নবম শ্রেণি – বাংলা – ইলিয়াস – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

এই গল্পটি লিখেছেন বিশ্ববিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৯ সালে। গল্পটি একটি দরিদ্র গ্রাম্য পরিবারের একজন ছেলে ইলিয়াসের জীবনের গল্প। ইলিয়াস একজন নিবেদিতপ্রাণ ও সৎ ছেলে। সে তার পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ছোটবেলা থেকেই কাজ করে। সে তার বাবার সাথে ক্ষেতে কাজ করে, মাকে রান্না করতে সাহায্য করে, এবং তার ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করে।

Table of Contents

গল্পটিতে ইলিয়াসের জীবনের নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা তার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র সম্পর্কে জানতে পারি। আমরা দেখতে পাই যে, ইলিয়াস একজন সাহসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এবং ভালোবাসার মানুষ। সে তার পরিবারের জন্য সবকিছু করতে পারে। সে তার বন্ধুদের জন্যও সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত।

নবম শ্রেণি – বাংলা – ইলিয়াস – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

এই তার যা কিছু বিষয়-সম্পত্তি। — কার, কোন্ বিষয়সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তির বিষয়সম্পত্তি – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে তার বলতে রাশিয়ার উফা প্রদেশে বসবাসকারী বাস্কির জনগোষ্ঠীভুক্ত ইলিয়াসের কথা বোঝানো হয়েছে।

বিষয়সম্পত্তির পরিচয় – প্রথম দিকে ইলিয়াসের খুব বেশি সম্পত্তি ছিল না। তার বাবার মৃত্যুর সময় তিনি ইলিয়াসের জন্য যে সম্পত্তি রেখে গেছিলেন, তা হল সাতটা ঘোটকী, দুটি গোরু এবং কুড়িটা ভেড়া। এই বিষয়সম্পত্তির কথাই প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে।

প্রতি বছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল। — কার অবস্থার, কীভাবে উন্নতি হতে লাগল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তির অবস্থা – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতির কথা বোঝানো হয়েছে।

অবস্থার উন্নতি – ইলিয়াসের বাবা যখন মারা যান, তখন তিনি সম্পত্তি বলতে সাতটা ঘোটকী, দুটি গোরু এবং কুড়িটা ভেড়া রেখে গেছিলেন। কিন্তু ইলিয়াসের বুদ্ধি ও পরিশ্রমে সেই সম্পত্তি ক্রমশ বাড়তে থাকে। ইলিয়াস এবং তার স্ত্রী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করত। এর ফলেই তাদের অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হতে থাকে।

পাশেপাশের সকলেই তাকে ঈর্ষা করে। — তাকে বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সেই ব্যক্তিকে ঈর্ষার কারণ কী?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশে তাকে বলতে কাহিনির প্রধান চরিত্র বাকির জনগোষ্ঠীভুক্ত ইলিয়াসকে বোঝানো হয়েছে।

ঈর্ষার কারণ – পঁয়ত্রিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ইলিয়াস বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ, বারোশো ভেড়া ও ভাড়াটে মজুরদের মনিব হয়ে ওঠে ইলিয়াস। তার এই সমৃদ্ধি এবং প্রচুর ধনসম্পত্তি দেখেই প্রতিবেশীরা হিংসা করতে শুরু করে।

ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও — বোলবোলাও শব্দের অর্থ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

অথবা, ইলিয়াসের বোলবোলাও কীভাবে হয়েছিল?

অর্থ – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে বোলবোলাও শব্দের অর্থ হল নামডাক বা খ্যাতি।

তাৎপর্য – দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরের কঠোর পরিশ্রম এবং সুব্যবস্থাপনায় ইলিয়াস বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ এবং বারোশো ভেড়া-সহ ভাড়াটে মজুর-মজুরনির মনিবে পরিণত হয় ইলিয়াস। ক্রমশ তার খ্যাতি এবং পরিচিতি দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এই কারণেই, আশেপাশের সকলেই তাকে হিংসা করতে থাকে।

ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও। — বোলবোলাও বলতে কী বোঝানো হয়েছে? এর ফল কী হয়েছে?

বোলবোলা ও অর্থ – বোলবোলা ও শব্দের অর্থ হলো নামডাক বা খ্যাতি।

এর পরিণতি – দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরের কঠোর পরিশ্রমে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। এবং তার খ্যাতি ও প্রতিপত্তি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে প্রতিবেশীরা সকলেই তাকে ঈর্ষা করতে শুরু করে। তারা মন্তব্য করে যে ইলিয়াস ভাগ্যবান পুরুষ, তার কোনো কিছুরই অভাব নেই। তার তাই মরবারও দরকার নেই।

দূর দূরান্তর থেকে অতিথিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। — অতিথিরা কার সঙ্গে দেখা করতে আসত? সে অতিথিদের কীভাবে সেবা করত?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে দূরদূরান্ত থেকে খ্যাতনামা ব্যক্তিরা ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করতে আসত।

সেবার ধরন – অতিথিপরায়ণ ইলিয়াস অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে সকলকেই অত্যন্ত খাতির করত। তার বাড়িতে আগত অতিথির সংখ্যা অনুযায়ী একাধিক ভেড়া কিংবা ঘোটকী মারা হত। কুমিস, চা, শরবত ইত্যাদি উৎকৃষ্ট খাদ্য আর পানীয় দিয়ে ইলিয়াস অতিথিদের সেবা করত।

ইলিয়াসের বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হলো। — কাদের, কীভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ইলিয়াস তার ছোটো ছেলে এবং বউমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।

তাড়িয়ে দেওয়ার পন্থা – ইলিয়াসের ছোটো ছেলের স্ত্রী ছিল অত্যন্ত ঝগড়াটে। তাই বিয়ের পর থেকেই তারা ইলিয়াসের আদেশ অমান্য করতে শুরু করেছিল। সেই কারণেই ক্ষুব্ধ ইলিয়াস তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছিল। তবে ধর্মপরায়ণ ইলিয়াস একটা বাড়ি এবং কিছু গোরু-ঘোড়া তাদের দিয়েছিল।

ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ল। — ইলিয়াসের অবস্থা কীভাবে খারাপ হয়ে পড়ল?

অবস্থার অবনতি – ইলিয়াস গল্পে নিজের বিতাড়িত পুত্রকে একটা বাড়ি, কিছু গোরু-ঘোড়া দেওয়ায় ইলিয়াসের সম্পত্তিতে কিছুটা টান পড়ে। এরপরই ভেড়ার পালে মড়ক লেগে তার অনেকগুলি ভেড়া মারা যায়। তার পরের বছর দুর্ভিক্ষে খড়ের অভাবে শীতকালে অনেক গোরু- মোষ না খেতে পেয়ে মারা যায়। এর ওপর আবার কিরবিজরা ইলিয়াসের ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিলে ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে।

সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল। — এখানে সে বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সে কীভাবে সর্বহারা হয়ে পড়ল?

সের পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে সে বলতে ইলিয়াসকে বোঝানো হয়েছে।

সর্বহারা হয়ে পড়া – একদা বিপুল সম্পত্তির মালিক ইলিয়াস তার অবাধ্য এবং বিতাড়িত ছোটো ছেলেকে একটা বাড়ি এবং কিছু সংখ্যক গোরু-ঘোড়া দিয়ে দেওয়ার ফলে তার সম্পত্তিতে টান পড়ে। এরপরে মড়ক এবং দুর্ভিক্ষের কারণে তার অনেকগুলি ভেড়া এবং গোরু-মোষ মারা গেলে আর কিরবিজরা তার ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিলে তার দুর্দশা চরমে ওঠে। সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াস তার পশমের কোট, কম্বল, ঘোড়ার জিন, তাঁবু এবং সবশেষে গৃহপালিত পশুগুলি বিক্রি করে সর্বহারা হয়ে পড়ে।

বৃদ্ধ দম্পতিকে সাহায্য করবার তখন কেউ নেই! — বৃদ্ধ দম্পতি বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের সাহায্য করার কেউ নেই কেন?

বৃদ্ধ দম্পতির পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে বৃদ্ধ দম্পতি বলতে ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগিকে বোঝানো হয়েছে।

সাহায্য করার কেউ না থাকার কারণ – একদা বিপুল সম্পত্তির মালিক ইলিয়াস যখন মড়ক, দুর্ভিক্ষ, চুরি ইত্যাদির ফলে সর্বহারা হয়ে পড়ে তখন তার বিতাড়িত ছোটো পুত্রও অনেক দূরদেশে বসবাস করত। তাদের একমাত্র মেয়েটিও মারা গিয়েছিল। ফলে বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর চরম দুর্দশায় তাদের সাহায্য করার মতো নিজের কেউ ছিল না।

ইলিয়াসের অতিথি-বৎসলতার কথা স্মরণ করে তার খুব দুঃখ হলো। — কার দুঃখের কথা বলা হয়েছে? সে দুঃখ নিবারণের জন্য কী করল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শা-র দুঃখের কথা বলা হয়েছে।

দুঃখ নিবারণ – ইলিয়াস যেভাবে অতিথিদের আদর-যত্ন করত, সে-কথা মনে করে মহম্মদ শা বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে তার বাড়িতে থাকার প্রস্তাব দিল। সে ইলিয়াসকে তার সাধ্য অনুযায়ী গ্রীষ্মকালে তার তরমুজের খেতে কাজ করতে এবং শীতকালে গোরু-ঘোড়াগুলি দেখাশোনা করতে, আর তার স্ত্রীকে দুধ দোয়া এবং কুমিস তৈরির কাজ করার প্রস্তাব দেয়। এর বিনিময়ে তাদের থাকা ও খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হবে। এরপরেও অতিরিক্ত কিছু লাগলে মহম্মদ শা তা-ও ইলিয়াস দম্পতিকে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

ইলিয়াস প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দিল। — কোন্ প্রতিবেশীর কথা বলা হয়েছে? তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ কী?

প্রতিবেশী -র পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে প্রতিবেশী বলতে মহম্মদ শা-র কথা বলা হয়েছে।

ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ – সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে ইলিয়াস নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া ইলিয়াসের ছোটোছেলেও অনেক দূরদেশে থাকত, তার মেয়েও মারা গিয়েছিল। চূড়ান্ত দুর্দশায় অসহায় ইলিয়াসকে দয়ালু প্রতিবেশী মহম্মদ শা সাধ্য অনুযায়ী কাজের বিনিময়ে নিজের বাড়িতে থাকা ও খাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাদের এই চরম বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় প্রতিবেশী মহম্মদ শা-কে ইলিয়াস ধন্যবাদ দিয়েছিল।

ক্রমে ক্রমে সব সয়ে গেল। — সয়ে যাওয়া শব্দের অর্থ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য লেখো।

অর্থ – তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশে সয়ে যাওয়া বলতে সহ্য হয়ে যাওয়া বা মানিয়ে নেওয়া বোঝানো হয়েছে।

তাৎপর্য – বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগি বিপুল সম্পত্তি হারিয়ে সর্বহারা হয়ে প্রতিবেশী মহম্মদ শা-র বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিল। এর বিনিময়ে ইলিয়াসকে গ্রীষ্মকালে মহম্মদ শা-র তরমুজ খেতে কাজ করতে হত এবং শীতকালে গোরু-ঘোড়াদের দেখাশোনা করতে হত। তার স্ত্রী শাম-শেমাগির কাজ ছিল ঘোটকীর দুধ দোয়া এবং কুমিস তৈরি করা। প্রথমদিকে ভাড়াটে মজুরের মতো কাজ করে খেতে কষ্ট হলেও মনের জোরে ধীরে ধীরে তাদের সব সয়ে গেল।

তাকে দেখতে পেয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের বলল তাকে বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তার সম্পর্কে মহম্মদ শা অতিথিদের কী বলল?

তাকের পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে তাকে বলতে একসময়ের ধনী কিন্তু বর্তমানে সর্বহারা বৃদ্ধ ইলিয়াসকে বোঝানো হয়েছে।

অতিথি সম্পর্কে মহম্মদ শা-র বক্তব্য – মহম্মদ শা তার বাড়িতে আসা অতিথিদের জিজ্ঞাসা করে দরজার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া বৃদ্ধ মানুষটিকে তাঁরা দেখেছেন কি না। কারণ ওই বৃদ্ধের নাম ইলিয়াস, যে একসময় সেই অঞ্চলের সবথেকে ধনী এবং অতিথিপরায়ণ ব্যক্তি ছিল। তার সুখ্যাতি বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন সে সর্বহারা এবং নিজের স্ত্রীর সঙ্গে মহম্মদ শা-র বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে।

বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শারও লাভ হলো – বুড়োবুড়ি বলতে যাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের রেখে মহম্মদ শা-র কী লাভ হল?

মহম্মদ শা-র লাভের দিক – ইলিয়াস গল্পে বুড়োবুড়ি বলতে বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগিকে বোঝানো হয়েছে।

ইলিয়াস দম্পতি নিজেরাই একসময় মনিব ছিল। ফলে সব রকমের কাজে তারা পারদর্শী ছিল। তা ছাড়া, তারা অলসও ছিল না। মহম্মদ শার বাড়িতে থেকে খাওয়া ও পরার বিনিময়ে তারা সাধ্যমতো নিরলস পরিশ্রম করত। এর ফলে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে রেখে মহম্মদ শা-র লাভই হয়েছিল।

অতিথি সবিস্ময়ে জিভ দিয়ে চুক্‌-চুক্‌ শব্দ করল। — অতিথি কে? তাঁদের বিস্ময়ের কারণ কী?

অতিথি -র পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে উল্লিখিত অতিথি হলেন মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত মোল্লাসাহেবের আত্মীয়।

বিস্ময়ের কারণ – অতিথিরা সকলেই ইলিয়াস ও তার সুনামের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তাকে কখনও চোখে দেখেননি। তাই একসময় যে ইলিয়াস বিত্তশালী এবং অতিথিপরায়ণ ছিল বর্তমান পরিস্থিতিতে তার দুর্দশার কথা শুনে এবং ভাগ্যের চরম পরিহাসের কথা ভেবে অতিথি বিস্মিত হলেন ৷

লোকটির সঙ্গে একটু কথা বলতে পারি কি? – বক্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

প্রেক্ষাপট – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শার বাড়িতে একজন ধর্মপ্রাণ মোল্লাসাহেব-সহ বেশ কয়েকজন অতিথি হয়ে এসেছিলেন। সেখানে মজুরের কাজে রত একদা বিত্তশালী ইলিয়াসের কথা জানতে পেরে অতিথিদের মধ্যে একজন তার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। অতীতজীবনের সুখসমৃদ্ধি হারিয়ে বর্তমানের দুরবস্থায় জীবন সম্পর্কে ইলিয়াসের কী উপলব্ধি সেই বিষয়ে কথা বলার জন্যই অতিথি ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করতে চান।

অতিথি তাকে জিজ্ঞাসা করল — অতিথি কাকে, কী জিজ্ঞাসা করল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ও অতিথির জিজ্ঞাস্য – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশে অতিথি বলতে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মোল্লাসাহেবের আত্মীয়, যাঁরা মহম্মদ শা-র বাড়ি অতিথি হয়ে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনের কথা বলা হয়েছে। অতিথি ইলিয়াসকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন অতীতজীবনের সুখসমৃদ্ধির কথা মনে করে এবং বর্তমানের দুরবস্থার কথা ভেবে ইলিয়াসের কষ্ট হয় কি না।

এ বিষয়ে তিনিই পুরো সত্য বলতে পারবেন। — তিনি বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তিনি সত্য বলতে পারবেন কেন?

তিনির পরিচয় – ইলিয়াস গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে তিনি বলতে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগির কথা বোঝানো হয়েছে।

সত্য বলতে পারার কারণ – মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত অতিথিরা ইলিয়াসের কাছে জানতে চান যে অতীতের সুখসমৃদ্ধির কথা স্মরণ করে বর্তমান দুঃসময়ের জীবন তাকে কষ্ট দেয় কি না। উত্তরে ইলিয়াস বলে যে, এ বিষয়ে তার স্ত্রী শাম-শেমাগিই ভালো বলতে পারবে। একজন মহিলা হওয়ার কারণেই তার মুখের কথায় মনের প্রকৃত ইচ্ছাই প্রকাশ পাবে।

আগেকার সুখ আর এখনকার দুঃখ সম্পর্কে তোমার মনের কথাটা বলো তো! – আগেকার সুখ আর এখনকার দুঃখ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

আগেকার সুখ – ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শা-র বাড়িতে আসা এক অতিথি ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগিকে এই কথা বলেছেন। একসময় ইলিয়াস ছিল সে অঞ্চলের সবথেকে ধনী ব্যক্তি। তার খ্যাতি এবং প্রাচুর্যে ভরা জীবনযাপনের দিনগুলিকে এখানে আগেকার সুখ বলা হয়েছে।

এখনকার দুঃখ – ভাগ্যের পরিহাসে ধনী ইলিয়াস দম্পতি সর্বহারায় পরিণত হয়। ইলিয়াসদের এই দুর্দশার দিনে প্রতিবেশী মহম্মদ শা তার বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজের মাধ্যমে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে। এখনকার দুঃখ বলতে ইলিয়াস দম্পতির এই সর্বহারা, দারিদ্র্যে ভরা বর্তমান জীবনের কথা বলা হয়েছে।

পর্দার আড়াল থেকে শাম-শেমাগি বলতে লাগল। — শাম-শেমাগি কী বলতে লাগল?

শাম-শেমাগির বক্তব্য – ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত অতিথির প্রশ্নের উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি তার মনের কথা বলতে গিয়ে বলেছিল পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্য জীবনে সে এবং তার স্বামী ইলিয়াস সুখ খুঁজে পায়নি। অনেক সম্পদ থাকলেও মানসিক সুখশান্তি তাদের ছিল না। দুশ্চিন্তা এবং পাপবোধে সবসময়ই তারা জর্জরিত হয়ে থাকত। কিন্তু সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের মতো দিন কাটানোর দ্বিতীয় বছরেই তারা মনের শান্তি ও প্রকৃত সুখ খুঁজে পেয়েছে। জীবনের কাছ থেকে তাদের আর কিছু চাওয়ার নেই।

অতিথিরা বিস্মিত। — অতিথিরা বিস্মিত হলেন কেন?

বিস্মিত হওয়ার কারণ – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে অতীতজীবনের সুখ এবং বর্তমান জীবনের দুঃখের দিক থেকে জীবন সম্পর্কে ইলিয়াস দম্পতির উপলব্ধির কথা জানতে চেয়েছিলেন মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত একজন অতিথি। এর উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম- শেমাগি তাঁদের জানায় যে পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্য জীবনে প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হয়েও তারা সুখ খুঁজে পায়নি। কিন্তু সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবন কাটানোয় তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। এই কথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হন।

আমি সত্য কথাই বলছি, তামাশা করছি না। – উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

তাৎপর্য – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শা-র বাড়িতে আসা এক অতিথির প্রশ্নের উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি বলেছিল দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্য জীবনে প্রচুর ধনসম্পদ থাকলেও সুখ ছিল না। কিন্তু সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের মতো জীবনযাপনের মাঝেই তারা এমন সুখের সন্ধান পেয়েছে যে আর কিছুই তারা চায় না। এ কথা শুনে অতিথিরা এবং বাড়ির মালিক অবাক হলে শাম-শেমাগি তাঁদের বলে যে সে সত্য কথা বলছে, তামাশা বা মজা করছে না।

দুশ্চিন্তারও অন্ত ছিল না। — কাদের, কী নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না?

উদ্দিষ্ট ও দুশ্চিন্তার বিষয় – ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শার বাড়িতে আসা অতিথিদের শাম-শেমাগি আগের ধনী জীবনে তাদের দুশ্চিন্তার কথা বলেছে। বাড়িতে অতিথি এলে তাঁদের আপ্যায়নে যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে, তা নিয়ে যেমন দুশ্চিন্তা ছিল, তেমনই উদ্‌বেগ ছিল মজুররা ঠিকমতো কাজ করছে কি না সে বিষয়েও। নেকড়ের আক্রমণে কিংবা চোরের বাড়বাড়ন্তে গোরু বা ঘোড়ার বাচ্চার কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না, ভেড়ার সদ্যোজাত বাচ্চাগুলো ঠিক আছে কি না কিংবা পোষ্যদের জন্য শীতকালের খড় মজুত আছে কি না, চিন্তা ছিল তা নিয়েও। ফলে দুশ্চিন্তা দূর হওয়ার সাথে সাথে অপর দুশ্চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠত।

সেও তো পাপ। — কে, কোন্ কাজকে পাপ বলেছে?

বক্তা – ইলিয়াস গল্পে শাম-শেমাগি কথাটি বলেছে।

পাপ কাজের পরিচয় – উদ্ধৃতিটি গল্পটিতে দু-বার ব্যবহৃত হয়েছে। বিপুল ধনসম্পদ থাকার সময় ইলিয়াস দম্পতি অনেক মজুরদের মনিব ছিল। নিজেদের স্বার্থেই তারা মজুরদের ওপর কড়া নজর রাখত। জীবনের প্রকৃত সত্য বোঝার পর এই কাজটিকে শাম-শেমাগির পাপ বলে মনে হয়েছে। অন্যদিকে, কোনো কাজ কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে শাম-শেমাগির সঙ্গে তার স্বামী ইলিয়াসের মতবিরোধ হত। স্বামীর সঙ্গে মতের মিল না হওয়াকেও পাপ বলে মনে করেছে শাম-শেমাগি।

সুখী জীবন কাকে বলে কোনোদিন বুঝিনি। – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য লেখো।

অথবা, যতদিন ধনী ছিলাম, কখনও সুখ পাইনি। – বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ বুঝিয়ে দাও৷

প্রসঙ্গ – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে মহম্মদ শা-র বাড়িতে আগত একজন অতিথির প্রশ্নের উত্তরে শাম-শেমাগি তার এবং ইলিয়াসের দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে এ কথা বলেছে।

তাৎপর্য – জীবন সম্পর্কে উপলব্ধির কথা বলতে গিয়ে সে জানায়, একসময় ধনী জীবনে তারা কখনও সুখের সন্ধান পায়নি। তাদের জীবনে মনের কথা ভাববার কিংবা বলবার, ভগবানের কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ ছিল না। শুধু এক দুশ্চিন্তা থেকে আর-এক দুশ্চিন্তায় তাদের জীবন কেটে গেছে। সুখকে খুঁজে ফিরলেও সুখ তাদের কাছে ধরা দেয়নি কখনও।

কিন্তু ঘুমোবার উপায় নেই। — কাদের, কেন ঘুমোবার উপায় ছিল না?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে ইলিয়াস দম্পতির ঘুমোবার উপায় ছিল না। একসময় ইলিয়াস দম্পতি প্রচুর গোরু, ঘোড়া এবং ভেড়ার মালিক ছিল। ওই দিনগুলোতে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় তাদের দুশ্চিন্তা হত ভেড়াগুলো তাদের ছানাগুলিকে হয়তো চেপে মেরে ফেলল। এই দুশ্চিন্তায় তাদের সারারাত ঘুম আসত না। এ ছাড়াও, চোরের বাড়বাড়ন্তে কিংবা নেকড়ের আক্রমণে তাদের পোষ্যদের কিংবা তাদের শাবকদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাতেও ইলিয়াস দম্পতির রাতে ঘুম আসত না।

পঞ্চাশ বছর ধরে সুখ খুঁজে খুঁজে এতদিনে পেয়েছি। — এই সুখের পরিচয় দাও৷

সুখের পরিচয় – লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস গল্পে বৃদ্ধ ইলিয়াস দম্পতি অবশেষে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্য জীবন পেরিয়ে সুখ খুঁজে পেয়েছে।

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্য জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তাদের কেটেছে প্রাচুর্যে। শাম-শেমাগি এ প্রসঙ্গে তারা বলে, সেই জীবনে নিজেদের জন্য তাদের কোনো সময় ছিল না। এমনকি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করারও সময় ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। মনিবের সেবা করার ফাঁকে নিজেদের মধ্যে সুখ-দুঃখের কথা আলোচনা করা কিংবা ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানানোর জন্যও যথেষ্ট সময় আছে। অর্থের দুশ্চিন্তাও আর তাদের নেই।

গল্পটি থেকে আমরা শিখতে পারি যে, জীবনে সুখ-দুঃখ সবই আসে। কিন্তু আমাদের উচিত সবসময় সুখী থাকার চেষ্টা করা। আমাদের কখনোই অতীতের সুখের কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কারণ, অতীতের সুখ আমাদের বর্তমান জীবনকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer