অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পল্লীসমাজ অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে পল্লীসমাজ অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় পল্লীসমাজ অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই পল্লীসমাজ অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।
১৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৬ সালে হুগলীর দেবানন্দপুরে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এই অংশে আমরা তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস “রমেশ চণ্ডীমণ্ডপ” থেকে একটি ঘটনার সাথে পরিচিত হব।
রমেশ চণ্ডীমণ্ডপে বসে জমিদারির হিসাব দেখছিলেন রমেশ। তখন গ্রামের কৃষকেরা এসে তাঁর কাছে কেঁদে পড়ে তাদের একশো বিঘার মাঠ উদ্ধার করার জন্য। মাঠের দক্ষিণ ধারের বাঁধটি ছিল ঘোষাল ও মুখুয্যেদের। সেই বাঁধ খুলে দিয়ে মাঠের ধান রক্ষা করা সম্ভব, কিন্তু বছরে দুশো টাকার মাছ বিক্রি হয় বলে জমিদার বেণীবাবু কড়া পাহারায় সেই বাঁধ আটকে রেখেছেন।
কৃষকদের দুর্দশা দূর করার জন্য রমেশ বেণীবাবুর কাছে ছুটে যান জলার বাঁধ কেটে দেওয়ার আর্জি নিয়ে। কিন্তু জমিদারবাবু তার লোকসান করে বাঁধ কেটে দিতে একেবারেই রাজি হন না। বরং উলটে তিনি রমেশকে অপমান করতে থাকেন।
অগত্যা রমেশ ছুটে যান রমার কাছে। রমাও যেহেতু এই জমির অংশীদার তাই তার অনুমতি মিললে বাঁধ কাটা সম্ভব হতে পারে বলে রমেশের মনে হয়। কিন্তু রমার কাছ থেকেও সে অনুমতি আদায় করতে সমর্থ হয় না। তখন সে নিজেই জোর করে বাঁধ কাটিয়ে দেবে বলে স্থির করে এবং রমার কাছ থেকে বিদায় নেয়।
রাত্রি এগারোটার সময়ে চণ্ডীমণ্ডপের বারান্দার খুঁটিতে ঠেস দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় প্রৌঢ় মুসলমান আকবরকে। তার মুখের উপর রক্ত জমাট বেঁধে গেছে এবং গায়ের কাপড়ও রক্তে লাল। জমিদার বেণীবাবু তাকে থানায় গিয়ে রমেশের নামে অভিযোগ জানাতে বললে আকবর কিছুতেই তাতে রাজি হয় না। উপরন্তু সে ছোটোবাবু অর্থাৎ রমেশের বীরত্বের প্রশংসা করতে থাকে। সে বর্ণনা করে, কীভাবে রমেশ বাঁধ কেটে গাঁয়ের মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।
বেণী তাকে বেইমান বললে আকবর দৃপ্ত কণ্ঠে তার প্রতিবাদ জানায়। রমাও আকবরকে অনুরোধ করে রমেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর জন্য, কিন্তু আকবর তার সিদ্ধান্ত বদল করে না। ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে আকবর বাড়ির পথে এগোয়। বেণী রাগে অন্ধ হয়ে কী করবে বুঝে উঠতে পারে না। কিন্তু রমেশের বীরত্বের কাহিনি মনে করে রমার চোখ জলে ভরে যায়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাস হল – ‘দেবদাস’ ও ‘শ্রীকান্ত’।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছোটোগল্পের নাম লেখো।
কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছোটোগল্প হল – ‘লালু’ ও ‘মহেশ’।
গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ কী করছিল?
গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ জমিদারির হিসাবপত্র দেখছিল।
গ্রামের একমাত্র ভরসা কী ছিল?
একশো বিঘার মাঠটাই গ্রামের একমাত্র ভরসা ছিল।
বোধ করি এই কথাই হইতেছিল – কোন্ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে?
বেণীগোপাল ও তোষামোদকারী হালদারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত কথোপকথন চলছিল। চাষিদের জমি জলমগ্ন হয়েছে, তারা বিপাকে পড়েছে – এখানে সেই কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
রমা আকবরকে কোথায় পাহারা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল?
রমা আকবরকে বাঁধ পাহারা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল।
পারবি নে কেন? – উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কোন্ কাজটি করতে পারবে না?
পাঁচটি গ্রামের সর্দার আকবর বেণী ঘোষালের কথায় রমেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে পারবে না।
পল্লীসমাজ গদ্যাংশটির লেখকহলেন – (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়/বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
পল্লীসমাজ গদ্যাংশের মুখ্য চরিত্রের নাম হল – (রমেশ/সুরেশ/বিকাশ)।
রমেশ।
পল্লীসমাজ গদ্যাংশে (নব্বই/সত্তর/একশো) বিঘার মাঠ ডুবে যাওয়ার কথা আছে।
একশো।
বেণীর পদবি হল – (ঘোষাল/মিত্র/মুখুজ্জে)।
ঘোষাল।
একশো বিঘার মাঠটার (উত্তর/দক্ষিণ/পূর্ব) দিকে সরকারি প্রকাণ্ড বাঁধ ছিল।
পূর্ব।
রমেশ অবাক হইয়া কহিল, ব্যাপার কী? – রমেশের এই প্রশ্নের উত্তরে চাষিরা বলেছিল – (বেণীর সঙ্গে তারা কোনো বিষয় আলোচনা করতে চায় না।/ছেলেপুলের হাত ধরে তাদের পথে ভিক্ষে করতে হবে/একশো বিঘের মাঠ ডুবে গেছে, জল বার করে না দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে, গ্রামের কেউই খেতে পাবে না/রমা দেবীর কাছে তাদের যাবতীয় আবেদন ব্যর্থ হয়ে গেছে)।
একশো বিঘের মাঠ ডুবে গেছে, জল বার করে না দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে, গ্রামের কেউই খেতে পাবে না।
একশো বিঘার মাঠটাই এ গ্রামের একমাত্র _।
ভরসা।
খুড়োর মতামতের জন্য রমেশের _ ছিল না।
কৌতূহল।
রমেশ বিস্ময়ে _ হইয়া গেল।
হতবুদ্ধি।
তখন রাত্রি বোধ করি _।
এগারোটা।
আকবর তাহাদের _ প্রজা।
পিরপুরের।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন্ পুরস্কারে ভূষিত হন?
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘কুন্তলীন’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
শরৎচন্দ্র কোন গল্পের জন্য ‘কুন্তলীন’ পুরস্কার পেয়েছিলেন?
শরৎচন্দ্র ‘মন্দির’ গল্পের জন্য ‘কুন্তলীন’ পুরস্কার পেয়েছিলেন।
গ্রামের দক্ষিণ ধারের বাঁধটা কাদের দখলে ছিল?
গ্রামের দক্ষিণ ধারের বাঁধটা ঘোষাল ও মুখুয্যেদের দখলে ছিল।
বাঁধের ধারের জলা থেকে বছরে কত টাকার মাছ বিক্রি হয়?
বাঁধের ধারের জলা থেকে বছরে দুশো টাকার মাছ বিক্রি হয়।
ওঠ রে গহর এইবার ঘরকে যাই। – গহর কে?
পাঁচ গ্রামের সর্দার আকবরের পুত্র হল গহর।
অসহ্য বিস্ময়ে রমা দুই চোখ বিস্ফারিত করিয়া কহিল কি আমি? – কোন্ কথায় এই উক্তি করা হয়েছে?
রমেশ রমাকে নীচ ও অতি ছোটো বলায় রমা এই উক্তি করেছে।
পল্লীসমাজ অধ্যায়ের উৎস কোথায়?
পল্লীসমাজ উপন্যাসের একাদশ পরিচ্ছেদ থেকে এই গল্পাংশ গ্রহণ করা হয়েছে।
সংক্ষেপে বলা যায়, শরৎচন্দ্র একজন অসাধারণ ব্যক্তি ছিলেন, যার জীবনে বেশ কিছু মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। তার সাহসী প্রতিবাদ ও সত্যের প্রতি অগ্রাধিকার তাকে একজন মানবিক নেতা হিসেবে অভিহিত করে। তার সাহসী পদক্ষেপের ফলে গ্রামের কৃষকদের জীবনের প্রতি তার প্রেম ও সহানুভূতি প্রত্যক্ষভাবে প্রকাশ পেয়েছিল। তার মনোযোগ ও সত্যের অনুসরণে প্রাণপ্রিয় মুসলমান আকবর একজন অন্ধ রাজনীতিবিদও হিসেবে অসাধারণ উদাহরণ প্রস্তুত করেছেন। একেবারে রমেশের বীরত্বের প্রশংসা করে তাকে বেইমান বলতে পারা একটি ঘটনার মাধ্যমে সমাজের দুর্বলতা ও স্বার্থপরতা সামাজিক সংকট উদ্ধার করে তুলে আনেন। শরৎচন্দ্রের জীবনবৃত্তান্ত মনোযোগে আকর্ষণীয় ও প্রশংসনীয় একটি অধ্যায় যা আমাদের জীবনে আন্তরিক অনুপ্রেরণা দেয়।