আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে বানডাকা বা বান বলতে কী বোঝ? কী কী অবস্থায় নদীতে বান খুব প্রবল হয়? এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় বারিমণ্ডলের প্রশ্ন। বানডাকা বা বান বলতে কী বোঝ? কী কী অবস্থায় নদীতে বান খুব প্রবল হয়? – আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।
বানডাকা
জোয়ারের সময় সমুদ্র স্ফীত হয় বলে সমুদ্রের জল মোহানা দিয়ে দ্রুত নদীতে প্রবেশ করে, ফলে নদীর জলও তখন বেড়ে যায়। এইভাবে জোয়ারের জল নদীতে ঢোকার সময় মাঝে মাঝে অত্যধিক উঁচু (5-7 মিটার) হয়ে প্রবল বেগে নদীতে জলোচ্ছ্বাস ঘটায়। একেই বলা হয় ৰান বা বানডাকা।
প্রবল বনের অনুকূল অবস্থা –
কতকগুলি বিশেষ অবস্থায় নদীতে বান খুব প্রবল হয়, যেমন –
- তেজ কোটালের সময়
- নদীর মোহানায় চড়া থাকলে
- জোয়ারের জল প্রবেশ করার সময় নদীর স্রোতে বা অন্যভাবে বাধা পেলে
- নদীর মুখ ফানেল আকৃতির হলে
- নদী জলপূর্ণ থাকলে।
বানডাকা কোন তিথিতে হয়?
বানডাকা নির্দিষ্ট কোন তিথিতে হয় না। বরং, বানডাকা ঘটার জন্য কিছু অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে হয়।
জোয়ারের বান কি?
জোয়ারের বান বলতে বোঝায় সমুদ্রের জোয়ারের ফলে নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি এবং এর ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যার সৃষ্টি।
বান ডাকা কী?
বান ডাকা হলো নদীর মোহনায় জোয়ারের জল দ্রুত প্রবেশের ফলে সৃষ্ট এক ধরণের জলোচ্ছ্বাস। এই জলোচ্ছ্বাস খুব দ্রুত গতিতে নদীতে প্রবেশ করে এবং তীব্র গর্জনের সাথে তীরে আছড়ে পড়ে। এই তীব্র গর্জনের কারণে একে বান ডাকা বলা হয়।
ষাঁড়াষাঁড়ি বান কাকে বলে?
ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলতে বোঝায় প্রবল বন্যা। এই বন্যা অত্যন্ত তীব্র এবং ধ্বংসাত্মক হয়। ষাঁড়াষাঁড়ি বানের সময় নদীর জল দ্রুত গতিতে প্রবাহিত হয় এবং উচ্চতা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
উল্লেখ্য, ষাঁড়াষাঁড়ি বান একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তবে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে ষাঁড়াষাঁড়ি বানের প্রভাব হ্রাস করা সম্ভব।
পশ্চিমবঙ্গের কোন নদীতে বান ডাকা দেখা যায়?
হুগলি নদী: হুগলি নদীতে বান ডাকা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে কলকাতা ও হাওড়া এলাকায় বান ডাকার প্রভাব বেশি।
মতলা নদী: মতলা নদীতেও বান ডাকা দেখা যায়। বিশেষ করে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বারাকপুর ও ডায়মন্ড হারবার এলাকায় বান ডাকার প্রভাব বেশি।
ভাগীরথী-হুগলি নদী: ভাগীরথী-হুগলি নদীর মোহনায়ও বান ডাকা দেখা যায়। বিশেষ করে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও শান্তিপুর এলাকায় বান ডাকার প্রভাব বেশি।
কংসাবতী নদী: কংসাবতী নদীতেও বান ডাকা দেখা যায়। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ও হলদিবাড়ি এলাকায় বান ডাকার প্রভাব বেশি।
এই আর্টিকেলে আমরা বানডাকা বা বান কী, এবং কী কী অবস্থায় নদীতে বান খুব প্রবল হয়, তা আলোচনা করেছি। আমরা দেখেছি যে বানডাকা হলো নদীর জলধারা দ্রুত বৃদ্ধি এবং তীরে উপচে পড়ার ঘটনা। বর্ষার সময়, যখন প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, তখন নদীতে বানডাকা হয়।
বানের তীব্রতা নির্ভর করে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, নদীর ধারণক্ষমতা, এবং অন্যান্য কারণের উপর।