অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পরাজয় – শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পরাজয় অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে পরাজয় অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় পরাজয় অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই পরাজয় অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই গল্পে, আমরা রঞ্জন সরকার নামক একজন ফুটবলারের জীবনের অন্তিম লগ্নে ঘটে যাওয়া মানসিক সংঘাতের সাক্ষী। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যে ক্লাবের সাথে তার সুখ-দুঃখের সম্পর্ক ছিল, যে ক্লাবের জন্য ঘাম ঝরিয়েছিল রঞ্জন, সেই ক্লাবের কর্মকর্তারা তাকে নববর্ষের বারপূজার দিনেও আমন্ত্রণ জানায়নি। গত বছর থেকেই তার প্রতি উদাসীনতা অনুভব করলেও, রঞ্জন কখনোই ভাবতে পারেননি যে এমন অপমানের শিকার হতে হবে তাকে।

মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করে রঞ্জন অন্য ক্লাবে যোগদান করে। সে প্রমাণ করতে চায় যে সে এখনও খেলায় ফুরিয়ে যায়নি, তার দক্ষতা এখনও অক্ষুণ্ণ। রঞ্জনের দলবদলের খবর শুনে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

মরশুম শুরু হলে, রঞ্জনের পুরোনো দলের সাথে মুখোমুখি হয় তার নতুন দল। প্রায় লক্ষাধিক দর্শকের সামনে রঞ্জনের গোলে হেরে যায় রঞ্জনের পুরোনো ক্লাব। রঞ্জন যথাযথ জবাব দিতে পেরেছেন অপমানের, অবহেলার।

কিন্তু সাজঘরে বিশ্রাম নিতে নিতে রঞ্জনের মনে বিষাদ নেমে আসে। সবাই আনন্দ করছে, কিন্তু রঞ্জন আনন্দে ভাগ নিতে পারছে না। যে ক্লাবটি তার কাছে মা-এর মতো সম্মানিত ছিল, যে ক্লাবের জন্য আজ তার নাম-খ্যাতি, সেই ক্লাব আজ তারই গোলে পরাজিত।

অপমানের জবাব দিতে গিয়ে রঞ্জন তার ভালোবাসার ক্লাবকেই পরাজিত করেছে। এই পরাজয় সে মেনে নিতে পারছে না, কারণ এটি তার নিজেরও পরাজয়। আনন্দের পরিবর্তে তার মনে গভীর বেদনাবোধ জাগ্রত হয়েছে।

এই গল্পটি রঞ্জনের মানসিক সংঘাতকে সুন্দরভাবে তুলে ধরে। একদিকে অপমানের জ্বালা, অন্যদিকে প্রিয় ক্লাবের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ব – এই দুইয়ের টানাপোড়েনে রঞ্জন ভেঙে পড়ে।

রঞ্জন সরকার একজন ফুটবল খেলোয়াড়। তার ক্লাবের বারপুজোর দিন গাড়ি না আসায় এবং ক্লাব কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সে অপমানিত হয়। এরপর সে স্বপন দা’র ক্লাবে যোগ দেয় এবং নতুন জার্সি গায়ে পুরোনো ক্লাবের বিরুদ্ধে গোল করে জয়ের প্রতিশোধ নেয়। কিন্তু জয়ের পর রঞ্জন রহস্যজনকভাবে কাঁদতে থাকে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পরাজয়

পরাজয় অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

বাংলার ক্রীড়া সাংবাদিকতার জগতে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব হলেন শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন ক্রীড়াপ্রেমী হিসেবে সকলের কাছেই তিনি পরিচিত। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বিদ্যাশিক্ষা শুরু হয় টাকী সরকারি বিদ্যালয়ে। পরবর্তীকালে টাকী সরকারি মহাবিদ্যালয় ও কলকাতার সিটি কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ‘দৈনিক বসুমতি’ ও ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় ক্রীড়াসম্পাদকরূপে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি একজন দক্ষ ক্রিকেটারও ছিলেন সমসাময়িক সময়ে। কলকাতার ‘এরিয়ান্স’ ক্লাবে সাফল্যের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন। ‘যুগান্তর’ পত্রিকার বার্তাসম্পাদক হিসেবেও তিনি বহুদিন কাজ করেছেন। বর্তমানে ‘শুকতারা’ ও ‘নবকল্লোল’ পত্রিকার সম্পাদনা বিভাগের দায়িত্বভার নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে চলেছেন। তাঁর লেখা প্রথম গ্রন্থ হল ‘দেরারি’ উপন্যাস। খেলাধুলার জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে উক্ত জগতের বিষয়বস্তু নিয়ে অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – ‘ক্রিকেট খেলার আইনকানুন’, ‘ক্লাবের নাম মোহনবাগান’, ‘ক্লাবের নাম ইস্টবেঙ্গল’, ‘মারাদোনা মারাদোনা’, ‘ক্রিকেট খেলা শিখতে হলে’, ‘ক্রিকেট মাঠের বাইরে’, ‘পাঁচ ক্রিকেটের নক্ষত্র’, ‘ফুটবলের পাঁচ নক্ষত্র’, ‘রিংয়ের রাজা আলি’ ইত্যাদি। তার রচনার সহজসরল ও প্রাঞ্জল ভাষা প্রয়োগ পাঠকদের তৃপ্তি দেয়।

পরাজয় অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

সমাজে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের প্রয়োজন পেশার। কিন্তু পাশাপাশি মনোগত দিক থেকে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন নেশার। নেশার সঙ্গে মিশে থাকে আমাদের অন্তরের ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার স্থানটি থেকে যখন আমরা প্রতারিত হই, আশাভঙ্গের বেদনায় তখন প্রতিশোধ গ্রহণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। সাময়িকভাবে সেই প্রতিশোধস্পৃহা হয়তো আমরা চরিতার্থ করতে পারি, কিন্তু বিবেকের দংশনে আমাদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। এই উপলব্ধির জন্যই ‘পরাজয়’ নামক গদ্যাংশটির অবতারণা।

পরাজয় অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

রঞ্জন একজন দক্ষ ফুটবলার। ১৫ বছর ধরে যে ক্লাবের জন্য মাঠে ঘাম ঝরিয়েছে সে, নববর্ষের বারপূজায় সেই ক্লাবই চরমভাবে অবহেলা করে তাকে কোনোরকম আমন্ত্রণ না জানিয়ে। প্রতি বছর এমন দিনে উপস্থিত থাকার জন্য কত অনুরোধ আসে, ক্লাবের গাড়ি এসে নিয়ে যায়-আর এ বছর তার প্রতি চরম উদাসীন ক্লাব! যেন মেনেই নিতে পারে না রঞ্জন ক্লাবের কর্মকর্তাদের এমন আচরণ। গত বছর থেকেই সে বুঝতে পারছিল যে, তার প্রতি ক্লাবের উন্মাদনা অনেকাংশেই হ্রাস পেয়েছে। দারুণ এক মানসিক অস্থিরতা তাকে কুরে কুরে খায়। কিন্তু এই ক্লাবে থাকার জন্যই কতবার অন্য ক্লাবের বিরাট অর্থের প্রলোভন ত্যাগ করেছে সে। প্রাত্যহিক কাজে মনোনিবেশ করতে পারে না রঞ্জন। মাঠে যাওয়ার জন্য কেউ অন্তত একটা ফোনও করল না তাকে-ভাবতেই পারে না সে। সে অনুভব করে যে ওকে বুঝিয়ে দেওয়া হল-ওকে আর ক্লাবের প্রয়োজন নেই। সারাটা দিন বাড়িতে ছটফট করেই কাটিয়ে দেয় সে। ধীরে ধীরে মনের মাঝে জমে ওঠে তীব্র ক্ষোভ। সেভাবে খেলার মাঠেই প্রমাণ দিতে হবে যে সে ফুরিয়ে যায়নি এখনও। তবে ক্লাব ছেড়ে দিতে হবে ভাবলেই আঁতকে ওঠে রঞ্জনের মন। যে ক্লাবের জার্সিকে মায়ের মতো ভালোবাসে, যা মান প্রতিপত্তি দিয়েছে তাকে-কীভাবে তাকে ত্যাগ করবে! ছটফট করতে থাকে রঞ্জন। পরের দিন অফিসে গিয়ে নানা মানুষের নানা প্রশ্নের সামনে পড়তে হয় তাকে। অফিস থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির নির্জনতায় একটু শান্তি খুঁজে পাওয়ার আশায় ছুটে যায় গঙ্গার ধারে। পাখির ডাক, গঙ্গার ঢেউ, কোকিলের সুরে ক্ষণিকের জন্য শান্ত হয় তার মন। তবে ক্লাবের কথা মনে পড়তেই বুকের মাঝে যন্ত্রণাটা অনুভব করে সে বহু কষ্টে। সে স্থির করে অন্য ক্লাবে যোগ দিয়ে, অপমানের জবাব দেবে রঞ্জন।

দু-দিন অপেক্ষা করে রঞ্জন তৃতীয় দিন রাতে ফোন করে অন্য বড়ো দলের কর্মকর্তাদের কাছে। তারা সুযোগের সদব্যবহার করে রঞ্জনকে দলবদলের প্রথম দিনেই নিজেদের দলে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তবে রঞ্জন স্পষ্টভাবে জানায় যে, অর্থের জন্য নয়-উপযুক্ত সম্মানটুকুই সে আশা করে। শত প্রলোভনেও যে কখনও দল বদলের কথা ভাবেনি, সেই রঞ্জন সরকার একরাশ অপমান মাথায় নিয়ে সরে এল তার ভালোবাসার ক্লাবটি থেকে। রঞ্জন সরকারের দল ছাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে খবরের কাগজে শুরু হয়ে গেল নানা গবেষণা। রঞ্জনকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে পুরোনো ক্লাবের সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখালেন ক্লাব তাঁবুতে। এবার টনক নড়ল ক্লাবকর্তাদের, তারা ছোটাছুটি শুরু করলেন, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সকলে যখন হন্যে হয়ে খুঁজছে তাকে, তখন রঞ্জন বসে আছেন সিকিম-এর মাউন্ট পাণ্ডিম হোটেলের ঘরে।

শুরু হল নতুন মরশুম। শুরু থেকেই নতুন ক্লাবের হয়ে দুরন্ত খেলতে লাগল রঞ্জন। সে যে ফুরিয়ে যায়নি সে-কথা প্রমাণ করার তাগিদ তাকে পেয়ে বসেছে তখন। দেখতে দেখতে এসে গেল অগ্নিপরীক্ষার দিন। দুই প্রধানের খেলা দেখার জন্য সেদিন যুবভারতী স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি। খেলা শুরু হলে দেখা গেল রঞ্জনকে সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে তার পুরোনো ক্লাবের ডিফেন্ডাররা কিন্তু সহ-খেলোয়াড়দের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছে না রঞ্জন। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার চেহারা সম্পূর্ণ বদলে গেল। রঞ্জনের পুরোনো দল রক্ষণাত্মক মনোভাব ছেড়ে আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ল কিন্তু তাতে সুবিধা হল রঞ্জনের, কারণ এখন সে অনেকটা ফাঁকা স্থান পেল নিজের মতো খেলার। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুযোগের সদব্যবহার করে ব্যাকভলির মাধ্যমে বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দিল সে। রঞ্জন প্রমাণ করল যে, সে ফুরিয়ে যায়নি। সহ-খেলোয়াড়রা জয়ের আনন্দে আত্মহারা কিন্তু রঞ্জন সেই আনন্দে অংশ নিতে পারল না। সে অনুভব করল ১৫ বছর যে দলের হয়ে ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছে, আজ সেই ক্লাবকেই হারতে হল তারই গোলে। অপমানের জবাব হয়তো দেওয়া গেল, কিন্তু মনের দিক থেকে তো তার পরাজয়ই হল। অন্য কেউ এ কথা জানবে না কিন্তু নিজের হৃদয়কে তো ফাঁকি দেওয়া যায় না। তাই পুরোনো ক্লাবকে পরাজিত করে রঞ্জন সরকার নিজেই পরাজিত হল।

পরাজয় অধ্যায়ের নামকরণ

সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল নামকরণ। নামকরণের মাধ্যমেই রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগাম ধারণা তৈরি হয় পাঠকের মনে। নামকরণ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন – চরিত্রধর্মী, বিষয়ধর্মী, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি। এবার দেখা যাক শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পরাজয়’ গল্পের নামকরণটি কতখানি সার্থকতা লাভ করেছে।

আলোচ্য গল্পটিতে রঞ্জন সরকার নামক একজন ফুটবলারের খেলোয়াড় জীবনের অন্তিম লগ্নে ঘটে যাওয়া মানসিক সংঘাতের পরিচয় আমরা পাই। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রঞ্জন যে ক্লাবের সুখে-দুঃখে নিবিড়ভাবে যুক্ত রেখেছে নিজেকে, যে ক্লাবের জন্য ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছে-সেই ক্লাবের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চরমভাবে অপমানিত হয়েছে সে। নববর্ষের বারপূজার দিনে ক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে একবারের জন্যও আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি কেউ। গত বছর থেকেই তার প্রতি উদাসীন ব্যবহার শুরু হয়েছিল, সেটা অনুভব করেছিল রঞ্জন, তবে সে ভাবতে পারেনি যে এমনভাবে তাকে অবহেলা-অপমান করবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ! মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে সে একসময় যোগ দেয় অন্য ক্লাবে, কারণ সে যে ফুরিয়ে যায়নি, এখনও যে তার দক্ষতা বর্তমান, সেটা প্রমাণ করে দেবে সে, এভাবে পরাজয় কিছুতেই মেনে নেওয়া যাবে না। রঞ্জনের দলবদলের খবরটা প্রচারিত হবার পরেই ক্লাবের টনক নড়ে, তারা চেষ্টা করে তাকে ফিরিয়ে আনতে কিন্তু ব্যর্থ হয়। তারপর মরশুম শুরু হয়, একসময় চলে আসে মাহেন্দ্রক্ষণ-পুরোনো দলের মুখোমুখি হয় রঞ্জনদের দল। প্রায় লক্ষাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে রঞ্জনের গোলে পরাজিত হল সেদিন রঞ্জনের পুরোনো ক্লাব। রঞ্জন যথাযোগ্য জবাব দিতে পেরেছে অপমানের, অবহেলার-সে বিজয়ী।

সাজঘরে পৌঁছে বিশ্রাম নিতে নিতে রঞ্জনের মনে বিষাদ উপস্থিত হল। সবাই আনন্দ করছে কিন্তু সে তো আনন্দে যোগ দিতে পারছে না। সে অনুভব করল-যে ক্লাব ছিল তার কাছে মা-এর মতো সম্মাননীয়া, যে ক্লাবের জন্য আজ তার নাম-খ্যাতি-সেই ক্লাব আজ পরাজিত হল তারই গোলে। বুকের মাঝে চরম অস্বস্তি অনুভব করে সে। অপমানের জবাব দিতে গিয়ে সে তো তার ভালোবাসার ক্লাবকেই পরাজিত করেছে। এই পরাজয় তো হৃদয় থেকে সে মেনে নিতে পারছে না। এটা তো তার নিজেরও পরাজয় এতে আনন্দ নেই, আছে গভীর বেদনাবোধ।

এভাবেই গল্পের নামকরণ ‘পরাজয়’ ব্যঞ্জনাবাহী এবং সার্থক হয়ে উঠেছে।

পরাজয় অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

বারপুজো – প্রতি বছর নববর্ষের দিন ফুটবল খেলার মাঠে ক্লাবগুলি গোলপোস্টকে পুজো করে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে যেন তাদের গোলে বিপক্ষ দল বল না ঢোকাতে পারে, একে বলা হয় বারপুজো। রিপোর্ট – প্রতিবেদন। প্রেসিডেন্ট – সভাপতি। সেক্রেটারি – সম্পাদক। রেওয়াজ – রীতি; প্রথা। কোচ – পেশাদার শিক্ষক। পরামর্শ – যুক্তি; আলোচনা। প্রলোভন – লোলুপতা। অফার – দিতে চাওয়া। হাতছানি – হাত নেড়ে ইশারা; ডাকা। অব্যক্ত – প্রকাশ করা হয়নি এমন। অন্তিম লগ্ন – শেষ সময়। চ্যালেঞ্জ – প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বা দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান। জার্সি – একই দলভুক্ত খেলোয়াড়দের একই ধরনের জামা। অবাঞ্ছিত – অকাম্য; চাওয়া হয়নি এমন। নোঙর – শিকল বা কাছির সঙ্গে বাঁধা লোহার অঙ্কুশবিশেষ, এটি জলের নীচে ফেলে জাহাজ-নৌকো প্রভৃতি বেঁধে রাখা হয়। সহকর্মী – একত্রে বা একপ্রকার কর্মকারী। টেনশন – চাপা উত্তেজনা। কল্পনাকল্পনা – অনুমান, আলোচনা। ইতস্তত – সংকোচ বা কুণ্ঠা বোধ করা। আন্তরিকতা – হৃদ্যতা। আত্মত্যাগ – স্বার্থত্যাগ; নিজের লাভ ত্যাগ। নির্ভরযোগ্য – আস্থা রাখা যায় এমন। মর্যাদা – সম্মান; সম্ভ্রম। প্রাপ্য – পাওনা। ম্লান – মলিন; বিষণ্ণ। উল্লাস – পরমানন্দ; হর্ষ। বিস্ময় – আশ্চর্য; চমৎকৃত ভাব বা অবস্থা। হতবাক – বাক্যহারা; অবাক; বিস্মৃত। তুষার – বরফ। মোক্ষম – গুরুতর; সাংঘাতিক। স্টেডিয়াম – ঘোড়দৌড় বা খেলার মাঠ। উদ্দীপনা – উৎসাহ; উত্তেজনা। দ্বিধা – সংশয়। বিব্রত – ব্যতিব্যস্ত; বিপর্যস্ত। সাক্ষী – প্রত্যক্ষদর্শী। চকিতে – হঠাৎ। সাজঘর – যেখানে খেলোয়াড়রা পোশাক পরিবর্তন করে, বিশ্রাম করে। বেদনা – মনস্তাপ; দুঃখ। অভিনন্দন – আনন্দের সঙ্গে গৌরবের স্বীকৃতি জানানো। কণ্ঠা – গলার কাছে। স্ট্রাইকার – ফুটবল খেলায় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় বিশেষ।

আলোচ্য গল্পটি রঞ্জন সরকার নামক একজন ফুটবলারের জীবনের অন্তিম লগ্নে ঘটে যাওয়া মানসিক সংঘাতের একটি নিখুঁত চিত্র তুলে ধরে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যে ক্লাবের জন্য রঞ্জন ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছিলেন, সেই ক্লাব থেকে অপমান ও অবহেলার শিকার হয়ে তিনি ভেঙে পড়েন।

ক্লাবের কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞার জ্বালায় রঞ্জন নতুন ক্লাবে যোগদান করেন। পুরোনো ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে জয়ী হয়ে তিনি অপমানের জবাব দেন।

কিন্তু বিজয়ের আনন্দ রঞ্জনের মনে স্থায়ী হয় না। কারণ, প্রিয় ক্লাবের পরাজয় তার নিজের পরাজয়ের মতো বেদনাদায়ক।

এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে, প্রতিশোধ সর্বদা মনের শান্তি এনে দেয় না। বরং, প্রিয়জনের ক্ষতি, এমনকি পরাজয়ের মাধ্যমেও হলে, ভালোবাসা ও মমত্বকে টিকিয়ে রাখাই জীবনের সত্যিকারের সৌন্দর্য।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer