নবম শ্রেণী ইতিহাস – ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণীর ইতিহাসের প্রথম অধ্যায়, “ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক” এর কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

Table of Contents

নবম শ্রেণী ইতিহাস ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণী ইতিহাস – ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন

কে ফ্রান্সকে “ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর” বলেছেন এবং কেন বলেছেন?

বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ফ্রান্সকে “ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর” বলেছেন।

ফ্রান্সকে ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর বলা হয় কারণ –

  1. ফ্রান্সে প্রচলিত করব্যবস্থা ছিল বৈষম্যমূলক ও দুর্নীতিগ্রস্ত।
  2. ফরাসি সমাজের অধিকারভোগী শ্রেণি যেমন যাজক ও অভিজাতরা অধিকাংশ জমির মালিক ছিলেন; কিন্তু এজন্য তারা কোনো কর দিতেন না। অপরদিকে অধিকারহীন শ্রেণির দরিদ্র কৃষকদের সমস্ত কর দিতে হতো।

‘রাজনৈতিক কারাগার’ (Political Prison) কাকে বলা হয় এবং কেন?

1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে বাস্তিল দুর্গ ‘রাজনৈতিক কারাগার’ হিসেবে পরিচিত ছিল।

বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে ‘লেত্র দ্য ক্যাশে’ নামক গ্রেফতারি পরোয়ানার সাহায্যে রাজকীয় কর্মচারীরা যে-কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিনা বিচারে বাস্তিল দুর্গে আটক করে রাখত বলে একে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলা হয়। রাজতন্ত্রবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করার অপরাধে দার্শনিক ভলতেয়ারকেও বাস্তিল দুর্গে আটক করে রাখা হয়।

পার্লম বা পার্লামেন্ট কী?

পার্লম ছিল বিপ্লবপূর্ব ফ্রান্সের রাজক্ষমতা নিয়ন্ত্রক উচ্চশ্রেণির আপিল আদালত, যেখানে নিম্নস্থ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যেত। রাজকীয় কোনো আদেশ পার্লমে নিবন্ধভুক্ত না হলে তা আইন হিসেবে গণ্য করা হত। 18শ শতকের শেষে ফ্রান্সে এই আদালতের সংখ্যা ছিল মোট 13টি এবং এগুলির মধ্যে প্যারিসের পার্লম ছিল সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী।

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সের কয়েকটি পরোক্ষ করের নাম উল্লেখ করো।

1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে যে সমস্ত পরোক্ষ কর প্রচলিত ছিল, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: ‘টাইথ’ বা ধর্মকর, ‘গ্যাবেলা’ বা লবণ কর, ‘করভি’ বা বাধ্যতামূলক শ্রম প্রভৃতি।

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে কয়টি প্রত্যক্ষ কর ছিল? এগুলি কী কী?

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে তিনটি প্রত্যক্ষ কর ছিল:

  1. টেইলি বা ভূমিকর
  2. ক্যাপিটেশন বা উৎপাদন-কর
  3. ভিংটিয়েমে বা আয়কর

টেইলি কী?

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে প্রচলিত একটি প্রত্যক্ষ করের নাম টেইলি। টেইলি হল ভূমিকর বা সম্পত্তিকর। এই কর ফরাসিদের সম্পত্তি অনুসারে ধার্য করা হত। কিন্তু বাস্তবে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র কৃষকদের এই কর দিতে হত।

ক্যাপিটেশন কী?

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে প্রচলিত একটি প্রত্যক্ষ করের নাম ক্যাপিটেশন। ক্যাপিটেশন হল উৎপাদনকর। ফরাসিদের উৎপাদনের উপর এই কর ধার্য করা হত। বাস্তবে যাজক ও অভিজাতরা এই কর প্রদান থেকে অব্যাহতি পেতেন এবং ফ্রান্সের সাধারণ জনগণকেই তা দিতে হত।

ভিংটিয়েমে কী?

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে প্রচলিত একটি প্রত্যক্ষ করের নাম ভিংটিয়েমে বা ভাঁতিয়াম— স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির উপর ধার্য আয়কর, যা মূলত কৃষকরা প্রদান করত। মোট আয়ের 5% আয়কর হিসেবে দিতে হত। অভিজাতরা এই করের কিছুটা প্রদান করলেও যাজকরা এই করপ্রদান থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত ছিলেন। 1749 খ্রিস্টাব্দে এই কর ফ্রান্সে চালু হয়।

টাইথ কী?

টাইথ হল ফ্রান্সে প্রচলিত ধর্মকর। ফ্রান্সের তৃতীয় সম্প্রদায় এই কর দিত চার্চ বা গির্জাকে। উৎপন্ন ফসলের 10% ধর্মকর বা টাইথ হিসেবে দিতে হত।

করভি বা কর্ভে কী?

বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সে বাধ্যতামূলক বা জবরদস্তিমূলক শ্রমদান অভিহিত হত কর্ভে বা করভি নামে। এই পরোক্ষ করের জন্য কৃষকরা বিনা পারিশ্রমিকে রাজাকে রাজপথ নির্মাণের জন্য এবং সামন্তপ্রভুকে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনগুলিতে শ্রমদান করতে বাধ্য হত।

সঁস বা সেন্স (Cens) ও শাঁপার্ট (Champart) কী?

ম্যানরের জমি যেসব কৃষকরা চাষ করত তারা জমির মালিক সামন্তপ্রভুকে সঁস ও শাঁপার্ট নামক কর দিতে বাধ্য ছিল। সঁস ছিল সাধারণ মুদ্রায় দেয় বাৎসরিক খাজনা এবং শাঁপার্ট ছিল উৎপন্ন ফসলের মাধ্যমে প্রদেয় কর।

ইনটেন্ডেন্ট (Intendent) কাদের বলে?

বুরবোঁ শাসনকালে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভরূপে পরিচিত এক বিশেষ ক্ষমতাশালী রাজস্ব সংগ্রাহক কর্মচারীরা হল ‘ইনটেনডেন্ট’। তবে স্থানীয় বিচারব্যবস্থা থেকে শুরু করে সাধারণ প্রশাসন, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, সেনাসংগ্রহ-সহ বিভিন্ন বিষয় তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। লেফেভর লিখেছেন, নেকড়েতুল্য এই কর্মচারীদের অত্যাচারে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজ কয়টি এস্টেট বা সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল? বিভাগগুলি কী কী?

অথবা, বিপ্লব পূর্ববর্তী ফরাসি সমাজ কতটি স্তরে বিভক্ত ছিল এবং কী কী?

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজ তিনটি এস্টেট বা সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল:

  1. ফার্স্ট এস্টেট বা প্রথম সম্প্রদায় – এর মধ্যে ছিল যাজকরা।
  2. সেকেন্ড এস্টেট বা দ্বিতীয় সম্প্রদায় – এর মধ্যে ছিল অভিজাতরা।
  3. থার্ড এস্টেট বা তৃতীয় সম্প্রদায় – এর মধ্যে ছিল যাজক ও অভিজাত ছাড়া সমাজের বাকি সবাই, যেমন— বুর্জোয়া, কৃষক, শ্রমিক, সাঁকুলোৎ ইত্যাদি।

ফ্রান্সে প্রথম সম্প্রদায় নামে কারা পরিচিত ছিলেন?

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজে যাজকরা প্রথম সম্প্রদায় বা First Estate নামে পরিচিত ছিলেন। 1789 খ্রিস্টাব্দে যাজকদের সংখ্যা ছিল 1 লক্ষ 20 হাজার। ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার 1%-এর কম হয়েও যাজকরা সমাজে ও রাষ্ট্রে খুব প্রভাবশালী ছিলেন। তারা ছিলেন আইনের ঊর্ধ্বে এবং তাদের কোনো প্রকার কর দিতে হত না।

ফ্রান্সে দ্বিতীয় সম্প্রদায় নামে কারা পরিচিত ছিলেন?

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সের সমাজে অভিজাতরা দ্বিতীয় সম্প্রদায় নামে পরিচিত ছিলেন। 1789 খ্রিস্টাব্দে অভিজাতদের সংখ্যা ছিল 3 লক্ষ 50 হাজার অর্থাৎ ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার 1.5%। এদের হাতে ফ্রান্সের মোট কৃষিজমির 20-25% থাকলেও তারা কোনো ভূমিকর দিতেন না। বরং তারা প্রজাদের কাছ থেকে নানা ধরনের কর আদায় করতেন।

ফ্রান্সে তৃতীয় সম্প্রদায় নামে কারা পরিচিত ছিলেন?

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সের সমাজে তৃতীয় সম্প্রদায় বা থার্ড এস্টেট বলতে বোঝাত যাজক ও অভিজাত ছাড়া সমাজের সমস্ত সাধারণ প্রজাদের। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছিলেন বুর্জোয়া বা মধ্যবিত্ত, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, দোকানদার, সাঁকুলোৎ ইত্যাদি। থার্ড এস্টেটের জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার 97%-এরও বেশি। রাষ্ট্রের প্রায় সমস্ত কর তাঁদেরই দিতে হত, কিন্তু রাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা কোনো সুযোগসুবিধা পেত না। সমাজ ও রাষ্ট্রে এরা ছিল অধিকারহীন শ্রেণি।

ফরাসি সমাজে বুর্জোয়া কাদের বলা হত?

ফরাসি সমাজে বুর্জোয়া বলা হত তৃতীয় সম্প্রদায়ভুক্ত মধ্যবিত্তদের। এরা ছিলেন বিদ্যা, বুদ্ধি ও ধনবলে বলীয়ান; কিন্তু বংশকৌলীন্যের অভাবে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশেষ মর্যাদা পেতেন না। এরা ছিলেন অধিকারহীন শ্রেণি।

ফরাসি সমাজে সাঁকুলোৎ কাদের বলা হত?

ফরাসি সমাজে সাঁকুলোৎ বলতে বোঝাত শহরবাসী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের। এর মধ্যে ছিল দিনমজুর, কুলি, মালি, ভিস্তি (জলবাহক), কাঠুরে, চাকর (গৃহভৃত্য) প্রভৃতি। ফরাসি বিপ্লবে সাঁকুলোৎদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

অঁসিয়ান রেজিম বলতে কী বোঝায়?

‘অঁসিয়ান রেজিম’ বা Ancién Regime কথার অর্থ হল ‘প্রাচীন আমল’। 1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে বুরবোঁ রাজাদের আমলকে ‘অঁসিয়ান রেজিম’ বলা হয়। এই সময় রাজনৈতিক অবস্থা ছিল স্বৈরাচারী, সামাজিক অবস্থা ছিল বৈষম্যমূলক, অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ফরাসি বিপ্লব এই ‘পুরাতনতন্ত্রের’ অবসান ঘটিয়েছিল।

অভিজাত বিদ্রোহ কী?

অর্থনৈতিক সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে ফরাসি রাজা ষোড়শ লুই 1788 খ্রিস্টাব্দে দেশের সমস্ত প্রাদেশিক পার্লামেন্ট মুলতুবি করেন এবং সকল সম্প্রদায়ের থেকে কর আদায়ের উদ্যোগ নেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুবিধাভোগী অভিজাতশ্রেণি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। এই ঘটনা ‘অভিজাত বিদ্রোহ’ বা ‘অভিজাত বিপ্লব’ নামে পরিচিত।

ফ্রান্সে 1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি জনগণের বিদ্রোহকে ফরাসি বিপ্লব বলা হয় কেন?

বিপ্লব কথার অর্থ হল কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার অতি দ্রুত ও কার্যকরী পরিবর্তন। 1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি জনগণ ফ্রান্সের প্রচলিত সমাজ, রাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতিক ক্ষেত্রে এক ব্যাপক ও সর্বাত্মক পরিবর্তন সাধন করেছিল বলে এই বিদ্রোহকে ‘ফরাসি বিপ্লব’ বলা হয়।

ফরাসি বিপ্লবকে বুর্জোয়া বিপ্লব বলা হয় কেন?

টেনিস কোর্টের শপথগ্রহণের সময় যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য তৃতীয় সম্প্রদায় অর্থাৎ বুর্জোয়াদের সঙ্গে যোগ দেন। রাজা ষোড়শ লুই তাদের দাবির কাছে নতিস্বীকার করেন এবং মাথাপিছু ভোটাধিকারের দাবি মেনে নেন। এইভাবে ফ্রান্সে তৃতীয় সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বুর্জোয়ারা বিপ্লবের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে ও নেতৃত্ব দেয়। এই ঘটনাই ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ নামে পরিচিত।

ফরাসি বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন দার্শনিকের নাম লেখো।

ফরাসি বিপ্লবের সঙ্গে যেসকল দার্শনিকের নাম যুক্ত, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন– মন্তেস্কু, রুশো, ভলতেয়ার, দেনিস দিদেরো, দ্য এলেমবার্ট প্রমুখ।

মন্তেস্কু কে ছিলেন? মন্তেস্কু রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

মন্তেস্কু ছিলেন একজন বিশিষ্ট ফরাসি দার্শনিক। তিনি ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক এবং রাজার ঐশ্বরিক ক্ষমতার ধারণার বিরোধী। ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে তাঁর মতবাদ ফরাসিদের প্রভাবিত করেছিল। মন্তেস্কু রচিত দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল –

  1. দ্য স্পিরিট অফ লজ এবং
  2. দ্য পার্সিয়ান লেটারস।

ভলতেয়ার কে ছিলেন? ভলতেয়ার রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

ভলতেয়ার ছিলেন একজন বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক ও দার্শনিক। তাঁর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম হল–

  1. কাঁদিদ এবং
  2. লেত্র ফিলজফিক।

রুশো বিখ্যাত কেন? তাঁর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

রুশো ছিলেন ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্-কালের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক। তাঁর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম হল–

  1. সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (সামাজিক চুক্তি)
  2. অরিজিন অফ ইনইক্যুয়ালিটি (অসাম্যের উৎস)

ফরাসি বিপ্লবের জনক কাকে বলা হয়? কোন্ গ্রন্থকে ফরাসি বিপ্লবের বাইবেল বলা হয়?

ফরাসি বিপ্লবের জনক: ফরাসি দার্শনিক রুশো-কে ‘ফরাসি বিপ্লবের জনক’ বলা হয়।
ফরাসি বিপ্লবের বাইবেল: ফরাসি দার্শনিক রুশো রচিত ‘সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট’ গ্রন্থটিকে ‘ফরাসি বিপ্লবের বাইবেল’ বলা হয়।

দেনিস দিদেরো ও দ্য এলেমবার্ট কেন বিখ্যাত?

দেনিস দিদেরো ও দ্য এলেমবার্ট ছিলেন বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ের বিখ্যাত দুই পণ্ডিত। এঁরা সমকালীন পণ্ডিতদের সহযোগিতায় 35 খণ্ডের বিশ্বকোষ (Encyclopedia) রচনা করেন।

ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের ভূমিকা কী ছিল?

মন্তেস্কু, ভলতেয়ার, রুশো প্রমুখ ফরাসি দার্শনিকগণ প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সের সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির প্রকৃত স্বরূপ জনগণের সামনে উন্মোচন করেছিলেন। এর ফলে জনগণের মধ্যে বিপ্লবমনস্কতা তৈরি হয়েছিল।

দার্শনিকদের রচনা ফরাসিদের উদ্‌বুদ্ধ হতে কীভাবে সাহায্য করেছিল?

দার্শনিকদের প্রভাব: প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ছিল না। সেই অভাব পূরণ করেছিলেন বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিকরা। এঁরা বক্তৃতা ও লেখনীর মধ্য দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বিক্ষোভকে ভাষা জোগান। ফ্রান্সে দার্শনিকদের লেখা নানান পুস্তক-পুস্তিকা, পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হত। কাফে, রেস্তোরা ও সালোঁতে দার্শনিকদের মতবাদ নিয়ে আলোচনা হত। ফলে সাধারণ অশিক্ষিত মানুষও এই সমস্ত আলোচনা শুনে রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও যাজকতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলেছিলেন। তারা চার্চের দুর্নীতি ও নৈতিক অধঃপতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন।

ফিজিওক্র্যাটস কাদের বলা হয়?

ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে এক শ্রেণির অর্থনীতিবিদের আবির্ভাব হয়, যারা অবাধ বাণিজ্য ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী ছিলেন। তাদের ফিজিওক্র্যাটস বলা হয়। এই মতবাদের প্রবক্তা হলেন কুয়েসনে, অ্যাডাম স্মিথ প্রমুখ। এই অর্থনীতিবিদরা ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করেন।

রাজা ষোড়শ লুই কত খ্রিস্টাব্দে স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন ডেকেছিলেন? এর আগে কত খ্রিস্টাব্দে এর শেষ অধিবেশন বসেছিল?

রাজা ষোড়শ লুই 1789 খ্রিস্টাব্দে স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন ডেকেছিলেন। এর আগে 1614 খ্রিস্টাব্দে স্টেটস্ জেনারেলের শেষ অধিবেশন বসেছিল।

স্টেটস্ জেনারেল কী? ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই কেন স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন আহ্বান করেছিলেন?

স্টেটস্ জেনারেল: স্টেটস্ জেনারেল হল ফ্রান্সের জাতীয় সভা।
স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন আহ্বানের কারণ: রাজা ষোড়শ লুই স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন ডেকে জনগণের উপর বাড়তি কর ধার্য করতে চেয়েছিলেন। ফ্রান্সের তৎকালীন অর্থসংকট থেকে মুক্তিলাভের জন্য তিনি স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন আহ্বান করেছিলেন।

স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশনে তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা কী কী দাবি করেছিলেন?

1789 খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশনে তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা দুটি প্রধান দাবি করেছিলেন। দাবিগুলি ছিল—

  1. যৌথ অধিবেশন – প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ অধিবেশন করতে হবে।
  2. মাথাপিছু ভোট – জাতীয় সভায় সব সদস্যের মাথাপিছু ভোটের অধিকার দিতে হবে।

বিরাট আশা বা Great Hope কী?

ঐতিহাসিক লেফেভর ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্‌কালে গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে যে অন্যতম প্রবণতাটি লক্ষ করেছিলেন, তা ছিল বিরাট আশা বা Great Hope। কৃষকেরা ন্যায় ও সাম্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নতুন সমাজের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। তারা আশা করেছিল ওপরতলার মানুষেরা দুর্বিষহ অবস্থা থেকে তাদের মুক্তি দিতে এগিয়ে আসবেন।

টেনিস কোর্টের শপথ বলতে কী বোঝায়?

1789 খ্রিস্টাব্দের 20 জুন তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশনে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সভাকক্ষে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখেন সেটি তালাবন্ধ আছে। তখন তারা আবে সিয়েস ও মিরাবোর নেতৃত্বে পাশের টেনিস খেলার মাঠে সমবেত হন। এখানে তারা শপথগ্রহণ করেন যে, যতদিন না ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা হচ্ছে ততদিন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। একে ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ বলা হয়।

লেত্র-দ্য-ক্যাশে (Lettres de Cachet) কী?

লেত্র-দ্য-ক্যাশে হল ফ্রান্সে প্রচলিত একপ্রকার রাজকীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। এই পরোয়ানার ভিত্তিতে রাজকর্মচারীরা যে-কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক করে রাখতে পারতেন।

বাস্তিল কী? কবে, কীভাবে এর পতন ঘটেছিল?

বাস্তিল: বাস্তিল হল ফ্রান্সের একটি কুখ্যাত দুর্গ।
বাস্তিলের পতন: 1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই বাস্তিল দুর্গের পতন হয় ফরাসি জনগণের আক্রমণে।

1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বাস্তিল দুর্গ ছিল ফরাসি স্বৈরশাসনের প্রতীক। এখানে বিনা বিচারে প্রচুর নিরপরাধ ও সাধারণ মানুষকে বন্দি করে রাখা হত। প্যারিসের উত্তেজিত জনতা 1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে এবং কারারক্ষীদের হত্যা করে কুখ্যাত এই দুর্গ দখল করে নেয়।

বাস্তিল দুর্গের পতনের গুরুত্ব কী?

বাস্তিল দুর্গ ছিল বুরবোঁ রাজতন্ত্রের স্বৈরচারিতার প্রতীক। বাস্তিল দুর্গের পতনের প্রধান গুরুত্ব ছিল–

  1. ফ্রান্সে বুরবোঁ রাজাদের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।
  2. বাস্তিল দুর্গে বন্দি নিরপরাধ ফরাসি জনসাধারণ মুক্তি পায়।
  3. বাস্তিল দুর্গের পতনের মাধ্যমে ফ্রান্সে বিপ্লবের জয়যাত্রা সূচিত হয়।

প্যারিস কমিউন কী?

1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই বাস্তিল দুর্গের পতনের পর ফ্রান্সের বিপ্লবী জনগণ প্যারিসের পৌরশাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নেয়। নিজেদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন করে যে অস্থায়ী পৌর পরিষদ গঠন করে, তাকেই ‘প্যারিস কমিউন’ বলা হয়।

মহা আতঙ্ক (Great Fear) কী?

প্যারিস শহরে গণ অভ্যুত্থান এবং বাস্তিল দুর্গের পতন ফ্রান্সের গ্রামগুলিতে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এই সময়ে গ্রামের কৃষকদের মধ্যে গুজব ছড়ায় যে, তাদের শায়েস্তা করতে অভিজাতদের সেনাবাহিনী ও গুন্ডারা আসছে। এই মিথ্যা রটনাই ফ্রান্সের ইতিহাসে ‘মহা আতঙ্ক (Great Fear)’ নামে পরিচিত।

ফ্রান্সের জাতীয় সভা কীভাবে সংবিধান সভায় রূপান্তরিত হয়?

ফ্রান্সে তিনটি সম্প্রদায়ের মিলিত অধিবেশনে ফ্রান্সের জন্য সংবিধান রচনার দায়িত্ব জাতীয় সভাকে দেওয়া হয়। এর ফলেই জাতীয় সভা 1789 খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সভায় রূপান্তরিত হয়।

‘সাসপেনসিভ ভেটো’ (Suspensive Veto) বলতে কী বোঝো?

ফরাসি সংবিধান সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আইনসভা কর্তৃক প্রবর্তিত কোনো আইন রাজা সম্পূর্ণ বাতিল করতে না পারলেও সাময়িকভাবে মুলতুবি রাখতে পারতেন। রাজার এই ক্ষমতা ‘সাসপেনসিভ ভেটো’ নামে পরিচিত। অবশ্য যে-কোনো আইন পরপর তিনবার আইনসভা কর্তৃক গৃহীত হলে রাজা তা মেনে নিতে বাধ্য হতেন।

মূল সংবিধান রচনার আগে ফরাসি সংবিধান সভার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের উল্লেখ করো।

মূল সংবিধান রচনার আগে ফরাসি সংবিধান সভা দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে। যথা–

  1. 1789 খ্রিস্টাব্দের 4 আগস্ট সামন্ততন্ত্রের অবসানের কথা ঘোষণা করে এবং
  2. 1789 খ্রিস্টাব্দের 26 আগস্ট ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের কথা ঘোষিত হয়।

মানুষ ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা বলতে কী বোঝায়?

1789 খ্রিস্টাব্দের 26 আগস্ট ফ্রান্সের সংবিধান সভা একটি ঘোষণাপত্রে মানুষের অধিকারের কথা ঘোষণা করে। এটি ‘মানুষ ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা’ নামে পরিচিত। এতে বলা হয়–

  1. স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার।
  2. আইনের চোখে সকলেই সমান।

মানবিক ও নাগরিক অধিকারের ঘোষণাপত্রটি কী কী অনুকরণ করে রচিত হয়েছিল?

মানবিক ও নাগরিক অধিকারের ঘোষণাপত্রটি ইংল্যান্ডের ‘ম্যাগনাকার্টা’, ‘বিল অফ রাইটস’, আমেরিকার ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ এবং জ্ঞানদীপ্ত দার্শনিকদের মতবাদ-এর অনুকরণ করে রচিত হয়েছিল।

ব্যক্তি ও নাগরিক অধিকারপত্র-এর লক্ষ্য কী ছিল?

1789 খ্রিস্টাব্দের 26 আগস্ট সংবিধান সভা একটি ঘোষণাপত্রে মানুষ ও নাগরিকদের অধিকার ঘোষণা করে। এর লক্ষ্য ছিল–

  1. ফ্রান্সের জনগণকে পুরাতনতন্ত্রের কবল থেকে স্বাধীন করা এবং
  2. সকল মানুষের জন্য সাম্যের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা।

মানবিক ও নাগরিক অধিকারের ঘোষণাপত্রকে ‘পুরাতনতন্ত্রের মৃত্যু পরোয়ানা’ বলা হয় কেন?

মানবিক ও নাগরিক অধিকারের ঘোষণাপত্রকে ‘পুরাতনতন্ত্রের মৃত্যু পরোয়ানা’ বলে উল্লেখ করেছেন ঐতিহাসিক ওলার্ড (Aulard)। কারণ— এই ঘোষণায় মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সমানাধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। পুরাতন রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

ফরাসি সংবিধান সভা নাগরিকদের কী কী ভাগে বিভক্ত করেছিল? অথবা, সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় নাগরিক বলতে কাদের বোঝাত?

ফরাসি সংবিধান সভা নাগরিকদের ‘সক্রিয়’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ এই দুভাগে বিভক্ত করেছিল। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তির মালিকগণ সক্রিয় এবং সম্পত্তিহীন ব্যক্তিগণ নিষ্ক্রিয় নাগরিক নামে পরিচিত ছিলেন। সক্রিয় নাগরিকরাই কেবল ভোটাধিকার লাভ করেন।

সংবিধান সভার দুটি অর্থনৈতিক সংস্কার সম্পর্কে লেখো।

সংবিধান সভার দুটি অর্থনৈতিক সংস্কার হল–

  1. ফ্রান্সে গির্জার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং ‘অ্যাসাইনেট’ নামক কাগজের নোট চালু করা হয়।
  2. সকল প্রকার পরোক্ষ কর তুলে দেওয়া হয়।

সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দ্য ক্লার্জি কী?

‘সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দ্য ক্লার্জি’ বা ‘ধর্মযাজকদের সংবিধান’ হল একটি দলিল, যার দ্বারা গির্জার উপর থেকে পোপের সমস্ত কর্তৃত্বের অবসান ঘটানো হয়। এ ছাড়া গির্জাকে রাষ্ট্রের একটি দপ্তরে পরিণত করা হয়। যাজকরা রাষ্ট্রীয় বেতনভূক কর্মচারীতে পরিণত হয়।

অ্যাসাইনেট কী?

অ্যাসাইনেট হল ফরাসি সংবিধান সভা প্রবর্তিত একপ্রকার কাগজের নোট। সংবিধান সভা ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য ফ্রান্সের গির্জার সব ভূসম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এবং তা আমানত রেখে তার পরিবর্তে যে কাগজের নোট চালু করে, তা ‘অ্যাসাইনেট’ নামে পরিচিত।

রাজতন্ত্রের শবযাত্রা কাকে বলে?

1789 খ্রিস্টাব্দের 6 অক্টোবর প্যারিসের কয়েক হাজার মহিলার দাবি অনুসারে রাজা ষোড়শ লুই সপরিবারে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভার্সাই থেকে প্যারিসে আসতে বাধ্য হন। মহিলাদের শোভাযাত্রার সূত্রে রাজার প্যারিসে আসার বিষয়টিকে ঐতিহাসিক রাইকার রাজতন্ত্রের অন্তিম যাত্রার সূচক তথা ‘রাজতন্ত্রের শবযাত্রা’ বলে চিহ্নিত করেছেন।

ব্রান্সউইক ঘোষণা কী?

প্রাশিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডরিক উইলিয়াম ষোড়শ লুইকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। ফ্রান্স যখন অগ্নিগর্ভ তখন রাজার নির্দেশে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার যৌথ সেনাধ্যক্ষ ডিউক-অফ ব্রান্সউইক এক ঘোষণাপত্রে জানান, ফরাসি রাজপরিবারের নিরাপত্তা কোনোভাবে বিঘ্নিত হলে তিনি প্যারিস ধ্বংস করে দেবেন। ফরাসি জাতির প্রতি চরম অপমানজনক এই ঘোষণাই ‘ব্রান্সউইক ঘোষণা’ নামে পরিচিত।

কে, কোন্ ঘটনাকে দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব বলেছেন?

1792 খ্রিস্টাব্দের 10 আগস্ট জেকোবিনদের নেতৃত্বে ফ্রান্সের ক্ষিপ্ত জনতা টুইলারিস রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে রাজার দেহরক্ষী দলকে হত্যা করে। এই ঘটনাকেই ঐতিহাসিক লেফেভর ‘দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেছেন।

পিলনিজের ঘোষণাপত্র কী?

1791 খ্রিস্টাব্দের 20 আগস্ট অস্ট্রিয়ার সঙ্গে লিওপোল্ড ও প্রাশিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডরিক উইলিয়াম ‘পিলনিজ’ নামক জায়গায় এক বৈঠকে মিলিত হয়ে ‘পিলনিজ ঘোষণাপত্র’ প্রচার করেন। এতে তাঁরা অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিগুলিকে ফ্রান্সের রাজতন্ত্রের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার ডাক দেন।

কোন ঘটনা সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত?

1792 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে বিপ্লবী-কমিউনিস্টরা কয়েক হাজার রাজতন্ত্রের সমর্থক ব্যক্তিকে বন্দি করে এবং কারাগারে অনেক মানুষকে হত্যা করে। এই ঘটনা ‘সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত। এই ঘটনা রাজতন্ত্রের অবসানকে সুনিশ্চিত করে।

রাজা ষোড়শ লুই-এর কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল?

রাজা ষোড়শ লুই-এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে জেকোবিন ও জিরন্ডিন দলের মধ্যে বিরোধ চরমে উঠেছিল। এরপর 1793 খ্রিস্টাব্দের 21 জানুয়ারি গিলোটিন যন্ত্রে তাঁকে হত্যা করা হয়।

ফ্রান্সের নতুন আইনসভায় (1791 খ্রি.) কোন কোন রাজনৈতিক দল ছিল?

ফ্রান্সের নতুন আইনসভায় (1791 খ্রি.) প্রধানত চারটি রাজনৈতিক দল ছিল। যথা:

  • দক্ষিণপন্থী শাসনতান্ত্রিক দল
  • জিরন্ডিন দল
  • জেকোবিন দল
  • মধ্যপন্থী দল

জেকোবিন কাদের বলা হত? অথবা, জেকোবিন দল বলতে কী বোঝো?

জেকোবিন হল ফরাসি আইনসভার একটি রাজনৈতিক দল। ফ্রান্সের জেকোবিন দলের সদস্যদেরই ‘জেকোবিন’ বলা হত। জেকোবিনরা ছিলেন প্রজাতন্ত্রের সমর্থক ও উগ্র বামপন্থী। জেকোবিনরা কয়েক বছর ফ্রান্সের শাসন পরিচালনা করেছিলেন। জেকোবিনদের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন রোবসপিয়র।

জিরন্ডিন কারা ছিলেন?

ফ্রান্সের আইনসভার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হল জিরন্ডিন দল। ফ্রান্সের জিরন্ড প্রদেশ থেকে এর অধিকাংশ সদস্যরা এসেছিলেন বলে এই দল জিরন্ডিন দল নামে পরিচিত ছিল। জিরন্ড প্রদেশ থেকে আগত দলের সদস্যরাই ‘জিরন্ডিন’ নামে পরিচিত। জিরন্ডিনরা বামপন্থায় বিশ্বাসী হলেও জেকোবিনদের মতো উগ্র ছিলেন না।

সংবিধান সভা (Constituent Assembly)-কে কেন্দ্র করে জেকোবিন ও জিরন্ডিনদের মধ্যে কী কারণে সংঘাত বাধে?

ফ্রান্সের সংবিধান সভার অধিবেশন চলাকালীন জেকোবিন সম্প্রদায়ের সদস্যরা সম্প্রদায়ভিত্তিক অগণতান্ত্রিক ভোটের বিরোধিতা করে মাথাপিছু ভোটের অধিকার দাবি করতে থাকে। কিন্তু নরমপন্থী বুর্জোয়ারা অর্থাৎ জিরন্ডিস্টরা সেই দাবি নস্যাৎ করে দেয়। অতঃপর জেকোবিনরা দাবি করে যে, বিপ্লব শেষ হয়নি, বিপ্লব চলতে থাকবে। কিন্তু জিরন্ডিস্টরা দাবি করে, বিপ্লব শেষ হয়ে গেছে। এইভাবে সংবিধান সভায় জেকোবিন ও জিরন্ডিন দল পরস্পরের বিরোধিতা করায় সংঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে।

মার্স (Marsh) কারা ছিলেন?

আইনসভায় জেকোবিন এবং জিরন্ডিনদের মাঝখানে বসতেন স্বাধীন বা নিরপেক্ষ দল। এরাই ‘মার্স’ (Marsh) বা ‘প্লেন’ (Plain) নামে পরিচিত ছিলেন।

জাতীয় মহাসভা বা ন্যাশনাল কনভেনশন কী?

অথবা, ন্যাশনাল কনভেনশন কেন আহ্বান করা হয়েছিল?

1791 খ্রিস্টাব্দের 20 জুন ষোড়শ লুই বন্দি হলে ফ্রান্সে নতুন সংবিধানের প্রয়োজন হয়। এই নতুন সংবিধান রচনার জন্য গণভোটের ভিত্তিতে যে পরিষদ গঠিত হয়, তা ‘জাতীয় কনভেনশন’ নামে পরিচিত। জাতীয় কনভেনশন 1792 খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে 1795 খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাস পর্যন্ত বজায় ছিল।

কারা, কবে ফ্রান্সে প্রথম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে?

ফ্রান্সের জাতীয় মহাসভা বা ন্যাশনাল কনভেনশন ফরাসি রাজতন্ত্রের উচ্ছেদ ঘটিয়ে 1792 খ্রিস্টাব্দের 22 সেপ্টেম্বর ফ্রান্সে প্রথম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।

জেকোবিন শাসনকে সন্ত্রাসের শাসন বলা হয় কেন?

জেকোবিনরা 1793 খ্রিস্টাব্দের জুন মাস থেকে 1794 খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস পর্যন্ত সময়ে বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিরোধ এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দমন করার জন্য ফ্রান্সে এক কঠোর শাসন প্রবর্তন করেছিলেন। এই শাসনে বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেইজন্য এই শাসনকে ‘সন্ত্রাসের শাসন’ বলা হয়।

সন্ত্রাসের রাজত্ব বলতে কী বোঝায়?

রাজা ষোড়শ লুইয়ের প্রাণদণ্ডের ফলে ফ্রান্সে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে এক ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দেশের অভ্যন্তরে খাদ্যাভাব ও অর্থাভাবে চরম সংকট তৈরি হয় এবং জনগণ প্রজাতান্ত্রিক সরকারের বিরোধিতা করে। অপরদিকে ইউরোপের দেশগুলি ফ্রান্সকে আক্রমণ করতে সচেষ্ট হয়। এই অবস্থায় জেকোবিন দল ফ্রান্সের জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে যে শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে, তাকে ‘সন্ত্রাসের শাসন’ বলা হয়। সন্ত্রাসের শাসনের প্রধান পরিচালক ছিলেন রোবসপিয়র।

সন্ত্রাসের শাসনের দুজন পরিচালকের নাম লেখো।

সন্ত্রাসের শাসনের অন্যতম দুজন পরিচালক ছিলেন রোবসপিয়র এবং দাঁতো।

সন্ত্রাসের শাসনের প্রধান অঙ্গগুলির নাম লেখো।

সন্ত্রাসের শাসনের প্রধান অঙ্গগুলি ছিল:

  • জননিরাপত্তা কমিটি
  • সাধারণ নিরাপত্তা কমিটি
  • সন্দেহের আইন
  • বিপ্লবী আদালত
  • গিলোটিন যন্ত্র

জননিরাপত্তা কমিটি কেন গঠিত হয়?

ফ্রান্সে কনভেনশনের শাসনকালে একই সঙ্গে বৈদেশিক আক্রমণ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিদ্রোহ শুরু হয়। এই অবস্থায় নবগঠিত ফ্রান্সের প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য জেকোবিন দল জননিরাপত্তা কমিটি গঠন করে।

সন্দেহের আইন বলতে কী বোঝো?

ফ্রান্সে সন্ত্রাসের শাসন চলাকালীন এক বিশেষ ধরনের আইন প্রচলিত হয়। এই আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে কেবলমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে গ্রেফতার এবং বিনা বিচারে শাস্তি প্রদান করা যেত। এই আইনই ‘সন্দেহের আইন’ নামে পরিচিত।

রোবসপিয়র কে ছিলেন?

রোবসপিয়র ছিলেন ফ্রান্সে জেকোবিন দলের নেতা এবং সন্ত্রাসের রাজত্বের প্রধান পরিচালক। তিনি ফ্রান্সে ‘মহাসন্ত্রাস’ শুরু করেছিলেন। 1794 খ্রিস্টাব্দের 28 জুলাই গিলোটিনে তাঁকে হত্যা করার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রান্সে সন্ত্রাসের শাসনের অবসান হয়।

লাল সন্ত্রাস (Red Terror) বলতে কী বোঝো?

জেকোবিন দলের পরিচালনায় এবং রোবসপিয়রের নেতৃত্বে 1793 খ্রিস্টাব্দের 2 জুন থেকে 1794 খ্রিস্টাব্দের 27 জুলাই পর্যন্ত ফ্রান্সে যে নৃশংস সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল, তাকে ‘লাল সন্ত্রাস’ বলা হত। ফ্রান্সে সন্ত্রাসের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেও রোবসপিয়র সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যান।

শ্বেত সন্ত্রাস (White Terror) বলতে কী বোঝো?

ফ্রান্সের বেকার, ভবঘুরে মানুষ রোবসপিয়রের ভয়াবহ ‘লাল সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে জেকোবিনদের হত্যা করতে শুরু করে। এই ঘটনা ‘শ্বেত সন্ত্রাস’ নামে পরিচিত।

রোবসপিয়রের ক্ষমতা থেকে অপসারণকে থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া বলা হয় কেন?

ফ্রান্সের নতুন বিপ্লবী বর্ষপঞ্জী অনুসারে 1794 খ্রিস্টাব্দের 9 থার্মিডোর (27 জুলাই) রোবসপিয়র ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। থার্মিডোর মাসে এই ঘটনাটি ঘটে বলে একে ‘থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া’ বলা হয়।

ফ্রান্সে কোন্ ঘটনাকে Dictatorship of the Distress বলা হয় এবং কেন?

ফ্রান্সে সন্ত্রাসবাদী শাসনকালকে ‘Dictatorship of the Distress’ বলা হয়। কারণ, বৈদেশিক আক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দমনের জন্য এসময় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলে সন্ত্রাসের শাসনকে ‘Dictatorship of the Distress’ বলে অভিহিত করা হয়।

গিলোটিন কী? কে এটি আবিষ্কার করেন?

গিলোটিন হল ফ্রান্সের সন্ত্রাসের শাসনে ব্যবহৃত শিরশ্ছেদ করার একটি যন্ত্র। গিলোটিনের আবিষ্কারক হলেন ড. গিলোটিন।

ফ্রান্সে সন্ত্রাসের শাসনের অবসান কীভাবে ঘটেছিল?

ফ্রান্সে জেকোবিন দল 1793 খ্রিস্টাব্দের জুন থেকে 1794 খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস পর্যন্ত সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিল। তবে এই রাজত্বের শেষদিকে রোবসপিয়রের জনসমর্থন কমে আসার পাশাপাশি জাতীয় কনভেনশনের অভ্যন্তরেই বিরোধ দেখা দেয়। এমতাবস্থায় কনভেনশনের দক্ষিণপন্থী ও সাধারণ সদস্যরা রোবসপিয়র ও তাঁর অনুগামীদের গিলোটিনে হত্যা করে সন্ত্রাসের শাসনের অবসান ঘটায়।

ফরাসি বিপ্লবের কয়টি আদর্শ ও কী কী?

অথবা, ফরাসি বিপ্লবের মূল আদর্শ কী?

ফরাসি বিপ্লবের তিনটি মূল আদর্শ ছিল। এগুলি হল— সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা অর্থাৎ জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্রবাদ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা।

প্রাক্-বিপ্লব পর্বে ইউরোপের কোন্ দুটি ঘটনা ফরাসি বিপ্লবে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিল?

প্রাক্-বিপ্লব পর্বে ইউরোপের যে দুটি ঘটনা ফরাসি বিপ্লবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল, সেগুলি হল:

  • ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লব
  • আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ

ইউরোপে জাতীয়তাবাদের উদ্ভবে ফরাসি বিপ্লবের ভূমিকা লেখো।

জাতীয়তাবাদের উদ্ভবে ফরাসি বিপ্লব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। বিপ্লব জাতীয়তাবাদের বীজ বপন করেছিল। বিভিন্ন দেশে বিশেষত ইটালি ও পোল্যান্ডের জাতীয়তাবাদকে উৎসাহ দেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রনায়করা। ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ইউরোপের যে সমস্ত অঞ্চলে সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রচলিত ছিল, সেইসব অঞ্চলে নেপোলিয়ন ফরাসি আধিপত্য স্থাপন করে জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটিয়েছিলেন। জাতীয়তাবাদের এই আদর্শ ক্রমশ সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্বৈরাচারী শাসনের হাত থেকে মানুষের মুক্তির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দেখা দেয়।

ফরাসি বিপ্লবের ফলে কীভাবে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

ফরাসি বিপ্লব মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায়। নবজাগরণ যে মানবতাবাদের প্রচার করেছিল, তার সার্থক রূপায়ণ হয় ফরাসি বিপ্লবে। ফরাসি বিপ্লবের মূল আদর্শ ছিল— সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা। এই বিপ্লব ফ্রান্সের জনগণকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সাম্য প্রদান করেছিল।

রাজনৈতিক সাম্য: পুরাতনতন্ত্রের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সাম্যের আদর্শ ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভোটাধিকার, সংবাদপত্রের অধিকার এবং সভাসমিতির অধিকার স্বীকৃত হয়।

সামাজিক সাম্য: যাজক ও অভিজাত শ্রেণির বিশেষ সুযোগসুবিধা ও সার্ফপ্রথার অবলুপ্তি ঘটলে সামাজিক ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এমনকি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও বৈষম্য দূরীভূত হয়।

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণীর ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে আপনি আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন