“মার খেয়ে ইস্পাত হয়ে উঠতে হবে।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “মার খেয়ে ইস্পাত হয়ে উঠতে হবে।” — কখন বক্তা এরকম ভেবেছেন উপন্যাস অবলম্বনে লেখো। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।
কোনিকে একজন সাঁতারু বানানোর স্বপ্ন দেখলেও প্রশিক্ষণের শুরুতে ক্ষিতীশের সাথে তার মানসিক দূরত্ব ছিল। কোনির দাদা মারা গেলেও ক্ষিতীশের প্রশিক্ষণে কোনো শিথিলতা দেখা যায়নি। অনুশীলনের সময় কোনি যখন হাঁপিয়ে উঠত, তখন ক্ষিতীশ পাথর ছুঁড়ে, বাঁশের লগা হাতে নিয়ে কমলদিঘির পাড় দিয়ে হেঁটে কোনিকে জল থেকে উঠতে বাধা দিতেন। কোনির কাতর প্রার্থনাতেও ক্ষিতীশের মন গলে না। বরং বাকি দুশো মিটার শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ দেয় – “মাথা ভেঙে দেব। জল থেকে উঠবি তো মরে যাবি।” – ক্ষিতীশের কণ্ঠস্বর অমানবিক হয়ে ওঠে।
কিন্তু এই সময় ক্ষিতীশ লক্ষ্য করে কোনি তার ক্লান্ত হাত দুটোকে জল থেকে টেনে তুলে আবার নামিয়ে রাখছে। শ্বাস নেওয়ার জন্য হাঁ করে বাতাস নিচ্ছে এবং তার চোখ দুটো যেন ঘুমে আচ্ছন্ন।
এই কষ্টকে উপলব্ধি করেও প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ মনে মনে বলেন যে, কোনিকে যন্ত্রণা ঠেলে এগিয়ে যেতে হবে। খিদের তাড়না সে জানে। তাই যন্ত্রণার স্বরূপ তার অজানা নয়। এই যন্ত্রণাকে বুঝতে পারলে তবেই তাকে হারিয়ে দেওয়া সম্ভব। আর যন্ত্রণাকে হারাতে পারলে তবেই আসবে প্রত্যাশিত সাফল্য। এই প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ মনে মনে কোনিকে উদ্দেশ্য করে উচ্চারণ করেছিলেন – “মার খেয়ে ইস্পাত হয়ে উঠতে হবে।”
“মার খেয়ে ইস্পাত হয়ে উঠতে হবে।” — কখন বক্তা এরকম ভেবেছেন উপন্যাস অবলম্বনে লেখো।
- শুরুর কথা – কোনিকে সাঁতারু বানানোর স্বপ্নে বিভোর হলেও প্রশিক্ষণপর্বের প্রথম দিকে ক্ষিতীশের সঙ্গে কোনির অনেকটাই মানসিক দূরত্ব ছিল। এমনকি কোনির দাদা মারা গেলেও ক্ষিতীশের প্রশিক্ষণে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি।
- কোনির প্রতি কড়া নির্দেশ – অনুশীলনের সময় কোনি হাঁপিয়ে উঠলে ক্ষিতীশ পায়ের কাছে পড়ে থাকা ঢিল ছুঁড়ে মেরেছেন, বাঁশের লগা হাতে নিয়ে কমলদিঘির পাড় দিয়ে হেঁটেছেন—যাতে কোনি জল থেকে উঠতে না পারে। কোনির কাতর প্রার্থনাতেও কোনো কাজ হয়নি। বরং বাকি দুশো মিটার শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ এসেছে – “মাথা ভেঙে দেব। জল থেকে উঠবি তো মরে যাবি।” – অমানবিক হয়ে উঠেছে ক্ষিতীশের কণ্ঠস্বর।
- কোনির ক্লান্তি – কিন্তু এরই মধ্যে ক্ষিতীশ লক্ষ করেছেন, কোনি তার ক্লান্ত হাত দুটোকে জল থেকে টেনে তুলে আবার নামিয়ে রাখছে। শ্বাস নেওয়ার জন্য হাঁ করে বাতাস নিচ্ছে এবং তার চোখ দুটো যেন ঘুমে আচ্ছন্ন।
- প্রত্যাশিত সাফল্য – এই কষ্টকে উপলব্ধি করেও প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ মনে মনে বলেন যে, কোনিকে যন্ত্রণা ঠেলে এগিয়ে যেতে হবে। খিদের তাড়না সে জানে। তাই যন্ত্রণার স্বরূপ তার অজানা নয়। এই যন্ত্রণাকে বুঝতে পারলে তবেই তাকে হারিয়ে দেওয়া সম্ভব। আর যন্ত্রণাকে হারাতে পারলে তবেই আসবে প্রত্যাশিত সাফল্য। এই প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ মনে মনে কোনিকে উদ্দেশ্য করে উচ্চারণ করেছিলেন – “মার খেয়ে ইস্পাত হয়ে উঠতে হবে।”
কোনিকে একজন সফল সাঁতারু বানানোর জন্য ক্ষিতীশ কঠোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণের শুরুতে কোনির সাথে তার মানসিক দূরত্ব থাকলেও, ক্ষিতীশ কখনোই তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি। কোনির দাদার মৃত্যুর পরও তিনি প্রশিক্ষণে কোনো ছাড় দেননি।
ক্ষিতীশ জানতেন যে, কোনিকে একজন সফল সাঁতারু হতে হলে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে। তাই তিনি কোনিকে বারবার চ্যালেঞ্জ করেছিলেন এবং তার সীমাকে পরীক্ষা করেছিলেন।
কোনিও ক্ষিতীশের প্রত্যাশা পূরণ করতে পুরোপুরি নিবেদিত ছিল। সে কঠোর পরিশ্রম করেছিল এবং যন্ত্রণা সহ্য করেছিল। তার এই অধ্যবসায়ের ফলে সে একজন সফল সাঁতারু হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গ থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে, জীবনে সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রম এবং যন্ত্রণা সহ্য করার মানসিকতা থাকা প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রম করতে হবে। তবেই আমরা আমাদের জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারব।