জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জীবের দেহে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ে। এই অধ্যায়ে আমরা উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানবো।
গমন কাকে বলে?
যে শারীরিক প্রক্রিয়ায় জীব উদ্দীপকের প্রভাবে সাড়া দিয়ে অথবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বলে।
প্রাণীদের ক্ষেত্রে সাড়াপ্রদান বলতে কী বোঝায়?
প্রাণীদের ক্ষেত্রে সাড়াপ্রদান করা বলতে পেশি, অস্থি এবং অস্থিসন্ধি ব্যবহার করে দ্রুত চলাচল করার ক্ষমতাকে বোঝায়।
ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়াম কী?
অ্যামিবার গমনের সময় কোশস্থ সাইটোপ্লাজমের ঘনত্বের পরিবর্তনের ফলে কোশের পরিধির দিকে কোশপর্দাসহ সাইটোপ্লাজমের আঙুলের মতো প্রবর্ধক সৃষ্টি হয়। এই ধরনের প্রবর্ধককে ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়াম বলে।
সিলিয়া কাকে বলে?
আণুবীক্ষণিক সূক্ষ্ম সুতোর মতো, সঞ্চালন ক্ষমতাসম্পন্ন, একক পর্দাবৃত সাইটোপ্লাজমীয় বহিঃবৃদ্ধি বা কোশীয় প্রবর্ধককে সিলিয়া বলে।
ফ্ল্যাজেলা কাকে বলে?
আণুবীক্ষণিক সূক্ষ্ম তন্তুর মতো, সঞ্চালন ক্ষমতাযুক্ত, একক পর্দাবৃত সাইটোপ্লাজমীয় বহিঃবৃদ্ধি বা কোশীয় প্রবর্ধককে ফ্ল্যাজেলা বলা হয়। এই ফ্ল্যাজেলাগুলি সাধারণত সিলিয়ার থেকে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ও মোটা হয়।
ফ্ল্যাজেলারি গমন বলতে কী বোঝ?
যখন কোনো জীবের গমন ফ্ল্যাজেলার সুশৃঙ্খল সঞ্চালনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, তখন সেই ধরনের সঞ্চালনকে ফ্ল্যাজেলারি গমন বা ফ্ল্যাজেলা-নির্ভর গমন বলে।
সিলিয়া কোথায় কোথায় দেখা যায়?
সিলিয়া দেখা যায় প্রোটোজোয়া গোষ্ঠীর বিভিন্ন প্রাণীর দেহে, যেমন — প্যারামেসিয়াম, ভটিসেলা প্রভৃতি। এ ছাড়া বিভিন্ন বহুকোশী প্রাণী (যেমন — মানুষ)-র দেহের বিভিন্ন কোশে সিলিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
ফ্ল্যাজেলা কোথায় কোথায় দেখা যায়?
ফ্ল্যাজেলা দেখা যায় ইউগ্লিনা, ট্রাইপ্যানোসোমা-জাতীয় এককোশী প্রাণীর দেহে। এ ছাড়া বহুকোশী জীবের কিছু সচল কোশ (যেমন — পুংজননকোশ) এ ফ্ল্যাজেলা উপস্থিত।
সিলিয়ারি গমন বলতে কী বোঝ?
যখন কোনো জীবের গমন সিলিয়ার সঞ্চালনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, তখন সেই ধরনের গমনকে সিপিয়ারি গমন বা গিলিয়া-নির্ভর গমন বলে।
প্যারামেসিয়াস-এ কীভাবে সিলিয়ারি গমন ঘটে?
প্যারামেসিয়াম এর সমগ্র কোশের চারপাশে বহুসংখ্যক সিলিয়া বর্তমান। প্যারামেসিয়াম ও সিলিয়াগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে সঞ্চালিত করে তরল মাধ্যমে সিলিয়ারি গমন সম্পন্ন করে স্থান পরিবর্তন করে।
অ্যামিবয়েড গমন বলতে কী বোঝ?
ক্ষণপদ নির্ভর গমন যা প্রধানত অ্যামিবার ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়, তাকে অ্যামিবয়েড গমন বলে। অ্যামিবা ছাড়াও মানুষের কিছু শ্বেত রক্তকণিকায় ও অন্যান্য কিছু প্রাণীতে, প্রোটোজোয়া ও ছত্রাক অ্যামিবয়েড গমন লক্ষ করা যায়।
পেশি-নির্ভর গমন বলতে কী বোঝ?
মানুষ ও অন্যান্য উন্নত প্রাণীদেহে পেশির ক্রিয়াশীলতায় যে গমন সম্পন্ন হয়, তাকে পেশি-নির্ভর গমন বলা হয়। এক্ষেত্রে পেশির সংকোচন-প্রসারণশীলতার জন্য প্রাণীর গমন ঘটে থাকে।
অক্ষীয় কঙ্কাল কাকে বলে?
মানবদেহের যে অস্থিসমূহ দেহের কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর অনুদৈর্ঘ্যভাবে বিস্তৃত থেকে দেহের প্রধান অংশ গঠন করে এবং যার সঙ্গে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল যুক্ত থাকে, তাকে অক্ষীয় কঙ্কাল বা অ্যাক্সিয়াল স্কেলিটন বলে।
উপাঙ্গীয় কঙ্কাল কাকে বলে?
ঊর্ধ্বাঙ্গ, নিম্নাঙ্গ, পেক্টোরাল গার্ডেল এবং পেলভিক গার্ডেল-এর সমন্বয়ে গঠিত অন্তঃকঙ্কালের অংশ, যা অক্ষীয় কঙ্কালের সাথে যুক্ত থাকে, তাকে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল বা অ্যাপেন্ডিকুলার স্কেলিটন বলে।
টেনডন বা কন্ডরা কী?
ঐচ্ছিক পেশির রজ্জুর মতো, প্যাচানো প্রান্ত যা পেশির সঙ্গে অস্থির সংযোগ রক্ষা করে, তাকে টেনডন বা কন্ডরা বলে। এটি সাধারণত সাদা বর্মের হয়ে থাকে।
লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী কাকে বলে?
অস্থিসন্ধিগুলি যাদের সাহায্যে পরস্পর যুক্ত থাকে, সেগুলিকে লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী বলে। এটি তন্তুময় যোগকলা দ্বারা গঠিত একটি অংশ।
ফ্লেক্সর পেশি কী?
যে পেশি সংকোচনের দ্বারা দুটি অস্থিকে কাছাকাছি আসতে সাহায্য করে, সেই পেশিকে ফ্লেক্সর পেশি বলে। যেমন — বাইসেপস্ পেশি।
এক্সটেনসর পেশি কী?
যে পেশি সংকোচনের দ্বারা ভাঁজ হওয়া অস্থিকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে, সেই পেশিকে এক্সটেনসর পেশি বলে। যেমন — ট্রাইসেপস্ পেশি।
অ্যাবডাক্টর পেশি কী?
যে সকল অস্থিপেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের অক্ষ থেকে দূরে সরে যায়, সেই সকল পেশিকে অ্যাবডাক্টর পেশি বলে। যেমন গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস পেশি।
অ্যাডাক্টর পেশি কী?
যে সকল অস্থিপেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের অক্ষের কাছাকাছি আসে, সেই সকল পেশিকে অ্যাডাক্টর পেশি বলে। যেমন — অ্যাডাক্টর লঙ্গাস পেশি।
রোটেটর পেশি কাকে বলে?
যে সকল পেশির ক্রিয়ায় কোনো অঙ্গ দেহের মধ্যবর্তী অক্ষের চারপাশে বৃত্তাকারে ঘুরতে পারে, সেই সকল পেশিকে রোটেটর পেশি বলে। যেমন — পাইরিফরমিস পেশি।
কবজা সন্ধি বা হিঞ্জ জয়েন্ট কাকে বলে?
যে সচল অস্থিসন্ধিতে সংযুক্ত অস্থি দুটির প্রান্ত দরজার কবজার মতো সংলগ্ন থাকে, তাকে কবজা সন্ধি বা হিও জয়েন্ট বলে। হাঁটু ও কনুইয়ের সন্ধি এই প্রকৃতির। এই অস্থিসন্ধিগুলি 180° কোণে বিচলন করতে পারে।
কবজা সন্ধির বৈশিষ্ট্য কী?
কবজা সন্ধির বৈশিষ্ট্যগুলি হল —
1. একটি অস্থির গোল প্রান্ত অপর অস্থির অবতল অংশে যুক্ত থাকে।
2.সংশ্লিষ্ট অস্থি দুটির একটি তলে 180° বিচলন ঘটে।
বল ও সকেট সন্ধি কাকে বলে?
যে সচল অস্থিসন্ধিতে একটি অস্থির গোলাকার মস্তক অপর অস্থির কাপের মতো সকেটের মধ্যে সংলগ্ন হয়, তাকে বল ও সকেট সন্ধি বলে। কোমড় ও কাঁধের সন্ধি এইপ্রকারের হয়ে থাকে।
বল ও সকেট সন্ধির বৈশিষ্ট্য কী?
বল ও সকেট সন্ধির বৈশিষ্ট্যগুলি হল —
1. একটি অস্থির মস্তক (বল) অপর অস্থির কাপের মতো (সকেট) অংশের সাথে সংযুক্ত থাকে।
2. এই সন্ধিতে উপস্থিত অস্থিগুলির বিচলন বিভিন্ন দিকে ঘটতে পারে।
কঙ্কাল পেশি কাকে বলে?
অস্থি সংলগ্নভাবে অবস্থিত, স্বেচ্ছায় সংকোচনশীল যেসব পেশি অস্থি সঞ্চালনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে তাদের কঙ্কাল পেশি বা অস্থি পেশি বলে। এই পেশিগুলি সরেখ প্রকৃতির। যেমন — বাইসেপস্ পেশি।
কঙ্কাল পেশির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
কঙ্কাল পেশির বৈশিষ্ট্যগুলি হল —
1. এই পেশি ইচ্ছানুসারে সংকোচন-প্রসারণশীল।
2. পেশিগুলি রেখাযুক্ত ও ঐচ্ছিক প্রকৃতির হয়।
3. টেন্ডনের মাধ্যমে অস্থির সঙ্গে যুক্ত থাকে।
4. এর গঠনগত উপাদান হল পেশিতন্তু বা পেশিকোশ, যার কোশপর্দাকে সারকোলেমা বলে।
মানুষের গমনকে দ্বিপদ গমন বলা হয় কেন?
মানুষের প্রধান মনা হল দুটি পা। যেহেতু দুটি পা বা পদের ক্রমস পালনের মাধ্যমে গমন সম্পন্ন হয়, তাই একে বিপদ গমন বলা হয়।
মায়োটম পেশির অবস্থান লেখো। এর কাজ উল্লেখ করো।
অবস্থান – মাছের মেরুদণ্ডের দুই পাশে কানকো থেকেপুচ্ছপাখনার গোড়া পর্যন্ত সজ্জিত।
কাজ – সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে মাছের দেহে তরঙ্গের মতো আন্দোলন সৃষ্টি করে ও মাছকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
ক্ষণপদের অবস্থান সম্পর্কে লেখো।
অ্যামিবার গমনের সময় সৃষ্ট সাইটোপ্লাজমীয় প্রবর্ধক হিসেবে ক্ষণপদ গঠিত হয়। এ ছাড়া বহুকোশীর প্রাণীর দেহে কিছু কোশে (যেমন — নিউট্রোফিল)-এ ক্ষণপদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
সিলিয়ার অবস্থান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
প্যারামেসিয়াম-জাতীয় কিছু এককোশী প্রাণীর দেহে এবং বিভিন্ন বহুকোশী প্রাণীর দেহে কিছু কোশ (যেমন — শ্বাসনালীর কোশ, অন্তঃকর্ণের হেয়ার কোশ)-এ সিলিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
ফ্ল্যাজেলার অবস্থান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
ইউগ্লিনা-জাতীয় এককোশী প্রাণীর কোশের বাইরের গারে অবস্থিত। এ ছাড়া বিভিন্ন বহুকোশী প্রাণীর কিছু কোশে ফ্ল্যাজেলা উপস্থিত। যেমন — শুক্রাণুতে ফ্ল্যাজেলার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
মাছের গমনে পাখনার ভূমিকা কী?
মাছের দেহে উপস্থিত বিভিন্ন পাখনা বিভিন্ন কাজ করলেও সামগ্রিকভাবে এরা মাছের গমনে সাহায্য করে। এই পাখনাগুলির মধ্যে —
1. বক্ষপাখনা ও শ্রোণিপাখনা মাছকে জলের ওপরে ও নীচে নিয়ে যেতে,
2. পায়ু ও পৃষ্ঠপাখনা মাছকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে এবং
3. পুচ্ছপাখনা দিক পরিবর্তনে সাহায্য করে।
ইউগ্লিনা-র গমনে ফ্ল্যাজেলার ভূমিকা লেখো।
ইউগ্লিনার গমন অঙ্গ হল ফ্ল্যাজেলা। ফ্ল্যাজেলাটিকে চাবুকের মতো সঞ্চালিত করে জলে ঘাত সৃষ্টি করে, এর প্রত্যাঘাতে দেহ বিপরীতে এগিয়ে যায়।
গমনের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
1. উপযুক্ত আলো, বাতাস, জল ও খাদ্যসমন্বিত পরিবেশের সন্ধানে প্রাণী গমন করে।
2. শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অর্থাৎ আত্মরক্ষার্থেও প্রাণী গমন করে।
সিলিয়ারি চলনের মাধ্যমে গমন কাকে বলে?
দেহের পরিধি বরাবর বিন্যস্ত সিলিয়ার পর্যায়ক্রমির সঞ্চালনের দ্বারা গমন সম্পন্ন হলে তাকে সিলিয়ারি চলনের মাধ্যমে গমন বলা হয়। প্যারামেসিয়াম নামক এককোশী প্রাণীদের দেহে এইপ্রকার গমন দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন বহুকোশী প্রাণীর কোশেও এই চলন লক্ষ করা যায়।
পাখির উড্ডয়ন পালক কাকে বলে? এগুলি কত প্রকার?
উড্ডয়ন পালক – পাখির ডানায় ও লেজে বিন্যস্ত যে পালকগুলি পাখির উড্ডয়নে সাহায্য করে, তাদের উড্ডয়ন পালক বলা হয়।
প্রকারভেদ – পাখির উড্ডয়ন পালক দুই প্রকার, ডানার পালক বা রেমিজেস এবং লেজের পালক বা রেন্ট্রিসেস।
কঙ্কাল পেশি কাকে বলে? গমনে সহায়ক দুটি পেশির নাম করো।
কঙ্কাল পেশি – মানবদেহে অস্থি সংলগ্ন যেসব ঐচ্ছিক পেশি মানুষের গমনে সাহায্য করে, তাদের কঙ্কাল পেশি বলে।
গমনে সহায়ক পেশি – গমনে সাহায্যকারী দুটি পেশি হল — বাইসেপস ফিমোরিস, গ্যাস্ট্রকনেমিয়াস পেশি।
অ্যাসিটাবুলাম কী?
মানুষের শ্রোণিচক্রের দুটি অর্ধাংশের প্রতিটির বাইরের দিকে একটি অবতল অংশ বা কাপের মতো গহবর বর্তমান। একে অ্যাসিটাবুলাম বলে। এই গহ্বরের মধ্যে পায়ের ফিমার নামক অস্থির গোলাকার খণ্ডক অংশ প্রবিষ্ট থেকে বল ও কোটর সন্ধি গঠন করে।
ফিমার অস্থি কোনটি? এর কাজ কী?
ফিমার – মানুষের দুটি পায়ের উরুতে অবস্থিত দীর্ঘ অস্থি হল ফিমার।
কাজ – সংযুক্ত পেশির সংকোচন ও প্রসারণ ঘটিয়ে এটি। চলনে সাহায্য করে।
টিবিয়া ও ফিবিউলার অবস্থান ও কাজ লেখো।
টিবিয়া ও ফিবিউলা-র অবস্থান – অস্থি দুটি প্রতি পায়ের জঙ্ঘায় অবস্থিত।
কাজ – এদের ঊর্ধ্বপ্রান্ত ফিমারের সঙ্গে জানুসন্ধি গঠন করে চলনে সাহায্য করে। এই সন্ধি 180° কোণে বিচলন করতে পারে। ফলে মানুষের গমন সহজসাধ্য হয়।
টারসাল কোথায় অবস্থিত? এর কাজ কী?
টারসাল-এর অবস্থান – টারসাল অস্থিটি দুই পায়ের গোড়ালিতে অবস্থিত।
কাজ – এর অস্থিসমূহের দ্বারা গঠিত ধনুকাকৃতি অংশ ভূমিসংলগ্ন থেকে দেহের ভার বহন করে ও মানুষের গমনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
ফ্যালানজেস কী? এর কাজ কী?
ফ্যালানজেস – হাতের এবং পায়ের আঙুলের অস্থিগুলিকে ফ্যালানজেস বলে।
কাজ – এই অস্থিগুলি প্রাণীদের গমনে ও দেহের ভার বহনে হায়তা করে।
পায়ের বিভিন্ন অস্থিগুলির নাম লেখো।
পায়ের বিভিন্ন অস্থিগুলি হল — টারসাল, মেটাটারসাল ও ফ্যালানজেস।
গমনে মানুষের কঙ্কাল তন্ত্রের ভূমিকা কী?
ঐচ্ছিক পেশির ক্রিয়াশীলতায় সংশ্লিষ্ট অস্থিগুলির বিচলন ঘটে। তার ফলেই মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালিত হয় এবং মানুষের দ্বিপদ গমন সম্পন্ন হয়।
একটি অস্থিযুক্ত মাছের জোড় পাখনা কেটে দিলে মাছটির কী হবে?
একটি অস্থিযুক্ত মাছের জোড় পাখনা কেটে দিলে মাছটি জলে স্থির হয়ে এক জায়গায় ভেসে থাকতে পারবে না এবং জলের গভীরে যেতে পারবে না।
মাছের পটকা কেটে বাদ দিলে কী ঘটবে?
মাছের পটকা কেটে বাদ দিলে মাছটি জলের ভিতরে বিভিন্ন স্তরে ওঠা-নামা করতে পারবে না। অর্থাৎ, মাছটির প্লবতা বিঘ্নিত হবে এবং মাছটি এক জায়গায় স্থির থাকতেও পারবে না।
মাছের ও পাখির গমন পদ্ধতির নাম উল্লেখ করো।
মাছের গমন পদ্ধতির নাম সন্তরণ বা সাঁতার কাটা এবং পাখির গমন পদ্ধতির নাম হল উড্ডয়ন।
পাখির পালক বাতাসের চাপে নষ্ট হয়ে যায় না কেন?
পালকগুলিতে বার্ব, বার্বিউল ও হুক থাকে। এগুলি একে অপরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আটকে থেকে সমস্ত পালকগুলি একত্রে একটি পালকের তল সৃষ্টি করে। ফলে বাতাসের চাপে পায়রার পালক ছিঁড়ে যায় না।
মায়োটম পেশি কাকে বলে?
মাছের মস্তকের পিছন থেকে শুরু করে ল্যাজ পর্যন্ত, মেরুদণ্ডের দুপাশে অবস্থিত ‘V’ আকৃতির যে পেশিগুলি মাছের সাঁতার কাটার সময়ে দেহকে দুপাশে আন্দোলিত করতে সাহায্য করে, তাকে মায়োটম পেশি বলে।
কীল অস্থি কী?
পাখিদের শরীরের বক্ষ অঞ্চলে অবস্থিত স্টারনাম অস্থিটি দেখতে অনেকটা নৌকার চ্যাপটা তলদেশ বা কীল-এর মতো। তাই একে কীল (keel) অস্থি বলা হয়। কীল, বক্ষপেশিকে যথাযথভাবে আবদ্ধ রাখে এবং দেহের ভরকেন্দ্ররূপে ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে।
পাখির উড্ডয়ন পেশিগুলির নাম লেখো।
পাখির উড্ডয়ন পেশিগুলির নাম হল — 1. পেক্টোরালিস মেজর, 2. পেক্টোরালিস মাইনর ও 3. কোরাকো, ব্রাকিয়ালিস।
মাছের পুচ্ছপাখনার কাজ কী?
মাছের পুচ্ছ পাখনার কাজ — 1. সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে চলন বল (driving force) সৃষ্টি করা, 2. চলাচলের সময় হালের মতো দিক পরিবর্তনে সাহায্য করা।
গমন হলো প্রাণীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। গমনের মাধ্যমে প্রাণীরা তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং বংশ বিস্তার করতে পারে।