প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো।

মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র। একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি হিয়ার প্রতিভাকে খুঁজে বের করে তাকে বাংলার অন্যতম সেরা সাঁতারুতে পরিণত করেন। একইভাবে কোনির প্রতিভাও তার চোখ এড়ায় না। কোনির সৎ ও নিরপেক্ষ মনোভাবের জন্যই প্রণবেন্দু তাকে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় বাংলা দলে সুযোগ করে দেন। ক্লাবের অভ্যন্তরীণ দলাদলি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তিনি বেঙ্গলের স্বার্থে কনকচাঁপা পালকে টিমে রাখার প্রবল সমর্থক হন।

হিয়ার প্রশিক্ষক হলেও কোনির প্রতিভা সম্পর্কে তিনি নিরপেক্ষ মতামত দেন এবং স্পষ্ট করে বলেন যে স্প্রিন্ট ইভেন্টে কোনির সমকক্ষ এখন বাংলায় আর কেউ নেই। যখন মাদ্রাজে বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, প্রণবেন্দু দৃঢ়কণ্ঠে বলেন যে অমিয়ার পরিবর্তে কনকচাঁপা পালকে নামানো উচিত।

বাংলার সম্মানের জন্যই কোনিকে দলে প্রয়োজন তা প্রণবেন্দু স্পষ্ট করে জানান। বাংলার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থেকেই তিনি বলেন যে রমা যোশির সোনা কুড়োনো বন্ধ করা ছাড়া তার আর কোনো স্বার্থ নেই। সততা, প্রতিবাদ এবং বিচক্ষণতার মিশেলে প্রণবেন্দু বিশ্বাস ‘কোনি’ উপন্যাসে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছেন।

প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো।

প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো।

  • কথামুখ – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দু বিশ্বাস একটি পার্শ্বচরিত্র হওয়া সত্ত্বেও নিজস্বতায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছেন।
  • দক্ষতা ও বিচক্ষণতা – প্রণবেন্দু বিশ্বাস একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষক। এই দক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণে হিয়া মিত্র বাংলার অন্যতম সেরা সাঁতারুতে পরিণত হয়। ঠিক তেমনই বিচক্ষণতা দিয়ে কোনির মতো প্রতিভাকে চিনতেও ভুল করেননি।
  • সৎ ও নিরপেক্ষ – প্রণবেন্দুর সৎ ও নিরপেক্ষ মানসিকতার জন্যই কোনি মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় বাংলা দলে সুযোগ পায়। তিনিই প্রতিবাদী কন্ঠে বলেন বেঙ্গলের স্বার্থেই কনকচাঁপা পালকে টিমে রাখতে হবে। ক্লাবের সংকীর্ণ দলাদলি ও হীন চক্রান্তের ঊর্ধ্বে | তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
  • দৃপ্তকণ্ঠী – হিয়ার ট্রেনার হওয়া সত্ত্বেও কোনির পক্ষ নিয়ে তিনি বলেছিলেন যে যে রকম রোখা জেদী সাঁতার ও দেখাল, তাতে স্প্রিন্ট ইভেন্টে ওর সমকক্ষ এখন বাংলায় কেউ নেই। মাদ্রাজে বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়লে প্রণবেন্দু দৃপ্তকণ্ঠে বলেন ভাবাভাবির কিছু নেই, কনকচাঁপা পালকে নামান, অমিয়ার জায়গায়।
  • স্বাজাত্যবোধ – বাংলার সম্মানের জন্যই যে কোনিকে প্রয়োজন তা দৃপ্তকণ্ঠে জানান প্রণবেন্দু। বাংলার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থেকেই তিনি বলেন রমা যোশির সোনা কুড়োনো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই। উপন্যাসে উল্লেখিত প্রণবেন্দু বিশ্বাস তাই সততা, প্রতিবাদ এবং বিচক্ষণতার মিশেলে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন, ওলিম্পিকের গুল মেরে কি আর সুইমার তৈরি করা যায় রে পাঁটা? বুদ্ধি চাই, খাটুনি চাই, নিষ্ঠা চাই-গবেট গবেট সব। – বক্তা কে? কোন্ প্রসঙ্গে তিনি এরূপ বলেছেন? উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে প্রণবেন্দু বিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র। একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষক, সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি, এবং বাংলার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় ভরা একজন মানুষ হিসেবে তিনি পাঠকদের মনে দাগ কেটে যান।

ক্লাবের অভ্যন্তরীণ দলাদলি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তিনি সত্যি ও ন্যায়ের পক্ষাবলম্বন করেন। কোনির প্রতিভা ও যোগ্যতাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাকে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন।

প্রণবেন্দু বিশ্বাস ‘কোনি’ উপন্যাসে কেবল একজন প্রশিক্ষকের চরিত্রে আবদ্ধ থাকেননি, বরং তিনি নীতিবোধ, সাহস এবং আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।

Share via:

মন্তব্য করুন