Madhyamik Life-Science Question Paper 2017 With Answer

Mrinmoy Rajmalla

নমস্কার বন্ধুরা! আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষার পুরাতন বছরের জীবন বিজ্ঞানের প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে তোমরা আগের বছরের পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন এসেছিল সে সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে পারবে। এই আর্টিকেলটিতে আমরা ২০১৭ সালের মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র পরবর্তী বছরের পরীক্ষার্থীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তোমাদেরকে পরীক্ষার ধরণ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু এবং সময়ের বন্টন সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। আশা করি এই আর্টিকেলটি তোমাদের মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে। পরীক্ষার আগে অবশ্যই ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্রটি ভালোভাবে দেখে নিও এবং প্রয়োজনে উত্তরগুলো মুখস্থ করে রাখো।

Table of Contents

Madhyamik Life-Science Question Paper 2017 With Answer

বিভাগ – ক

১। প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যা সহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখ : (১×১৫=১৫)

১.১ কিছু ফুল সূর্যোদয়ের পরে ফোটে, কিন্তু সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বুজে যায়। এটি হলো –

(ক) ফটোন্যাস্টি

(খ) সিসমোন্যাস্টি

(গ) কেমোন্যাস্টি

(ঘ) থার্মোন্যাস্টি

উত্তর : (ক) ফটোন্যাস্টি।

১.২ ডায়াবেটিস মেলিটাস – এ আক্রান্ত একজন ব্যক্তি নিচের কোন হরমোনটি যথেষ্ট মাত্রায় ক্ষরণ করতে অক্ষম

(ক) অ্যাড্রেনালিন

(খ) ইনসুলিন

(গ) থাইরক্সিন

(ঘ) টেস্টোস্টেরন

উত্তর : (খ) ইনসুলিন।

১.৩ ‘দৈনিক উষ্ণতা’ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত মানব মস্তিষ্কের অংশটি হলো –

(ক) থ্যালামাস

(খ) লঘু মস্তিষ্ক

(গ) হাইপোথ্যালামাস

(ঘ) সুষুম্নাশীর্ষক

উত্তর : (গ) হাইপোথ্যালামাস।

১.৪ তুমি মাইটোসিস কোষ বিভাজনের একটি দশায় সিস্টার ক্রোমাটিডদ্বয়কে আলাদা হতে দেখলে। দশাটি হল–

(ক) প্রফেজ

(খ) টেলোফেজ

(গ) অ্যানাফেজ

(ঘ) মেটাফেজ

উত্তর : (গ) অ্যানাফেজ।

১.৫ নিচের কোন জোড়টি সঠিক –

(ক) কোরকোদ্গম – ইস্ট

(খ) খন্ডীভবন – কেঁচো

(গ) রেনু উৎপাদন – অ্যামিবা

(ঘ) পুনরুৎপাদন – ড্রায়োপটেরিস

উত্তর : (ক) কোরকোদ্গম – ইস্ট।

১.৬ জনন অঙ্গ ও জনন গ্রন্থির পরিপূর্ণতা ঘটে মানব পরিস্ফুরনের –

(ক) শৈশব দশায়

(খ) বয়ঃসন্ধি দশায়

(গ) বার্ধক্য দশায়

(ঘ) সদ্যোজাত দশায়।

উত্তর : (খ) বয়ঃসন্ধি দশায়।

১.৭ মটর গাছের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হলো –

(ক) কুঞ্চিত বীজ

(খ) হলুদ রঙের বীজ

(গ) বেগুনি রঙের ফুল

(ঘ) কাক্ষিক পুষ্প

উত্তর : (ক) কুঞ্চিত বীজ।

১.৮ Y,R জিনোটাইপ যুক্ত মটর গাছ থেকে কত ধরনের গ্যামেট উৎপন্ন হয় –

(ক) ১

(খ) ৪

(গ) ২

(ঘ) ৩

উত্তর : (খ) ৪

১.৯ হিমোফিলিয়ার বাহক মাতা ও স্বাভাবিক পিতার কন্যা সন্তানদের হিমোফিলিয়া এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হলো –

(ক) ৭৫%

(খ) ৫০%

(গ) ১০০%

(ঘ) ০%

উত্তর : (ঘ) ০%

১.১০ পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টির সময় পরিবেশে যে গ্যাসটি অনুপস্থিত ছিল সেটি হলো –

(ক) হাইড্রোজেন

(খ) অক্সিজেন

(গ) মিথেন

(ঘ) অ্যামোনিয়া

উত্তর : (খ) অক্সিজেন

১.১১ সমবৃত্তীয় অঙ্গের বৈশিষ্ট্যটি হল –

(ক) উৎপত্তিগত ভাবে ভিন্ন এবং কাজ ও ভিন্ন

(খ) উৎপত্তিগতভাবে ভিন্ন কিন্তু কাজ একই

(গ) অপসারী বিবর্তন কে নির্দেশ করে

(ঘ) উৎপত্তিগত ও গঠনগতভাবে এক।

উত্তর : (খ) উৎপত্তিগতভাবে ভিন্ন কিন্তু কাজ একই।

১.১২ নিচের কোনটি অস্থি যুক্ত মাছের পটকার গ্যাস শোষণ করে নেয় –

(ক) রেড গ্রন্থি

(খ) অগ্র প্রকোষ্ঠ

(গ) গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি

(ঘ) রেটি মিরাবিলি

উত্তর : (ঘ) রেটি মিরাবিলি।

১.১৩ সিউডোমোনাস জীবাণুটি নাইট্রোজেন চক্রের নিচের কোনটির সাথে যুক্ত? –

(ক) নাইট্রোজেন আবদ্ধ কারণ

(খ) নাইট্রিফিকেশন

(গ) ডিনাইট্রিফিকেশন

(ঘ) অ্যামোনিফিকেশন

উত্তর : (গ) ডিনাইট্রিফিকেশন।

১.১৪ পূর্ব হিমালয় জীব বৈচিত্র হটস্পট এর একটি বিপন্ন প্রজাতি হলো –

(ক) লায়ন টেন্ড ম্যাকাক

(খ) ওরাং ওটান

(গ) রেড পান্ডা

(ঘ) নীলগিরি থর

উত্তর : (গ) রেড পান্ডা।

১.১৫ বায়ু দূষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগ গুলি হল –

(ক) ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস

(খ) হেপাটাইটিস, ব্রংকাইটিস, বধিরতা

(গ) ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার

(ঘ) ফুসফুসের ক্যান্সার, পোলিও, ম্যালেরিয়া

উত্তর : (গ) ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার।

বিভাগ – খ

২। নীচের ২৬ টি প্রশ্ন থেকে যে কোন ২১ টি প্রশ্নের উত্তর নির্দেশ অনুসারে লেখ : (২১×১=২১)

নীচের বাক্যগুলিতে উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থানগুলি পূরণ কর (যেকোনো পাঁচটি) : ১×৫=৫

২.১ মানুষের চোখের লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য প্রয়োজনমত পরিমার্জন করার পদ্ধতিকে_______বলে।

উত্তর : মানুষের চোখের লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য প্রয়োজনমত পরিমার্জন করার পদ্ধতিকে উপযোজন বলে।

২.২ অ্যাডেনিন একটি_______জাতীয় নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক।

উত্তর : অ্যাডেনিন একটি পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক।

২.৩ _______হল একটি লিঙ্গ সংযোজিত জিন দ্বারা সৃষ্ট রোগ।

উত্তর : হিমোফিলিয়া হল একটি লিঙ্গ সংযোজিত জিন দ্বারা সৃষ্ট রোগ।

২.৪ ঘোড়ার বিবর্তনে আদিমতম পূর্বপুরুষ হল_______।

উত্তর : ঘোড়ার বিবর্তনে আদিমতম পূর্বপুরুষ হল ইউহিপ্পাস

২.৫ ধানক্ষেত থেকে উৎপন্ন একটি দাহ্য গ্রিনহাউস গ্যাস হল_______।

উত্তর : ধানক্ষেত থেকে উৎপন্ন একটি দাহ্য গ্রিনহাউস গ্যাস হল মিথেন

২.৬ _______হল পশ্চিমবঙ্গে অবস্বঙ্গেএক্তি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।

উত্তর : সুন্দরবন হল পশ্চিমবঙ্গে অবস্বঙ্গেএক্তি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।

নীচের বাক্যগুলি সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ কর (যেকোনো পাঁচটি) : ১×৫=৫

২.৭ জিব্বেরেলিন হরমোন উদ্ভিদের অকাল পত্রমোচন রোধ করে।

উত্তর : মিথ্যা।

২.৮ ডিম্বাণু শুধুমাত্র মাইটোসিস – এর ফলে উৎপন্ন হয়।

উত্তর : মিথ্যা।

২.৯ মটর গাছের ফুলে প্রয়োজন অনুসারে স্ব-পরাগযোগ বা ইতর পরাগযোগ ঘটানো যায়।

উত্তর : সত্য।

২.১০ প্রাকৃতিক নির্বাচন পদ্ধতি হল ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের মূল প্রতিপাদ্য।

উত্তর : সত্য।

২.১১ ভঙ্গুর দূষক জীব বিবর্ধনের জন্য দায়ী।

উত্তর : মিথ্যা।

২.১২ ফ্ল্যাজেলা হল প্যারমিশিয়ামের গমন অঙ্গ।

উত্তর : মিথ্যা।

A- স্তম্ভে দেওয়া শব্দের সঙ্গে B- স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতাবিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নং উল্লেখ সহ সঠিক জোড়টি পুনরায় লেখ (যেকোনো পাঁচটি) : ১×৫=৫

A – স্তম্ভB – স্তম্ভ
২.১৩ অন্ধবিন্দু(ক) ভূগর্ভস্থ জল দূষণ
২.১৪ সাইটোকাইনেসিস(খ) রেটিনা ও অপটিক স্নায়ুর সংযোগস্থল
২.১৫ 44A + XY(গ) সমসংস্থ অঙ্গ
২.১৬ বাদুর ও পাখির ডানা(ঘ) কোশপাত গঠন
২.১৭ আর্সেনিক(ঙ) পরাগরেনু
২.১৮ গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তকরন(চ) শব্দ দূষণ
(ছ) পুরুষ মানুষের ক্রোমোজোম বিন্যাস

উত্তর :

A- স্তম্ভB -স্তম্ভ
২.১৩ অন্ধবিন্দু(b) রেটিনা ও অপটিক স্নায়ুর সংযোগস্থল
২.১৪ সাইটোকাইনেসিস(d) কোশপাত গঠন
২.১৫ 44A + XY(g) পুরুষ মানুষের ক্রোমোজোম বিন্যাস
২.১৬ বাদুর ও পাখির ডানা(e) সমসংস্থ অঙ্গ
২.১৭ আর্সেনিক(a) ভূগর্ভস্থ জল দূষণ
২.১৮ গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তকরন(c) পরাগরেনু

একটি শব্দ বা একটি বাক্যে উত্তর দাও (যে কোন ৬ টি) : ১×৬=৬

২.১৯ বিশদ সতী বেছে লেখ : TSH, ACTH, GTH, CSF

উত্তর : বিসদৃশটি হল – CSF

২.২০ মায়েলিন আবরণীর একটি কাজ লেখো।

উত্তর : মায়োলিন আবরণীর একটি কাজ হলো – এই আবরণ স্নায়ুষ্পন্দনের বিকিরণে বাধা দেয়।

২.২১ নিচে সম্পর্কযুক্ত একটি শব্দ জোড়া দেওয়া আছে। প্রথম জোড়াটির সম্পর্ক বুঝের দ্বিতীয় জোড়াটির শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও। প্রফেজ : নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিয়াসের অবলুপ্তি ::_______: নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিয়াসের পুনরাবির্ভাব।

উত্তর : প্রফেজ : নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিয়াসের অবলুপ্তি :: টেলোফেজ : নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিয়াসের পুনরাবির্ভাব।

২.২২ মানুষের মধ্যে বংশানুক্রমে সঞ্চারিত হয় একটি প্রকরণের উদাহরণ দাও।

উত্তর : মানুষের মধ্যে বংশানুক্রমিক ভাবে সঞ্চায়িত একটি প্রকরণ হলো – রোলার জিভ (প্রকট বৈশিষ্ট্য) ও স্বাভাবিক জিভ (প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য) – এর আবির্ভাব।

২.২৩ থ্যালাসেমিয়া রোগের অন্য দায়ী জিন মানুষের কোন ধরনের ক্রোমোজোম বহন করে?

উত্তর : থ্যালাসেমিয়ার জন্য দায়ী জিন মানুষের অটোজোম বহন করে।

২.২৪ বাষ্পমোচন রোধে ক্যাকটাসের একটি অঙ্গসংস্থান গত অভিযোজন উল্লেখ কর।

উত্তর : বাষ্পমোচন রোধে ক্যাকটাসের একটি অঙ্গসংস্থানগত অভিযোজন হলো – ক্যাকটাসের পর্ণকাণ্ডে পুরু বিউটিকলের আবরণ দেখা যায়।

২.২৫ নিচের চারটি বিষয়ের মধ্যে তিনটি একটি বিষয়ের অন্তর্গত সেই বিষয়টি খুঁজে বার করো এবং লেখো : ভ্রুণ, ভাজক কলা, বীজ, ক্রায়োসংরক্ষন

উত্তর : তিনটি বিষয় যে বিষয়ের অন্তর্গত তা হলো – ক্রায়োসংরক্ষণ।

২.২৬ সুন্দরবনের পরিবেশ সংক্রান্ত সম্প্রীতিকতম উদ্বেগের কারণটির নাম লেখ।

উত্তর : সুন্দরবনের পরিবেশ সংক্রান্ত সাম্প্রতিকতম উদ্বেগের কারণ হলো – এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিভাগ – গ

৩। নীচের ১৭ টি প্রশ্ন থেকে যেকোন ১২ টি প্রশ্নের উত্তর দুই-তিন বাক্যে লেখো : (২×১২=২৪)

৩.১ ট্রপিক চলন ও ন্যাস্টিক চলন – এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তর : ট্রপিক চলন ও ন্যাস্টিক চলন – এর মধ্যে দুটি পার্থক্য হল –

বিষয়ট্রপিক চলনন্যাস্টিক চলন
(i) উদ্দীপনাউদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা ন্যাস্টিক চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।
(ii) হরমোনের প্রভাবট্রপিক চলনে অক্সিন নামক ফাইটোহরমোনের প্রভাব রয়েছে।ন্যাস্টিক চলনে অক্সিন হরমোনের প্রভাব নেই।

৩.২ মানবদেহে জনন গ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরনে GTH – এর ভূমিকা লেখো।

উত্তর : মানবদেহে জনন গ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরণে GTH-এর ভূমিকা – মানবদেহে প্রধানত চারপকার GTH অর্থাৎ গোনাডোট্রপিক হরমোন ক্ষরিত হয়। যথা – FSH (স্ত্রীদেহে), LH (স্ত্রীদেহে), LTH বা প্রোল্যাকটিন (স্ত্রীদেহে), ICSH (পুরুষদেহে) জননগ্রন্থি থেকে হরমোন ক্ষরণে এদের ভূমিকা হল –

  • FSH (ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন) ঋতুচক্রের প্রথমার্ধে ডিম্বাশয়ের ফলিকল থেকে ইস্ট্রোজেন ক্ষরণে উদ্দীপনা জোগায়।
  • LH (লিউকোট্রপিক হরমোন) ঋতুচক্রের দ্বিতীয়ার্ধে ডিম্বাশয়ের কর্পাস লিউটিয়াম থেকে প্রোজেস্টেরন ক্ষরণে উদ্দীপনা জোগায়।
  • ICSH (ইন্টারস্টিলিয়াল সেল স্টিমুলেটিং হরমোন) পুরুষদেহে শুক্রাশয়ের লিডিগের আন্তরকোশ থেকে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণে উদ্দীপনা জোগায়।
  • LTH (স্ত্রী-দেহে স্তনগ্রন্থি থেকে দুগ্ধক্ষরণে প্রয়োজনীয় উদ্দীপনা জোগায়।)

৩.৩ নিম্নলিখিত ক্রিয়াগুলির মধ্যে কোণগুলি সহজাত বা কোণগুলি অর্জিত প্রতি বর্তমান প্রতিবর্ত ক্রিয়া তা তালিকা ভুক্ত কর –

  • সদ্যোজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা,
  • সাইকেল চালানো,
  • হাঁচি,
  • ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা

উত্তর :

  • সদ্যোজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা – সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া
  • সাইকেল চালানো – অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া
  • হাঁচি – সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া
  • ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা – অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া

৩.৪ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র – এর অংশ গুলি লেখো।

উত্তর : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের দুটি অংশ। অংশদুটি হলো- (i) মস্তিষ্ক, (ii) সুষুম্নাকাণ্ড

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের দুটি অংশ। অংশ দুটি হলো – (i) করোটিয় স্নায়ু (১২ জোড়া), (ii) সুষুম্নীয় স্নায়ু (৩১ জোড়া)

৩.৫ কোশচক্রের দুটি গুরুত্ব লেখো।

উত্তর : কোশচক্রের গুরুত্ব – জীবের কোশগুলির সংশ্লেষ, বৃদ্ধি, বিভাজন, দশার পর্যায়ক্রমিক আবর্তন হলো কোশচক্র।

  • কোশচক্রের মাধ্যমে কোশের বিভিন্ন উপাদানের গুণগত ও পরিমাণগত মান বজায় থাকে।
  • কোশচক্রের checkpoint গুলির সঠিক পরিচালনায় একটি কোশগুলি ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পায়।
  • কোশচক্রের মাধ্যমে DNA-র প্রতিলিপিকরণ ও সমবণ্টন ঘটে এবং একটি কোশ বিভাজনের উপযুক্ত হয়ে ওঠে।

৩.৬ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য – এর ভিত্তিতে DNA ও RNA – এর মধ্যে পার্থক্য নিরূপন কর।

  • পিরিমিডিন ক্ষারক
  • 5-C যুক্ত শর্করা

উত্তর :

বৈশিষ্ট্যDNARNA
(i) পিরিমিডিন ক্ষারকDNA-তে উপস্থিত পিরিমিডিন ক্ষারকগুলি হল – T (থাইমিন) C (সাইটোসিন)RNA-তে উপস্থিত পিরিমিডিন গুলি হল – C(সাইটোসিন) U(ইউরাসিল)
(ii) 5-C যুক্ত শর্করাDNA তে 5-C যুক্ত ডি-অক্সিরাইবোজ শর্করা থাকে।RNA-তে 5-C যুক্ত রাইবোজ শর্করা থাকে।

৩.৭ কোন কোন বাহক নীচের উদ্ভিদ গুলিতে পরাগযোগ সম্পন্ন করে।

  • ধান
  • পাতাঝাঝি
  • শিমূল
  • আম

উত্তর :

ধান → বায়ু

শিমুল → পাখি

পাতাঝাঁঝি → জল

আম → পতঙ্গ

৩.৮ সংকরায়নের পরীক্ষায় কীভাবে প্রকট গুন প্রকাশিত হয় তা উদাহরণের সাহায্যে লেখো।

উত্তর : বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণের ফলে প্রথম অপত্য জনুতে যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয় তাকে প্রকট গুণ বলে।

সংকরায়নের পরীক্ষায় কীভাবে প্রকট গুন প্রকাশিত হয় তা উদাহরণের সাহায্যে লেখো।

যেমন – খাঁটি লম্বা ও বেঁটে দুটি মটরগাছের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুর সমস্ত গাছ লম্বা প্রকৃতির হবে। এক্ষেত্রে লম্বা গুণের গাছটি নিজের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করতে সক্ষম হওয়ায় লম্বা গুণটি প্রকট বৈশিষ্ট্য।

৩.৯ অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ন পরীক্ষায় F2 – জনুতে ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ এর অনুপাত কী হবে ?

উত্তর : অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে ফেনোটাইপ অনুপাত – 1 : 2 : 1এবং জেনোটাইপ অনুপাত – 1 : 2 : 1 

৩.১০ বর্ণান্ধতার কীভাবে বংশগত সঞ্চরন ঘটে তা একটি ক্রশের সাহায্যে দেখাও।

উত্তর : একজন বর্ণান্ধ মহিলা ও স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে তার সম্ভাব্য বংশগত সঞ্চারণ নিম্নরূপ হবে –

বর্ণান্ধ জন্য দায়ী জিনটি C এবং স্বাভাবিক অ্যালিলটি C+ দ্বারা বোঝানো হল।

বর্ণান্ধতার কীভাবে বংশগত সঞ্চরন ঘটে তা একটি ক্রশের সাহায্যে দেখাও।

৩.১১ জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সংক্রান্ত মিলার ও উরে – এর পরীক্ষায় ব্যবহৃত বিক্রিয়কগুলি এবং উৎপন্ন একটি জৈব যৌগের নাম লেখো।

উত্তর : জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সংক্রান্ত মিলার ও উরে-র পরীক্ষায় ব্যবহৃত বিক্রিয়কগুলি হল – মিথেন (CH4), অ্যামোনিয়া (NH4) ও হাইড্রোজেন(H2)।

৩.১২ ঘোড়ার বিবর্তনের চারটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখো যা পরিবর্তিত হয়েছে।

উত্তর : ঘোড়ার বিবর্তনে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো –

  • শক্ত মাটিতে দৌড়ানোর জন্য খুড়ের আবির্ভাব হয়েছে।
  • দ্রুত দৌড়ানোর জন্য পা-এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
  • পাশের আঙুলের সংখ্যা হ্রাস ঘটেছে।
  • পায়ের তিন নম্বর আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের বৃদ্ধি হয়েছে।

৩.১৩ সুন্দরী গাছ তার দেহের অতিরিক্ত লবন কীভাবে রেচিত করে?

উত্তর : সুন্দরী গাছ তার দেহের অতিরিক্ত লবণ কাণ্ড ও পাতার সাহায্যে রেচিত করে –

  • মূলের ত্বক ও অধস্তক পুরু হওয়ায় অন্তঃ অভিদ্রবণের মাধ্যমে জল শোষিত হওয়ার সময় অতিরিক্ত লবণ শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
  • কান্ডের শাখাপ্রশাখার বিভিন্ন অঙ্গের কোষের ভ্যাকুওলের মধ্যে সঞ্চিত লবণ সঞ্চয়ের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে বাকল মোচনের মাধ্যমেও অতিরিক্ত লবণ নির্গত হয়ে থাকে।
  • জলশোষণের মাধ্যমে গৃহীত অতিরিক্ত লবণ পাতায় অবস্থিত লবণ গ্রন্থির মাধ্যমেও নির্গত হয়ে থাকে।
  • মূল সমুদ্রজলে থাকা নুনকে অনেকাংশে দেহের ভিতরে ঢুকতে দেয় না, যিদিওবা ঢোকে তার অনেকটাই আবার ছেঁকে বের করে দেয়।
  • পাতার ত্বকে থাকা মোমজাতীয় পদার্থের আস্তরণ বাতাসের জলীয় বাষ্পে থাকা নুনের ক্ষতিকর প্রভাবকে প্রশমিত করে।

৩.১৪ জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারী দুটি জীবানুর নাম লেখো।

উত্তর : জীবজ নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারী দুটি জীবাণুর নাম – অ্যাজোটোব্যাকটার, ক্লসট্রিডিয়াম

৩.১৫ অ্যাসিড বৃষ্টিজাত দুটি ক্ষতি উল্লেখ কর।

উত্তর : অ্যাসিড বৃষ্টিজাত দুটি ক্ষতি – বৃষ্টির জলে যখন নাইট্রিক ও সালফিউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে pH-5 এর কম হয়ে যায় তখন তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে। অ্যাসিড বৃষ্টি-এর ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি হলো

  • মার্বেল, চুনাপাথর দ্বারা গঠিত স্মৃতিসৌধ অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাবে ক্ষয় হয়ে যায়। মার্বেল বা চুনাপাথরের মধ্যেকার ক্যালশিয়াম কার্বনেট অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। ফলে স্মৃতিসৌধগুলি ক্ষয় হয়ে যায়। একে স্টোন ক্যানসার বলে। তাজমহল, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল প্রভৃতি অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে।
  • অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাবে জমির অম্লতা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়।
  • অ্যাসিড বৃষ্টি জলাশয়ের মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর জীবন সংশয় ঘটায়।

৩.১৬ পৃথিবীর উষ্ণায়নের ফলে জীব বৈচিত্র্য – এর যে ক্ষতি হচ্ছে তার চারটি উদাহরণ দাও।

উত্তর : (a) মেরু ভালুক (b) পেঙ্গুইন (c) সিন্ধুঘোটক (d) কোয়ালা ভালুক (e) প্রবাল (f) সামুদ্রিক মাছ (g) মেরুশিয়াল।

৩.১৭ পিপলস বায়োডাইভারসিটি রেজিস্টার (PBR) – এর জীব বৈচিত্র্য সংক্রান্ত যে প্রধান বিষয় গুলি লিপিবদ্ধ করা হয় তা লেখ।

উত্তর : PBR (পিপলস্ বায়োডাইভার্সিটি) এ জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত যে প্রধান বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ করা হয় তা হলো –

  • সমস্ত স্থানীয় প্রজাতি সম্পর্কে সামগ্রিক তথ্য।
  • প্রজাতির বাসস্থান ও তার থেকে প্রাপ্ত জৈবিক উৎপাদক সম্বন্ধে ধারণা, তাদের বাজার মূল্য, সংগ্রহের সময়, সংগ্রহের নিয়ম ও তাদের পরিবহন পদ্ধতি।
  • প্রজাতিজাত উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণের প্রযুক্তি ও প্রজাতিজাত সম্পদের স্থানীয় ব্যবহার ও পরিচালন পদ্ধতি।
  • স্থানীয় ভৌগোলিক তথ্য – বিপন্ন প্রজাতি নির্ণয় ও স্থানীয় মানুষের তরফ থেকে প্রজাতি সংরক্ষণের ধারণা ও উদ্যোগ।
  • স্থানীয় প্রজাতিগুলি সম্বন্ধে ঐতিহ্যবাহী পরম্পরাগত ও বিশ্বাস সংক্রান্ত তথ্য।

বিভাগ – ঘ

৪। নীচের ৬ টি প্রশ্ন বা তার বিকল্প প্রশ্নের উত্তর লেখো : (৫×৬=৩০)

৪.১ মানুষের চোখের অক্ষিগোলোকের লম্বচ্ছেদ-এর একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নত করো।

(ক) কর্নিয়া (খ) লেন্স (গ) ভিট্রিয়াস হিউমর (ঘ) রেটিনা। ৩+২=৫

উত্তর : মানুষের চোখের অক্ষিগোলকের লম্বচ্ছেদের চিত্রের চিহ্নিত অংশগুলি –

মানুষের চোখের অক্ষিগোলোকের লম্বচ্ছেদ-এর একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নত করো।

অথবা

একটি উদ্ভিদকোশ বা একটি প্রানীকোশ –এর মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশার পরিচ্ছন্ন চিত্র অংকন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো।

(ক) ক্রোমোজোম (খ) বেমতন্তু (গ) মেরু অঞ্চল (ঘ) সেন্ট্রোমিয়ার।

উত্তর : একটি উদ্ভিদকোশ বা একটি প্রানীকোশ –এর মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশার পরিচ্ছন্ন চিত্র

একটি উদ্ভিদকোশ বা একটি প্রানীকোশ –এর মাইটোসিস কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশার পরিচ্ছন্ন চিত্র অংকন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো।

৪.২ ক্রোমোজোম , DNA ও জিনের মধ্যে আন্তঃ সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর। ইউক্রোমাটিন ও হেটেরোক্রোমাটিন – এর মধ্যে নিম্নলিখিত দুটি বিষয়ে পার্থক্য লেখো :

  • কুন্ডলী
  • সক্রিয়তা।

উত্তর : ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক –

  • সজীব কোশে উপস্থিত বৃহৎ আকৃতির জৈব অণু DNA প্রোটিনের সংগে দৃঢ়ভাবে কুন্ডলী পাকিয়ে জালের মতো আকার ধারণ করে। একে ক্রোমোটিন জালিকা বলে।
  • কোশ বিভাজনের সময় এর কিছুটা খুলে সূক্ষ্ম সুতোর মতো ক্রোমোজোম গঠন করে। অর্থাৎ কোমোটিন জালিকা এবং ক্রোমোজোম হলো DNA-অণুর কুণ্ডলীকরণের পৃথক পৃথক অবস্থা।

ক্রোমোজোমের মধ্যে অবস্থিত যে অংশ জীবদেহের বংশগতির ধারক ও বাহক হিসাবে কাজ করে তাকে DNA বলে।

  • DNA-এর মধ্যে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ জীবদেহের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের জন্য নির্দিষ্ট প্রোটিন সংশ্লেষ করে তাকে জিন বলে।
  • অর্থাৎ জিন হল DNA-র মধ্যে অবস্থিত অংশ। জিন নির্দিষ্ট প্রোটিন (উৎসেচক) সংশ্লেষের সংকেত বহন করে এবং DNA সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। অর্থাৎ ক্রোমোজোম হলো বংশগত বৈশিষ্ট নির্ধারণকারী পদার্থ জিন বা DNA এর ধারক ও বাহক।
  • বিজ্ঞানীদের মতে DNA ও জিনের গঠন, কাজ সবই সমান্তরাল।

ইউক্রোমাটিন ও হেটেরোক্রোমাটিন –

বৈশিষ্ট্যইউক্রোমাটিনহেটেরোক্রোমাটিন
(i) কুণ্ডলীইউক্রোমাটিন স্থির নিউক্লিয়াসে কম কুন্ডলীকৃত থাকে এবং বিভাজনরত নিউক্লিয়াসে বেশী কুণ্ডলীকৃত হয়।হেটেরোক্রোমাটিন স্থির ও বিভাজনরত নিউক্লিয়াসে অধিক কুণ্ডলীকৃত হয়।
(ii) সক্রিয়তাইউক্রোমাটিন সক্রিয় জিন বহন করে। তাই ইউক্রোমাটিন সক্রিয়।হেটারোক্রোমাটিন নিষ্ক্রিয় জিন বহন করে। তাই হেটোরোক্রোমাটিন নিষ্ক্রিয়।

অথবা

মাইক্রোপ্রোপাগেশন কীভাবে সম্পন্ন করা হয়? সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের নিম্নলিখিত তিনটি পর্যায়ের ঘটনাগুলি বিবৃত কর :

  • জননকোশ বা গ্যামেট উৎপাদন
  • নিষেক
  • ভ্রূণসৃষ্টি ও নতুন উদ্ভিদ গঠন।

উত্তর : মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতির বিভিন্ন পর্যায়গুলো হল –

  • নির্বাচিত উদ্ভিদের টোটিপোটেন্ট ক্ষমতাযুক্ত ক্ষুদ্র ভাজক কলা (যেমন – কোশ, কলা বা অঙ্গের অংশ) বা এক্সপ্লান্ট সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু নাশকের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করা।
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ বিভিন্ন পরিপোষক ও হর্মোন দ্বারা প্রস্তুত জীবাণুমুক্ত কর্ষণ দ্রবণ টেস্ট টিউবে (পরীক্ষা নলে) নিয়ে ওই এক্সপ্লান্টকে পরীক্ষা নলে স্থাপন করা।
  • এক্সপ্লান্টটি দ্রুত কোশ বিভাজনের মাধ্যমে ক্যালাস গঠন করে এবং পরবর্তী পর্যায়ে কোশ বিভেদন পদ্ধতির ফলে মূল, কাণ্ড পাতা গঠিত হয়। ফলে ক্ষুদ্র পূর্ণাঙ্গ চারাগাছ (প্ল্যান্টলেট) তৈরী হয়।
  • এইভাবে সৃষ্ট চারাগাছকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে (গ্রিনহাউসে) রেখে অভিযোজিত করা হয়। পরে বাহিরের মুক্ত পরিবেশে স্থাপন করা হয়। এইভাবে খুব কম পরিমাণ কলাপোষণ করে অল্প সময়ে প্রচুর সংখ্যক পছন্দমাফিক উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব।

কলাপোষণের বিভিন্ন পর্যায়ের ছক

নির্বাচিত জনিতৃ উদ্ভিদ → জীবাণুমুক্ত এক্সপ্লান্ট সংগ্রহ → পরীক্ষানলের কর্য দ্রবণে জীবাণুমুক্ত পরিবেশে স্থাপন করা → কোশ বিভেদন ও ক্যালাস গঠন → মূল, বীটপ পাতা সৃষ্টি(কোশ বিভেদন পদ্ধতিতে) → অতি ক্ষুদ্র চারাগাছ(প্ল্যান্টলেট) → গ্রিণহাউসে চারাগাছ → মুক্তপরিবেশে নূতন চারাগাছ।

সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের নিম্নলিখিত পর্যায়গুলো বর্ণিত হল।

জননকোশ বা গ্যামেট উৎপাদন –

  • ফুলের পুংস্তবকের পুংকেশর অংশে পরাগধানী যে দুটি খণ্ড দিয়ে গঠিত সেই খণ্ডদ্বয়কে পরাগথলি বলে। ঐ পরাগথলির প্রজননিক অংশ রেণুমাতৃকোশ (2n) থেকে পুংগ্যামেট (n) উৎপন্ন হয়।
  • ফুলের চতুর্থ স্তবকের (স্ত্রীস্তবকের) গর্ভাশয় অংশের ডিম্বথলিতে প্রজননিক কোশ থেকে বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অসংখ্য ডিম্বক থেকে ডিম্বাণু বা স্ত্রী গ্যামেট উৎপন্ন হয়।

নিষেক –

  • পরাগধানী থেকে পরাগরেণু গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরণের পর পরাগনালিকার মাধ্যমে পুংগ্যামেটদ্বয় ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করে।
  • ডিম্বাশয়ে পরাগনালীর অগ্রভাগ বিদীর্ণ হয়ে ভ্রুণস্থলিতে পুংগ্যামেটদ্বয় মুক্ত হয়।
  • ভ্রুণস্থলীর মধ্যে ডিম্বাণুর (স্ত্রী গ্যামেট) সঙ্গে একটি পুংগ্যামেট মিলিত হয়ে জাইগোট (2n) গঠন করে। পুংগ্যামেটের সাথে স্ত্রী গ্যামেটের এই মিলন প্রক্রিয়াকেই নিষেক বলে।

ভ্রূণসৃষ্টি ও নূতন উদ্ভিদ –

  • জাইগোট (2n) (পুংগ্যামেটের সাথে স্ত্রীগ্যামেটের মিলনে উৎপন্ন) বারংবার বিভাজিত হয়ে ডিম্বকের ভিতর ভ্রুণ তৈরি হয়।
  • দুটি পুংগ্যামেটের অপরটি নির্ণীত নিউক্লিয়াসের (2n) সাথে মিলিত হয়ে সস্য (3n) গঠিত হয়।
  • ভ্রুণ ও সস্য সহ ডিম্বক বীজে রূপান্তরিত হয়, ডিম্বকত্বক থেকে বীজত্বক গঠিত হয়।
  • পরবর্তী পর্যায়ে ডিম্বাশয় বৃদ্ধি পেয়ে বীজ ও সস্য সহ ফলে রূপান্তরিত হয়, ঐ ফলমধ্যস্থ বীজের সুপ্ত ভ্রুণ অনুকূল পরিবেশে অঙ্কুরিত হয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও নূতন চারা বা উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়।

৪.৩ একটি সংকর কালো গিনিপিগের সাথে একটি বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগের মিলন ঘটালে যে যে ধরনের অপত্য গিনিপিগ উৎপন্ন হতে পারে তা একটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও। মেন্ডেলের পৃথকীভবনের সূত্রটি বিবৃত কর। (৩ + ২ = ৫)

উত্তর : ধরি, কালো গিনিপিগের কালো রঙের জন্য দায়ী অ্যালিল – B

সাদা গিনিপিগের সাদা রঙের জন্য দায়ী অ্যালিল – b

সংকর কালো গিনিপিগ – Bb

বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ – bb

এই সংকর কালো ও বিশুদ্ধ সাদা ও গিনিপিগের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হল। F1 জনুতে উৎপন্ন অপত্যের ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইপিক অনুপাত নীচে দেখানো হল –

একটি সংকর কালো গিনিপিগের সাথে একটি বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগের মিলন ঘটালে যে যে ধরনের অপত্য গিনিপিগ উৎপন্ন হতে পারে তা একটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখাও। মেন্ডেলের পৃথকীভবনের সূত্রটি বিবৃত কর।

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে F1 জনুতে উৎপন্ন অপত্যের ফিনোটাইপিক অনপাত = কালো গিনিপিগ : সাদা গিনিপিগ = 2 : 2 = 1 : 1

F1 জনুতে সম্পন্ন অপত্যের জিনোটাইপিক অনুপাত = বিশুদ্ধ কালো গিনিপিগ : সংকর কালো গিনিপিগ : বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ = 0 : 2 : 2 = 1 : 1

দুধরনের অপত্য গিনিপিগ উৎপন্ন হতে পারে – (i) সংকর কালো গিনিপিগ, (ii) বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ।

মেন্ডেলের পৃথকীভবন সূত্র –

নির্দিষ্ট চরিত্রের দুইজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হলে অপত্য জনুতে বৈশিষ্ট্যগুলি পাশাপাশি অবমিশ্রিত অবস্থায় অবস্থান করে এবং গ্যামেট গঠনকালে পুনরায় পৃথক হয়।

অথবা

থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গগুলি উল্লেখ কর। অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মের জন্য মাতাকে দায়ী করা হয়। এই ধারনাটি যে যথার্থ নয় তা একটি ক্রশের সাহায্যে দেখাও। (২+৩=৫)

উত্তর : থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গগুলি –

  • হিমোগ্লোবিন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার তীব্র অ্যানিমিয়া সৃষ্টি। রোগীর দেহে বারবার রক্ত সঞ্চারণের ফলে রক্তে লৌহ সঞ্চিত হয়, ফলে হৃদপিন্ড, যকৃৎ ও অন্তঃক্ষরা তন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • অস্থিমজ্জা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় বলে হাড়ের গঠন বিকৃতি ঘটে, রোগীর মুখ ও মাথার খুলির হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হয়।
  • প্লিহার অতিরিক্ত বৃদ্ধি ছাড়াও সার্বিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, জন্ডিস ও ক্লান্তি ইত্যাদি লক্ষণও দেখা যায়।

সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ –

পিতার দেহকোশে দুই প্রকার যৌন ক্রোমোজোম বা সেক্স ক্রোমোজোম (X ও Y) থাকে। তাই শুক্রাণু দুই প্রকার হয় – Y বহনকারী অ্যান্ড্রোস্পার্ম ও X বহনকারী গাইনোস্পার্ম। কিন্তু ডিম্বাণু কেবল X ক্রোমোজোম বিশিষ্ট থাকে।

থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গগুলি উল্লেখ কর । অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মের জন্য মাতাকে দায়ী করা হয়। এই ধারনাটি যে যথার্থ নয় তা একটি ক্রশের সাহায্যে দেখাও।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ডিম্বাণু (X) কোন্ প্রকৃতির শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হচ্ছে, সেটিই প্রকৃতপক্ষে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করে দেয়। শুক্রাণুতে Y ক্রোমোজোম থাকলে সন্তান পুত্র ও শুক্রাণুতে X ক্রোমোজোম থাকলে সন্তান কন্যা হবে। শুক্রাণুর প্রকৃতি অনুযায়ী এক্ষেত্রে যথাক্রমে পুত্র (XY) ও কন্যা (XX) সন্তান সৃষ্টি হয়।

অতএব, পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মের জন্য মাতাকে দায়ী করার প্রবণতাটি যথার্থ নয়। পরন্তু মানুষের ক্ষেত্রে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার ভূমিকা সক্রিয় ও প্রধান হয়।

৪.৪ যে দুটি অন্তর্গঠন গত বৈশিষ্ট্যর ভিত্তিতে ‘ তিমির ফ্লিপার ‘ আর ‘ পাখির ডানা ‘ কে সমসংস্থ অঙ্গ বলে বিবেচিত করা হয় তা উল্লেখ কর। একটি মৌচাকে কোনো শ্রমিক মৌমাছি অন্য শ্রমিক মৌমাছিদের কীভাবে খাদ্য উৎসের সন্ধান ও অবস্থান জানায়? (২+৩=৫)

উত্তর : তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানাকে সমঃসংস্থ অঙ্গ বলার অন্তর্গঠনগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তি –

যেসব অঙ্গ উৎপত্তিগত ও গঠনগতভাবে এক কিন্তু কার্যগতভাবে আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে। তিমির ফ্লিপার এবং পাখির ডানাকেও সমঃসংস্থ অঙ্গ বলা হয় কারণ –

  • তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানা-র অন্তর্গঠনের অস্থিগুলির মধ্যে হিউমেরাস, রেডিয়াস-আলনা, কারপাল, মেটাকারপাল ও ক্যালেনজেস অভিন্ন এবং এদের সজ্জাবিন্যাসও একই। উভয়ই পেক্টোরাল গার্ডল নামক অস্থির সাথে যুক্ত।
  • তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানার অন্তর্গঠনের অস্থি, নার্ভ, -এদের সজ্জা একইরকম।

তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানার অন্তর্গঠন এক হলেও এদের কাজ আলাদা। তাই তিমির ফ্লিপার ও পাখির ডানাকে সমসংস্থ অঙ্গ বলে।

মৌমাছিদের খাদ্য সংক্রান্ত বার্তা আদানপ্রদান কৌশল –

মৌমাছিরা সামাজিক জীব। শ্রমিক মৌমাছিদের মধ্যে স্কাউট মৌমাছিরা খাদ্যের সন্ধান করে এবং ফোরেজার নামক শ্রমিক মৌমাছিরা স্কাউটদের আনা তথ্য অনুযায়ী খাবার সংগ্রহে যায়। স্কাউট মৌমাছিরা মৌনৃত্য-এর মাধ্যমে খাদ্য সংক্রান্ত এই বার্তা আদান প্রদান করে। মৌনৃত্য দুপ্রকার – (i) রাউন্ড ডান্স, (ii) ওয়াগল নৃত্য।

(i) রাউন্ড ডান্স – খাদ্যের উৎস 50-75m-এর মধ্যে হলে স্কাউট কর্মী মৌমাছিরা ক্ষুদ্র চক্রাকারে এই নৃত্য প্রদর্শন করে।

রাউন্ড ডান্স

(ii) ওয়াগল নৃত্য – খাদ্যের উৎস 75-100m-এর মধ্যে হলে স্কাউট মৌমাছিরা ওয়াগল নৃত্য প্রদর্শন করে। এক্ষেত্রে এরা একবার ডানদিকে এবং একবার বাঁদিকে লুপ তৈরী করে। মধ্যবর্তী অংশে নিজেদের উদর আন্দোলিত করে। ওয়াগল কথার অর্থ আন্দোলন। তাই এই নৃত্যের নাম ওয়াগল নৃত্য।

ওয়াগল নৃত্য

মৌনৃত্যের মাধ্যমে স্কাউট কর্মী মৌমাছিদের দেওয়া তথ্য অনুসারে ফোরেজাররা নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করে। সূর্যের অবস্থানের সাপেক্ষে খাদ্যের উৎসের অভিমুখ পরিবর্তিত হয়।

অথবা

অভিব্যক্তি বা বিবর্তনের মুখ্য ঘটনাগুলি একটি পর্যায় চিত্রের মাধ্যমে দেখাও। (৫)

উত্তর : অভিব্যক্তি বা বিবর্তনের মুখ্য ঘটনাগুলির পর্যায় চিত্র –

পৃথিবীর সৃষ্টি – 460 কোটি বছর আগে মহাজাগতিক মেঘ থেকে C, H, O, N মুক্ত অবস্থায় থাকে, মুক্ত O2 অনুপস্থিত। ছিল CO2, NH3, CH4 ইত্যাদি সরল অণু।

সাগরের সৃষ্টি – পৃথিবীর উত্তাপ কমে এলে জলীয় বাষ্প থেকে বৃষ্টির মাধ্যমে সাগরের উৎপত্তি, খনিজ পদার্থগুলো জলে মেশায় জল লবণাক্ত হয়।

সমুদ্রের জলে প্রথম জীবনের উদ্ভব

উষ্ণ তরল স্যুপ (Hot dilute soup) থেকে কোয়াসারভেট এর উৎপত্তি যেখানে অ্যামাইনো অ্যাসিড, লিপিড, পিউরিন, পিরিমিডিন ও শর্করা মিশ্রিত অবস্থায় থাকে।

আদি কোশ বা প্রোটোসেল-এর উৎপত্তি

RNA ও DNA এর উৎপত্তি, লিপিড প্রোটিনের আবরণে আবৃত হয়ে RNA থেকে প্রোটোসেল নামক ভাইরাস সদৃশ আদিম জীব গঠিত হয়।

এককোশী জীবের উৎপত্তি

প্রায় 300-350 কোটি বছর আগে নিউক্লিয়াস ও অঙ্গাণু বিহীন প্রোক্যারিওটিক কোশের উদ্ভব হয়।

সালোকসংশ্লেষীয় ব্যাকটেরিয়ার উদ্ভব, পরিবেশে O2 র উপস্থিতি।

বহুকোশী জীবের উৎপত্তি, (ইউক্যারিওটিক কোষের উদ্ভব), ক্লোরোফিল যুক্ত স্বভোজী উদ্ভিদগোষ্ঠী ও পরভোজী প্রাণীগোষ্ঠীর উদ্ভব।

মেরুদণ্ডী প্রাণীদের বিবর্তন

প্রায় 50 কোটি বছর আগে চোয়ালবিহীন মাছেদের আবির্ভাব

প্রায় 40 কোটি বছর আগে নতুন বাসস্থান (ডাঙ্গা) ও উভচর প্রাণীদের উদ্ভব।

প্রায় 35 কোটি বছর আগে সরীসৃপের আবির্ভাব (কার্বোনিফেরাস যুগে)।

প্রায় 24 কোটি বছর আগে ডাইনোসরদের প্রাধান্য, মেসোজোয়িকের শেষে ডাইনোসরদের অবলুপ্তি, আধুনিক পাখি ও অমরাযুক্ত প্রাণীদের আবির্ভাব।

স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আবির্ভাব।

প্রায় 6.5 কোটি থেকে বর্তমান স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আবির্ভাব এইযুগে প্রাইমেটসহ মানুষের আবির্ভাব ও আধিপত্য।

৪.৫ অ্যাজমা বা হাঁপানি – র কারণগুলি কি কি? জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট – এর ভূমিকা কি কি? (২+৩=৫)

উত্তর : অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণগুলি –

বিভিন্ন কারণে শ্বাসনালি প্রদাহজনিত কারণে পরিবর্তিত হয়ে বায়ু চলাচলের পথ রুদ্ধ করে ও শ্বাসকষ্ট সহ অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। কারণগুলি হলো –

  • পরিবেশগত কারণ – প্রকৃতিতে অবস্থিত বিভিন্ন অ্যালারজেন এর সংস্পর্শে রোগটি বৃদ্ধি পায় (যেমন – উদ্ভিদের পরাগরেণু, প্রাণীর মল, ছত্রাক ও ধুলো প্রভৃতি)। এছাড়াও গৌনদূষক যেমন ওজোন, ফরম্যালডিহাইড, PAN (পারঅক্সি অ্যাসিটাইল নাইট্রেট) প্রভৃতি অ্যালারজেনের প্রভাব বেড়ে গিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
  • মনুষ্যসৃষ্ট কারণ – কলকারখানা বা গৃহে কয়লা, তেলের দহনে সৃষ্ট ধোঁয়া, কারখানার সৃষ্ট সালফার ডাই অক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেনের অক্সাইড (NO2) প্রভৃতি অ্যাজমার প্রভাব বাড়ায়।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে JFM এর ভূমিকা –

ভারত সরকার স্বীকৃত সরকারী ও স্থানীয় মানুষের যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় বনজ সম্পদের সুপরিচালন ব্যবস্থা হলো জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট বা JFM। JFMএর বিভিন্ন ভূমিকা হলো –

  • বিভিন্ন রাজ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে রাজ্য বনদপ্তরকে সক্রিয় সহযোগিতা করে JFM কমিটি।
  • বনে চোরাশিকারের ঘটনা তাৎক্ষণিক বনদপ্তরকে জানানোর কাজ করে JFM কমিটি।
  • দাবানল, বেআইনি পশুচারণ, বনভূমি বিনাশের প্রচেষ্টা, বেআইনি খননকার্য রোধে প্রাথমিকভাবে বনদপ্তরকে তা জানানো ও সংশ্লিষ্ট কাজে বনদপ্তরের সঙ্গে JFM কমিটি কাজ করে।
  • JFM বিনষ্ট বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সংগঠনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসাহদান এবং বনজ উপাদানের পরিচালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে।
  • JFM জঙ্গল পুনরুদ্ধারেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

অথবা

জীব বৈচিত্র্য কি কি কারণে হ্রাস পায় তা সঠিক উদাহরণের সাহায্যে নির্ধারণ কর। (৫)

উত্তর : জীববৈচিত্র্যে হ্রাস পাওয়ার কারণ – কোনো স্থলজ, জলজ বাস্তুতন্ত্রে জিনগতভাবে, প্রজাতিগতভাবে, বাস্তুতন্ত্রগতভাবে এবং তার মধ্যে আলফা, বিটা, গামা ইত্যাদি নানা দিক দিয়ে জীবের মধ্যে যে বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় তাকে জীববৈচিত্র্য বলে। বর্তমানে জীববৈচিত্র্য ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে এর কারণ হল –

  • বাসস্থানের অভাব – জীবের বাসস্থানগুলি কেড়ে নিয়ে সেখানে ক্রমশ রাস্তাঘাট, বাড়ি, শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে বাসস্থানের অভাবে জীবগুলি বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গুজরাটের গির অরণ্যের মধ্যে দিয়ে রাস্তা চলে যাওয়ায় এখানকার সিংহগুলি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। ভারতীয় বাঘ তার বাসস্থানের অভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
  • শিকার ও চোরাশিকার – শিকার ও চোরাশিকার হলো জীববৈচিত্র্য হ্রাসের অন্যতম কারণ হরিণের শিং-এর জন্য এদের শিকার করায় এরা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রাপ্ত গণ্ডারের খড়গ, কচ্ছপের মাংস, হরিণের মৃগনাভি, বিভিন্ন পশুর চামড়ার জন্য এই সমস্ত প্রাণীদের শিকার করা হচ্ছে। ফলে এরা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
  • অতিব্যবহার – কোনো জীবের অতিব্যবহারের ফলে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। সর্পগন্ধা মূল থেকে প্রাপ্ত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ রেসারপিনের জন্য এর সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
  • দূষণ – বর্তমানে দূষণের ফলে বহু জীবপ্রজাতি হ্রাস পাচ্ছে। অতিরিক্ত জলদূষণের ফলে গঙ্গানদীতে মাছ ও শুশুকের প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে তারা ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে।
  • বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ – বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশের কারণেও জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়। তেলাপিয়া মাছ ভারতের জলাশয়ে অনুপ্রবেশের ফলে এদেশীয় মাছ (মৌরলা, পুঁটি, খলসে, বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে। ল্যান্টানা ক্যামেরা নামক ফুলগাছের প্রভাবে স্থানীয় গুল্ম গাছের সংখ্যা হ্রাস পায়। কচুরিপানার প্রভাবে জলের অন্যান্য জীবেদের সংখ্যা হ্রাস পায়।

৪.৬ ভারতীয় এক শৃঙ্গ গণ্ডারের বাড়ানোর জন্য দুটি সংরক্ষণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রস্তাব কর। মিষ্টি জলের উৎসগুলি কি কি ভাবে দূষিত হয় – তোমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মতামত জানাও। (২+৩=৫)

উত্তর : ভারতীয় একশৃঙ্গ গণ্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য দুটি পদক্ষেপ –

ভারতে একশৃঙ্গ গণ্ডার পাওয়া যায় পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে। এরা ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য গৃহীত পদক্ষেপ হল –

  • গন্ডারকে তার নিজস্ব পরিবেশে সংরক্ষণ (প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা)।
  • গন্ডারের শিকার, এর শিংয়ের জন্য চোরাশিকার কঠোর আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করা।
  • এদের প্রজননের জন্য উপযুক্ত সঙ্গীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
  • রোগ জীবাণুর সংরক্ষণ রোধ করা।

মিষ্টি জলের দূষিত হবার কারণ –

  • জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক, রাসায়নিক সার – জমিতে ব্যবহৃত DDT, অ্যালড্রিন ইত্যাদি কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার বৃষ্টির জলের সাথে মিশে পার্শ্ববর্তী নদী বা পুকুরে পড়ে ফলে মিষ্টি জল দূষিত হয়।
  • কলকারখানার বর্জ্য ও গরম জল – কলকারখানার গরম জল নদীতে মিশলে তাপীয় দূষণ ঘটে। এছাড়াও কলকারখানার বর্জ্য নদীতে পড়লে জল দূষিত হয়।
  • গৃহস্থালী জনিত দূষণ – গৃহস্থালীর নোংরা, আবর্জনা পুকুরে গিয়ে পড়লে জল দূষিত হয় এবং জলের ইউট্রফিকেশান ঘটে।
  • জীবাণু – নোংরা জলে থাকে বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণু (ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া) জলদূষণ ঘটায়।

অথবা

দুটি অঞ্চলের মধ্যে একটিকে জীব বৈচিত্র্য হটস্পট বলে ঘোষণা করতে চাইলে কি কি শর্ত তুমি বিবেচনা করবে? এক্স – সংরক্ষণের দুটি উদাহরণ দাও। (৩+২=৫)

উত্তর : একটি অঞ্চলকে জীববৈচিত্র্য হটস্পট ঘোষণা করতে চাইলে নিম্নলিখিত শর্তগুলি বিবেচনার যোগ্য –

  • হটস্পট হওয়ার প্রাথমিক শর্ত হল, যে অঞ্চলের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে, সেখানকার সব প্রজাতিকেই প্রাথমিকভাবে স্থানীয় প্রজাতি বা সেখান থেকে উদ্ভূত প্রজাতি হতে হবে।
  • অন্য কোন অঞ্চল থেকে ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রজাতির অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে প্রজাতি সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো হটস্পট হওয়ার কোন শর্ত হবে না।
  • হটস্পট অঞ্চলে অন্তত 1500 সংবহন কলাযুক্ত স্থানীয় উদ্ভিদ প্রজাতির অস্তিত্ব থাকবে যা সমগ্র বিশ্বে সংবহনকলা যুক্ত স্থানীয় প্রজাতির 0.5% হবে।
  • ঐ অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের অন্তত 70% প্রজাতিই যেন লুপ্ত হয়ে গিয়ে থাকে।

এক্স-সিটু

  • প্রধানত প্রাকৃতিক পরিবেশে বা কৃত্রিমভাবে পরিবেশ তৈরী করে যে বড়ো জায়গায় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বা বিনিময়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করে জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য ও প্রজননের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত করা হয় তাকে চিড়িয়াখানা বলে। একটি এক্স-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ – আলিপুর চিড়িয়াখানা (পশ্চিমবঙ্গ)।
  • যে বাগানে এক্স-সিটু সংরক্ষণ পদ্ধতিতে অনেকখানি ঘেরা ক্ষেত্র জুড়ে বিভিন্ন সজীব উদ্ভিদকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে প্রতিপালিত ও সংরক্ষণ করা হয় সেই বাগানকে বোটানিক্যাল গার্ডেন বলে। যেমন আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ভারতীয় বোটানিক গার্ডেন (হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ)।
  • ক্রয়োপ্রিজারভেশন – এই পদ্ধতিতে কলাকোশ, শুক্রাণু, ভ্রুণ ইত্যাদিকে তরল নাইট্রোজেনে-196°C তাপমাত্রায় রেখে গুণাগুণ অক্ষুন্ন রেখে বহুদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

আরও পড়ুন – Madhyamik Geography Question Paper 2017 With Answer

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষার পুরাতন বছরের প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় আগের বছর কেমন প্রশ্ন এসেছিলো সে সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছে। বিশেষ করে, আমরা Madhyamik LIFE science Question Paper 2017 With Answer নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক ২০১৭ সালের প্রশ্নগুলি পরবর্তী বছরের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, তোমরা মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে Madhyamik LIFE science Question Paper 2017 With Answer টি দেখে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Madhyamik Physical Science Question Paper 2020 With Answer

Madhyamik Physical Science Question Paper 2020 With Answer

Madhyamik Geography Question Paper 2020 With Answer

Madhyamik Life Science Question Paper 2020 With Answer

Madhyamik Life Science Question Paper 2020 With Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer