বিষ্টু ধর রাগে কথা বলতে পারছে না, শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল। – বিষ্টু ধরের এই রেগে যাওয়ার কারণ আলোচনা করো।

দশম শ্রেণি – বাংলা – কোনি উপন্যাসের বিষ্টু ধর চরিত্রটি তার তীব্র রাগের জন্য পরিচিত। উপন্যাসের এক অংশে, আমরা দেখি বিষ্টু ধর রাগে কথা বলতে পারছে না, শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল। এই রাগের কারণ বোঝার জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলির দিকে নজর দিতে হবে।

বিষ্টু ধরের এই রেগে যাওয়ার কারণ

  • সম্মানে আঘাত: বিষ্টু ধর একজন সম্মানিত ব্যক্তি। লোকজন তাকে সম্মান করে এবং তার কথা শুনে। কিন্তু উপন্যাসের এই অংশে, একজন অপরিচিত ব্যক্তি বিষ্টু ধরকে অপমান করে।
  • অসহায়তা: বিষ্টু ধর যখন দেখে যে তিনি অপমানের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারছেন না, তখন তিনি রাগে ফেটে পড়েন।
  • নৈতিকতার প্রশ্ন: অপরিচিত ব্যক্তি যখন বিষ্টু ধরের স্ত্রীর নাম উচ্চারণ করে, তখন বিষ্টু ধরের নৈতিকতার প্রশ্ন উঠে আসে।
  • অতীতের স্মৃতি: অপরিচিত ব্যক্তির কথায় বিষ্টু ধরের অতীতের কিছু বেদনাদায়ক স্মৃতি উঠে আসে, যা তার রাগকে আরও তীব্র করে তোলে।
    বিশ্লেষণ

বিষ্টু ধরের রাগ একটি স্বাভাবিক মানবিক প্রতিক্রিয়া। যে কেউ অপমানিত হলে, তার রাগ হবে। বিষ্টু ধরের রাগ তার আত্মসম্মান, নৈতিকতা এবং অতীতের অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত।

তবে, বিষ্টু ধরের রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তিনি কথা বলতে পারছে না এবং শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল। এই অবস্থা তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিষ্টু ধরের রাগ একটি জটিল বিষয়। এর কারণ বোঝার জন্য আমাদের তার চরিত্রের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করতে হবে।

এই অংশটি দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যক্রমের “কোনি” উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অংশটি পড়ার পর, শিক্ষার্থীরা বিষ্টু ধরের চরিত্র সম্পর্কে আরও ভালভাবে বুঝতে পারবে।

বিষ্টু ধর রাগে কথা বলতে পারছে না, শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল। - বিষ্টু ধরের এই রেগে যাওয়ার কারণ আলোচনা করো।

“বিষ্টু ধর রাগে কথা বলতে পারছে না, শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল।” – বিষ্টু ধরের এই রেগে যাওয়ার কারণ আলোচনা করো।

  • প্রাককথন – লেখক ‘কোনি’ উপন্যাসের সূচনাতেই বারুণীর দিনের গঙ্গার ঘাটের প্রসঙ্গ এনেছেন। বিষ্টুচরণ ধর সেইদিন ঘাটে এসেছিলেন মালিশওয়ালাকে দিয়ে তাঁর শরীর দলাই মলাই করানোর জন্য।
  • বিষ্টু ধরের মালিশের ভঙ্গিমা – সাড়ে তিন মন ওজনের বিষ্টু ধরের শরীর মালিশের ভঙ্গি ছিল যথেষ্ট কৌতুকের। কখনও ‘তানপুরো ছাড়’, ‘তবলা বাজা’, কখনও-বা ‘সারেগামা কর’-নানা সাংকেতিক ভাষায় বিষ্টু ধর বিভিন্ন ধরনের মালিশের জন্য নির্দেশ দিতে থাকেন। মালিশওয়ালাও নির্দেশ অনুসারে কখনও তাঁর শরীরের চর্বিগুলো খামচে ধরে ছেড়ে দিতে থাকে, কখনও দশ আঙুল দিয়ে গলা থেকে কোমর পর্যন্ত চাঁটি মারতে থাকে, কখনও পিঠে জোড়াতালুর কোদাল চালায়।
  • সমালোচকের ব্যঙ্গবাণ – বিষ্টু ধরের বিরক্তি বাড়িয়ে দেয় পনেরো হাত দূরে অবস্থান করা সাদা লুঙ্গি আর গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা একটি মাঝবয়সি লোক। তিনি বিষ্টুবাবুর দিকে তাকিয়ে, হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করেন – ম্যাসেজ হচ্ছে না সংগীতচর্চা হচ্ছে? এরপর উপযাচক হয়ে ব্লাডপ্রেশার, ব্লাডসুগার ইত্যাদি পরীক্ষার কথা বলেন। বিরক্ত হয়ে বিষ্টুবাবু তাঁকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু না গিয়ে সেই ভদ্রলোক আরও স্পষ্ট করে বলেন, তবে আপনার হার্টটা বোধহয় বেশিদিন এই গন্ধমাদন টানতে পারবে না। তারপরে আরও তির্যক ভঙ্গিতে বলেন যে, তিনি ভুলও বলতে পারেন। কারণ হাতি কিংবা হিপোর কখনও করোনারি অ্যাটাক হয়েছে বলে জানা যায়নি। এভাবে বিষ্টু ধরকে ঘুরিয়ে হাতি কিংবা হিপো বলায় তিনি অত্যন্ত রেগে যান। কিন্তু সেই রাগকে তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন না। শুধু দু-চোখ দিয়ে তিনি ক্রোধ প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন, বিষ্টু হতভম্ভ হয়ে লোকটির জগ করা দেখতে লাগল। – বিষ্টুর এই হতভম্ব হয়ে যাওয়ার কারণ কী ছিল লেখো।

দশম শ্রেণি – বাংলা – কোনি উপন্যাস পাঠ্যে, বিষ্টু ধর রাগান্বিত হওয়ার একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।

এই ঘটনায়, বিষ্টু ধর রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন যখন একজন লোক তার দেহের আয়তন দেখে হাসতে শুরু করে। লোকটির এই উপহাস বিষ্টু ধরকে অপমানিত বোধ করে।

পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন লোকটি তার লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি খুলে হাফ প্যান্ট দেখায়।

এই অসম্মানজনক আচরণ বিষ্টু ধরের আত্মসম্মানে আঘাত করে এবং তাকে রাগান্বিত করে তোলে।

বিষ্টু ধর এতটাই রেগে যান যে তিনি কথা বলতে পারছেন না, শুধু তার চোখ দিয়ে রাগের আগুন ঝরছে।

উপসংহার:

বিষ্টু ধরের রাগের কারণ হলো লোকটির অসম্মানজনক আচরণ, যা তার আত্মসম্মানে আঘাত করে এবং সমাজের নীতিবোধের অবক্ষয়ের প্রতিফলন ঘটায়।

এই ঘটনাটি আমাদের সমাজে বিদ্যমান অসহিষ্ণুতা এবং অসম্মানের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

Share via:

মন্তব্য করুন