বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা কি? ভারতের কয়েকটি বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনার নাম করো।

Rahul

নমস্কার বন্ধুরা! আজকের আর্টিকেলে আমরা বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানবো। এই বিষয়টি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের জলসম্পদ বিভাগে।

বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা বলতে বোঝায় নদীর জলসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য নদীর উপর বাঁধ, খাল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সেচ ব্যবস্থা ইত্যাদি নির্মাণের একটি সমন্বিত প্রকল্প।

বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা কি? ভারতের কয়েকটি বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা

বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা

পাহাড়ি এলাকায় বা নদীর উৎসমুখের কাছাকাছি নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে সমগ্র নদী উপত্যকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, নৌপরিবহন, মাছ চাষ, পানীয় জল সরবরাহ ইত্যাদি বহুমুখী উদ্দেশ্য অর্জনের মাধ্যমে নদী উপত্যকা অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন সাধনের পরিকল্পনাকে বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা বলে।

ভারতে দামোদর, শতদ্রু, মহানদী, কৃষ্ণা, গোদাবরী ইত্যাদি নদীর উপর বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে।

ভারতের কয়েকটি বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা

ভারতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা হল –

  • ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা – পাঞ্জাবে বিপাশা ও শতদ্রু নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা। এটি ভারতের বৃহত্তম নদী উপত্যকা পরিকল্পনা।
  • হিরাকুঁদ পরিকল্পনা – ওডিশা রাজ্যের মহানদীর ওপর জলসেচের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে হিরাকুঁদ বাঁধ।
  • ময়ূরাক্ষী প্রকল্প – ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমাকে সামঞ্জস্য করে ময়ূরাক্ষী নদীর ওপর ম্যাসেঞ্জরে বাঁধ এবং সিউড়ির তিলপাড়ায় সেচবাঁধ তৈরি হয়েছে। এখানকার সেচবাঁধগুলির সাহায্যে বীরভূম, মুরশিদাবাদ, নদিয়া এবং বর্ধমান জেলায় জলসেচ করা হয়।
  • কোশী পরিকল্পনা – বিহারের কোশী নদীর ওপর কোশী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা গঠিত হয়েছে।
  • গণ্ডক পরিকল্পনা – উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের যৌথ উদ্যোগে গণ্ডক নদীর ওপর গণ্ডক পরিকল্পনা গৃহীত হয়।
  • নাগার্জুন – তেলেঙ্গানায় কৃষ্ণা নদীর ওপর নাগার্জুন সাগর পরিকল্পনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর –

ভারতের বৃহত্তম বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কোনটি?

হিরাকুদ পৃথিবীর দীর্ঘতম বাঁধ। এটি উড়িষ্যার ‘সম্বলপুর’ জেলার মহানদীর উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতার পর, এটি ছিল প্রথম বহুমুখী নদী উপত্যকা প্রকল্প। বাঁধটি 1947 সালে নির্মিত হয়েছিল।

ভারতের প্রথম বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কোনটি?

দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন স্বাধীন ভারতের প্রথম বহুমুখী নদী উপত্যকা প্রকল্প।

ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যৌথ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার নাম কি?

দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা DVC।

আজকের আলোচনায় আমরা “খালের মাধ্যমে বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা” সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছি। এই বিষয়টি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।

Please Share This Article

Related Posts

উত্তর ভারতের নদনদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর ভারতের নদনদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত-বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

উত্তর ভারতের নদনদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভাঙ্গর ও খাদার বলতে কি বোঝো? ভাঙ্গর ও খাদারের মধ্যে পার্থক্য

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব আলোচনা করো।