অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পল্লীসমাজ – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পল্লীসমাজ অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে পল্লীসমাজ অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় পল্লীসমাজ অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই পল্লীসমাজ অধ্যায়ের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “পল্লীসমাজ” উপন্যাসের একাদশ পরিচ্ছেদ “পল্লীসমাজ” শিরোনামে নির্বাচিত হওয়ার পেছনে লেখকের গভীর ভাবনার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। কেবলমাত্র একটি চরিত্র বা ঘটনার উপর নির্ভর না করে, বরং পল্লিজীবনের বহুমুখী চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে এই শিরোনামটি অসাধারণভাবে সার্থক হয়ে উঠেছে।

নির্বাচিত অংশে বেণী ঘোষাল, যতীন, রমা, রমেশ, আকবর প্রভৃতি চরিত্রের মাধ্যমে পল্লিসমাজের বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। নির্দয় জমিদার বেণী ঘোষাল, স্বার্থপর প্রজা যতীন, দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন বোন রমা, উদারচেতা জমিদার রমেশ, সৎ ও নিষ্ঠাবান সর্দার আকবর – এই সকল চরিত্রের মিথস্ক্রিয়া পল্লিসমাজের জটিল বাস্তবতাকে তুলে ধরে।

শুধু চরিত্রের মাধ্যমেই নয়, বরং এই অংশে জমিদার-প্রজার মধ্যে শোষণ-নিপীড়ন, গ্রামের অসহায় মানুষের দুর্দশা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষের মহানুভূতি ও সহযোগিতা – এই সকল দিকও ফুটে উঠেছে।

এই সকল দিক বিবেচনা করলে, “পল্লীসমাজ” শিরোনাম কেবল একটি চরিত্র বা ঘটনার বর্ণনা নয়, বরং পল্লিজীবনের বহুমুখী রূপের প্রতিফলন। এই শিরোনাম পাঠকের মনে পল্লি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে এবং তাদের গল্পের গভীরে প্রবেশ করতে উৎসাহিত করে।

সুতরাং, “পল্লীসমাজ” শিরোনাম কেবল একটি নামের চেয়ে অনেক বেশি। এটি পল্লিজীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে এবং পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। শরৎচন্দ্রের সৃজনশীল প্রতিভা ও গভীর পর্যবেক্ষণশক্তির পরিচয় এই শিরোনামে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

পল্লীসমাজ – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

নইলে আর ব্যাটাদের ছোটোলোক বলেচে কেন? – বক্তা কে? এই উক্তির মধ্যে দিয়ে বক্তার চরিত্রের কী পরিচয় পাও?

প্রখ্যাত কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসের নির্বাচিত অংশ (একাদশ অধ্যায়) ‘পল্লীসমাজ’ গদ্যে বেণী ঘোষাল এই কথা বলেছে।

তারিণী ঘোষালের পুত্র রমেশের দ্বারস্থ হয় অসহায় গ্রামবাসীবৃন্দ। অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে তাদের জমির ফসল নষ্ট হওয়ার মুখে। বাঁধ কেটে না দিলে ফসল রক্ষা করা সম্ভব নয়। এই বাঁধ ঘোষাল ও মুখুয্যেদের। রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়া রমেশ গ্রামবাসীদের অসহায় অবস্থার কথা অনুভব করে জ্যেষ্ঠ বেণী ঘোষালের শরণাপন্ন হয়। বেণী ঘোষাল শ-তিনেক টাকা ক্ষতি করে বাঁধ কাটতে দিতে নারাজ, কারণ এর পাশেই তাদের জলাভূমিতে প্রচুর মাছ আছে। নানানভাবে পল্লিদরদি রমেশ তাকে গ্রামবাসীদের অসহায়তার কথা বোঝাতে চায়। নির্দয় জমিদার বেণী ঘোষালের বক্তব্য-সে তার নিজ লাভলোকসানই দেখবে। গরিবদের কী অবস্থা হতে পারে তা তার ভাবার কথা নয়। সামান্য যা কিছু আছে জমিদার হিসেবে তা বর্ধিতকরণের উপর সে জোর দেবে।

সমগ্র ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যায় বেণী ঘোষাল একজন নির্দয়, অর্থপিশাচ, ভাবলেশহীন, স্বার্থান্ধ জমিদার। প্রকৃত জমিদারের কাছে প্রজাবৃন্দ সন্তানতুল্য, কিন্তু এখানে দেখা যায় জাতধর্ম নিয়ে বেণী ঘোষাল এতই সচেতন যে, গ্রামবাসীর প্রাণের চেয়ে নিজের জমিদারি রক্ষা তার কাছে প্রধান হয়ে উঠেছে।

বেণী, রমা ও রমেশ – চরিত্র তিনটির তুলনামূলক আলোচনা করো। সেইসঙ্গে এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে কোন্ চরিত্রটি তোমার সবথেকে ভালো লেগেছে এবং কেন তা জানাও।

কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন দরদি শিল্পী। পল্লিজীবনে পল্লিবাসীদের স্বার্থান্ধতা, রাজনীতি, ঘরোয়া বিবাদকে সামনে রেখেই তিনি লিখেছিলেন ‘পল্লীসমাজ’। সেই সমাজের প্রেক্ষাপটেই উঠে এসেছে ঘোষাল পরিবারের দুটি চরিত্র – বেণী ও রমেশ। বেণী রমেশের জ্যাঠার ছেলে। উভয়েই কুঁয়াপুরের জমিদার। কিন্তু মানসিকতার দিক থেকে একে অপরের বিপরীত। গদ্য আলোচনাতেই তা পরিস্ফুট হয়।

অবিরাম বৃষ্টিপাতের পর অসহায় দরিদ্র গ্রামবাসী যখন ছোটোবাবু রমেশের দ্বারস্থ হয় তখন তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সে উদ্‌গ্রীব হয়ে ওঠে। ঠিক এই অবস্থায় বেণী ঘোষাল এমন নিশ্চুপ থাকে যা প্রমাণ করে জমিদার হলেও প্রজাদের প্রতি তার কোনো কর্তব্যবোধ নেই। জমিদারির লাভলোকসানের অঙ্ক কষতেই সে ব্যস্ত। রমেশ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এ কথা শোনা মাত্রই বেণী ঘোষালের শরণাপন্ন হয়, কিন্তু তার প্রজাদের প্রতি নির্দয় উক্তি রমেশকে ক্ষিপ্ত ও বিব্রত করে তোলে। প্রজাদের জমির পাশের বাঁধ যেহেতু ঘোষাল, মুখুয্যে উভয়েরই তখন সে তার বাল্যসখী যদু মুখুয্যের বিধবা কন্যা রমার কাছে গিয়ে গ্রামবাসীদের অবস্থা জানায়। বোঝে এ ঘটনা রমার অজানা নয়, কিন্তু সেও অর্থক্ষতি স্বীকারে রাজি হয় না। রমার কাছ থেকে এই ব্যবহার রমেশের কাছে একেবারেই অনভিপ্রেত ছিল। রমা তার ভাই যতীনের সম্পত্তির রক্ষাকর্ত্রী। সুতরাং সেসব দিক বিবেচনা করেই সে রমেশের প্রস্তাবে রাজি হয় না। তা ছাড়াও যদু মুখুয্যে ও তারিণী ঘোষালের সম্পর্ক চিরদিনই খারাপ ছিল। অতীত কথা এবং বেণী ঘোষালের কথা চিন্তা করে সে এই প্রস্তাবে সায় দেয় না। অন্যদিকে রমেশ গ্রামবাসীকে এই চরম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এক হিন্দুস্থানি লাঠিয়াল নিয়ে বাঁধ কাটতে বেরিয়ে পড়ে। অনর্থ ঘটতে চলেছে এই আশঙ্কায় রমা আকবর সর্দারের সাহায্য নিয়ে বাঁধরক্ষা করতে চাইলেও পরাস্ত হয়। রমেশের আন্তরিকতা, সাহস, গ্রামবাসীর প্রতি ভালোবাসা আকবরকে মুগ্ধ করে। তাই আহত হয়েও সে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে চায় না। বেণী ঘোষালও দুজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। প্রকাশ্যে না হলেও রমা গোপনে রমেশের এই সাহসিকতা ও আন্তরিকতাকে শ্রদ্ধা করে।

রমেশ এই গদ্যের অন্যতম চরিত্র। ‘মানুষ’ কথাটির অর্থ মান এবং হুঁশ যার আছে। জাত, ধর্ম, ঐশ্বর্যের জোরে মানুষ কখনও শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। রমেশ চরিত্রটি তার মানবিকতার কারণেই আমার কাছে প্রিয়। জমিদারি রক্ষার চেয়েও সন্তানতুল্য প্রজাসমূহ তার কাছে বড়ো হয়ে উঠেছিল। তাই তাদের রক্ষা করতে গিয়ে বেণী ঘোষাল ও রমার কাছে যখন সে অপমানিত হয় তখন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে একক প্রচেষ্টায় বাঁধ কেটে প্রজাদের সে আসন্ন বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে প্রকৃত মানুষের পরিচয় দেয়। সেই আহত আকবর সর্দারও তার বিরোধিতা করে অভিযোগ জানাতে থানায় যেতে চায়নি। প্রকৃত মানবিকতার মাধ্যমে সে পল্লিবাসীর মন জয় করেছিল।

উপন্যাসের নামে পাঠ্যাংশটির নামকরণও ‘পল্লীসমাজ’ রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নামকরণটি সুপ্রযুক্ত হয়েছে কি না সে সম্পর্কে মতামত জানাও।

কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাসের নির্বাচিত অংশ (একাদশ পরিচ্ছেদ)-এর নামকরণ করা হয়েছে ‘পল্লীসমাজ’। মূলত নামকরণ হয় চরিত্রনির্ভর, কাহিনি-নির্ভর, গুঢ়ার্থকেন্দ্রিক।

নির্বাচিত বেশ কয়েকটি চরিত্রের মাধ্যমে পল্লিজীবনের কলহ, বিবাদ, নীচতা, ষড়যন্ত্র ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে জমিদার শ্রেণির শোষণ, প্রজাকুলের প্রতি চরম অসহযোগিতার কথাও প্রকাশিত হয়েছে। পল্লিসমাজের বুক থেকেই উঠে এসেছে বেণী ঘোষালের মতো নির্দয়, অর্থপিশাচ জমিদার এবং তোষামোদকারী হালদার। অন্যদিকে যদু মুখুয্যের বিধবা কন্যা রমা যার কাছে ভাই যতীনের সম্পত্তি রক্ষাই মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। রমেশ জমিদার হয়েও সুশিক্ষিত এবং উচ্চমনের অধিকারী। এই কারণেই শত প্রতিকূলতা, অসহযোগিতা সত্ত্বেও গ্রামের অসহায় দুঃখী মানুষের পাশে থেকে তাদের বিপদে সাহায্য করে অনাহারের হাত থেকে রক্ষা করেছে। আকবর পাঁচ গ্রামের সর্দার হয়েও রমার নির্দেশ অনুযায়ী বাঁধ ভাঙতে বাধা দিতে গিয়ে রমেশের মহানুভবতার পরিচয় পায়, তাই তার লাঠির আঘাতে আহত হয়েও সে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে নারাজ হয়। বেণী ঘোষালের স্বার্থপূরণ হয় না।

আমার মনে হয় প্রতিটি চরিত্রই একে অপরকে চিত্রিত করতে সাহায্য করেছে। কেউ এককভাবে প্রাধান্য পায়নি। পল্লিসমাজের বুক থেকে উঠে এসেছে এই বর্ণময় চরিত্রগুলি। সেই চিন্তাধারা থেকেই পটভূমির আশ্রয়ে ‘পল্লীসমাজ’ নামটি যথার্থই বলা যায়।

পল্লীসমাজ পাঠ্যাংশে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার কোনো নিদর্শন পেয়ে থাকলে সে সম্পর্কে আলোচনা করো। এ ধরনের ব্যবস্থার সুফল ও কুফল সম্পর্কে আলোচনা করো।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দরদি কথাশিল্পী। পল্লিসমাজের জাত, ধর্ম, বৈভব নিয়ে বিভিন্ন বাসিন্দাদের মধ্যে কলহ-বিবাদ মনুষ্যত্বের অবক্ষয় ঘটিয়েছে। মানুষের লেখক শরৎচন্দ্র সেই ত্রুটিবিচ্যুতি সম্পর্কে পাঠক সমাজকে সচেতন করতেই তার কলম ধরেছেন।

জমিদারি প্রথা চিরকালই একশ্রেণির মানুষের হাত শক্ত করেছে। দরিদ্র প্রজাদের উপর শোষণ ও শাসন চালিয়ে কালক্রমে তারা বহু ভূসম্পত্তির অধিকারী হয়েছেন। এককথায় একদল পরিশ্রম করেছে, অপর দল সেই পরিশ্রমের ফসল ভোগ করেছে। বেণী ঘোষাল সেই জমিদারদেরই প্রতিনিধি, যার কাছে প্রাণের চেয়ে অর্থের মূল্য অনেক।

দ্বিতীয় শ্রেণির জমিদাররা ছিলেন প্রজাহিতৈষী। রমেশ রুরকি কলেজে পাঠরত ছেলে। অসহায় গ্রামবাসী যখনই তার কাছে উপস্থিত হয়েছে তখনই সে তাদের অবস্থা উপলব্ধি করতে পেরেছে। তাদের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। জমিদারি বা সামন্তপ্রথায় একদল জমিদার তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রজাশোষণ চালিয়েছে সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির সহযোগিতায়। আর সচেতন ও শিক্ষিত জমিদার অভিভাবকের মতো পাশে থেকে নিরাপত্তা দিয়েছেন, দুঃখকষ্ট বুঝেছেন আর এরই মাধ্যমে গড়ে উঠেছে জমিদার ও প্রজার মধ্যে সুসম্পর্ক। রমেশ এই জমিদারদের অন্যতম প্রতিনিধি বলা যায়।

সুতরাং বলা যায়, সামন্ত্রতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কুফল হিসেবে ছিল প্রজাশোষণ এবং সুফল হিসেবে বলা যায় কৃষক ও জমিদারদের মধ্যে যে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে উঠত তা পরবর্তী পর্যায়েও থেকে গিয়েছিল। কৌশলী জমিদাররা বহু ক্ষেত্রে এই কৃষকদের অশিক্ষার সুযোগে মিথ্যা দেনায় তাদের জড়িয়ে দিতেন। গরিব প্রজারা ফসল নষ্ট হওয়ায় বহু সময় ধার নিতেন, যা তারা জমিদারের কৌশলে শোধ করতে পারতেন না। ফলে বহু ক্ষেত্রে তারা জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়তেন। রবীন্দ্রনাথের কথায় বলা যায়, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

সন্ধি করো –

সন্ধি বিচ্ছেদসন্ধিবদ্ধ পদ
বৃষ্ + তিবৃষ্টি
অতি + অন্তঅত্যন্ত
সম্ + বরণসংবরণ
অন্ + আত্মীয়অনাত্মীয়
কাঁদ্ + নাকান্না
এক + অন্তএকান্ত

নীচের শব্দগুলির সন্ধি বিচ্ছেদ করো –

নিরুত্তর, নমস্কার, তারকেশ্বর, যথার্থ, প্রত্যাখ্যান, আশ্চর্য, তদবস্থা।

সন্ধিবদ্ধ পদসন্ধি বিচ্ছেদ
নিরুত্তরনিঃ + উত্তর
নমস্কারনমঃ + কার
তারকেশ্বরতারক + ঈশ্বর
যথার্থযথা + অর্থ
প্রত্যাখ্যানপ্রতি + আখ্যান
আশ্চর্যআ + চর্য
তদবস্থাতৎ + অবস্থা

নীচে দেওয়া শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করো –

অপরাহ্ণ, অকস্মাৎ, আহ্বান, দক্ষিণ, উচ্ছিষ্ট, উত্তপ্ত, বিস্ফারিত, দীর্ঘশ্বাস, অশ্রুপ্লাবিত, হিন্দুস্থানি, অস্বচ্ছ।

প্রদত্ত শব্দদল বিশ্লেষণমুক্ত দল/রুদ্ধ দল
অপরাহ্ণঅ-প-রান্-হঅ – মুক্ত দল; প – মুক্ত দল; রান্ – রুদ্ধ দল; হ – মুক্ত দল।
অকস্মাৎঅ – কস্ – সাত্অ – মুক্ত দল; কস্ – রুদ্ধ দল; সাত্ – রুদ্ধ দল।
আহ্বানআ – হ – বান্আ – মুক্ত দল; হ – মুক্ত দল; বান্ – রুদ্ধ দল।
দক্ষিণদখ্ – খিন্দখ্ – রুদ্ধ দল; খিন্ – রুদ্ধ দল।
উচ্ছিষ্টউচ্ – ছিস্ – টউচ্ – রুদ্ধ দল; ছিস্ – রুদ্ধ দল; ট – মুক্ত দল।
উত্তপ্তউত্‌ – তপ্ – তউত্‌ – রুদ্ধ দল; তপ্ – রুদ্ধ দল; ত – মুক্ত দল।
বিস্ফারিতবিস্ – ফা – রি – তবিস্ – রুদ্ধ দল; ফা – মুক্ত দল; রি – মুক্ত দল; ত – মুক্ত দল।
দীর্ঘশ্বাসদীর্ – ঘোস্ – শ্বাস্দীর্ – রুদ্ধ দল; ঘোস্ – মুক্ত দল; শ্বাস্ – রুদ্ধ দল।
অশ্রুপ্লাবিত অশ্ – রু – প্লা – বি – তঅশ্ – রুদ্ধ দল; রু – মুক্ত দল; প্লা – মুক্ত দল; বি – মুক্ত দল; ত – মুক্ত দল।
হিন্দুস্থানিহিন্ – দুস্ – থা – নিহিন্ – রুদ্ধ দল; দুস্ – রুদ্ধ দল; থা – মুক্ত দল; নি – মুক্ত দল।
অস্বচ্ছঅ – সচ্ – ছঅ – মুক্ত দল; সচ্ – রুদ্ধ দল; ছ – মুক্ত দল।

নীচে দেওয়া ব্যাসবাক্যগুলিকে সমাসবদ্ধ পদে পরিণত করে কোনটি কী ধরনের সমাস তা নির্ণয় করো –

ব্যাসবাক্যসমাসবদ্ধ পদসমাসের শ্রেণি
জল ও কাদাজলকাদাদ্বন্দ্ব
নয় আহতঅনাহতনঞতৎপুরুষ
ত্রি অধিক দশত্রয়োদশমধ্যপদলোপী কর্মধারয়
বেগের সহিত বর্তমানসবেগেসহার্থক বহুব্রীহি
মড়ার জন্য কান্নামড়াকান্নানিমিত্ত তৎপুরুষ।
চণ্ডীপুজোর জন্য তৈরি যে মণ্ডপচণ্ডীমণ্ডপমধ্যপদলোপী কর্মধারয়।

নীচের বাক্যগুলিকে নির্দেশ অনুযায়ী পরিবর্তন করো –

কথাটা রমেশ বুঝিতে পারিল না। (যৌগিক বাক্যে)

কথাটা রমেশ শুনিল কিন্তু বুঝিতে পারিল না।

এ বাড়িতে আসিয়া যখন প্রবেশ করিল তখন সন্ধ্যা হয় হয়। (সরল বাক্যে)

এ বাড়িতে আসিয়া প্রবেশ করামাত্রেই সন্ধ্যা হয় হয়।

ওরা যাবে কি? (নির্দেশক বাক্যে)

ওরা যাবে না।

বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দিবারও তাহার প্রবৃত্তি হইল না। (হ্যাঁ বাচক বাক্যে)

বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হইতে সে নিবৃত্ত রহিল।

তুমি নীচ, অতি ছোটো। (যৌগিক বাক্যে)

তুমি নীচ এবং অতি ছোটো।

পথে আর এতটুকু কাদা পাবার জো নেই দিদিমা। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)

পথে কি আর এতটুকু কাদা পাবার জো আছে দিদিমা?

মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ থাকায় এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই। (জটিল বাক্যে)

যেহেতু মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ তাই এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই।

নীচে দেওয়া শব্দদুটিকে দুটি আলাদা আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্যরচনা করো –

যাত্রা, বাঁধ

শব্দবাক্যরচনা
যাত্রাআমাদের হিমালয় যাত্রা হরিদ্বার থেকে শুরু হল।
আজ নটী বিনোদিনী যাত্রা অহীন্দ্রমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে।
বাঁধচোরটাকে ল্যাম্পপোস্টে বাঁধ
নদীর বাঁধ ভেঙে গেলে গ্রামবাসীরা বিপদে পড়বে।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “দেবদাস” উপন্যাসের এই অংশে আমরা দেখতে পাই, রমেশ চণ্ডীমণ্ডপ একজন সাহসী ও ন্যায়পরায়ণ যুবক। জমিদার বেণীবাবুর অত্যাচারের বিরুদ্ধে গ্রামের কৃষকদের পক্ষ নিয়ে তিনি বাঁধ কেটে মাঠের ধান রক্ষা করেন। রমার বাধা সত্ত্বেও তিনি তার নীতি থেকে সরে যান না। এ ঘটনায় প্রৌঢ় মুসলমান আকবরও রমেশের সাহস ও ন্যায়বোধের প্রশংসা করে। রমার মনেও রমেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জাগ্রত হয়।

এই অংশটি আমাদের শেখায় যে, সত্য ও ন্যায়ের পথে চললে পথে অনেক বাধা আসতে পারে, তবুও আমাদের সাহসের সাথে এগিয়ে যেতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ভয় পেলে চলবে না। রমেশ চণ্ডীমণ্ডপ আমাদের জন্য একজন অনুপ্রেরণা, যে আমাদের ন্যায়পরায়ণ ও সাহসী হতে শেখায়।

Share via:

মন্তব্য করুন