আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না। – বক্তা কাকে কেন এ কথা বলেছিলেন?

দশম শ্রেণি – বাংলা – কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। বিষ্টুচরণ ধর ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্থূলকায়, সাড়ে তিন মন ওজনের। ক্ষিতীশ সিংহ তাঁকে বিশাল দেহটি বিচিত্র ভঙ্গিতে মালিশ করাতে দেখে ব্যঙ্গ করে হাতি বা হিপোপটেমাসের সাথে তুলনা করেন। এমনকি তিনি বিষ্টুকে চাঁটি মেরে পালানোর কথাও বলেন।

বিষ্টুচরণ যখন বলেন যে তিনি খাওয়ায় লোভী নন এবং ডায়েটিং করেন, তখন ক্ষিতীশ সিংহ বিদ্রুপের সুরে বলেন যে তিনি এত কেচ্ছা করছেন কেন। তিনি বিষ্টুচরণকে স্মরণ করিয়ে দেন যে তার অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। ক্ষিতীশ শরীরকে চাকর বানানোর কথা বলেন।

ক্ষিতীশ বিষ্টুবাবুকে আরও জানান যে মন বা ইচ্ছাশক্তি দ্বারা শরীরকে পরিচালনা করা প্রয়োজন। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, খাওয়াদাওয়ার যথাযথ পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।

ক্ষিতীশ সিংহ তার শারীরিক ও মানসিক শক্তি দিয়ে বিষ্টুচরণ ধরকে বুঝিয়ে দেন যে তিনি বিষ্টুচরণ ধরের তুলনায় বয়সে বড়ো হওয়া সত্ত্বেও শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী। ক্ষিতীশের হাতকে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও একচুল নড়াতে পারেন না বিষ্টুচরণ। তখনই ক্ষিতীশ আলোচ্য কথাটি বলেন।

এই অংশে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টুচরণ ধরের স্থূলতা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনোবল ও ইচ্ছাশক্তির গুরুত্বও তুলে ধরেছেন।

আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না। - বক্তা কাকে কেন এ কথা বলেছিলেন?

আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না। – বক্তা কাকে কেন এ কথা বলেছিলেন?

অথবা, আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না। – বক্তা এরূপ উক্তির মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন?

বক্তা এবং উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টুচরণ ধরকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য কথাটি বলেছিলেন।

এ কথা বলার কারণ –

  • বিষ্টু ধরের বিশালাকৃতি দেহ – ধনী ব্যবসায়ী বিষ্টুচরণ ধর ছিলেন সাড়ে তিন মন ওজনের দেহের মালিক। তাঁর বিশালাকৃতি দেহটি বিচিত্র ভঙ্গিতে মালিশ করাতে দেখে ক্ষিতীশ সিংহ। তাঁকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে হাতি বা হিপোর সঙ্গে তুলনা করেন। এ ছাড়াও বিষ্টুকে চাঁটি মেরে পালানোর কথাও তিনি বলেন।
  • শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব – খাওয়ায় আমার লোভ নেই বলেও বিষ্টুচরণ তাঁর ডায়েটিং করার যে ফর্দ বলেন, তা শুনে বিদ্রুপের সুরে ক্ষিতীশ সিংহ বলেন এত কেচ্ছাসাধন করেন! বিষ্টুচরণ ধরের এই ওজন যে তাঁর হার্টের পক্ষে বিপজ্জনক তা মনে করিয়ে দেন ক্ষিতীশ। তিনি শরীরটাকে চাকর বানানোর কথা বলেন।
  • ইচ্ছাশক্তির দ্বারা শরীর পরিচালনা – তিনি বিষ্টুবাবুকে আরও জানান মন বা ইচ্ছাশক্তি দ্বারা শরীরকে পরিচালনা করা প্রয়োজন। সুস্থসবলভাবে বেঁচে থাকতে গেলে নিয়মিত শরীরচর্চা, খাওয়াদাওয়ার যথাযথ পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।
  • ক্ষিতীশ সিংহের শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা – ক্ষিতীশ সিংহ তাঁর শরীর ও মনের শক্তি দিয়ে বিষ্টুচরণ ধরকে বুঝিয়ে দেন যে তিনি বিষ্টুচরণ ধরের তুলনায় বয়সে বড়ো হওয়া সত্ত্বেও শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী। ক্ষিতীশের হাতকে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও একচুল নড়াতে পারেন না বিষ্টুচরণ। তখনই ক্ষিতীশ আলোচ্য কথাটি বলেন।

আরও পড়ুন, গলার স্বরে বোঝা গেল এর জন্য সে গর্বিত। – কে কীসের জন্য গর্ব অনুভব করেছেন? তাঁর এই গর্বের বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।

এই প্রবন্ধ থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে আমাদের শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত এবং সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। আমাদের মনকেও শক্তিশালী করতে হবে যাতে আমরা আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং একটি সুখী ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।

Share via:

মন্তব্য করুন