আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ষট্বিংশ অধ্যায় ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তরগুলোর বিশ্লেষণ করবো। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে এবং শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে।
পরাধীন মানুষের স্বাধীনতা পাওয়ার পথগুলি কী কী?
পরাধীন মানুষ চিরকাল পরাধীনতা বহন করে না। পৃথিবীর রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, বারেবারে মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খলে বাঁধা পড়েছে এবং একসময় সেই দাসত্বের শৃঙ্খল ছিন্ন করে আবার সে পরম স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। মানুষের হারানো স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার পথ মূলত সংগ্রামের। পরাধীনতা দানকারী বৈরী শক্তি যতই প্রবল হোক না কেন, সে অপরাজেয় নয়। কারণ আজ যে শক্তি নমিত, একদিন সে অন্তরের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে জেগে উঠবেই। এই হল জীবননীতি। সুতরাং মানুষের একাগ্র ও একত্র সম্মিলনই পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের এক বিশিষ্ট পথ। স্বাধীনতার সপক্ষে নরম নরম বাণী ও অনুনয়-বিনয়ের কোনো মূল্য নেই। অতএব তীব্র গণসংগ্রাম, প্রবল আন্দোলন, আপামর মানুষের একত্রে জেগে ওঠা এবং রাজনৈতিক অভ্যুত্থান দ্বারাই স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব।
স্বাধীনতা কবিতাটির মধ্যে দুটি ‘পক্ষ’ আছে – ‘আমি-পক্ষ’ আর ‘তুমি-পক্ষ’। এই ‘আমি-পক্ষ’ আর ‘তুমি-পক্ষ’ -এর স্বরূপ বিশ্লেষণ করো। এইক্ষেত্রে ‘সে-পক্ষ’ নেই কেন?
স্বাধীনতা কবিতাটি একটি অনুবাদ কবিতা, যেখানে কবিতার মধ্যে পরাধীন মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও তার স্বরূপ উদ্ঘাটিত হয়েছে। কবিতাটি অনূদিত এবং ভিনদেশি হলেও এর মধ্যে প্রত্যক্ষরূপ লাভ করেছে এই বিষয়টি যে, পৃথিবীর সব পরাধীন মানুষেরই স্বাধীনতার স্বপ্নলালন ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন বাসনা বুঝি এক। কবিতায় স্পষ্টতই দুটি পক্ষের বিমূর্ত উল্লেখ রয়েছে। একটি ‘আমি পক্ষ’, যার প্রবন্তা কবিতার কথক; আর অন্যটি ‘তুমি-পক্ষ’, অর্থাৎ যাদের উদ্দেশে কবিতার বাণী বিঘোষিত হয়েছে।
আমি এই উত্তম পুরষটি কবিতার কথক। যিনি পরাধীন মানবমনের প্রতীক। বক্তা যাকে উদ্দেশ করে কিছু বলতে চাইছেন অর্থাৎ ‘তোমার’ এই সম্বোধনে যাকে উল্লিখিত করেছেন সেও স্বাধীনতাকামী। কথক স্বাধীনতা কিংবা স্বাধীনতাহীনতা সম্পর্কে তাকে সচেতন করতে চাইছেন। এটি মধ্যম পুরুষ।
এখানে ‘সে-পক্ষ’, অর্থাৎ প্রথম পুরুষের অস্তিত্ব নেই। এই পক্ষই সম্ভবত স্বাধীনতা ভোগ করে এবং মানুষকে পরাধীনতা দান করে। বক্তার অভিযোগ এদের বিরুদ্ধেই। কবিতায় এ পক্ষ উহ্য।
সময়ে/সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন – কবিতার মধ্যে উদ্ধৃতিচিহ্নের ভিতরে থাকা কথাটি কার/কাদের কথা বলে তোমার মনে হয়? তারা এধরনের কথা বলেন কেন?
কবিতার মধ্যে উদ্ধৃতিচিহ্নের ভিতরে থাকা কথাটি তাদের, যারা নিরাশাবাদী; যারা ভাবে বেশ তো আছি, যেমন চলছে তেমন চলুক। আসলে মনুষ্যসমাজে এমন একপ্রকার মানুষ থাকে, যারা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সাময়িক সুখকেই বড়ো সুখ বলে মনে করে। দিন চলে গেলেই এদের হয়। এদের মধ্যে প্রতিবাদী-প্রতিরোধী কোনো শক্তি নেই। পরাধীনতায় বা স্বাধীনতাহীনতায় বেঁচে থাকায় যারা সন্তুষ্ট, যারা আত্মসুখী, আজ নয় কাল-করে যাদের দিন চলে, কবিতার কথক এদের আপ্তবাক্যে সন্তুষ্ট নন। তাঁর কাছে আজকের মূল্যই সর্বাধিক। কালের প্রত্যাশায় থেকে ভবিষ্যৎ অন্ধকার করতে চান না তিনি।
তারা এ ধরনের কথা এজন্যই বলে, কারণ তারা নিজেদের বর্তমান অবস্থায় যথেষ্ট সন্তুষ্ট। অবস্থা পরিবর্তনের দ্বারা ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে তারা ভয় পায়।
আগামীকালের রুটি/দিয়ে কি আজ বাঁচা যায় – এখানে ‘আগামীকাল’ আর ‘আজ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
এখানে ‘আগামীকাল’ বলতে দৃঢ় ভবিষ্যৎকে নির্দেশ করা হয়েছে আর ‘আজ’ বলতে নিকট ভবিষ্যৎকে নির্দেশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘আগামীকাল’ হল সেই ভবিষ্যৎ যা আশার আলো বহন করে নাও আসতে পারে। ‘আজ’ হল ‘এখনই’, যখন আমি আমার প্রয়োজনকে যথার্থ বুঝে নিতে পারি।
কবির বক্তব্য – মানুষের যখন ক্ষুধা উদ্রেক হয়, তখন সে-আগুন নেভানোর জন্য তার সেই মুহূর্তেই খাবারের প্রয়োজন। আগামীকাল রুটির ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি থাকলে তাতে জঠরের আগুন নেভে না। ক্ষুধাও প্রবল থেকে প্রবলতর হয়। কাল রুটি পাব বলে আজ প্রত্যাশা নিয়ে বেঁচে থাকা যেমন যায় না, তেমনি কবে স্বাধীনতা পাব এই আশা নিয়ে জীবনধারণ সম্ভব নয়। স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে হয়-এবং তা এখনই। মৃত্যু হলে এর আর কী দরকার!
স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রকাশিত কবির স্বাধীনতাবোধের পরিচয় দাও।
স্বাধীনতা কবিতাটি একটি অনুবাদ কবিতা। প্রখ্যাত আমেরিকান কবি ল্যাংস্টন হিউজ-এর এই বিশেষ কবিতাটিকে বাংলায় তরজমা করেছেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ।
স্বাধীনতা বা স্বাধিকারবোধ নিয়েই প্রতিটি মানুষ জন্মায়। তার বড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বোধেরও ব্যাপ্তি ঘটে কোনো মানুষকে জাতিক ও রাষ্ট্রিক মানুষে পরিণত করে। স্বাধীনতালাভের ক্ষেত্রে ভয় যে প্রবল প্রতিবন্ধকতা এ নির্দেশ করে কবি জানান, সমঝোতা বা আপস করেও স্বাধীনতা আদায় করা সম্ভব নয়। যারা স্বাধীনতা নিজেরা ভোগ করে এবং অন্যকে অধীনতার মধ্যে রাখতে চায়, তারা নিজেরা কখনোই স্বাধীনতা হারাতে চায় না। সুতরাং স্বাধীনতা অর্জন করার জিনিস। স্থবির, রক্ষণশীল কিংবা দুর্বল চিত্তের মানুষেরা কিন্তু বলবে – ‘সময়ে/সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন।’ কবি মনে করেন, কাল-কাল করে দিনাতিপাত করা বিপজ্জনক। কারণ পরাধীনতার মধ্যে মৃত্যু হলে, স্বাধীনতার আর কোনো প্রয়োজনই থাকবে না, ঠিক যেমন আগামীকালের রুটি দিয়ে আজ বাঁচা যায় না। কবি আরও মনে করেছেন স্বাধীনতা নামক শক্তিশালী বীজপ্রবাহকে চিনে নিতে হবে, যা আমার-তোমার সকলের মধ্যেই নিহিত। তাই স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস নয়, তা পেতেই হবে।
অনুবাদ কবিতা হিসেবে ল্যাংস্টন হিউজের ‘স্বাধীনতা’ কবিতাটি কতটা সার্থক আলোচনা করো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এক বুদ্ধিজীবী ও কবি ল্যাংস্টন হিউজের ‘স্বাধীনতা’ কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ দুই কলমচারী শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ। শ্রেষ্ঠ এক কবির কবিতা যখন ভাষান্তরিত হয় অন্য ভাষায় এবং তা অনুবাদ করেন সেই ভাষারই লব্ধপ্রতিষ্ঠ কোনো কবি, তখন তা হয়ে ওঠে যেন মণিকাঞ্চন যোগ।
স্বাধীনতা এমন এক অনুভব উপলব্ধি যা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যেই স্থিত এবং যা ধরে রাখতে প্রতিটি মানুষই তৎপর। কিন্তু কখনো-কখনো বৈরী শক্তি মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে স্বৈরশাসনের মাধ্যমে মানুষকে নতিস্বীকারে বাধ্য করে। এই যে অকারণ হীনতাবোধ, এ কখনো-কখনো মানুষের মধ্যে অনিবার্যভাবে গড়ে দেয় এক প্রতিস্পর্ধা। ল্যাংস্টন হিউজের মূল কবিতাটির মধ্যে এই যে বিশেষ স্বাধীনতাবোধের তীক্ষ্ণতম আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল, কবিদ্বয় বাংলা অনুবাদের ক্ষেত্রে তার রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শসহ বজায় রেখেছেন। বলাবাহুল্য এ অনুবাদ আক্ষরিক অনুবাদ নয়। কবিদ্বয় বঙ্গীকরণের ক্ষেত্রে ভাবানুবাদকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এই অনুবাদ যেভাবে চমৎকারিত্ব লাভ করেছে তা অতুলনীয়। অনুবাদের মধ্যে একটি মানুষের স্বাধীনতাবোধ, স্বাধীনতাপ্রাপ্তির জন্য মানসিক টানাপোড়েন এবং প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির বেদনা এত নিখুঁতভাবে উঠে এসেছে যে, মনে হয়েছে কবিতাটি বাংলা ভাষাতেই রচিত; এ যেন অনুবাদ কবিতা নয়। অনুবাদ কবিতা হিসেবে এখানেই কবিতাটির সার্থকতা।
স্বাধীনতা আমার প্রয়োজন/তোমার যেমন। – উদ্ধৃতিটির পরিপ্রেক্ষিতে কবির বক্তব্যের বর্ণনা দাও।
প্রখ্যাত মার্কিন কবি ও বুদ্ধিজীবী ল্যাংস্টন হিউজের অনুবাদ কবিতা ‘স্বাধীনতা’ থেকে উক্ত উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। ‘স্বাধীনতা’ হল এমন একটি বোধ যা নিয়ে মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং রাষ্ট্রিক পরিবেশে লালিত হতে হতে সেই বোধ বিপুল আকার ধারণ করে মানুষের অহংকার বা গর্বের বিষয় হয়ে আত্মপ্রকাশ করে। বলা চলে স্বাধীনতা হীনতায় কোনো মানুষই বাঁচতে চায় না বা পারে না।
স্বাধীনতা কবিতাটিতে কবি শুরুতেই স্বাধীনতা না আসার নিরাশাজনক মনোভাব জ্ঞাপন করেছেন সত্য, তবে কবিতায় সেই বোধই শেষ কথা নয়। তিনি স্বাধীনতা না আসার পিছনে মানুষের অকারণ ভীতি ও আপস বা সমঝোতার প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন। স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি স্বাধিকারের প্রসঙ্গে উত্তরিত হয়েছেন, বলেছেন – ‘আমাদেরও তো অন্য সকলের মতন/অধিকার রয়েছে,/দুপায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকার,/দু কাঠা জমির মালিকানার।’ যেন এ অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর লক্ষ্য। প্রসঙ্গক্রমে তিনি ‘অল্পে সন্তুষ্ট’ মানুষদের নেতিবাচক ভাবনার দিকটির প্রতিও ইঙ্গিত করেন, বলেন – ‘শুনে শুনে কান পচে গেল,/সময়ে সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন’ – বলাবাহুল্য ‘কালে’ তাঁর কোনো আস্থা নেই। স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে তাঁর চাওয়া ‘আজ’ই। কারণ মৃত্যুর পরে প্রাপ্ত স্বাধীনতায় তিনি আস্থাশীল নন। জীবনাভিজ্ঞতাই তাঁকে জানিয়েছে – আগামীকালের রুটি দিয়ে আজ বাঁচা যায় না। তাই স্বাধীনতা নামক একটি শক্তিশালী বীজপ্রবাহকে তিনি মানুষের তীব্র আবেগপ্রবাহে সঞ্চারিত করতে চান।
স্বাধীনতা নিয়ে লেখা আরও দুটো কবিতার উল্লেখ করো এবং এই কবিতার সঙ্গে তাদের তুলনামূলক আলোচনা করো।
স্বাধীনতা/রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে
কে বাঁচিতে চায়।
দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে
কে পরিবে পায়।।
কোটিকল্প দাস থাকা নরকের প্রায় হে
নরকের প্রায়।
দিনেকের স্বাধীনতা, স্বর্গ-সুখ তায় হে
স্বর্গ-সুখ তায়।।
অই শুন! অই শুন! ভেরীর আওয়াজ হে
ভেরীর আওয়াজ।
সাজ সাজ সাজ বলে, সাজ সাজ সাজ হে
সাজ সাজ সাজ।।
সার্থক জীবন আর বাহুবল তার হে
বাহুবল তার।
আত্মনাশে যেই করে দেশের উদ্ধার হে
দেশের উদ্ধার।।
অতএব রণভূমে চল ত্বরা যাই হে
চল ত্বরা যাই।
দেশহিতে মরে যেই তুল্য তার নাই হে
তুল্য তার নাই।।
পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র/নবীনচন্দ্র সেন
“দাঁড়া রে দাঁড়ারে ফিরে! দাঁড়া সৈন্যগণ!
দাঁড়াও ক্ষত্রিয়গণ! যদি ভঙ্গ দেও রণ”-
গর্জিলা মোহনলাল – “নিকট শমন!”
“আজি এই রণে যদি কর পলায়ন,
মনেতে জানিও স্থির, কারো না থাকিবে শির,
সবান্ধবে যাবে সবে শমন-ভবন!”
“দেখিছ না সর্বনাশ সম্মুখে তোমার?
যায় বঙ্গ সিংহাসন, যায় স্বাধীনতা-ধন
যেতেছে ভাসিয়া সব, কি দেখিছ আর?
“সামান্য বণিক এই শত্রুগণ নয়।
দেখিবে তাদের হায়। রাজা-রাজ্য, ব্যবসায়,
বিপণি, সমর-ক্ষেত্র, অস্ত্র-বিনিময়।”
“নিশ্চয় জানিও রণে হলে পরাজয়,
দাসত্বশৃঙ্খল-ভার ঘুচিবে না জন্মে আর
অধীনতা-বিষে হবে জীবন-সংশয়।”
“কি ছার জীবন যদি নাহি থাকে মান!
রাখিব রাখিব মান, যায় যাবে যাক প্রাণ,
সাধিব সাধিব যবে প্রভুর কল্যাণ।”
সহে না বিলম্ব আর, চলো ভাতৃগণ!
চলো সবে রণস্থলে, দেখিবে কে জিনে বলে;
দেখিবে ক্ষত্রিয়-বীর্য দেখাব কেমন।”
উপরের অংশ দুটি বিখ্যাত দুই কাব্যকার রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীনচন্দ্র সেনের দুই বিখ্যাত কাব্য ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’ এবং ‘পলাশীর যুদ্ধ’ থেকে নেওয়া। ‘স্বাধীনতা’ কাব্যাংশটিতে বিষয়বস্তু ঐতিহাসিক কাহিনিসূত্র থেকে এসে স্বাধীনতাবোধ, স্বাধীনতা যুদ্ধে শামিল হওয়া এবং স্বাধীনতাপ্রাপ্তির আকুতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কীভাবে দেশীয় মানুষদের মনে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা যায়-তাই যেন কবির প্রচার। অন্যদিকে কবি নবীনচন্দ্র সেনের রচনাটিতেও পরাধীন ভারতবাসীর মনে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা রয়েছে আন্তরিকভাবে। পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদদৌলা পরাজিত হয়েছিলেন, বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। পরাধীনতার গ্লানি দেশ থেকে মোচন করার জন্য কবি সৈন্যদের রণসাজে সজ্জিত হয়ে ইংরেজের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলছেন।
ল্যাংস্টন হিউজের অনুবাদ কবিতাটিতেও ‘স্বাধীনতা’র সপক্ষে অনেক জোরালো কথা বলা হয়েছে। তিনটি কবিতাতেই ‘স্বাধীনতা’ – এই সংগ্রামীবোধ ও চেতনাকে প্রবলভাবে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অতএব ভিন্ন সময়, ভিন্ন পরিস্থিতি, ভিন্ন ভাষাতে রচিত হলেও কবিমনের স্বাধীনতার স্বরূপটি এখানে স্বপ্নের উৎসের মতো উজ্জ্বল হয়ে ঝরে পড়তে দেখা যাচ্ছে; যা অকৃত্রিম ও আন্তরিক মুক্তোর মতো নিটোল।
আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ষট্বিংশ অধ্যায় ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আর, আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!