অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – বনভোজনের ব্যাপার – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “বনভোজনের ব্যাপার” গল্পটি বনভোজনের পরিকল্পনা, যাত্রাপথের বর্ণনা, বনভোজনের নির্মম পরিণতির মজাদার হাস্যরস পরিবেশনে সমৃদ্ধ।

গল্পের সূচনা বনভোজনের পরিকল্পনার মাধ্যমে। নানা রকমের খাবারের ব্যবস্থা করার আয়োজন চার বন্ধুর মনে বনভোজনের বীজ বপন করে। টেনিদার নেতৃত্বে হাবুল সেন, প্যালা ও ক্যাবলা বনভোজনে যাওয়ার আলোচনা শুরু করে। টেনিদা পেটুক, অলস ও ভীরু প্রকৃতির হলেও সবার উপর তার কর্তৃত্ব অটুট। পটলডাঙার ছেলে হওয়ায় সে বারবার দুঃসাহসের পরিচয় দিতে চেষ্টা করে, কিন্তু তার ভীতু প্রকৃতি বারবারই প্রকাশ পায়।

ট্রেন থেকে নেমে জিনিসপত্র নিয়ে বনভোজনে যাওয়ার সময় নানা বিপত্তির সম্মুখীন হয় তারা। ক্যাবলার মামার বাড়ির বাগানে পৌঁছে বনভোজন শুরু হয়। কিন্তু টেনিদার অলসতা, ভীরুতা ও অযত্নের কারণে বনভোজন পুরোপুরি পন্ড হয়ে যায়।

এই গল্পে বনভোজনকে কেন্দ্র করেই ঘটনার জাল বুনে লেখক অসাধারণ হাস্যরস সৃষ্টি করেছেন। বনভোজনের ব্যাপার নামকরণ গল্পের মূল ভাবকে স্পষ্ট করে তুলেছে।

বনভোজনের ব্যাপার – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা - ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

বনভোজনের জায়গায় কীভাবে যাওয়া যাবে?

প্রখ্যাত লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বনভোজনের ব্যাপার’ গল্পে বনভোজনের উদ্যোগ নেওয়ার পর টেনিদার নেতৃত্বে হাবুল সেন, প্যালা, ক্যাবলা শ্যামবাজার ইস্টিশান থেকে মার্টিন রেলে চড়ে যাত্রা শুরু করে। পি করে বাঁশি বাজিয়ে গাড়ি ছাড়ে। তারপর ধ্বস-ধ্বস, ভোঁস-ভোঁস করে এর রান্নাঘর, ওর ভাঁড়ার ঘরের পাশ দিয়ে গাড়ি চলতে শুরু করে। বাগুইআটি ছাড়িয়ে চারটে ইস্টিশান দূরে সুপুরি ও নারকেল গাছসমৃদ্ধ পানাপুকুর বিশিষ্ট একটি বাগানবাড়িতে গিয়ে তারা পৌঁছোয়।

কোন্ খাবারের কারণে বনভোজন ফলভোজনে পরিণত হল?

বনভোজনে গিয়ে নানা সমস্যার পর খিচুড়ি রান্নার দায়িত্ব পড়ে টেনিদার উপর। পরে সবাই ফিরে এসে দেখে টেনিদা একটা নারকেল গাছে হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছে আর কয়েকটা বানর চাল-ডাল মুখে পুরছে, এমনকি আলুগুলো সাবাড় করছে। ক্যাবলা, প্যালা ও হাবুল সেনের চিৎকারে বানরেরা চাল-ডাল-আলুর পুঁটলি নিয়ে কাঁঠাল গাছের মাথায় উঠে গেলে রান্নার দফারফা হয়। ক্ষুধার্ত সবাই পাকা জলপাই খেয়ে ক্ষুধানিবৃত্তির ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়। এইভাবে বনভোজন ফলভোজনে পরিণত হয়।

বনভোজনের প্রথম তালিকায় কী কী খাদ্যের উল্লেখ ছিল? তা বাতিল হল কেন?

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বনভোজনের ব্যাপার’ গল্প থেকে জানা যায় হাবুল সেন বনভোজনের জন্য প্রথমে তালিকা দিয়েছিল – পোলাও, ডিমের ডালনা, রুই মাছের কালিয়া, মাংসের কোর্মা। পরে দলপতি টেনিদা এর সঙ্গে যুক্ত করে বলে – মুর্গ মুসল্লম, বিরিয়ানি পোলাও, মশলদা দোসে, চাউ-চাউ, সামি কাবাব। পরে চূড়ান্ত লিস্ট হয়-বিরিয়ানি, পোলাও, কোর্মা, কোপ্তা, কাবাব (দু-রকম) ও মাছের চপ।

বনভোজনে এমন রান্নার জন্য চারজনে মিলে চাঁদা ওঠে দশ টাকা ছয় আনা, কিন্তু বিপুল অর্থব্যয়ের সংস্থান তাদের না থাকায় এমন রান্নার পরিকল্পনা বাতিল হয়।

বনভোজনের দ্বিতীয় তালিকায় কী কী খাদ্যের উল্লেখ ছিল এবং কে কী কাজের দায়িত্ব নিয়েছিল?

বনভোজনের দ্বিতীয় তালিকায় ঠিক হয় রান্না হবে খিচুড়ি, আলুভাজা, পোনা মাছের কালিয়া, আমের আচার, রসগোল্লা, লেডিকেনি।

যুক্তি করে ঠিক হয় প্যালা রাজহাঁসের ডিম আনবে। ক্যাবলা আলু ভাজবে। প্যালা পোনা মাছের কালিয়া রাঁধবে। হাবুল দিদিমার ঘর থেকে হাতসাফাই করে আমের আচার আনবে। আর রসগোল্লা ও লেডিকেনি ধারে ম্যানেজ করতে হবে।

প্যালার রাজহাঁসের ডিম আনার ঘটনাটির বর্ণনা দাও।

বনভোজনের জন্যে প্যালা রাজহাঁসের ডিম আনার দায়িত্ব নেয়। পাড়ায় ভন্টাদের বাড়িতে গোটাকয়েক রাজহাঁস আছে দেখে প্যালা ভন্টাকে দু-আনার পাঁঠার ঘুগনি আর ডজনখানেক ফুলুরি খাইয়ে খুশি করে। ঠিক হয়, প্যালা বাক্স থেকে নিজের হাতে ডিম বের করে নেবে। ভন্টার কথামতো প্যালা দুপুরে যায়। উঠোনের একপাশে কাঠের বাক্স-তার ভিতরে সার-সার খুপরি। গোটা দুই হাঁস ভিতরে বসে ডিমে তা দিচ্ছে। কাছে যেতেই খুব বাজে ভাবে ফ্যাঁস-ফ্যাঁস করে ওঠে হাঁস দুটো। ভন্টা উৎসাহ দেওয়ায় প্যালা বাক্সে হাত ঢোকালে একটা হাঁস খটাং করে হাতে কামড়ে ধরে। সে কী কামড়! প্যালা চেঁচিয়ে ওঠে। হ্যাঁচকা টানে হাঁসের ঠোঁট থেকে হাত ছাড়িয়ে চোঁচা দৌড় দেয় প্যালা। দরদর করে রক্ত পড়তে থাকে তার হাত থাকে।

ট্রেন থেকে নেমে হাঁটতে গিয়ে তাদের কী কী বিপদ ঘটেছিল?

ট্রেন থেকে নেমে প্রায় মাইলখানেক হাঁটার পর ক্যাবলার মামার বাড়ির বাগান যেখানে বনভোজনের আয়োজন হয়েছিল। কাঁচা রাস্তা, এঁটেল মাটি, তার উপর কাল রাতে এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা ভীষণ পিছল। একটু এগিয়ে যেতেই হাবুল রায় আছাড় খায়। সারা গায়ে কাদা মেখে হাবুল উঠে দাঁড়ায়। হাতের ডিমের পুঁটলিটা তখন কুঁকড়ে এতটুকু, হলদে রস গড়াচ্ছে তা থেকে। আরো একটু এগিয়ে কাদায় পিছলে পড়ে প্যালা। কাদা থেকে যখন উঠে দাঁড়ায় তখন প্যালার মাথা ও মুখ বেয়ে আচারের তেল গড়াচ্ছে। পরে টেনিদার হাতে ধরা রসগোল্লার হাঁড়ি সাত হাত দূরে ছিটকে যায়। ধবধবে সাদা রসগোল্লাগুলো পাশের কাদাভরা খানায় গিয়ে পড়ে একেবারে লেবুর আচার হয়ে যায়।

মাছের কালিয়ার তিনটে বেজে গেল – মাছের কালিয়া সম্পর্কে এরকম বলার কারণ কী?

প্যালার উপর দায়িত্ব পড়ে মাছের কালিয়া তৈরির। ক্যাবলার মা মাছ কেটে নুন মাখিয়ে দিয়েছিলেন। কড়াইতে তেল চাপিয়ে প্যালা তাতে মাছ ঢেলে দেয়। মাছ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কড়াই-ভরতি ফেনা। অতগুলো মাছ তালগোল পাকিয়ে যায় একসঙ্গে। মাছের কালিয়া নয় – ‘মাছের হালুয়া হয়ে ওঠে’। মাছের এমন অবস্থা দেখে ক্যাবলা আদালতের পেয়াদার মতো ঘোষণা করে ‘মাছের কালিয়ার তিনটে বেজে গেল’।

টেনিদা আর বলতে দিলে না! – টেনিদা কাকে কী বলতে দেয়নি? নিজে কী বলেছিল?

বনভোজনের খাদ্যতালিকায় কী কী থাকলে ভালো হয় সে বিষয়ে বলতে গিয়ে প্যালা যখন বলেছিল আলুভাজা, শুক্তো, বাটিচচ্চড়ি, কুমড়োর ছোকা; তখন মাঝপথেই টেনিদা তাকে থামিয়ে দিয়ে আর বলতে দেয়নি।

টেনিদা তাকে বিদ্রূপ করে বলেছিল তার চেয়ে হিঞ্চে সেদ্ধ, গাঁদাল আর শিঙিমাছের ঝোল বলতে এবং সে প্যালাকে আরও বলেছিল যে প্যালা যেহেতু পালাজ্বরে ভোগে আর বাসক পাতার রস খায় সেহেতু তার বুদ্ধির দৌড় ওইরকমই হওয়া স্বাভাবিক।

আমি বলতে যাচ্ছিলাম, – বক্তা কী বলা স্থির করে? সে কথাটি বলতে পারল না কেন?

এখানে ‘আমি’ অর্থাৎ প্যালা স্থির করেছিল যে, সে টেনিদাকে বলবে বনভোজনের চাঁদা হিসেবে টেনিদা দিয়েছে ছ-আনা, অথচ বাকি দশ টাকা দিয়েছে তারা তিনজনে।

টেনিদার অপছন্দের কথা হলে বক্তাকে টেনিদার গাঁট্টা খেতে হত, যাতে গালপাট্টা উড়ে যেতে পারে। এই গাঁট্টা খাওয়ার ভয়েই সে আর কথাটা বলতে পারেনি।

রাজহাঁসের ডিম জোগাড়ের পরিকল্পনা কীভাবে হয়?

প্যালাদের পাড়াতেই ভন্টাদের বাড়ি এবং তাদের বাড়িতে গোটাকয়েক রাজহাঁস-ছিল। অতএব রাজহাঁসের ডিম সংগ্রহ করার জন্য প্যালা ভন্টার শরণাপন্ন হলে ভন্টা দুই আনার পাঁঠার ঘুগনি আর ডজন খানেক ফুলুরি খেয়ে অবশেষে বলে যে, প্যালা যদি রাজহাঁসের বাক্স থেকে নিজের হাতে ডিম বার করে নিতে পারে, তবে সে ডিম দিতে সম্মত আছে।

এই পাঁঠার ঘুগনি, আর ফুলুরির শোধ তুলে ছাড়ব। – বক্তা এ কথা কেন বলেছিল?

প্যালা ভন্টাদের বাড়িতে এসে রাজহাঁসের কাঠের বাক্সে হাত ঢুকিয়ে ডিম নিতে গেলে রাজহাঁসের কামড়ে তার হাত রক্তাক্ত হয়। প্যালাকে রাজহাঁসের ডিম দেওয়ার নামে ভন্টা প্যালার কাছ থেকে পাঁঠার ঘুগনি আর ফুলুরি খেয়েছিল। কিন্তু রাজহাঁসের কামড় খেয়ে ডিম নিতে না পেরে প্যালা ভন্টার উপর রেগে গিয়ে এই কথা বলেছিল।

মন খারাপ করে আমি বসে রইলাম। — বক্তার মন খারাপের কারণ কী? বক্তা মন খারাপ করে মনে মনে কী ভাবে?

বক্তা, অর্থাৎ প্যালার মন খারাপের কারণ হল যে, সে ডিমের ডালনা খেতে ভীষণ ভালোবাসে, অথচ টেনিদা তাকে ডিমের ডালনা খাওয়া থেকে বাদ দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ডালনার এক টুকরো আলু এমনকি সামান্য ঝোলটুকুও সে পাবে না বলে ঘোষণা করায় তার মন খারাপ হয়েছে।

প্যালা মনে মনে শুধু ভেবেছে তাকে বাদ দিয়ে যারা ডিমের ডালনা খাবে, সে তাদের খাওয়ায় এমন নজর দেবে যে তাদের বদহজম হয়ে যাবে।

রসগোল্লার শোকে বুকভাঙা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে চারজনে পথ চলতে লাগলাম আমরা। – রসগোল্লার জন্য শোক কেন?

বনভোজনের পথে যাওয়ার সময় ট্রেন থেকে নেমেই টেনিদা রসগোল্লার হাঁড়িটা দখল করে নিজের হাতে নিয়ে হাঁটতে গিয়ে কাদায় পা পিছলে পড়ে যেতেই হাঁড়ি থেকে রসগোল্লাগুলো ছিটকে কাদাভরা খানায় ছড়িয়ে যায়। এর আগে বনভোজনের জন্য আনা লেডিকেনিগুলো টেনিদা একাই সাবাড় করেছে বলে প্যালারা খুব আশা করেছিল যে, রসগোল্লা খাওয়ার আনন্দটুকু অন্তত তারা পাবে। কিন্তু স্পঞ্জ রসগোল্লাগুলো এই কাদায় নষ্ট হওয়ায় তাদের শোক হয়েছিল।

ক্যাবলা আদালতের পেয়াদার মতো ঘোষণা করল। — কী ঘোষণা করেছিল? এ কথা বলার কারণ কী?

ক্যাবলা আদালতের পেয়াদার মতো ঘোষণা করেছিল যে, মাছের কালিয়ার তিনটে বেজে গেছে, অর্থাৎ মাছের কালিয়া নামক রান্নার পদটি একেবারেই খারাপ হয়ে গেছে।

প্যালা কাঁচা তেলে মাছ ছাড়তেই সমস্ত মাছ ঘেঁটে তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিল, যা দিয়ে আর কালিয়া রান্না করা সম্ভব ছিল না। সেই অবস্থা দেখেই ক্যাবলা ওই কথা বলেছিল।

লাফিয়ে উঠে টেনিদা বাগানের দিকে ছুটল। – টেনিদা লাফিয়ে উঠে বাগানের দিকে ছুটল কেন?

বনভোজনের সমস্ত চাল-ডাল-আলু বাঁদরেরা খেয়ে ফেলছিল বলে আর রান্না করার মতো কিছুই ছিল না। তখন প্যালা টেনিদাকে সামনের বাগানের গাছে জলপাই পেকে রয়েছে এই খবরটা দিতেই ক্ষুধার্ত টেনিদা আপাতত পাকা জলপাই খেয়েই খিদে মেটানোর জন্য বাগানের দিকে ছুটেছিল।

উস-উস শব্দে নোলার জল টানল টেনিদা। – নোলার জল টানার কারণ কী? এরপর টেনিদা কী বলেছিল?

বনভোজনের খাদ্যতালিকা তৈরি করার সময় হাবুল সেন যখন পোলাও, ডিমের ডালনা, রুই মাছের কালিয়া, মাংসের কোর্মা প্রভৃতি পদের নাম এক এক করে বলছিল, তখনই টেনিদার নোলায় অর্থাৎ জিভে জল এসে গিয়েছিল। আসলে এই সমস্ত দুর্দান্ত ও সুস্বাদু খাবারের নাম শুনে পেটুক টেনিদা আর লোভ সামলাতে পারছিল না। সেইজন্য নোলায় জল এলেই তা টেনিদাকে টানতে হচ্ছিল।

হাবুল সেন ওইটুকু বলে থেমে যেতেই টেনিদা তাকে মুর্গ মুসল্লম, বিরিয়ানি পোলাও, মশলদা দোসে, চাউ চাউ, সামি কাবাব প্রভৃতি পদের নামগুলো একইসঙ্গে বলতে বলেছিল।

জেনে-শুনে ব্রাহ্মণের রক্তপাত ঘটাল। — কীভাবে রক্তপাত ঘটল? এ কথা বলার কারণ কী?

বনভোজনের জন্য রাজহাঁসের ডিম জোগাড় করতে প্যালা ভন্টাদের বাড়িতে যায়। সেখানে ভন্টার কথামতো রাজহাঁসের বাক্সে হাত ঢুকিয়ে ডিম বার করতে গেলে প্যালার হাতে রাজহাঁস সজোরে কামড় বসায়। এই কামড়ের ফলেই প্যালার হাত থেকে রক্তপাত ঘটে।

রাজহাঁস যে এমন ‘রাজকীয় কামড়’ বসাতে পারে তা প্যালার জানা ছিল না। ভন্টাও তাকে এ বিষয়ে এতটুকু সতর্ক করে দেয়নি। বরং প্যালাকে রাজহাঁসের ডিম দেওয়ার জন্য ভন্টা তার কাছ থেকে পাঁঠার ঘুগনি আর ফুলুরি সাবাড় করে শেষপর্যন্ত তাকে ঠকালো বলে প্যালা তার উপর রেগে গিয়ে মনে মনে এ কথা বলেছে।

টেনিদা হুংকার দিয়ে উঠল-দিলে সব পণ্ড করে। – টেনিদার হুংকারের কারণ কী? টেনিদা হুংকার দিয়ে কী বলেছিল?

বনভোজনের জন্য নির্ধারিত স্থানে যাওয়ার সময় কাদায় ভরা এঁটেল মাটির রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে হাবুল পা হড়কে পড়ে যায়। তার হাতের ডিমের পুঁটলির ভিতরের সব ডিম ফেটে গিয়ে সেখান থেকে হলদে রস গড়াতে থাকে। টেনিদা তার অত্যন্ত লোভের জিনিস ওই ডিমগুলোর এই পরিণতি দেখে রাগে হুংকার দিয়েছিল।

হুংকার দিয়ে টেনিদা বলেছিল – দিলে সব পণ্ড করে। এই ঢাকাই বাঙালটাকে সঙ্গে এনেই ভুল হয়েছে। পিটিয়ে ঢাকাই পরোটা করলে তবেই রাগ যায়।

রসগোল্লার দুটো বেজে গেল। – বক্তা কে? এ কথা বলার কারণ কী?

উদ্ধৃতাংশের বক্তা ক্যাবলা।

বনভোজনের নির্ধারিত স্থানে যাওয়ার সময় কাদায় ভরা মাটির রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে টেনিদা পা পিছলে পড়ে যায়। তখন টেনিদার হাতে ধরা রসগোল্লার হাঁড়ি সেখান থেকে সাত হাত দূরে ছিটকে পড়ে এবং সাদা রসগোল্লাগুলো কাদাভরা খানায় পড়ে কাদা মাখামাখি হয়ে একেবারে লেবুর আচারের চেহারা নেয়। বড়ো সাধের রসগোল্লার এই পরিণতি দেখে ক্যাবলা ওই কথা বলেছিল।

আমরা তিনজনেই থমকে দাঁড়ালাম। – তারা থমকে দাঁড়িয়ে কী দেখেছিল?

প্যালা, ক্যাবলা আর হাবুল সেন থমকে দাঁড়িয়ে দেখেছিল টেনিদা নারকেল গাছে হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছে আর একটা গোদা বানর তার পিঠ চুলকে দিচ্ছে। ওদিকে টেনিদার চারদিকে গোল হয়ে বসে চার-পাঁচটা বানর মুঠো মুঠো করে চাল-ডাল মুখে পুরছে এবং একটা আবার আলুগুলো সাবাড় করতে করতেই আস্তে আস্তে টেনিদার পিঠ চুলকে দিচ্ছে। এই অদ্ভুত দৃশ্য তারা প্রায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখেছিল।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “বনভোজনের ব্যাপার” গল্পটি বন্ধুত্ব, হাস্যরস, এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনার এক অসাধারণ মিশেল। টেনিদা, হাবুল, প্যালা, ও ক্যাবলার চার বন্ধুর বনভোজনের পরিকল্পনা যাত্রা শুরু করে
অগণিত মজার ঘটনার দিকে।

পেটুক, অলস, ও ভীরু টেনিদার নেতৃত্বে বনভোজন শুরু হলেও, ট্রেন থেকে নেমে জিনিসপত্র নিয়ে বনভূমিতে পৌঁছাতে গিয়েই তারা নানা বিপত্তির সম্মুখীন হয়।

ক্যাবলার মামার বাগানে পৌঁছে বনভোজন শুরু হলেও টেনিদার অযত্ন ও ভুল পরিকল্পনার কারণে সবকিছুই মাটি হয়ে যায়।

খাবার নষ্ট, পোকামাকড়ের উপদ্রব, টেনিদার ভীতি, এবং বন্ধুদের মধ্যে ঝগড়া – এই সবকিছু মিলে বনভোজন পরিণত হয় এক অসাধারণ হাস্যকর অভিজ্ঞতায়।

এই গল্পে বন্ধুত্বের বন্ধন, প্রকৃতির সৌন্দর্য, এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনার মিশেলে তৈরি হয়েছে এক অসাধারণ কাহিনী। টেনিদার চরিত্রে লেখক তুলে ধরেছেন একজন সাধারণ মানুষের হাস্যরসাত্মক দিক, যা পাঠকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer