আজকের দিনে জল সংরক্ষণ একটি জরুরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, দূষণ, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জলের অভাব দিন দিন তীব্র হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষণ একটি টেকসই সমাধান হিসেবে কাজ করতে পারে।
এই আর্টিকেলে আমরা বৃষ্টির জল সংরক্ষণের গুরুত্ব, এর সুবিধা, এবং বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো। বিশেষ করে, আমরা দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে এই বিষয়গুলি তুলে ধরবো।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সুবিধা কী?
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের অনেকগুলি সুবিধা রয়েছে –
- বৃষ্টির জল পরিশ্রুত করে পানীয় জল হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
- বৃষ্টির জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এতে ভৌমজলের সঞ্চয় বাড়ে।
- যেসব অঞ্চলে জল কম পাওয়া যায় সেখানে এই জল জলের সমস্যার সমাধান করে। তাই বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা একটি সামাজিক ভূমিকা পালন করে।
বৃষ্টির জল সংরক্ষনের পদ্ধতি
বৃষ্টিপাত হলে তার বেশিরভাগ অংশই মাটির ওপর দিয়ে গড়িয়ে নদী, খালের মাধ্যমে সমুদ্রে চলে যায়। এই জলকে কোনো কাজেই লাগানো যায় না। এই জলকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তবে মানুষের প্রয়োজনীয় জলের চাহিদা অনেকটাই মেটে। দুটি পদ্ধতিতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা যায় –
ভূপৃষ্ঠের জলপ্রবাহকে আটকে রেখে – প্রবহমান জলকে বাঁধ দিয়ে আটকে রেখে জলাধার নির্মাণ করে তাকে ব্যবহার করা যায়। ওই জলাধারের জল কৃষিতে, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে, পানীয় জলের আধার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে জলের জোগান কিছুটা বাড়ে। একই সাথে ভৌমজলের স্তরও সমৃদ্ধ হয়।
বাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল ধরে রেখে – বৃষ্টির জল বাড়ির ছাদে পড়লে তাকে সংগ্রহ করে মাটির নীচে জলাধারে জমা করা যায়। অনেকগুলো জলাধার নির্মাণ করলে ওই জলাধারের জল সারাবছরই ব্যবহার করা যেতে পারে। জলকে যেমন গৃহস্থের কাজে লাগানো যায় তেমনি পরিশোধন করে পানীয় হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত জলকে মাটির নীচে পাঠিয়ে দিয়ে ভৌমজলের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করা যায়।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ আমাদের ব্যক্তিগত, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে অসংখ্য সুবিধা প্রদান করে। টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সকলেরই এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।