এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চলগুলির বিবরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চলগুলির বিবরণ দাও।
চা হল ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থকরী ও বাগিচা ফসল। সস্তা ও মৃদু উত্তেজক পানীয়রূপে চা সর্বত্র খুবই জনপ্রিয়। বর্তমানে চা উৎপাদনে ভারত বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে। ভারতের উল্লেখযোগ্য চা উৎপাদক রাজ্য ও অঞ্চলগুলি হল –
অসম –
চা উৎপাদনে অসম ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে। 2017-2018 খ্রিস্টাব্দে এই রাজ্যের মোট চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 6.76 লক্ষ টন। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য চা উৎপাদক জেলাগুলি হল অসমের শিবসাগর, লখিমপুর ও দরং এবং নিম্ন অসমের গোয়ালপাড়া ও কামরূপ। তবে কাছাড় জেলার সুর্মা নদীর উপত্যকায় 10 শতাংশ বাগিচার অবস্থান দেখা যায়। ভারতের মোট চা উৎপাদনের প্রায় 52 শতাংশ এই রাজ্যে উৎপন্ন হয়।
পশ্চিমবঙ্গ –
2017-18 খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ 3.98 লক্ষ টন চা উৎপাদন করে। চা উৎপাদক রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ ভারতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের চা বাগিচাগুলি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় অবস্থিত। এই রাজ্যের দার্জিলিং -এর চা বিশ্ববিখ্যাত। ভারতের মোট চা উৎপাদনের শতকরা প্রায় 12.4 ভাগ এই রাজ্যে উৎপন্ন হয়।
তামিলনাড়ু –
বর্তমানে তামিলনাড়ু ভারতের তৃতীয় গুরত্বপূর্ণ চা উৎপাদক রাজ্য। 2017-18 খ্রিস্টাব্দে এই রাজ্যের মোট চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 1.64 লক্ষ টন। এই রাজ্যের কোয়েম্বাটোর, পেরিয়ার, ও নীলগিরি জেলায় পর্যাপ্ত চায়ের চাষ হয়।
অন্যান্য জেলা –
- কেরল – কোঝিকোড়, কোট্টায়ম, পালাক্কাড জেলা।
- কর্ণাটক – মাইশোর, হাসান, চিকমাগালুর জেলা। এ ছাড়া হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা, মণিপুর রাজ্যেও চায়ের চাষ হয়।
ভারতের উল্লেখযোগ্য চা উৎপাদক রাজ্য (2017-2018) –
রাজ্য | উৎপাদন (লক্ষ টন) |
অসম | 6.76 |
পশ্চিমবঙ্গ | 3.88 |
তামিলনাড়ু | 1.64 |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ভারতে চা উৎপাদনে শীর্ষ রাজ্য কোনটি?
অসম চা উৎপাদনে ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে। এটি ভারতের মোট চা উৎপাদনের প্রায় 52% অবদান রাখে।
পশ্চিমবঙ্গের কোন অঞ্চলে চা চাষ হয়?
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় চা বাগান রয়েছে। দার্জিলিং চা বিশ্ববিখ্যাত।
দার্জিলিং চা কেন বিখ্যাত?
দার্জিলিং চা তার সুগন্ধ ও স্বাদের জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। এখানে উৎপাদিত চা “চায়ের শ্যাম্পেন” নামে পরিচিত।
তামিলনাড়ুর কোন জেলাগুলিতে চা চাষ হয়?
তামিলনাড়ুর নীলগিরি, কোয়েম্বাটোর ও পেরিয়ার জেলায় চা উৎপাদন হয়।
ভারতের অন্যান্য চা উৎপাদক রাজ্যগুলি কী কী?
ভারতের অন্যান্য চা উৎপাদক রাজ্যগুলি হলো –
1. কেরল (কোঝিকোড়, কোট্টায়ম, পালাক্কাড)।
2. কর্ণাটক (চিকমাগালুর, হাসান, মাইশোর)।
3. হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা, মণিপুর।
ভারতে বছরে কত টন চা উৎপাদন হয়?
2017-2018 সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ~13 লক্ষ টন চা উৎপাদিত হয়েছিল।
অসমের প্রধান চা উৎপাদক জেলাগুলি কী কী?
অসমের শিবসাগর, লখিমপুর, দরং, গোয়ালপাড়া, কামরূপ ও কাছাড় জেলায় চা চাষ হয়।
ভারতের চা রপ্তানি বাজারে কী ভূমিকা রয়েছে?
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদক এবং একটি বড় রপ্তানিকারক দেশ। অসম ও দার্জিলিং চা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।
দক্ষিণ ভারতে কোন রাজ্যে চা চাষ বেশি হয়?
দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ু, কেরল ও কর্ণাটক প্রধান চা উৎপাদক রাজ্য।
চা চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু কী?
চা চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু, ভালো বৃষ্টিপাত (150-250 সেমি) এবং ঢালু জমি প্রয়োজন।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চলগুলির বিবরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন