অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – একটি চড়ুই পাখি – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের একটি চড়ুই পাখি অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে একটি চড়ুই পাখি অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় একটি চড়ুই পাখি অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই একটি চড়ুই পাখি অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

বিখ্যাত কবি ও রসস্রষ্টা তারাপদ রায়ের “একটি চড়ুই পাখি” কবিতাটিতে তিনি সাধারণ চড়ুই পাখির মাধ্যমে জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। কবিতাটিতে চড়ুইয়ের চাঞ্চল্য, অস্থিরতা, বুদ্ধিমত্তা, আশ্রয়ের প্রয়োজন, এবং কৌতূহলের চিত্র ফুটে উঠেছে।

কবি চড়ুইয়ের বাসা তৈরির দক্ষতা ও পরিশ্রমের কথা বর্ণনা করেছেন। সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর পর সন্ধ্যায় খড়কুটো ও ধান সংগ্রহ করে সে নিজের বাসা তৈরি করে। এই কাজে তার আনন্দের সুর লেখকের কাছে স্পষ্ট। কবিতার আরেকটি মুখ হলো চড়ুইয়ের কৌতূহল। কবির ঘরে ফুলদানি, বইখাতা দেখে সে হয়তো ভাবে একদিন এসবই তার হয়ে যাবে।

কখনও আবার চড়ুইয়ের দৃষ্টিতে তাচ্ছিল্যের ভাবও লক্ষ্য করা যায়। মায়ার টানেই সে এই ভাঙাচোরা ঘরে আছে বলে মনে হয় তার। ওপাড়ের পালেদের, বোসেদের বাড়িতেও সে আশ্রয় নিতে পারে। তবুও, এক অজানা বন্ধনে সে কবির সাথে আবদ্ধ। হয়তো কবির একাকিত্ব নিরসনের জন্যই নির্জন রাতে চড়ুইটি তার একমাত্র সঙ্গী হয়ে থাকে।

এইভাবে, “একটি চড়ুই পাখি” কবিতাটিতে কবি প্রকৃতির সহজ সরল প্রাণীর মাধ্যমে জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন। চড়ুইয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও আচরণের মাধ্যমে মানুষের জীবনের আনন্দ, দুঃখ, আশা, নিরাশা, কৌতূহল, এবং একাকিত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে।

একটি চড়ুই পাখি – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে সেই/সে’ও ফেরে; এ বাড়ির খড় কুটো, ও বাড়ির ধান/ছড়ায় শব্দের টুকরো, ঘর জুড়ে কিচিমিচি গান।’-পঙ্ক্তিগুলির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

কবি তারাপদ রায় ‘একটি চড়ুই পাখি’ কবিতায় তাঁর ঘরে আশ্রয় নেওয়া একটি চড়ুইপাখির দৈনন্দিন জীবনযাপনের যে চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, তা যেন এক হিসেবে প্রতিদিনের সাধারণ মানুষেরই কর্মব্যস্ত জীবনেরই ছবি। দিনের শেষে যখন প্রকৃতির বুকে সন্ধে নামে, তখন সারাদিন বাইরে জীবনধারণের প্রয়োজনে কাটিয়ে ঘরমুখী মানুষের মতো কবির ঘরে বাসা বেঁধে থাকা চড়ুইটিও তার বাসায় ফেরে। বাসাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য খড়কুটো নিয়ে সে আসে, নিয়ে আসে আহারের ধান। এই সব নিয়ে তার নানারকম ধ্বনি এবং কিচিরমিচির গানে কবির ঘরে অপূর্ব ঐকতান বেজে ওঠে। এই ধ্বনি যেন কবির কানে সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার, সুন্দরভাবে বসবাস করার আনন্দধ্বনি রচনা করে। কবি এই চড়ুইপাখির প্রাণস্পন্দনকে গভীরভাবে এই সমস্ত শব্দের মধ্য দিয়ে অনুভব করেন।

হয়তো ভাবে লোকটা চলে গেলে এই ঘর জানলা দোর, টেবিলে ফুলদানি, বই-খাতা/এ সব আমারই হবে; আমাকেই দেবেন বিধাতা। – পঙ্ক্তিগুলির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

কবি তারাপদ রায় তাঁর ঘরে বাসা বেঁধে বাস করা চড়ুইপাখিটির হাবভাব লক্ষ করে তাঁর মনের মধ্যে যেন নিজের মতো করে ডুব দিয়েছেন এবং সেইভাবেই নিজের কল্পনায় রচনা করেছেন চড়ুইটির মানসিক অবস্থার ছবিটি। তাঁর মনে হয়েছে যে, এই চড়ুইপাখিটির দৃষ্টিতে রয়েছে প্রবল কৌতূহলী বৈষয়িক ভাব। এই ঘরের বাসিন্দা হিসেবে হয়তো পাখিটির এমনও মনে হতে পারে যে কবি এই ঘর থেকে সরে গেলেই এই ঘর এবং ঘরের মধ্যেকার সব কিছু যেমন টেবিল, ফুলদানি, বইখাতা সমস্তরই মালিকানা সে-ই পাবে। যেহেতু কবির সঙ্গে একসঙ্গে সে এই ঘরে বাস করে, সেহেতু কবি চলে গেলে কবির এই ঘর এবং তার ব্যবহৃত যা আছে সব কিছুর উত্তরাধিকারী সে-ই হবে বলে ভাবছে; কবির এমনটাই মনে হয়। মানুষ যেমন করে কারও চলে যাওয়ার পর তার জিনিসপত্র বা সম্পত্তির উপর ন্যায্যভাবে অধিকার লাভ করে, কবি এখানে চড়ুইপাখির মনকেও সে-ই মানুষের মনের মতো করেই অনুভব করতে চেয়েছেন।

ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি – এখানে কোন ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে?

কবি তারাপদ রায় তাঁর ‘একটি চড়ুই পাখি’ কবিতায় তাঁর ঘরে আশ্রয় নিয়ে বাসা বেঁধে বাস করা একটি চড়ুইপাখির মন-মেজাজের ছবিটি আপন কবিকল্পনার মায়ায় খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর মনে হচ্ছে এই চড়ুইপাখিটি হয়তো এমনটাও ভাবতে পারে যে, তার মনে খুব মায়াদয়া আছে বলেই সে করুণা করে কবির এই বাজে ঘরটাতেও বাস করছে। যদি সে কবিকে মায়াদয়া না করত তবে যে-কোনও মুহূর্তে সে এ পাড়া-ও পাড়ায় পালেদের বা বোসেদের অনেক ভালো বাড়িতে গিয়ে বাসা বাঁধতে পারত। চড়ুইপাখিটি নিজের সম্পর্কে হয়তো এমন অহংকারী ভাব পোষণ করে বলে কবি মনে করছেন। চড়ুইটি যে কবিকে তুচ্ছ মনে করে এবং করুণার দৃষ্টিতে দেখে, এমন ভাবনাও কবির মনে তৈরি হয়েছে। আসলে কবি এখানে অনেক মানুষের মধ্যে যে ধরনের অহংকারী ভাব এবং অন্যকে তাচ্ছিল্য করে করুণা করার মানসিকতা কাজ করে, সেটাই চড়ুইপাখির উপর আরোপ করেছেন।

নীচের প্রশ্নগুলির প্রকৃতি-প্রত্যয় নির্ণয় করো –

প্রদত্ত শব্দপ্রকৃতি-প্রত্যয়
সন্ধ্যাসম্ + √ধ্যে + অ + আ
কৌতূহলীকৌতূহল + ঈ
দৃষ্টিদৃষ্ + তি

নীচের বাক্যগুলির ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করো –

  • চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে।
  • বই-খাতা এসব আমারই হবে।
  • আবার কার্নিশে বসে।
  • এই বাজে ঘরে আছি।
  • ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি।
বাক্যক্রিয়ার কাল
চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে।বর্তমান কাল
বই-খাতা এসব আমারই হবে।ভবিষ্যৎ কাল
আবার কার্নিশে বসে।বর্তমান কাল
এই বাজে ঘরে আছি।বর্তমান কাল
ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি।বর্তমান কাল

নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও –

অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে যেই সে’ও ফেরে। (সরল বাক্যে)

অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরার সঙ্গে সেও ফেরে।

কখনও সে কাছাকাছি কৌতূহলী দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে। (নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দের বিশেষ্যের রূপ লিখে বাক্যটি আবার লেখো।)

কখনও সে কৌতূহল দৃষ্টি নিয়ে দুই চোখ মেলে অবাক হয়ে দেখে।

আমাকেই দেবেন বিধাতা। (না-সূচক বাক্যে)

আমাকে না দিয়ে বিধাতা থাকতে পারবেন না।

এই বাজে ঘরে আছি নিতান্ত মায়ার শরীর আমার তাই। (জটিল বাক্যে)

যেহেতু আমার মায়ার শরীর তাই এই বাজে ঘরে আছি।

ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি এ-পাড়ায় ও-পাড়ায় পালেদের-বোসেদের বাড়ি। (জটিল বাক্যে)

যদি ইচ্ছা হয় তবে আজই যেতে পারি এ-পাড়ায় ও-পাড়ায় পালেদের-বোসেদের বাড়ি।

নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো –

চড়ুই, ধান, চোখ, জানলা, দোর, ইচ্ছে, পাখি।

প্রদত্ত শব্দধ্বনিতাত্ত্বিক শব্দ
চড়ুইচড়াই > চড়ুই (স্বরসংগতি)।
ধানধান্য > ধান (ব্যঞ্জনলোপ)।
চোখচক্ষু > চোখ (ধ্বনিলোপ)।
জানলাজানালা > জানলা (ধ্বনিলোপ)।
দোরদুয়ার > দোর (স্বরাগম)।
ইচ্ছেইচ্ছা > ইচ্ছে (স্বরসংগতি)।
পাখিপক্ষী > পাখি (ধ্বনিলোপ)।

চোখ শব্দটিকে পৃথক পৃথক অর্থে ব্যবহার করে বাক্য রচনা করো –

পৃথক অর্থবাক্যরচনা
মানবদেহের অঙ্গবিশেষচোখটা বেশ খারাপ হয়েছে, এবার চশমা নিতেই হবে।
সতর্ক দৃষ্টিতেছেলেটিকে চোখে চোখে রেখো, ওর হাতটান স্বভাব রয়েছে।
সামান্য লজ্জামায়ের মুখে মুখে এত কথা বলছো, তোমার কি চোখের চামড়াও নেই।
বিশেষভাবে বোঝানোচোখে আঙুল দিয়ে না দেখালে তুমি কিছুই বুঝতে পারো না।
নজর দেওয়াসব কিছুতেই ওর চোখ দেওয়া স্বভাব।

“চড়ুই” কবিতাটিতে কবি তারাপদ রায় এক সাধারণ চড়ুইপাখির মাধ্যমে জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন। চড়ুইয়ের বাসা তৈরির পরিশ্রম, আনন্দ, কৌতূহল, তাচ্ছিল্য, একাকিত্ব – সবকিছুই কবির স্পর্শকাতর কলমের মাধ্যমে পাঠকের মনে গেঁথে যায়। কবিতার শেষে কবি চড়ুইকে নিজের একাকিত্ব নিরসনের সঙ্গী হিসেবে দেখেন। এইভাবে, “চড়ুই” কবিতাটি কেবল একটি পাখির কবিতা নয়, বরং জীবনের বাস্তবতা ও মানুষের মনের জটিলতার এক সুন্দর চিত্রায়ণ।

কবিতাটিতে দেখা যায়, কবি নিঃসঙ্গ। তার একাকী জীবনে একটি চড়ুই পাখি সঙ্গী হয়ে ওঠে। পাখিটি কবির ঘরে বাসা বাঁধে, খড়কুটো দিয়ে বাসা বানায়, ধান ছড়ায়, শব্দ করে। কবি মনে করেন পাখিটি তার একাকীত্ব বুঝতে পারে এবং তার জন্য সহানুভূতিশীল। পাখিটি মাঝেমধ্যে তাচ্ছিল্য করে, মনে হয় সে এই বাজে ঘরে থাকতে চায় না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাখিটি কবির একাকী ঘর ছেড়ে যায় না।

এই কবিতাটির মূল ভাব হল, প্রকৃতির সামান্য প্রাণীও আমাদের জীবনে সঙ্গী হতে পারে, আমাদের একাকীত্ব দূর করতে পারে। পাখিটি কবির জীবনে আনন্দের আলো ছড়িয়ে দেয়।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer