নবম শ্রেণি – বাংলা – আমরা – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের আমরা কবিতাটি নবম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকের একটি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা। এই কবিতায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত মানবতার এক অপূর্ব দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন। কবিতার মূল ভাববস্তু হলো, সকল মানুষ এক, সকল মানুষ পরস্পরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।

নবম শ্রেণি – বাংলা – আমরা – বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

আমরা বাঙালি বাস করি সেই তীর্থে — বরদ বঙ্গে বঙ্গের বাঙালিদের যে কীর্তিগাথা কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত আমরা কবিতায় তুলে ধরেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।

শুরুর কথা – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর আমরা কবিতায় বাঙালি জাতির দুঃসাহসিক কীর্তিগাথাকে তুলে ধরেছেন ইতিহাসকে অবলম্বন করে।

যুদ্ধ জয় – বাঙালির ছেলে বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করে নিজের শৌর্যের পরিচয় রেখে গেছেন। বারো ভূঁইয়ার অন্যতম চাঁদ সওদাগর এবং প্রতাপাদিত্যের দাপটে পিছু হটতে হয়েছে মোগল সম্রাটদেরও।

জ্ঞানের বিকাশ – কপিলমুনিও এখানেই সাংখ্যদর্শনের প্রতিষ্ঠা জ্বালিয়েছিলেন। তর্কশাস্ত্রে বাঙালির বিজয়পতাকা উড়িয়েছিলেন রঘুনাথ শিরোমণি। জয়দেব তাঁর গীতগোবিন্দর পদে সংস্কৃত সাহিত্যকেই সহজভাবে তুলে ধরেছেন।

শিল্পে কৃতিত্ব – বিট্‌পাল আর ধীমান ভাস্কর্যে বাঙালির দক্ষতাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

বাউল সংগীত – কীর্তন আর বাউলের গানে বাঙালি হৃদয়ের মানবিক অনুভূতিগুলি উন্মুক্ত হয়ে গেছে।

আধ্যাত্মিক বাণী প্রচার – চৈতন্যদেব বাঙালির সেই আত্মার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ পৃথিবী জুড়ে প্রচার করেছেন বাঙালির বিবেকের বাণী। প্রাণবিজ্ঞান কিংবা রসায়নেও বাঙালি নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

মহামিলনের গাথা – রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে মানবজাতির মিলনের গাথা। এইভাবেই কবি আমরা কবিতায় বাঙালির কীর্তির জয়গান গেয়েছেন।

বাঙালির হিয়া অমিয় মথিয়া নিমাই ধরেছে কায়া। — নিমাই – এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। বাঙালির হিয়া অমিয় মথিয়া নিমাই কীভাবে কায়া ধারণ করেছেন বুঝিয়ে দাও।

নিমাই – এর পরিচয় – ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে নবদ্বীপে নিমাই জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি পরিচিত হন শ্রীচৈতন্য নামে। তিনি ঈশ্বরপুরীর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। চৈতন্য ছিলেন গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। গোটা ভারত পরিক্রমা করে চৈতন্য কৃষ্ণনাম প্রচার করেন। জীবনের শেষ চব্বিশ বছর চৈতন্যদেব পুরীতে সময় কাটিয়েছিলেন।

নিমাইয়ের কায়া ধারণ – চৈতন্যদেব বাঙালিকে মানবপ্রেম ও নিজেদের উন্নতির শিক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁর প্রচারিত কৃষ্ণপ্রেম আসলে মানবপ্রেম। কৃষ্ণনামকে সম্বল করেই তিনি বিরুদ্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছেন। বাঙালি দেবতাকে যেমন আপন করে নিয়েছে, সেরকমই প্রিয়জনকে ঈশ্বরের জায়গায় বসিয়েছে। এভাবেই তৈরি হয়েছে মানুষের ঠাকুরালি। চৈতন্যদেবের চোখ দিয়ে বাঙালি মানবতার নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছে। বাঙালি তাঁর মধ্যে প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্বভূপের ছায়া। এভাবেই বাঙালি-আত্মার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন নিমাই বা শ্রীচৈতন্য।

বিফল নহে এ বাঙালি জনম বিফল নহে এ প্ৰাণ। — এই উক্তির আলোকে বাঙালি সম্পর্কে কবির গর্ববোধের কারণ লেখো।

শুরুর কথা – কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বাঙালির গৌরবময় কৃতিত্বকে তুলে ধরেছেন তাঁর আমরা কবিতায়। বাঙালির যুদ্ধ জয়: প্রকৃতির বিরূপতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঙালি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে। বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করে তার সিংহল নামের জন্ম দিয়েছেন। চাঁদ রায়, প্রতাপাদিত্যের মতো বাঙালি শাসকেরা মোগল সম্রাটকে হটে যেতে বাধ্য করেছেন।

জ্ঞানভাণ্ডার – অতীশ দীপঙ্কর বাঙালির জ্ঞানভাণ্ডারকে পৌঁছে দিয়েছেন সুদূর মিশ্রকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করেন। জয়দেবের গীতগোবিন্দ সংস্কৃত সাহিত্যের চিরকালীন সম্পদ।

শিল্পকার্যে দক্ষতা – পালযুগের বিখ্যাত ভাস্কর বিট্পাল এবং ধীমান স্থাপত্যভাস্কর্যে দক্ষতা রেখে বাঙালির ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।

আধ্যাত্মিক সামাজিক সমৃদ্ধি – মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব অধ্যাত্মিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাঙালিকে সমৃদ্ধ করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী জগতকে উদ্দীপ্ত করেছে।

বিজ্ঞানে কৃতিত্ব – আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আবিষ্কার করেছেন। ড. প্রফুল্লচন্দ্র রায় রসায়নশাস্ত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।

মহামিলনের মন্ত্র – রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় মানুষের মহামিলনের কথা বলেছেন। বাঙালি জাতির এইসব অর্জন কবিকে গর্বিত করেছে।

শেষের কথা – সে কারণেই নিজের গর্বের অনুভবের কথা কবি প্রকাশ করেছেন আমরা কবিতায়।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের আমরা কবিতাটি একটি মনোজ্ঞ ও গভীর অর্থবহ কবিতা। এই কবিতায় কবি মানবতার এক অপূর্ব রূপায়ণ করেছেন। কবি বিশ্বাস করেন যে, সকল মানুষই একই সত্তার অংশ। সকলেই একই মূলধারা থেকে এসেছে এবং একই গন্তব্যে গমন করছে। তাই সকলের মধ্যেই ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধন থাকা উচিত। কবি এই কবিতায় মানবতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন যে, মানুষ একই মাটিতে জন্মগ্রহণ করে, একই আকাশের নিচে বাস করে, একই রক্তের স্রোত বয়ে চলেছে। তাই সকল মানুষই পরস্পরের ভাই-বোন। সকলের মধ্যেই পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতার মনোভাব থাকা উচিত।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer