আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণের “ব্যাকরণ ও নির্মিতি” থেকে “শব্দ ও পদ : বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ, অব্যয়, ক্রিয়া” -এর উপবিভাগ “অব্যয়” নিয়ে আলোচনা করবো। এই অংশ নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে।

অব্যয়
অব্যয় পদ কাকে বলে?
ব্যাকরণে ‘ব্যয়’ কথাটির অর্থ ‘বিভক্তিজনিত শব্দ’ বা পদের রূপভেদ। এর আর-একটি আভিধানিক অর্থ ‘ত্যাগ’। বাংলা ভাষায় এমন কিছু শব্দ (পদ) আছে যাদের রূপভেদ হয় না। অর্থাৎ তারা কোনো অবস্থাতেই নিজের রূপ ত্যাগ করে না, তাদেরই অব্যয় (অর্থাৎ নয় রূপভেদ, নয় ত্যাগ, নয় পরিবর্তন) বলে।
তিনটি লিঙ্গ, সমস্ত বিভক্তি ও প্রত্যয়, বচন বা পুরুষ কিছুতেই যে নামপদের রূপবদল বা পরিবর্তন হয় না বা নিজের রূপত্যাগ করে না, তাকে অব্যয় পদ বলে।
ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় অব্যয়কে কটি ভাগে বিভক্ত করেছেন ও কী কী?
ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় অব্যয়কে প্রধান দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছিলেন –
- সংযোগবাচক বা সম্বন্ধবাচক অব্যয়।
- মনোভাববাচক বা আবেগসূচক অব্যয়।
রামমোহন রায় এই অব্যয়ের নাম দিয়েছিলেন অন্তর্ভাবার্থক অব্যয়।
বর্তমান বাংলা ভাষায় অব্যয়ের বিভাগগুলি সারণির মাধ্যমে দেখাও।
বর্তমান বাংলা ভাষায় অব্যয়কে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –
- পদান্বয়ী অব্যয়,
- সমুচ্চয়ী অব্যয়,
- অনন্বয়ী অব্যয় বা
- ভাববাচক অব্যয়,
- অনুকার অব্যয়।
পদান্বয়ী অব্যয় আবার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা –
- উপমাবাচক অব্যয়,
- ব্যতীত অর্থবাচক অব্যয়,
- অনুসর্গরূপে প্রযুক্ত অব্যয়।
অনন্বয়ী অব্যয় আবার আট প্রকার। যথা –
- প্রশংসাসূচক অব্যয়,
- সম্মতিজ্ঞাপক অব্যয়,
- অসম্মতিজ্ঞাপক অব্যয়,
- ঘৃণা বা বিরক্তি ব্যঞ্জক অব্যয়,
- ভয় যন্ত্রণা ও দুঃখসূচক অব্যয়,
- বিস্ময়সূচক অব্যয়,
- করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে অব্যয়,
- আহ্বান বা সম্বোধন দ্যোতক অব্যয়।
তেমনই সমুচ্চয়ী অব্যয় বারো ভাগে বিভক্ত। যথা –
- সংযোজক অব্যয়,
- বিয়োজক অব্যয় বা বৈকল্পিক অব্যয়,
- সংকোচক অব্যয়,
- ব্যতিরেকাত্মক অব্যয়,
- প্রশ্নবাচক অব্যয়,
- কারণাত্মক অব্যয়,
- সংশয়বাচক অব্যয়,
- সিদ্ধান্তবাচক অব্যয়,
- হেতুবাচক অব্যয়,
- বাক্যালংকার অব্যয়,
- সমাপ্তিসূচক অব্যয়,
- নিত্যসম্বন্দ্বী অব্যয়।
অনুকার অব্যয় চার ভাগে বিভক্ত। যথা –
- বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অব্যয়,
- অনুভূতিগ্রাহ্য বিভিন্নপ্রকার ভাবপ্রকাশক অব্যয়,
- শূন্যতা, পূর্ণতা ইত্যাদি অর্থে অব্যয়,
- কথার মাত্রাস্বরূপ বিকৃত ধ্বনিমূলক অব্যয়।
পদান্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
বাক্যস্থ বিভিন্ন পদের মধ্যে অন্বয় বা সম্পর্ক স্থাপন করে যে অব্যয় তাকে পদান্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – সঙ্গে, নিমিত্ত, সহিত, জন্য, সহ, মতো ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ।
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয়পদের দ্বারা বাক্যস্থিত দুটি বিষয়, বস্তু, প্রাণী ইত্যাদির মধ্যে তুলনা, সামঞ্জস্য খোঁজা হয় তাকে উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – মতো, মতন, যেন, যেমন, হেন, পারা, প্রায়, সম, তুল্য, ন্যায় ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ভূতের মতন চেহারা যেমন নির্বোধ অতি ঘোর।
ব্যতীত অর্থবাচক পদান্বয়ী অব্যয়গুলি কী কী উদাহরণ দাও। এর বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
ব্যতীত অর্থবাচক পদান্বয়ী অব্যয়গুলি হল – বিনা, ব্যতীত, ব্যতিরেক, ভিন্ন, ছাড়া, বই, বিহনে, বাদে ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – সীতা বিনা আমি যেন মনিহারা ফণি।
অনুসর্গরূপে প্রযুক্ত পদান্বয়ী অব্যয়গুলি কী কী? বাক্যে প্রয়োগ করে দেখাও।
সহিত, সঙ্গে, ওপরে, নীচে, সামনে, পাশে, ভিতরে, বাইরে, নিমিত্ত, তরে, জন্য ইত্যাদি শব্দগুলি অনুসর্গরূপে প্রযুক্ত পদান্বয়ী অব্যয়রূপে বাক্যে ব্যবহৃত হয়। বাক্যে প্রয়োগ – সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
অনন্বয়ী বা ভাববাচক অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
বাক্যস্থ পদের সঙ্গে যে সকল অব্যয়ের সরাসরি অন্বয় বা সম্পর্ক নেই; মনের বিস্ময়, হর্ষ, ঘৃণা, ভয় ইত্যাদি ভাবপ্রকাশের জন্য যে অব্যয় ব্যবহৃত হয়, সে সকল অব্যয়কে অনন্বয়ী বা ভাববাচক অব্যয় বলা হয়। যেমন – ছি-ছি, হায়-হায়, আহা, উঃ, ওঃ আজ্ঞে, মরি-মরি, মাগো ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – আহা! শাড়িটায় চমৎকার মানিয়েছে তোমায়।
প্রশংসাসূচক অনন্বয়ী অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
প্রশংসাসূচক অনন্বয়ী অব্যয়গুলি হল – বলিহারি, বাহবা, সাবাস, সুন্দর, কী সুন্দর, আহা, বহুত আচ্ছা, চমৎকার, ধন্য, ধন্যধন্য, সাধু, বাঃ, বেশ ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – সাবাস্ আজকের ম্যাচটা কী দারুণ খেললে।
সম্মতিজ্ঞাপক অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয়ের সাহায্যে সম্মতিজ্ঞাপন করা বা সমর্থন করা হয়, তাকে সম্মতিজ্ঞাপক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – হ্যাঁ, আজ্ঞে হ্যাঁ, হুঁ, যা বলেছে, ব্যাস, বেশ, যে আজ্ঞে, নিশ্চয়ই। বাক্যে প্রয়োগ – হ্যাঁ, ঋকের ভাত খাওয়া হয়েছে।
অসম্মতিজ্ঞাপক অনন্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের সাহায্যে কোনো কিছুকে নিষেধ করা হয় বা অসম্মতিজ্ঞাপন করা হয়, তাকে অসম্মতিজ্ঞাপক বা নিষেধাত্মক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – না, নহে, মোটেই না, নয়, নেই, নি, আদপে না, আদৌ না, নাতো, কখনো না, কখনো না, একেবারেই না, একদম না ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – না ওটা তাতাই এর কাজ নয়।
ঘৃণা বা বিরক্তিব্যঞ্জক অনন্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের দ্বারা ঘৃণা, বিরক্তি, হতাশা, রাগ প্রভৃতি মানসিক প্রবৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে, তাকে ঘৃণা বা বিরক্তিব্যঞ্জক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – ছি, ছিছি, দূর দূর, ধিক্ ধিক্, ধেৎ, থু, ওয়াক থু, রাম রাম, রামো রামো, কি আপদ, কি মুশকিল, দুত্তোর, কি জ্বালা, দূর ছাই, কি বিভ্রাট, আ মলো ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ছি ছি তোমার মুখে এ তাপ মানায় না।
ভয়, যন্ত্রণা ও দুঃখসূচক অনন্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের দ্বারা ভয়, ভীতি, যন্ত্রণা, দুঃখ, শোক প্রভৃতি প্রকাশ পায় তাকে ভয়, যন্ত্রণা ও দুঃখসূচক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – উঃ, ইস্, ওঃ, বাপরে বাপ, আঃ, মারে, বাপরে, মাগো, হায়, হায় হায়, মরে গেলাম, ওরে বাবা, ওমা ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – উঃ! কী নাসিকা গর্জন!
বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের দ্বারা বিস্ময় প্রকাশিত হয় তাকে বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – বাঃ, ওমা, আহা, কিবা, ওমা কোথা যাব, হরি হরি, কর কি ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – বাঃ! কী অপরূপ জ্যোৎস্না।
আহ্বান বা সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
‘সম্বোধন’ কথার অর্থ কাউকে ডাকা বা আহ্বান করা। সম্বোধন করার জন্য যে অব্যয় পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন – এ, এই, ওহে, এই যে, ওলো, ওগো, ও মেয়ে, ওরে, অয়ি, হ্যাঁগো বাছা, বলি অ গো, হে ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ও ভাই, কোথায় যাচ্ছ?
করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে ব্যবহৃত অনন্বয়ী অব্যয় -এর রূপ কী রকম? উদাহরণ দাও।
করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে ব্যবহৃত অনন্বয়ী অব্যয় -এর রূপগুলি হল – বেচারা, আহা, আহারে, বাছা আমার, বাপ আমার, মানিক আমার, সোনা আমার, গোপাল আমার, মরে যাই, হা ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – মানিক আমার, সোনা আমার, তোমার জন্য এই দ্যাখো চিংড়ি মাছ ভাজছি।
সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদ একাধিকপদ, বাক্যাংশ বা বাক্যকে সংযোজন বা বিয়োজন করে তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন –
- শুক্লা ও দীপ্তি খেলতে যাবে।
- এত করে বারণ করা সত্ত্বেও সে শুনল না।
প্রথম ও দ্বিতীয় বাক্যের স্থূলাক্ষর পদগুলি সমুচ্চয়ী অব্যয়। প্রথম বাক্যের ‘ও’ সংযোজক অব্যয় এবং দ্বিতীয় বাক্যের ‘সত্ত্বেও’ বিয়োজক অব্যয়।
সংযোজক অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যেসব সমুচ্চয়ী অব্যয় একাধিক পদ বা একাধিক বাক্যের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি করে, সেগুলিকে সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। এই সংযোজক অব্যয়গুলি হল – এবং, ও, আর, তথা ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ঘোরতর ঝগড়া চলছে পালে আর দাঁড়ে।
বৈকল্পিক বা বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যেসব পদ দুই বা তার বেশি পদ বা বাক্যকে পৃথক করে একটিকে নির্বাচন করে, তাকে বৈকল্পিক বা বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – অথবা, কিংবা, বা, না ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – সায়রী আজ রবীন্দ্র নৃত্য অথবা শাস্ত্রীয় নৃত্য পরিবেশন করবে।
সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
স্বাভাবিক বা আকাঙ্ক্ষিত ফল না বুঝিয়ে তার বিপরীত কিছু বোঝালে, তাকে সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – পরন্তু, কিন্তু, অথচ, অধিকন্তু, তবু, তথাপি, বরঞ্চ, পুনরায়, পুনশ্চ, বটে (বাক্যের অন্তে), আবার, এদিকে, ওদিকে ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে।
ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদ অভাব বা ভেদ বোঝায়, তাকে ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – যদি না, নতুবা, না হইলে (নহিলে, নইলে) ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – আমি যাব না, যদি না সে নিতে আসে।
প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের সাহায্যে কোনো প্রশ্ন করা হয়, তাকে প্রশ্নসূচক বা প্রশ্নবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয় পদ বলে। যেমন – কেন, নাকি, কি, তো, বটে, না ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ওখানে কে রে?
কারণাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
কারণ বুঝিয়ে দুটো বাক্য বা বাক্যাংশকে যুক্ত করলে, সেই অব্যয়কে কারণাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – যেহেতু, হেতু, কারণ, বলিয়া, নিমিত্ত, কেননা ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – আলি শাস্তি পাবে কেননা ও অসৎ ব্যবহার করেছে।
সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদের সাহায্যে কোনো সংশয় বা সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, তাকে সংশয়বাচক বা সন্দেহবাচক বা সন্দেহদ্যোতক সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – যদি, যদি বা, যদি নাকি, যদি না হয় ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে?
সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
তাই, তবে, সুতরাং, তার জন্য, কাজেই, সেইজন্য, কখনো-কখনো ইত্যাদি পদগুলি সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়। বাক্যে প্রয়োগ – মধু বাড়ি গেলে তবে যদু আসবে।
হেতুবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
হেতুবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়গুলি হল – এইজন্য, এই হেতু এই কারণে, তাহাতে (তাতে), তাতেই ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – বাঙালি অলস, এইজন্য বাঙালির উন্নতি নাই।
আলংকারিক অব্যয় বা বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তা অলংকার। বাক্যের সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য যে অব্যয় পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে আলংকারিক বা বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। লক্ষ রাখার বিষয় এরা কিন্তু বাক্যে না থাকলেও বাক্যের অর্থ বদল হয় না। কিন্তু থাকার জন্য বাক্যটি সুন্দর ও শোভন হয়। যেমন – আর না, যে, তো, বটে, যেমত ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – যেমত যোগিনী পারা।
সমাপ্তিসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
সমাপ্তিসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়গুলি হল – শেষে, শেষটায়, যাতে, যাহাতে ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – শেষটায় সভা পণ্ড হবে কে জানত?
নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
দুটো অব্যয় যদি দুটো বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে শর্ত বা সম্বন্ধ স্থাপন করে তাদের যুক্ত করে, তবে তাদের সাপেক্ষ বা শর্তবাচক বা নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন – যদি-তবে, যেমন-তেমন, যত-তত, বরং-তবু, এত-যে ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – রঞ্জিতা যেমন মেধাবী তেমনই বিনয়ী।
অনুকার অব্যয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে অব্যয় পদ ধ্বনির অনুসরণ করে তাকে অনুকার অব্যয় বলে। যেমন – ঝমঝম, টনটন, শোঁ শোঁ, কড়কড়, হৈ হৈ ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে।
বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়গুলি হল – হিহি, হাহা, খুকখুক, ঝমঝম, টুপটুপ, ঘেউঘেউ, গরগর, ঠনঠন, ধুকধুক ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – হাতে লণ্ঠন করে ঠনঠন জোনাকিরা দেয় আলো।
অনুভূতিগ্রাহ্য বিভিন্ন প্রকার ভাবপ্রকাশক অনুকার অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
অনুভূতিগ্রাহ্য বিভিন্ন প্রকার ভাবপ্রকাশক অনুকার অব্যয়গুলি হল – টনটন, ঢিপঢিপ, থরথর, কলকল, খচখচ, চড়চড়। বাক্যে প্রয়োগ – চোরটি জনতার মারের ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।
অবস্থা, গতি, শূন্যতা, পূর্ণতা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত অব্যয় কোনগুলি? উদাহরণ দাও।
শূন্যতা, পূর্ণতা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত অনুকার অব্যয়গুলি হল – হাহা, হুহু, খাঁখাঁ, থৈথৈ ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – বৃষ্টির পর রাস্তাঘাট জলে থৈ থৈ করছে।
কথার মাত্রাস্বরূপ বিকৃত ধ্বনিমূলক অনুকার অব্যয়গুলি কী কী? উদাহরণ দাও।
কথার মাত্রাস্বরূপ বিকৃত ধ্বনিমূলক অনুকার অব্যয়গুলি হল – রকমসকম, কাপড়চোপড়, রং ঢং ইত্যাদি। বাক্যে প্রয়োগ – রকমসকম সঙের মতন অহঙ্কার দেখে মরি।
‘যত’ এবং ‘তত’ দিয়ে বাক্য গঠন করে সাপেক্ষ শব্দজোড়ের প্রয়োগ দেখাও।
বাক্যে প্রয়োগ – যত মত তত পথ।
‘হয়’ এবং ‘নয়’ দিয়ে বাক্য গঠন করে সাপেক্ষ শব্দজোড়ের প্রয়োগ দেখাও।
বাক্যে প্রয়োগ – হয় তুমি যাবে, নয় আমি আসব।
বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো
ব্যয়’ শব্দের একটি আভিধানিক অর্থ –
- ভোগ
- ত্যাগ
- গ্রহণ
- বর্জন
উত্তর – 2. ত্যাগ
সংযোগবাচক ও মনোভাববাচক দুটি ভাগে অব্যয়কে ভাগ করেছিলেন –
- রবীন্দ্রনাথ
- সুনীতিকুমার
- শরৎচন্দ্র
- সুকুমার সেন
উত্তর – 2. সুনীতিকুমার
প্রয়োগকালে কোনো বিকৃতি হয় না –
- বিশেষ্যের
- বিশেষণের
- অব্যয়ের
- ক্রিয়ার
উত্তর – 3. অব্যয়ের
দুটি বাক্যকে এক করে দেয় –
- পদান্বয়ী অব্যয়
- ধ্বন্যাত্মক অব্যয়
- সাপেক্ষ শব্দজোড়
- সমুচ্চয়ী অব্যয়
উত্তর – 4. সমুচ্চয়ী অব্যয়
দুই বা তার বেশি বাক্যকে পৃথক করে যে অব্যয় তা হল –
- বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- অনুকার অব্যয়
- নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়
- সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
উত্তর – 1. বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
স্বাভাবিক বা আকাঙ্ক্ষিত ফল বোঝায় না যে অব্যয় তা –
- সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- হেতুবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়
উত্তর – 1. সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়
‘আহা’ একটি –
- প্রশংসাসূচক অনন্বয়ী অব্যয়
- সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়
- অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়
- করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে ব্যবহৃত অনন্বয়ী অব্যয়
উত্তর – 4. করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে ব্যবহৃত অনন্বয়ী অব্যয়
অনুকার অব্যয়কে ভাগ করা যায় –
- চারটি ভাগে
- ছটি ভাগে
- আটটি ভাগে
- কোনোটিই নয়
উত্তর – 1. চারটি ভাগে
অনুকার অব্যয়কে বিভক্তিযোগে ব্যবহার করা যায় –
- ক্রিয়ারূপে
- সর্বনামরূপে
- বিশেষণরূপে
- বিভক্তিরূপে
উত্তর – 3. বিশেষণরূপে
রমা বা সোমা আঁকার কাগজ আনবে। – রেখাঙ্কিত পদটি কোন্ জাতীয় অব্যয়? –
- ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়
- সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
উত্তর – 2. বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়
বাঃ! কী সুন্দর ফুল। – রেখাঙ্কিত পদটি কোন্ জাতীয় অনন্বয়ী অব্যয়? –
- ঘৃণা বা বিরক্তিব্যঞ্জক
- প্রশংসাসূচক
- অসম্মতিসূচক
- সম্মতিসূচক
উত্তর – 2. প্রশংসাসূচক
মায়ের মতো রান্না কেউ পারে না। – রেখাঙ্কিত পদটি কোন্ জাতীয় অব্যয়? –
- উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়
- অনুসর্গরূপে ব্যবহৃত পদান্বয়ী অব্যয়
- প্রশংসাসূচক অনন্বয়ী অব্যয়
- সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়
উত্তর – 1. উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
নীচের চিহ্নিত পদগুলি কী কী ধরনের অব্যয়, তা নির্দেশ করো।
1. মরি মরি! কী দেখলাম।
বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
2. তোরা নাকি নিশ্চিন্দিপুর ছেড়ে যাচ্ছিস?
সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কী মহীতে।
ব্যতীত অর্থবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
4. যেমন চাষা তার তেমনি বলদ।
সাপেক্ষ বা নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. জ্বেলে দে আগুন ওলো সহচরী।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
6. সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়।
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
7. এমন জোরে মারল যে রক্ত পড়তে লাগল।
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. হ্যাঁ গো বাছা, সারা দিন কোথায় ছিলে?
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
9. দ্যাখো না, কে দরজায় কড়া নাড়ছে।
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
10. ও বুঝি চোখে দেখতে পায় না?
প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
11. “দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে”।
সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
12. উঁহু লোকটাকে আমি চিনি না।
অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
13. ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
14. তুমি বাড়ি যাবে এবং গিয়েই পড়তে বসবে।
সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
15. লোকটি দরিদ্র কিন্তু সৎ।
সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
16. উঃ! কী শীত।
বিরক্তিব্যঞ্জক অনন্বয়ী অব্যয়।
17. মন্ত্রী এবং সভাসদেরা আলোচনায় বসেছেন।
সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
18. ছি! এমন জঘন্য কাজ তুমি করতে পারলে।
বিরক্তিব্যঞ্জক অনন্বয়ী অব্যয়।
19. লোকটির সাহস বটে।
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
20. লোকটা ভোঁসভোঁস করে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে।
বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
21. ওগো, নদী আপনবেগে পাগলপারা।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
22. আপনার মতো সাহসী মানুষ আর দেখিনি।
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
23. তিনি কেন এলেন না?
প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
24. আমার সময় তো আর নেই।
অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
25. হ্যাঁ, এ কাজটি আমি করে দেব।
সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
26. এখন বুঝি শরীরটা একটু ভালো।
সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
27. বৃষ্টি থেমেছে অতএব আমি চল্লাম।
সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
28. চমৎকার! এর চেয়ে ভালো রান্না আর কী হয়।
প্রশংসাসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
29. আপনি বড়ো ভালো বলেছেন।
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
30. ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে।
অনুভূতিগ্রাহ্য ভাবপ্রকাশক অনুকার অব্যয়।
31. ওরে, আমার মন মেতেছে, তারে আজ থামায় কে।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
32. “সদাই ধেয়ানে চাহে মেঘ পানে যেমত যোগিনী পারা।”
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
33. তিনি কেন এলেন না?
প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
34. আজ্ঞে যা বলেন সবই তো বুঝি।
সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
35. তুমি নাকি ছেলেটিকে মেরেছ?
সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
36. বর্ষার নদী জলে থইথই এবং প্রবল স্রোতে উত্তাল।
সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
37. বাঃ! কী সুন্দর আকাশ।
বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
38. সে কি আর বলতে মশায়।
আলংকারিক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
39. এই, এদিকে আয়।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
40. রক্তের মতো লাল গোলাপ ফুটেছে।
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
41. “মৃত্যুতেই কি জীবনের পরিসমাপ্তি?”
প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
42. না, একদিনও না।
অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
43. বটে, এত অভিযোগ।
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
44. যিনি রক্ষক তিনিই ভক্ষক।
সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
45. মিতা আবৃত্তি করল এবং সীমা গান গাইল।
সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
46. অ্যাঁ! বলো কী সোনার দাম তো আকাশছোঁয়া।
বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
47. সে তো হেসেই খুন!
বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
48. হে ঈশ্বর, দুঃখীদের দিকে মুখ তুলে চাও।
সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
49. রতনবাবুর গায়ের রং আলকাতরার মতো।
উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
50. হয় সে ঋণ শোধ করবে, নয়তো আমাকে শোধ করতে হবে।
সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
আলাদা আলাদা বাক্যে প্রয়োগ করে উদাহরণ দাও।
| অব্যয় | বাক্যগত প্রয়োগ |
| 1. সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয় | তুমি এলে তবে আমি যাব। |
| 2. বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয় | সায়ন্তনী আজ রবীন্দ্রসংগীত অথবা নজরুলগীতি পরিবেশন করবে। |
| 3. অনুসর্গরূপে ব্যবহৃত পদান্বয়ী অব্যয় | ডানে লক্ষ্মী, বাঁয়ে সরস্বতী, মাঝে মা দুর্গার অধিষ্ঠান। |
| 4. ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয় | খেয়ে নাও নাহলে অসুস্থ হয়ে যাবে। |
| 5. নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয় | হয় বাঁচব নয় মরব। |
| 6. হেতুবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয় | রমেন সারা বছর পড়াশোনা করেনি কাজেই পরীক্ষায় কম নম্বর পাবে। |
| 7. বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয় | বাঃ! কী সুন্দর ফুল। |
| 8. বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয় | এ তো মেয়ে নয় দেবতা নিশ্চয়। |
| 9. সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয় | হে যদু, শুনতে পাচ্ছ? |
| 10. উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয় | এই পৃথিবীতে মায়ের তুল্য আপন কেউ নেই। |
| 11. প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয় | তুমি কি আজ পড়তে যাবে? |
| 12. অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয় | মণি, ওটা নিয়ে খেলা করবে না। |
| 13. সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয় | হ্যাঁ, বিকাশদার কথাটাই একেবারে ঠিক। |
| 14. সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয় | বিমলবাবু, আপনার নাকি মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে? |
| 15. অনুভূতিগ্রাহ্য ভাবপ্রকাশক অনুকার অব্যয় | ফুটফুটে শিশুটিকে দেখে মন ভালো হয়ে গেল। |
প্রয়োগ ও নির্ণয়মূলক প্রশ্নোত্তর
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি
1. দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
2. উত্তর পবনে মেঘ ডাকে দুর দুর।
দুর দুর – বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
3. হুড় হুড় হুড় হুড় বহে ঘন ঝড়।
হুড় হুড় হুড় হুড় – বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
4. পরিচ্ছন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী।
নাহি – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
5. ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল।
যেন – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
6. উঠে পড়ে ঘরগুলা করে দলমল।
দলমল – কথার মাত্রাস্বরূপ বিকৃত ধ্বনিমূলক অনুকার অব্যয়।
নোঙর
1. সমুদ্রের দিকে তারা ছোটে।
দিকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
2. স্রোতের বিদ্রূপ শুনি প্রতিবার দাঁড়ের নিক্ষেপে।
প্রতিবার – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. যতই তারার দিকে চেয়ে করি দিকের নিশানা ততই বিরামহীন এই দাঁড় টানা।
যতই, ততই – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
দিকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
খেয়া
1. সকাল হইতে সন্ধ্যা করে আনাগোনা।
হইতে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
2. রক্ত প্রবাহের মাঝে ফেনাইয়া উঠে।
মাঝে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. সোনার মুকুট কত ফুটে আর টুটে।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
আকাশে সাতটি তারা
1. আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি এই ঘাসে বসে থাকি।
যখন – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে।
যেন – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
মতো – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে।
যেন – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
আবহমান
1. লাউ মাচাটার পাশে।
পাশে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
2. কে এইখানে এসেছিল অনেক বছর আগে।
আগে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে।
আবার – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. তার কিছুই ফুরয় না।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
5. নটে গাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. ফুরয় না তার যাওয়া এবং ফুরয় না তার আসা।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. হারায় না তার বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি।
থেকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
ভাঙার গান
1. ওরে ও তরুণ ঈশান।
ওরে ও – সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
2. ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট।
রে – সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
3. হা হা হা পায় যে হাসি।
হা হা হা – বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
আমরা
1. মুক্ত বেণীর গঙ্গা যেথায় মুক্তি বিতরে রঙ্গে।
যেথায় – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি।
সঙ্গে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. এক হাতে মোরা মগেরে রুখেছি, মোগলেরে আর-হাতে।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. দশানন জয়ী রামচন্দ্রের প্র-পিতামহের সঙ্গে।
সঙ্গে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
5. বিপাল আর ধীমান, যাদের নাম অবিনশ্বর।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. কীর্তনে আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. বিফল নহে এ বাঙালি জনম বিফল নহে এ প্রাণ।
নহে – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
8. ভবিষ্যতের পানে মোরা চাই আশা-ভরা আহ্লাদে।
পানে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
9. জবাব দিয়েছি জগতের আগে ভাবনা ও ভয় ছেড়ে।
আগে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
ও – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
ইলিয়াস
1. কিন্তু ইলিয়াসের সুব্যবস্থায় তার সম্পত্তি কিছু কিছু করে বাড়তে লাগল।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. সে আর তার স্ত্রী সকলের আগে ঘুম থেকে ওঠে।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে।
থেকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
4. ফলে প্রতিবছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল।
ফলে – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. ইলিয়াস তো ভাগ্যবান পুরুষ।
তো – আলংকারিক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. অতিথিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।
সঙ্গে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
7. সে তাদের ভোজ্য পানীয় দিয়ে সেবা করে।
দিয়ে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
8. ইলিয়াস যখন গরিব ছিল।
যখন – নিত্যসম্বন্দ্বী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
9. যত তার অবস্থা পড়তে লাগল ততই তার শরীরের জোরও কমতে লাগল।
যত, ততই – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
10. যদি কখনও কিছু লাগে, বলবে, তাও দেব।
যদি – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
11. তবু এই সম্পন্ন মানুষ দুটির দুরবস্থা দেখে মহম্মদ শার দুঃখ হত।
তবু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
12. ওর মধ্যে বিশেষ করে দেখবার কিছু আছে নাকি?
নাকি – প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
13. নামটা আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন।
হয়তো – সংশয়সূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
14. অথচ আজ তার কিছু নেই।
অথচ – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
15. আহা, বলুন তো, বুড়ো লোকটা এখন নিশ্চয়ই খুব বিষণ্ণ?
আহা – করুণা, স্নেহ ও আদর অর্থে ব্যবহৃত অনন্বয়ী অব্যয়।
16. নমস্কার করল এবং একটু খেয়ে বাকিটা নামিয়ে রাখল।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
17. বরং আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন।
বরং – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
18. আমাদের লাভ বই লোকসান নেই।
বই – ব্যতীত অর্থবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।তালিয়
19. সকলের আগে ঘুম থেকে ওঠে।
আগে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
দাম
1. সব যেন ওঁর মুখস্থ।
যেন – সংশয়সূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. বোর্ডে আগে থেকেই কষা রয়েছে।
আগে থেকেই – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. সঙ্গে সঙ্গে তার উপরে খড়ি বুলিয়ে চলেছেন।
উপরে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
4. জ্যামিতির একস্ট্রা কষতে হবে কিংবা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক নিয়ে বসতে হবে।
কিংবা – বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. সুতরাং আমার আত্মকথা কারো কাছে স্পর্ধার মতো মনে হবে না।
সুতরাং – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. কারো কাছে স্পর্ধা।
কাছে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
7. আতিথ্য নিয়ে যেতে হবে ওখানে এবং বক্তৃতা দিতে হবে।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. ছেলেরা তো এলই।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
9. রবীন্দ্রনাথ থেকে বারোটা উদ্ধৃতি দিলুম।
থেকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
10. কিন্তু পাঠাতে সাহস হয়নি।
নি – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
নিরুদ্দেশ
1. এমন লিখে দেবো, যে পড়ে আপনার ছেলে কেঁদে ভাসিয়ে দেবে।
এমন, যে – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. এ তো আমারই ফটো।
তো – আলংকারিক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও ম্লান পৃথিবী।
ও – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. মা-র কান্না তবু থামে না।
তবু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. আজ্ঞে ঠিক খবর নয়।
আজ্ঞে – সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
6. না আর থাকতে দিলে না।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
7. রাগারাগি করে গিয়েছে বুঝি?
বুঝি – সংশয়সূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. আহা কী করছ!
আহা – বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
9. সেই সেবারের মতো।
মতো – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
রাধারাণী
1. বড় পিছল, তুমি আমার হাত ধর, নহিলে পড়িয়া যাইবে।
নহিলে – ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. তুমি ভুলে টাকা দাও না তো।
তো – আলংকারিক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. ওমা! আমার কিসের কাপড়।
ওমা – বিস্ময়সূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
4. হাঁ! তোমাকে দিয়া গিয়াছেন।
হাঁ – সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
5. তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।
কিন্তু – বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. তা, আচ্ছা, ঘরে গিয়ে প্রদীপ জ্বেলে দেখি।
আচ্ছা – সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
7. তাই চক্ চক্ করছে।
চক্ চক্ – অনুভূতিগ্রাহ্য ভাবপ্রকাশক অনুকার অব্যয়।
চন্দ্রনাথ
1. সমাধিক্ষেত্র হইতে বাহির হইয়া বাড়ি ফিরিলাম।
হইতে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
2. কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রনাথের তুলনা করিয়া আমার আনন্দ হয়।
সঙ্গে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. আরও একজনকে মনে পড়িতেছে।
আরও – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।
হয়তো – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. তাহার কাছে গিয়া দাঁড়াইলাম।
কাছে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
6. আমার যদি পাঁচশো-পঁচিশের নীচে হয়, তবে দশটা ফেল।
যদি, তবে – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. সুতরাং যাওয়ার প্রয়োজন নেই আমার।
সুতরাং – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. নির্জন বাড়িখান খাঁ খাঁ করিতেছিল।
খাঁ খাঁ – শূন্যতা, পূর্ণতা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত অনুকার অব্যয়।
9. হ্যাঁ? বেশ, বেশ।
হ্যাঁ – সম্মতিজ্ঞাপক অনন্বয়ী অব্যয়।
10. আচ্ছা, কোথায় গেল সে?
আচ্ছা – সম্মতিজ্ঞাপক অনন্বয়ী অব্যয়।
11. করবেই বা কী?
কী – প্রশ্নবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
12. দুই পাশে ধীর মন্থর গতিতে প্রান্তর যেন পিছনের দিকে চলিয়াছে।
পাশে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
নব নব সৃষ্টি
1. পুরোনো ধাতু দিয়ে নবীন শব্দটি নির্মাণ করা যায় কিনা।
না – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. আরবিও আত্মনির্ভরশীল এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বয়ংসম্পূর্ণ।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. ফল যদি ভালো হয় তখন না হয় চেষ্টা করে দেখবেন।
যদি, তখন – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. সংস্কৃতচর্চা এদেশে ছিল বলে বিস্তর সংস্কৃত শব্দ বাংলায় ঢুকেছে।
বলে – হেতুবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
হিমালয় দর্শন
1. সমুদ্র হইতে তিন হাজার ফিট উচ্চে উঠিয়াছি।
হইতে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
2. ধরণীর সীমন্তের ন্যায় দেখায়।
ন্যায় – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
3. যাহাতে আমরা প্রাণ ভরিয়া জলপ্রবাহ দেখিতে পাই, সেইজন্য বোধ হয় গাড়ি থামিয়াছে।
যাহাতে, সেইজন্য – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. বায়ু তো খুবই স্বাস্থ্যকর।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. সর্প এবং ছিনে জোঁক আছে।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. এই ভুটিয়ানিরাও ঐ অবলা জাতির অন্তর্গত না কি?
না কি – প্রশ্নবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. বরং অধিকাংশ স্ত্রীলোকদিগকেই পাথর বহিতে দেখি।
বরং – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
চিঠি
1. তুমি ভারতে আসতে এবং সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে দৃঢ়সংকল্প।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. এসব সত্ত্বেও যদি তুমি কর্মে প্রবৃত্ত হতে সাহস করো।
সত্ত্বেও – ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. যদি তুমি কর্মে প্রবৃত্ত হতে সাহস কর, তবে অবশ্য তোমাকে শতবার স্বাগত জানাচ্ছি।
যদি, তবে – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. সর্বত্র যেমন, এখানেও তেমনি আমি কেউ নই।
যেমন, তেমনি – সাপেক্ষ শব্দজোড় নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. কাজের দ্বারা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত ছিল।
দ্বারা – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
7. স্বামী বিবেকানন্দের অনুপ্রেরণায় এদেশে আসেন এবং ভারতের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেন।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
ধীবর বৃত্তান্ত
1. ঋষি অপমানিত বোধ করলেন এবং অভিশাপ দিলেন।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. তিনি শকুন্তলাকে চিনতেও পারলেন না।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
3. ওরে ব্যাটা চোর।
ওরে – সম্বোধনসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
4. তবে কি তোকে সদ্ ব্রাহ্মণ বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন?
তবে কি – প্রশ্নবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. অবসর বুঝে তবে না রাজার কাছে যাওয়া যায়।
না – আলংকারিক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
তবে-না – ব্যতিরেকাত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
কাছে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
6. বিনা দোষে আমাকে মারবেন না।
বিনা – ব্যতীত অর্থবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
7. কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে।
দিয়ে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
8. এখন থেকে তুমি আমার একজন বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু হলে।
থেকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
ব্যোমযাত্রীর ডায়রি
1. খুব যে ভাল তা নয়, তবে বাবাকে চিনতেন।
তবে – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. বাবাকে চিনতেন, আর ছেঁড়া জামাটামা দেখে মনে হত, ভদ্রলোক বেশ গরিব।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. ভদ্রলোক বেশ গরিব; তাই প্রতিবারই লেখাগুলোর জন্য পাঁচ-দশ টাকা করে দিয়েছি।
তাই – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. এই রে আবার বাঘের গল্প।
এই রে – ভয়, যন্ত্রণা, দুঃখসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
5. ব্যাপার তো একটাই।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. ওই মওকায় যদি কিছু বাগছাল জোটে।
যদি – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. কিন্তু সে গুড়ে বালি।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. খাতাটা হাতে নিয়ে খুলে কেমন যেন খটকা লাগল।
যেন – সংশয়সূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
9. ওটা আসলে আয়না, এবং লোকটা আর কেউ নয়-আমারই ছায়া।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
10. আপনি তো চাঁদপুর না মঙ্গলপুর কোথায় চললেন।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
11. ওই হাউই-টা এই কালীপুজোর দিনে ছাড়ুন না।
না – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
12. নিউটনকে সঙ্গে নেব।
সঙ্গে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
13. ও বড়িটাই খেল। আর কোনও চিন্তা নেই।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
14. বেশ বুঝতে পারছি যে এবার হয় ট্যানট্রাম বোরোপ্যাক্সিনেট, এ না-হয় একুইরস্ ভেলোসিলিকা মেশালেই ঠিক জিনিসটা পেয়ে যাব।
না-হয় – বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
15. এক এক সময় মনে হয়েছে যে হয়তো বা কোনও অদৃশ্য শক্তি আমার অজ্ঞাতে আমার উপর খোদকারি করছে।
হয়তো বা – সংশয়সূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
16. আর যখন হাওয়ায় দোলে তখন ঠিক মনে হয় যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
যখন, তখন – সাপেক্ষ শব্দজোড় নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
17. আর যখন হাওয়ায় দোলে।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
18. ঠিক মনে হয় যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
যেন – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
19. হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
দিয়ে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
20. বেশ সময় লাগবে মনে হচ্ছে, তবে চেষ্টা আছে।
তবে – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
21. তালির মতো বাজাল।
মতো – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
22. বিধুশেখর কী জানি বিড়বিড় করছে।
বিড়বিড় – বাস্তবধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
23. মঙ্গলগ্রহ ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
24. আমরা যেমন তাদের কখনও দেখিনি, তারাও কখনও মানুষ দেখেনি।
যেমন – নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
25. আকাশের রং কিন্তু সবুজ।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
26. তাই সব কী রকম উলটো মনে হয়।
তাই – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
27. কী হয়েছে, তুমি নামবে না?
না – প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
28. ও মাথা নেড়ে না বলল।
না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
29. বলে উঠল, ‘বাহবা, বাহবা, বাহবা‘।
বাহবা-বাহবা-বাহবা – প্রশংসাবাচক অনন্বয়ী অব্যয়।
কর্ভাস
1. নিউটন পাখি পছন্দ করে না, আর নিউটনকে অখুশি করে আমার কিছু করতে মন চায় না।
আর – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. সে কাজটা সে আদৌ করতে পারবে না।
আদৌ-না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
3. ডিম পাড়ে বাসার ভিতরে, কিন্তু সে ডিমে তা দেয় না।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. ডিমে তা দেয় না। অথচ উত্তাপ না হলে তো ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোবে না।
অথচ – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. গিব নামক পাখি তাঁদের নিজেদের পালক ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় এবং শাবকদের খাওয়ায়।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
6. এসব তো আছেই।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. হঠাৎ শুনে মনে হবে, যেন কাকটা বুঝি হাসছে।
যেন – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. কাকটা বুঝি হাসছে।
বুঝি – সংশয়বাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
9. সব প্রশ্নের উত্তর সংখ্যার সাহায্যে বা অল্প কয়েকটি শব্দের সাহায্যে দেওয়া যায়।
বা – বিয়োজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
10. প্রতিবাদীর মুখ বন্ধ করার জন্য সঙ্গে থাকবে কর্ভাস।
সঙ্গে – অনুসর্গসূচক পদান্বয়ী অব্যয়।
11. দু’দিন খুব ব্যস্ত ছিলাম, তাই ডায়রি লেখার সময় পাইনি।
তাই – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
12. ডায়রি লেখার সময় পাই নি।
নি – অসম্মতিবাচক অনন্বয়ী অব্যয়।
13. আজ্ঞে না। ইনি হলেন বিখ্যাত চিলিয়ান জাদুকর আর্গাস।
আজ্ঞে-না – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
14. আমি বললাম, হ্যাঁ।
হ্যাঁ – সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
15. যদি আপনার এই পাখিটিকে একবার খাঁচা থেকে বার করতে পারেন।
যদি – নিত্যসম্বন্ধী অব্যয়।
16. আমার খাটের পাশে টেবিলটায় এসে ঠোঁটের এক অব্যর্থ ঠোকরে ল্যাম্পটা নিবিয়ে দিল।
পাশে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
17. এক ফিসফিসে শব্দ উচ্চারিত হল।
ফিসফিসে – বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
18. এখন কিছু বলার দরকার নেই।
নেই – অসম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
19. অর্থাৎ সে লোক হিপনোটাইজড হত।
অর্থাৎ – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
20. সেটা কি তুমি জান?
কি – প্রশ্নবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
21. সে যেমন খরচের তোয়াক্কা করে না, আমি তেমনই টাকা জিনিসটারই তোয়াক্কা করি না।
যেমন, তেমনই – সাপেক্ষ শব্দজোড়/নিত্যসম্বন্ধী সমুচ্চয়ী অব্যয়।
22. আমার পাখিও ঘুমোবে। সুতরাং গুড নাইট।
সুতরাং – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
23. সময় কিন্তু খুব অল্প।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
24. পিছনে কী আছে দেখা যাচ্ছে না।
পিছনে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
25. হাতছানি দিয়ে ডাকলাম।
দিয়ে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
26. গাছের মাথা থেকে নেমে এলো।
থেকে – অনুসর্গবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
স্বর্ণপর্ণী
1. বেশ তো তাই যাবেন আপনি।
তো – বাক্যালংকার সমুচ্চয়ী অব্যয়।
2. তুমি কি সে সম্বন্ধেও উদাসীন?
কি – প্রশ্নসূচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
3. সাধারণত দুটো, এবং একবারই খেতে হয়।
এবং – সংযোজক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
4. কিন্তু আমি তো আরও অনেক খাইয়ে কে জানি।
কিন্তু – সংকোচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
5. চতুর্দিক থেকে নানান ঘড়িতে ঢং ঢং করে আটটা বাজছে।
ঢং ঢং – বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে সৃষ্ট ধ্বন্যাত্মক অনুকার অব্যয়।
6. অর্থাৎ তুমি আমাকে চেন?
অর্থাৎ – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
7. অতএব-হাত বাড়াও।
অতএব – সিদ্ধান্তবাচক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
8. হে প্রভু-মিরাকিউরল যেন ব্যর্থ না হয়।
যেন – সংশয়াত্মক সমুচ্চয়ী অব্যয়।
9. আরে রাম রাম!
আরে – সম্বোধনদ্যোতক অনন্বয়ী অব্যয়।
10. সূর্যের আলো এসে মাটিতে পড়েছে থিয়েটারের স্পটলাইটের মতো।
মতো – উপমাবাচক পদান্বয়ী অব্যয়।
11. বেশ, ভালা কথা।
বেশ – সম্মতিসূচক অনন্বয়ী অব্যয়।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণের “ব্যাকরণ ও নির্মিতি” থেকে “শব্দ ও পদ : বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ, অব্যয়, ক্রিয়া” -এর উপবিভাগ “অব্যয়” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই অংশটি নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন