দশম শ্রেণি – বাংলা – জ্ঞানচক্ষু – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্পটি একটি দশম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গল্পটিতে, একজন তরুণ লেখক তার প্রথম গল্পটি প্রকাশিত হওয়ার পর যে দুঃখবোধ অনুভব করে তার কথা বলা হয়েছে।

Table of Contents

দশম শ্রেণি – বাংলা – জ্ঞানচক্ষু – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

কখন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

তপন যখন শুনল তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক তখনই তার চোখ মার্বেল হয়ে গেল।

বিয়ে হয়ে গেল দেদার ঘটাপটা করে। — কার ঘটাপটা করে বিয়ে হয়েছিল?

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের ছোটোমাসির ঘটাপটা করে বিয়ে হয়েছিল।

এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের — কোন বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল?

একজন লেখকও যে সাধারণ মানুষের মতো হতে পারে, তাদের না আচরণও যে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই হয়ে থাকে, সেই বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল।

কাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল?

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে ছোটোমেসোমশাইকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল।

অনেক বই ছাপা হয়েছে — কার অনেক বই ছাপা হয়েছে?

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের লেখক ছোটোমেসোর অনেক বই ছাপা হয়েছে।

তবে তপনেরই বা লেখক হতে বাধা কী? — তপনের লেখক হতে বাধা ছিল কেন?

তপন মনে করত লেখকরা তার মতো সাধারণ মানুষ নন, তাঁরা হয়তো অন্য গ্রহের জীব। তাই তার নিজের লেখক হতে বাধা ছিল।

তপনের লেখক হতে বাধা নেই কেন?

নতুন মেসোকে দেখে তপন বুঝতে পারল তিনি আর পাঁচজনের মতোই সাধারণ মানুষ, আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নন। তাই তার নিজেরও লেখক হতে কোনো বাধা নেই।

তপনের নতুন মেসো কোন্ পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের নতুন মেসো পেশায় অধ্যাপক ছিলেন।

তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো কী বলেছিলেন?

তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো বলেছিলেন যে, গল্পটা ভালোই হয়েছে। শুধু একটু সংশোধন করে দেওয়া দরকার। তাহলেই তার লেখা ছাপতে দেওয়া যাবে।

কী কারণে মেসোমশাই তপনের লেখা ভালো বলেছিলেন?

ছোটোমেসোমশাইয়ের নতুন বিয়ে হয়েছে, তাই শ্বশুরবাড়ির একটি বাচ্চাছেলেকে খুশি করতেই মূলত তপনের মেসোমশাই লেখা ভালো হয়েছে বলেছিলেন।

মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা — কোন্ কাজকে ‘মেসোর উপযুক্ত কাজ’ বলে ছোটোমাসি মনে করেন?

তপন একটা গল্প লিখেছিল। তার লেখক মেসোমশাই যদি সেই গল্পটিকে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, তবেই সেটা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে বলে ছোটোমাসি মনে করে।

নতুন মেসোই বুঝবে। — নতুন মেসো কী বুঝবে?

জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে সম্মানিত আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে নতুন মেসো তপনের লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবে।

লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝলে নতুন মেসোই বুঝবে। — লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল নতুন মেসোই বুঝবেন কেন?

তপনের নতুন মেসো একজন নামকরা লেখক। তাই লেখক মানুষ হিসেবে তিনিই তপনের লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবেন।

তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা — কোন্ কথাটা তপন ঠাট্টা ভেবেছিল?

একটু সংশোধন করে দিলে তপনের লেখা গল্পটি ছাপানো চলে-ছোটোমেসোর এই কথাটাকেই তপন প্রথমে ঠাট্টা ভেবেছিল।

সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় লেখা ছাপা প্রসঙ্গে তপনের মেসোমশাই কী বলেছিলেন?

সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তপনের মেসোমশাইয়ের পরিচিত। তাই তপনের লেখা দেখে মেসোমশাই বলেছিলেন, তিনি যদি সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদককে লেখা ছাপানোর কথা বলেন তাহলে সম্পাদকমশাই না বলতে পারবেন না।

তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। — তপনের এই অবস্থার কারণ কী?

নতুন মেসো তপনের লেখাটা ‘কারেকশান’ বা সংশোধন করে ছাপিয়ে দিতে চাইলে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।

আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন — তপন কী দেখতে পাচ্ছিল?

তপনের নিজের ছোটোমেসো একজন লেখক হওয়ায় সে দেখতে পাচ্ছিল, লেখক মানে আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নন, তিনিও তপনদের মতোই সাধারণ মানুষ।

ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়। — ছোটোমাসি কোন্ দিকে ধাবিত হয়?

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে নতুন মেসোমশাই যেখানে দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন সেদিকে ছোটোমাসি ধাবিত হয়।

বিকেলে চায়ের, টেবিলে ওঠে কথাটা — চায়ের টেবিলে কোন্ কথা ওঠে?

তপনের গল্প লেখা আর মেসোমশাইয়ের তা ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথাই চায়ের টেবিলে ওঠে।

তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়। — তপনের এই পুলকের কারণ কী?

তপনের মাসি তপনের লেখা নিয়ে মেসোমশাইয়ের কাছে গিয়ে হইচই করলে সে এই ভেবে পুলকিত হয় যে তার লেখার মূল্য একমাত্র লেখক মেসোমশাইয়ের পক্ষেই বোঝা সম্ভব।

এইসব মালমশলা নিয়ে বসে। — কীসের কথা বলা হয়েছে?

অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা গল্প লিখতে গিয়ে রাজারানির গল্প, খুনজখম, অ্যাকসিডেন্ট, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়া ইত্যাদি যেসব বিষয়ে লেখে, সেসবের কথা বলা হয়েছে।

এটা খুব ভালো। — বক্তার এ কথা বলার কারণ কী ছিল?

তপন স্কুলে তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির বিষয় নিয়ে গল্প লিখেছিল বলে প্রশংসা করেই তপনের মেসোমশাই মন্তব্যটি করেন।

তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে। — তপন কেন কৃতার্থ হয়েছিল?

ছোটোমেসো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তপনের গল্পটি নিয়ে গিয়েছিলেন বলে তপন কৃতার্থ হয়েছিল।

সেটা জানতে তো বাকি নেই। — কী জানতে বাকি নেই?

গল্প জিনিসটা কী তা জানতে তপনের বাকি নেই।

হঠাৎ ভয়ানক একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন। — তপন কেন উত্তেজনা অনুভব করেছিল?

একটি সত্যিকারের গল্প লিখে ফেলেছিল বলে তপন উত্তেজনা অনুভব করেছিল।

গল্প লেখার পর তপনের কী মনে হয়েছিল?

একটা গোটা গল্প সে লিখে ফেলেছে—এটা ভেবেই তপনের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল, তার মাথার চুল পর্যন্ত খাড়া হয়ে উঠল। সে ভাবল এখন তাকেও লেখক বলা যায়।

তপন তার গল্প লেখার কথা প্রথম কাকে বলেছিল?

তপন তার গল্প লেখার কথা প্রথম তার ছোটোমাসিকে বলেছিল।

তপনের লেখা গল্প পড়ে ছোটোমাসি কী বলেছিল?

তপনের লেখা গল্প পড়ে ছোটোমাসি ‘বেশ লিখেছিস তো’ বলে বাহবা জানিয়ে প্রশংসা করলেও লেখাটি কোনো জায়গা থেকে টুকলিফাই করা কি না তা জানতে চেয়েছিল।

আর তোমরা বিশ্বাস করবে কিনা জানি না — কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

একজায়গায় বসে তপনের একটা গোটা গল্প লিখে ফেলার প্রসঙ্গে আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়েছে।

যেন নেশায় পেয়েছে। — কীসের কথা বলা হয়েছে?

প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটিতে তপনের গল্প লেখার অক্লান্ত চেষ্টার কথা বলা হয়েছে।

এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা। — কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

ছোটোমাসি আর মেসোমশাইয়ের সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসার কথা বলা হয়েছে।

বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের। — কেন তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে?

তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোটোমাসি আর মেসোমশাইয়ের কাছে সন্ধ্যাতারা পত্রিকাটি দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে, কারণ তাতেই তার গল্প প্রকাশের কথা ছিল।

পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে? — কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে?

ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত তপনের গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে, এই ঘটনাকেই অলৌকিক বলা হয়েছে।

তা ঘটেছে, সত্যিই ঘটেছে। — কী ঘটেছে?

তপনের নিজের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে—এই ঘটনাই ঘটেছে।

তপনের লেখা গল্পটির নাম কী?

তপনের লেখা গল্পটির নাম প্রথম দিন

সূচিপত্রেও নাম রয়েছে। — সেখানে কী লেখা ছিল?

আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সূচিপত্রে লেখা ছিল-‘প্রথম দিন’ (গল্প) শ্রীতপন কুমার রায়।

সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় — এই শোরগোলের কারণ কী ছিল?

সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কারণ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল।

ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে। — কোন কথাটা?

তপনের গল্প কাঁচা লেখা হওয়ায় তাতে একটু—আধটু কারেকশান করতে হয়েছে-তপনের মেসোমশাইয়ের এই কথাটা সারা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে।

আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম। — কোন্ চেষ্টার কথা বলা হয়েছে?

তপনের মেজোকাকু বলেছিলেন যে তপনের মেসোমশাইয়ের মতো কেউ থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করতেন।

তপন আর পড়তে পারে না। — কেন তপন আর পড়তে পারে না?

নিজের প্রকাশিত গল্প পড়তে গিয়ে তপন যখন দেখে মেসোমশাই তার পুরোটাই কারেকশান করে দিয়েছেন, তখনই সে আর পড়তে পারে না।

শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন — তপনের সংকল্প কী ছিল?

তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কখনও লেখা ছাপাতে হয়, তাহলে তপন নিজে গিয়ে তা পত্রিকায় দেবে।

আর কখনো শুনতে না হয় — কাকে কী শুনতে না হয়?

তপনকে যেন আর কখনও শুনতে না হয় যে, অন্য কেউ তপনের লেখা গল্প ছাপিয়ে দিয়েছে।

যদি কখনো লেখা ছাপতে দেয় তো, তপন নিজে গিয়ে দেবে। — তপনের এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?

সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তার নামে প্রকাশিত গল্পটির সঙ্গে তপন নিজের মূল লেখাটির কোনো মিল পায়নি বলেই তার এমন সিদ্ধান্ত।

গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না। — উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত হতে না পারার কারণ কী?

তপনের প্রথম গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হলে তার মেসোমশাইয়ের কৃতিত্বের কথাই বড়ো হয়ে ওঠে। তাই তপন আহ্লাদিত হতে পারে না।

জ্ঞানচক্ষু গল্পটি আজও প্রাসঙ্গিক কারণ এটি আমাদের জীবনের একটি বাস্তব সমস্যার কথা বলে। আমরা অনেক সময় নিজের প্রতি খুব কঠোর হই। আমরা ভুল করি এবং তার জন্য নিজেকে ধিক্কার দিই। কিন্তু আমরা যদি আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারি, তাহলে আমরা আরও ভালো মানুষ হতে পারি।

Share via:

মন্তব্য করুন