অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের মাসিপিসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে মাসিপিসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় মাসিপিসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই মাসিপিসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।
আমাদের সমাজে অসংখ্য পরিবারের মহিলারা জীবিকার তাগিদে শ্রমিক হিসেবে জীবনযাপন করেন। তাদের জীবন সর্বদা দারিদ্র্য ও সংগ্রামে ভরা। তাদের সাথে আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই কাজের সম্পর্ক গড়ে উঠলেও, তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় অজানা থেকে যায়। এই শ্রমজীবী মহিলাদেরই আমরা “মাসিপিসি” বলে ডাকি।
চোখের ঘুম না ভেঙে, চোখের পাতায় জল সিঞ্চন করে তারা দিনের কাজ শুরু করেন। সূর্যোদয় হয়নি, দিনের আলো ফোটেনি, তবুও “মাসিপিসি”দের নিত্যকাজ শুরু হয়ে যায়। চাঁদ আকাশে ঝলমলে থাকাকালীন, শুকতারা জ্বলজ্বল করাকালীন, “মাসিপিসি”রা বাসি কাপড় ধুয়ে ট্রেন ধরতে ছুটে যান। দুই-এক ফোঁটা শিশির যখন ঘাসের মাথায় জেগে ওঠে, তখনই ঘুম ঝেড়ে ফেলে গ্রাম থেকে শহরে আসার উদ্দেশ্যে ট্রেন ধরেন তারা।
এই শ্রমজীবী মহিলাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি, কিন্তু উপার্জন করার মতো মানুষ কেউ নেই। ফলে একজনের সামান্য উপার্জনে অনেকগুলি পেট চলে। তাই প্রতিদিনই কালঘাম ঝরিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে ছুটে যেতে হয় তাদের। ট্রেনে ওঠার আগে-পরে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। রেলবাজারের হোমগার্ডরা তাদের নানা সমস্যায় ফেলে। সারা বছর ধরেই “মাসিপিসি”দের এভাবেই জীবনসংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হয়। বছর আসে, বছর যায়, তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসে না। পরিবারের মুখে ক্ষুধার অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য লালগোলা-বনগাঁ থেকে চালের বস্তা বহন করে শহরের উদ্দেশ্যে ছুটে যান তারা, উপার্জনের আশায়।
এইভাবেই কবিতায় “মাসিপিসি”র প্রতীকে সমাজের দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মহিলাদের জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন কবি।
মাসিপিসি – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বই-এর নাম লেখো।।
জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বই-এর নাম হল ‘বজ্রবিদ্যুৎভর্তি খাতা’ এবং ‘উন্মাদের পাঠক্রম’।
জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখো।
জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম হল ‘সেই সব শেয়ালেরা’।
অনেকগুলো পেট বাড়িতে – ‘পেট’-এর আভিধানিক অর্থ কী? এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
প্রশ্নের উদ্ধৃতাংশটিতে ব্যবহৃত ‘পেট’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল উদর বা জঠর।
কবিতায় ‘পেট’ শব্দটি মাসিপিসিদের পরিবারের সদস্য অর্থাৎ লোকজন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
সাত ঝামেলা জোটায় – এখানে ‘সাত’ শব্দটির ব্যবহারের কারণ কী?
প্রশ্নের উদ্ধৃতাংশটিতে ‘সাত’ শব্দটির মাধ্যমে এখানে বিভিন্ন অর্থাৎ নানাপ্রকার ঝামেলা বা সমস্যার কথা বলা হয়েছে।
মাহিনা শব্দটি কবিতায় কী অর্থে ব্যবহৃত? শব্দটির অন্য কোন্ অর্থ তোমার জানা আছে?
জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ কবিতায় ‘মাহিনা’ শব্দটি কবিতায় ‘মাস’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
মাহিনা শব্দটির অপর একটি অর্থ হল ‘বেতন’।
কোন্ শব্দ থেকে এবং কী করে ‘জষ্টি’ শব্দটি এসেছে?
জ্যৈষ্ঠ শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ‘জ্যেষ্ঠ’ এবং সেটি পরিবর্তিত হয়ে রূপ পেয়েছে ‘জষ্টি’।
মাসিপিসি কবিতাটির রচয়িতা হলেন – (সুভাষ মুখোপাধ্যায়/জয় গোস্বামী/শঙ্খ ঘোষ)।
জয় গোস্বামী।
জয় গোস্বামীর লেখা একটি বিখ্যাত কাব্য-উপন্যাস হল – (যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল/বজ্রবিদ্যুৎভর্তি খাতা/সেই সব শেয়ালেরা)।
যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল।
জয় গোস্বামী উক্ত পুরস্কারটি অর্জন করেছেন – (রবীন্দ্র পুরস্কার/আনন্দ পুরস্কার/নোবেল পুরস্কার)।
আনন্দ পুরস্কার।
শুকতারা প্রকৃতপক্ষে – (গ্রহ/তারা/চাঁদ)।
গ্রহ।
মাসিপিসি’রা আর্থিক দিক থেকে – (উচ্চবিত্ত/মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত) শ্রেণির।
নিম্নবিত্ত।
_ ছুঁয়ে যায় চোখের পাতায়,।
ফুল।
ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি _ কাপড় কাচে।
ছাড়া।
পেট বাড়িতে, একমুঠো রোজগার।
অনেকগুলো।
সাল মাহিনার হিসেব তো নেই, _ কি বৈশাখ।
জষ্টি।
চাল তোলো গো মাসিপিসি _ বনগাঁয়।
লালগোলা।
কবি জয় গোস্বামী কবে কোথায় জন্মেছেন?
কবি জয় গোস্বামী ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মেছেন।
যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল কোন্ শ্রেণির গ্রন্থ?
‘যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’ একটি কাব্য-উপন্যাস।
ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিরা কখন ঘুম থেকে ওঠে?
ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিরা রাত থাকতেই ঘুম থেকে ওঠে।
কারা ‘সাত ঝামেলা জোটায়’?
রেলবাজারের হোমগার্ডরা ‘সাত ঝামেলা জোটায়’।
শতবর্ষ বলতে কী বোঝায়?
‘শতবর্ষ’ বলতে একশো বছরের সমাহারকে বোঝায়।
মাসিপিসি কবিতাটি কার লেখা? এটি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
মাসিপিসি কবিতাটি কবি জয় গোস্বামীর লেখা।
এই কবিতাটি ‘পাগলি তোমার সঙ্গে’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি কবিতা।
মাসিপিসিরা কখন ঘুম থেকে ওঠেন? তখন আকাশে কাদের দেখা যায়?
রাত থাকতে থাকতেই মাসিপিসিরা ঘুম থেকে ওঠেন।
তারা যখন শয্যা ত্যাগ করেন, তখন আকাশে চাঁদ আর শুকতারাকে দেখা যায়।
মাসিপিসিদের কোলে-কাঁখে কী থাকে? তারা কোথা থেকে কোথায় আসে?
মাসিপিসিদের কোলে-কাঁখে থাকে চালের বস্তা।
এই মাসিপিসিরা চাল বিক্রির উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে আসে শহরের বাজারে।
একমুঠো রোজগার বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
‘একমুঠো রোজগার’ বলতে কবি অতি যৎসামান্য রোজগারকে বুঝিয়েছেন। এইরকম রোজগারের দ্বারা সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
ঘুমপাড়ানি ছড়ার ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিদের সাথে জয় গোস্বামীর কবিতায় মাসিপিসিদের কোনো পার্থক্য খুঁজে পাও কি? বিশ্লেষণ করো।
ঘুমপাড়ানি ছড়ার ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিদের জগৎ স্বপ্নময়, রোমান্টিক। তারা খোকার চোখে ঘুমের আবেশ এনে দেয়। কিন্তু জয় গোস্বামীর কবিতায় উল্লিখিত মাসিপিসিদের জগৎ কঠোর বাস্তবতাপূর্ণ, দুঃখদারিদ্র্যময়। তারা নিজের চোখের ঘুমকে দূরে সরিয়ে রেখে শহরে ছুটে আসে কিছু পয়সা রোজগারের আশায়। স্বপ্নময়তা বা রোমান্টিকতা তাদের ভাগ্যে জোটে না।
এই কবিতায় কবি ‘মাসিপিসি’ চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মহিলাদের জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। ভোরের আলো ফোটার আগেই, ঘুমের ঘোর কাটানোর আগেই শুরু হয় তাদের দিনের কাজ। পরিবারের ভার বহন করে, ক্ষুধার অন্ন জোগাড়ের জন্য তারা লড়াই করে যান প্রতিদিন। ট্রেনে ওঠার আগে-পরে নানা বাধার সম্মুখীন হলেও থামেন না তারা। বছরের পর বছর, তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসে না।
‘মাসিপিসি’ কেবল একটি চরিত্র নয়, বরং সমাজের অসংখ্য নারীর প্রতীক। তাদের ত্যাগ, সংগ্রাম এবং অদম্য মনোবল আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা।
এই কবিতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি আমাদের সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। তাদের জীবনের কষ্টগুলো সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।