এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন? অথবা, কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয় এবং কেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন? অথবা, কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয় এবং কেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন?
অথবা, কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয় এবং কেন?
বাংলা ছাপা হরফের প্রথম যথার্থ পরিকল্পনা করেছিলেন চার্লস উইলকিন্স। তিনিই প্রথম ছেনিকাটা বাংলা হরফ নির্মাণ করেছিলেন বলে তাঁকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয়। একাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন হুগলির পঞ্চানন কর্মকার। হেস্টিংস সাহেবের অনুরোধে পরবর্তীকালে তিনি সরকারি ছাপাখানার দায়িত্ব নেন। হ্যালহেডের ব্যকরণ ‘এ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’ এন্ড্রুজ সাহেবের ছাপাখানায় তাঁর দ্বারাই প্রথম ছাপা হয়। তাঁর হাত ধরেই ছাপার আয়নায় বাঙালি প্রথম নিজেকে খুঁজে পায়। তাই তাকে ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ বা ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয়।
বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা –
- ‘বাংলা মুদ্রণশিল্পের জনক’ চার্লস উইলকিন্স, তিনিই সর্বপ্রথম ধাতু নির্মিত সচল (Moveable) বাংলা হরফের সৃষ্টিকর্তা।
- কোম্পানির শাসনকালে রাজ্যশাসন ও বাণিজ্যের প্রয়োজনে ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেডের, ‘A Grammar of the Bengal Language’ বইটি ছাপানোর প্রয়োজন উপলব্ধি তৎকালীন গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস।
- হেস্টিংস এই কাজটি সুদক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিভিলিয়ান এবং বিশিষ্ট বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার পণ্ডিত চার্লস উইলকিন্সকে দ্বায়িত্ব দেন।
- চার্লস উইলকিন্স অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে হুগলী জেলার ত্রিবেণীর সুদক্ষ স্বর্ণশিল্পী পঞ্চানন কর্মকারের (প্রকৃত নাম পঞ্চানন মল্লিক) সাহায্য নিয়ে ছেনিকাটা ছাঁচে ধাতু দ্রব্য সীসা ঢালাই করে প্রথম বাংলা হরফ তৈরি করেন। এবং অ্যানড্রুজের ছাপাখানা থেকে 1778 খ্রিস্টাব্দে হ্যালহেডের ব্যাকরণ বইটি প্রকাশ করেন।
- উইলকিন্সের দক্ষতা ও নিপুণতায় বাংলা ভাষায় প্রথম ছাপাবই প্রকাশিত হওয়ায় তাঁকে ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ বলা হয়। এই কাজের জন্য তিনি ‘বাংলার ক্যাক্সটন’ নামেও পরিচিত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয়?
চার্লস উইলকিন্সকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয়, কারণ তিনিই প্রথম ছেনিকাটা ধাতব বাংলা হরফ তৈরি করেন এবং বাংলায় প্রথম মুদ্রিত বই প্রকাশে ভূমিকা রাখেন।
চার্লস উইলকিন্সকে ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ বলা হয় কেন?
জার্মানির গুটেনবার্গ যেমন প্রথম মুদ্রণযন্ত্রের উন্নয়ন করেছিলেন, তেমনি উইলকিন্স বাংলা ভাষার জন্য প্রথম ধাতব মুদ্রণ হরফ তৈরি করেন। তাই তাঁকে ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ বলা হয়।
বাংলা হরফ তৈরিতে কে উইলকিন্সকে সাহায্য করেছিলেন?
হুগলির ত্রিবেণীর স্বর্ণশিল্পী পঞ্চানন কর্মকার (প্রকৃত নাম পঞ্চানন মল্লিক) উইলকিন্সকে বাংলা হরফ তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন।
চার্লস উইলকিন্সের মুদ্রিত প্রথম বাংলা বই কোনটি?
নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেডের রচিত “A Grammar of the Bengal Language” (1778) ছিল বাংলা ভাষায় মুদ্রিত প্রথম বই। এটি অ্যান্ড্রুজের ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়।
বাংলা মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে উইলকিন্সের ভূমিকা কী?
বাংলা মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে উইলকিন্সের ভূমিকা –
1. তিনি প্রথম ধাতব বাংলা হরফ তৈরি করেন।
2. হ্যালহেডের ব্যাকরণ বই প্রকাশ করে বাংলা মুদ্রণের সূচনা করেন।
3. বাংলা ভাষায় মুদ্রণ শিল্পের প্রসারে ভিত্তি স্থাপন করেন, যা পরবর্তীতে সংবাদপত্র ও সাহিত্য প্রকাশে সহায়ক হয়।
চার্লস উইলকিন্সকে ‘বাংলার ক্যাক্সটন’ বলা হয় কেন?
ইংল্যান্ডের উইলিয়াম ক্যাক্সটন যেমন প্রথম মুদ্রণশিল্পের প্রচলন করেছিলেন, তেমনি উইলকিন্স বাংলায় মুদ্রণ প্রযুক্তি এনেছিলেন। তাই তাঁকে ‘বাংলার ক্যাক্সটন’ বলা হয়।
বাংলা মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে উইলকিন্সের কাজের গুরুত্ব কী?
তাঁর আবিষ্কারের ফলে বাংলা ভাষায় বই, সংবাদপত্র ও জ্ঞানচর্চার প্রসার ঘটে, যা বাংলার নবজাগরণের ভিত্তি তৈরি করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন? অথবা, কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয় এবং কেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “চার্লস উইলকিনস্ কে ছিলেন? অথবা, কাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয় এবং কেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিন্সের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন