জল, দূষিত হচ্ছে মাটি। শব্দদানবতো আজকের যুগের একটি বড়ো সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যানবাহনের শব্দ, বাজি ও মাইকের আওয়াজে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এসবের সঙ্গে আছে পরমাণু বোমার বিস্ফোরণের ফলে ছড়িয়ে পড়া দূষণ। সবমিলিয়ে আমাদের পরিবেশ যে ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে, তাতে দেখা দিচ্ছে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি এবং নানা অসুখ।

ভারসাম্যরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা –

সমস্যা আছে, অতএব প্রতিকারও চাই। এই প্রতিকারে পৃথিবীর সমস্ত স্তরের মানুষেরই ভূমিকা আছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাটি এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও বনসংরক্ষণ খুবই জরুরি, বলা যায়, এই সমস্যাসমাধানের অন্যতম প্রধান উপায়। ছাত্রছাত্রীরা বন-সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মহলে দাবি জানাতে পারে। তারা পরিকল্পিতভাবে রাস্তার ধারে, বিদ্যালয়ে কিংবা পোড়ো জমিতে বৃক্ষ রোপণ করতে পারে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। জল ও বাতাসকে যথাসম্ভব বিশুদ্ধ রাখার জন্য মানুষকে পরিবেশের ভারসাম্যের সংকটের কথা বোঝানোর চেষ্টা করবে। এর জন্য তারা আলোচনা সভা, পথ-নাটিকা প্রভৃতির আয়োজন করতে পারে। কেন-না যারা আজকের ছাত্রছাত্রী, ভবিষ্যতে তারাই হবে দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক। সুতরাং এখন থেকে তারা যদি সচেতন হয় ও সক্রিয় ভূমিকা নেয় তাহলে পরিবেশকে রক্ষা করা অসম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

উপসংহার –

একটি বিষয়ে আমরা সবাই বোধহয় একমত যে, এই পৃথিবীতে আমরা সবাই সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটা সুস্থ পরিবেশও যে খুবই প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা এখনও সবাই সচেতন নই। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। তারা অদম্য প্রাণশক্তি দিয়ে এগিয়ে এলে চারপাশের মানুষকে পরিবেশ সচেতন করে তোলা অসম্ভব হবে না নিশ্চয়ই।

১১.৪ তোমার বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন

উত্তর :

তোমার বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন

ভূমিকা –

স্মৃতিকে সঙ্গে নিয়েই মানুষ পথ চলে। স্মৃতির উত্তাপে সে তার মনকে সেঁকে নেয়। আবার সেই স্মৃতিই কখনও ভিজিয়ে দেয় বর্তমানকে। স্কুলজীবনের একটা পর্ব শেষ করার মুখোমুখি এসে এই স্কুলের প্রথম দিনের স্মৃতি বারে বারে মনের দরজায় কড়া নাড়ছে।

স্মৃতির সরণি ধরে –

আমার স্কুলের নাম মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়। আজ থেকে দশ বছর আগে এই স্কুলেরই প্রাথমিক বিভাগে এসেছিলাম ভরতির জন্য। সেদিনের ঘটনার অনেক কথাই আজ ঝাপসা হয়ে গেছে। মনে আছে বাবার হাত ধরে যখন প্রথম স্কুলের গেটের ভিতর ঢুকেছিলাম খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এত বড়ো বাড়ি। এখানে মা-বাবা পাশে থাকবে না। আমি কাঁদতে শুরু করেছিলাম। একজন ধুতি পরা লোক আমাকে কোলে তুলে নিয়েছিলেন। পরে জেনেছিলাম তিনিই ছিলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক। তিনি আমাকে একটা লজেন্সও দিয়েছিলেন। ক্লাসে ঢুকে দেখেছিলাম আমারই মতো অনেকগুলো ছেলে বসে আছে। তাদের অনেকে আমারই মতো কাঁদছিল। ঘরের দেয়ালে সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকা ছিল। আর কাদের যেন ফটো লাগানো ছিল। এখন বুঝি ওগুলো ছিল বরেণ্য সব মহাপুরুষদের ছবি।

যাত্রা হল শুরু –

একজন আন্টি প্রথম ক্লাসে এসেছিলেন। আমাদের নাম জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তারপরে কিছু একটা গল্প বলেছিলেন। আমার খুব ভালো লেগেছিল। চোখের জলও ততক্ষণে শুকিয়ে গিয়েছে। ঠিক মা-এর মতো মনে হয়েছিল আন্টিকে। তারপরে ঘণ্টা বাজল। আন্টি চলে যাওয়ার পরে একজন স্যার এলেন। তাঁর কাছেই পরে আমরা অঙ্ক শিখতে শুরু করি। এরপরই আমাদের প্রথম দিনের ছুটি হয়ে যায়। বাবার হাত ধরে আবার বেরিয়ে পড়ি বাড়ির পথে।

উপসংহার –

দশ বছরের যাত্রা এবার শেষ হওয়ার পথে। যদি সুযোগ পাই ইচ্ছা আছে এগারো-বারো ক্লাস এখানেই পড়ার। সেই প্রথম দিন আলাপ হয়েছিল জাহাঙ্গির নামে একটা ছেলের সঙ্গে। সে আজও আমার প্রিয় বন্ধু। আর প্রিয়তম বন্ধু আমার স্কুল-মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়।

[কেবল বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের জন্য]

১২. কম-বেশি ২০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও (যে-কোনো চারটি) : ৪×১=৪

১২.১ আফ্রিকাকে ‘ছায়াবৃতা’ বলার কারণ কী?

উত্তর – নিবিড় অরণ্যঘেরা পরিবেশে আফ্রিকার অবস্থান, সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছোতে পারে না। তাই আফ্রিকাকে ‘ছায়াবৃতা’ বলা হয়েছে।

১২.২ “অপূর্ব রাজি হইয়াছিল। অপূর্ব কীসে রাজি হয়েছিল?

উত্তর – যতদিন অপূর্বর মা বা কোনো আত্মীয় রেঙ্গুনে এসে উপযুক্ত ব্যবস্থা না করছে ততদিন তার হাতের তৈরি সামান্য খাবার গ্রহণ করতে হবে- রামদাসের স্ত্রীর এই অনুরোধে অপূর্ব রাজি হয়েছিল।

১২.৩ ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি ‘জয়ধ্বনি’ করার কথা বলেছেন কেন?

উত্তর –  ‘প্রলয়োল্লাস’ হল ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সৃষ্টির বন্দনা। স্বাধীনতাপ্রিয় যে তরুণের দল তাদের দুর্জয় সাহস আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পরাধীনতা এবং সামাজিক বৈষম্যের অবসান ঘটাতে চায় কবি তাদেরই জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

১২.৪ “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ”- ‘তথা’ বলতে কোন্ স্থানের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর – আলোচ্য মনোহর দেশে যে রত্নসজ্জিত প্রাসাদ ছিল, সেই প্রাসাদেই পদ্মা সর্বক্ষণ থাকতেন।

১২.৫ “ইসাবের মনে পড়ল” – ইসাবের কী মনে পড়ল?

উত্তর – ইসাবের মনে পড়ল যে, সে দেখেছে অমৃতের বাবা অমৃতকে মারতে গেলেই তার মা তাকে আড়াল করেন।

১৩. কম-বেশি ৬০টি শব্দের মধ্যে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ২x৩=৬

১৩.১ “আজ তার মনে হইল কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের? “কার মনে হল? কেন এমন মনে হল? ১+২

উত্তর –

ব্রিজটির পরিচয় – নদেরচাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছে অবস্থিত নদীটির ওপর যে কংক্রিটের ব্রিজ ছিল, এখানে সেই ব্রিজটির কথাই বলা হয়েছে।

অপ্রয়োজনীর মনে হওয়ার কারণ – আগে নদেরচাঁদ নদীর ওপর তৈরি নতুন রং করা ব্রিজটিকে নিয়ে গর্ব অনুভব করত। কিন্তু পরে বর্ষায় নদী জলে পরিপূর্ণ হলে নদেরচাঁদের মনে হল ব্রিজটি যেন নদীর পায়ের শেকল। ব্রিজের থামগুলো যেন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। যন্ত্রসভ্যতার ফসল কংক্রিটের ব্রিজটি নদীর স্বাধীন গতিকে রুদ্ধ করছে। তাই নদেরচাঁদের নতুন করে উপলব্ধি হয়েছিল যে, ওই ব্রিজটির কোনো প্রয়োজন ছিল না।

১৩.২ “অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা;” – ‘অম্বুরাশি-সুতা’ – কে? তিনি কী বার্তা বহন করে এনেছিলেন? ১+২

উত্তর –উদ্ধৃতি অনুসারে, অম্বুরাশি – সুতা হলেন দেবী লক্ষ্মী। সমুদ্রমন্থনের সময়, তিনি ক্ষীরোদসাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসেন

মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত “মেঘনাথবধ কাব্য” এর অন্তর্গত “অভিষেক” কবিতায়, ইন্দ্রজিত তার আলয়ে মাতা মন্দোদরীকে আসতে দেখে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চান। মাতা গভীর দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে ইন্দ্রজিতকে জানান, স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। রামের সাথে যুদ্ধে ইন্দ্রজিতের কনিষ্ঠ ভ্রাতা মহাবীর বীরবাহু নিহত হয়েছেন। এই দুঃসংবাদ শুনে রাক্ষসাধিপতি রাবণ ক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন এবং পুত্রের হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাঘব রামের মোকাবিলা করার জন্য সসৈন্যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৩.৩ “সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না” কোন্ মেয়েটির কথা বলা হয়েছে? মেয়েটির কেন মৃত্যু হল না? ১+২

উত্তর –

উদ্দিষ্ট মেয়েটির পরিচয় – পাবলো নেরুদার লেখা ‘অসুখী একজন’ কবিতায় যে মেয়েটিকে কবি বিপ্লব অথবা যুদ্ধক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময়ে দরজায় দাঁড় করিয়ে রেখে গিয়েছিলেন, সেই মেয়েটির কথা বলা হয়েছে।

মৃত্যুহীন – যুদ্ধেও তার মৃত্যু হল না।

প্রিয়তমার অপেক্ষা – কবি যখন যুদ্ধক্ষেত্রে যান তখন থেকেই কবির প্রিয়তমা মেয়েটির অপেক্ষার শুরু। সে জানত না যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব। ফলে তার অপেক্ষা চলতেই থাকে। সপ্তাহ আর বছর কেটে যায়।

  • যুদ্ধের তাণ্ডব – বছরগুলো পাথরের মতো তার মাথার উপরে নেমে আসে। এরপরে যুদ্ধ আসে। ‘রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো’ সেই যুদ্ধে মানুষের বাসভূমি আগুনে জ্বলে যায়। দেবতারা চূর্ণ হয়ে মন্দির থেকে বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
  • স্মৃতিচিহ্ন – কবির ফেলে আসা প্রিয় বাড়ি, বারান্দা, গোলাপি গাছ চিমনি, প্রাচীন জলতরঙ্গ ইত্যাদি যাবতীয় স্মৃতিই আগুনে জ্বলে যায়। শহরের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে পড়ে থাকে কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা, পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা।
  • অনন্ত অপেক্ষা – তার মধ্যেও যখন মেয়েটির অপেক্ষায় জেগে থাকার কথা বলা হয় তা আসলে প্রতীকী। কবি বোঝাতে চান যে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জেগে থাকে ভালোবাসা। যুদ্ধ কোনোদিন জীবনকে পরাজিত করতে পারে না। এভাবেই মেয়েটি বেঁচে থাকে অনন্ত অপেক্ষার মধ্যে দিয়ে।

আজকের এই আর্টিকেলে, আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষার পুরাতন বছরের প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আগের বছরের প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছে।

বিশেষ করে, আমরা মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র ২০২৩ সহ উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নপত্রটি শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তাদের পরীক্ষার ধরণ ও প্রশ্নের স্তর সম্পর্কে ধারণা দেয়।

আশা করি, এই আর্টিকেলটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে। পরীক্ষার আগে, শিক্ষার্থীদের উচিত নিয়মিত অনুশীলন করা, পুরাতন প্রশ্নপত্র সমাধান করা এবং বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নের সাথে পরিচিতি লাভ করা।

Share via:

মন্তব্য করুন