“বিষ্টু ধরের উত্তেজিত মুখ দেখে ক্ষিতীশ চটপট মতলব ভেজে নিয়ে বলল – মাঝে মাঝে যাই বুদ্ধি পরামর্শ দিতে – প্রেসিডেন্ট পেয়েছি-কত টাকা ডোনেশন চাও নকুলদা?” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “বিষ্টু ধরের উত্তেজিত মুখ দেখে ক্ষিতীশ চটপট মতলব ভেজে নিয়ে বলল – মাঝে মাঝে যাই বুদ্ধি পরামর্শ দিতে – প্রেসিডেন্ট পেয়েছি-কত টাকা ডোনেশন চাও নকুলদা?” – এই তিনটি উক্তির আলোকে ক্ষিতীশ সিংহ সম্পর্কে তোমার কী মনে হয়েছে লেখো। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।
উপরের উদ্ধৃতিগুলি মতি নন্দীর বিখ্যাত উপন্যাস “কোনি” থেকে নেওয়া হয়েছে। এই অংশে, আমরা ক্ষিতীশ সিংহের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশলের পরিচয় পাই।
প্রথম উদ্ধৃতিতে, আমরা দেখতে পাই যে ক্ষিতীশ বিষ্টুচরণ ধরকে কীভাবে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি বুঝিয়ে দেন যে, জুপিটার ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিনোদ ভড়কে প্রতিদিন হারানোর জন্য বিষ্টুচরণকে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হতে হবে। এটি ক্ষিতীশের দূরদর্শিতা এবং কৌশলের প্রমাণ।
দ্বিতীয় উদ্ধৃতিতে, ক্ষিতীশ তার স্ত্রী লীলাবতীকে কীভাবে বুঝিয়ে দেন যে তিনি বিষ্টুচরণ ধরকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি লীলাবতীকে বলেছেন যে তিনি মাঝে মাঝে বিষ্টুচরণকে বুদ্ধি-পরামর্শ দেন। এটি ক্ষিতীশের আত্মবিশ্বাস এবং তার স্ত্রীর উপর তার প্রভাব প্রদর্শন করে।
তৃতীয় উদ্ধৃতিতে, আমরা দেখতে পাই যে ক্ষিতীশ কীভাবে অ্যাপোলো ক্লাবের কর্মকর্তা নকুল মুখুজ্জেকে প্রসন্ন করেছেন। তিনি বটুবাবুর চেয়ে বেশি টাকা ডোনেশন দিয়ে নকুল মুখুজ্জেকে ক্ষিতীশের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলেন। এটি ক্ষিতীশের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ।
এই তিনটি উদ্ধৃতি থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি যে ক্ষিতীশ একজন অত্যন্ত বুদ্ধিমান, চতুর এবং কৌশলী ব্যক্তি। তিনি কোনির উপকার করার জন্য তার সমস্ত বুদ্ধিমত্তা এবং দক্ষতা ব্যবহার করেন।
“বিষ্টু ধরের উত্তেজিত মুখ দেখে ক্ষিতীশ চটপট মতলব ভেজে নিয়ে বলল – মাঝে মাঝে যাই বুদ্ধি পরামর্শ দিতে – প্রেসিডেন্ট পেয়েছি-কত টাকা ডোনেশন চাও নকুলদা?” – এই তিনটি উক্তির আলোকে ক্ষিতীশ সিংহ সম্পর্কে তোমার কী মনে হয়েছে লেখো।
- কথামুখ – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের অষ্টম পরিচ্ছেদে আমরা ক্ষিতীশের বলা এই তিনটি উক্তি পেয়েছি।
- সুযোগ সন্ধানী – বিষ্টুচরণ দর্জিপাড়া বয়েজ লাইব্রেরির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেওয়ার জন্য ক্ষিতীশ সিংহকে বক্তৃতা লিখে দিতে বলেন। তিনি জানান যে, ওই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিনোদ ভড়। এসময় সুযোগ বুঝে তাকে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দেন ক্ষিতীশ। কোনো একটি সভার বক্তৃতায় বিনোদ ভড়কে না হারিয়ে প্রতিদিন তাকে হারানোর পরামর্শ দেন ক্ষিতীশ। তিনি বুঝিয়ে দেন, জুপিটারের প্রেসিডেন্ট যেহেতু বিনোদ ভড় তাই তার বিপক্ষ ক্লাবে বিষ্টু ধরের প্রেসিডেন্ট হওয়া আবশ্যক। এইভাবেই সমস্ত ক্ষেত্রে বিনোদ ভড়ের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে বলেন বিষ্টুবাবুকে।
- বুদ্ধিমান – দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ক্ষিতীশ তাঁর স্ত্রী লীলাবতীর বিষ্টুচরণকে দেওয়া সেলামির টাকাটা ফিরিয়ে নেন। বুদ্ধিমান ক্ষিতীশ সহজেই বুঝে গেছিলেন যে, বিষ্টুচরণ ধর শুধু বক্তৃতার জন্যই তাঁর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েননি, তিনি এখন ক্ষিতীশের বুদ্ধি-পরামর্শ অনুযায়ী চলছেনও। তাই বাড়িতে স্ত্রী লীলাবতীকে বেশ গর্বের সঙ্গেই ক্ষিতীশ বলেছেন, মাঝে মাঝে যাই বুদ্ধি পরামর্শ দিতে।
- উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ – এরপরের প্রস্তাবটা ক্ষিতীশ দিয়েছেন অ্যাপোলো ক্লাবের কর্মকর্তা নকুল মুখুজ্জেকে। পাঁচশো টাকা ডোনেশন দেওয়া বটুবাবুর পরিবর্তে তিনি দু-হাজার টাকা দেরেন এমন প্রেসিডেন্ট ঠিক করে নকুল মুখুজ্জেকে প্রসন্ন করেছেন। ক্ষিতীশের মূল লক্ষ্য ছিল কোনির উপকার এবং তার অনুশীলন ও সাফল্যের সুযোগ তৈরি। এর জন্য ক্ষিতীশ যে উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বলতে পারি যে, ক্ষিতীশ সিংহ মতি নন্দীর বিখ্যাত উপন্যাস “কোনি”-র একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি একজন অত্যন্ত বুদ্ধিমান, চতুর এবং কৌশলী ব্যক্তি। তিনি কোনির উপকার করার জন্য তার সমস্ত বুদ্ধিমত্তা এবং দক্ষতা ব্যবহার করেন।
এই অষ্টম পরিচ্ছেদে আমরা ক্ষিতীশের বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশলের তিনটি উদাহরণ দেখতে পাই। প্রথমত, তিনি বিষ্টুচরণ ধরকে অ্যাপোলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বিনোদ ভড়ের বিরুদ্ধে তাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। দ্বিতীয়ত, তিনি বিষ্টুচরণের উপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রদর্শন করেন। তৃতীয়ত, তিনি অ্যাপোলো ক্লাবের কর্মকর্তা নকুল মুখুজ্জেকে প্রসন্ন করে কোনির জন্য অনুশীলন ও সাফল্যের সুযোগ তৈরি করেন।
এই তিনটি উদাহরণ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে ক্ষিতীশ একজন দূরদর্শী এবং কৌশলী ব্যক্তি। তিনি কোনির উপকার করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত এবং এর জন্য তিনি যেকোনো কাজ করতে পারেন।
এই অষ্টম পরিচ্ছেদ “কোনি” উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ক্ষিতীশের চরিত্রের একটি গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে এবং উপন্যাসের মূল থিমগুলির মধ্যে একটি, বন্ধুত্ব এবং সহায়তার গুরুত্বকে আরও জোরালো করে।