আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণের “ব্যাকরণ ও নির্মিতি” থেকে “ধ্বনি, ধ্বনি পরিবর্তন ও সন্ধি” -এর উপবিভাগ “সন্ধি” নিয়ে আলোচনা করবো। এই অংশ নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে।

সন্ধি
‘সন্ধি’ কথার অর্থ কী? সন্ধি কাকে বলে?
‘সন্ধি’ কথাটির অর্থ হল মিলন।
দ্রুত উচ্চারণের ফলে পাশাপাশি দুটি পদের প্রথমটির শেষ ধ্বনি ও পরেরটির প্রথম ধ্বনির মধ্যে অনেকসময় আংশিক বা পূর্ণ মিলন হয় কিংবা একের প্রভাবে অপরটি পরিবর্তিত হয় অথবা একটি ধ্বনি লোপ পায়। এরকম মিলন, পরিবর্তন বা লোপকে ব্যাকরণের পরিভাষায় সন্ধি বলে। যেমন – গিরি + ইন্দ্র = গিরীন্দ্র।
সন্ধি করার কারণ কী?
অনেক ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুটি ধ্বনি একসঙ্গে উচ্চারণ করার সময় বাগযন্ত্রে নানা অসুবিধার সৃষ্টি হয় এবং শ্রুতিকটু লাগে। বাগযন্ত্রের এই অসুবিধা দূর করতে এবং শ্রুতিমাধুর্যের জন্য ধ্বনি দুটির সন্ধি করে একটি নতুন ধ্বনি সৃষ্টি করা হয়।
সন্ধি কত প্রকার ও কী কী?
সন্ধি তিন প্রকার। যথা –
- স্বরসন্ধি,
- ব্যঞ্জনসন্ধি ও
- বিসর্গসন্ধি।
সন্ধির সূত্র কী?
যেসব নিয়ম বা বিধি অনুসারে সন্ধি হয়, তাদের সন্ধির সূত্র বলে।
স্বরসন্ধি কাকে বলে?
পরস্পর সন্নিহিত দুটি স্বরধ্বনির সংযোগে স্বরধ্বনির মিলন, লোপ বা পরিবর্তন সাধিত হলে; তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমন – বিদ্যা+ আলয় (ব্ + ই + দ্ + য্ + আ + আ + ল্ + অ + য়্) বিদ্যালয়।
‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায়’। – এই বাক্যে কোন্ পদটির সন্ধি হয়েছে? সন্ধির কোন্ সূত্র অনুসারে এখানে সন্ধি হয়েছে? সেই সূত্রের অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘স্বাধীনতা’ = স্ব + অধীনতা।
সূত্র – ‘অ’-কার বা ‘আ’-কার -এর পর ‘অ’ বা ‘আ’ থাকলে বা উচ্চারিত হলে উভয়ে মিলে ‘আ’ উচ্চারিত হয় এবং ‘আ’ পূর্বধ্বনিতে মিলে যায়।
উদাহরণ –
- অ + অ = আ → যুগ + অন্তর = যুগান্তর
- অ + আ = আ → হিম + আলয় = হিমালয়
- আ + অ = আ → কথা + অমৃত = কথামৃত
- আ + আ = আ → বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়
‘ই’-কার বা ‘ঈ’-কার -এর পর ‘ই’ বা ‘ঈ’ থাকলে বা উচ্চারিত হলে উভয়ে মিলে কোন্ ধ্বনি উচ্চারিত হয়? উদাহরণ দাও।
সূত্র – ‘ই’বা ‘ঈ’-কার -এর পরে ‘ই’ বা ‘ঈ’ থাকলে বা উচ্চারিত হলে উভয়ে মিলে ‘ঈ’ উচ্চারিত হয়। ‘ঈ’ পূর্বধ্বনিতে মিলে যায়।
উদাহরণ –
- ই + ই = ঈ → রবি + ইন্দ্র = রবীন্দ্র
- ই + ঈ = ঈ → কবি + ঈশ = কবীশ
- ঈ + ই = ঈ → সুধী + ইন্দ্র = সুধীন্দ্র
- ঈ + ঈ = ঈ → শ্রী + ঈশ = শ্রীশ
“তার কটূক্তি খুব মনে লেগেছে।” – বাক্যটিতে সন্ধিবদ্ধ পদটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো এবং সেটি সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে চলেছে আলোচনা করো। এ জাতীয় অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – কটূক্তি = কটু + উক্তি।
সূত্র – ‘উ’-কার বা ‘উ’-কার-এর পর ‘উ’ বা ‘ঊ’ থাকলে বা উচ্চারিত হলে উভয়ে মিলে ‘উ’ উচ্চারিত হয়। ‘উ’ পূর্বধ্বনিতে মিলে যায়।
উদাহরণ –
- উ + উ = উ → মরু + উদ্যান = মরুদ্যান
- উ + উ = উ → বধূ + উক্তি = বধূক্তি
- উ + উ = উ → লঘু + ঊর্মি = লঘুমি
- উ + উ = উ → ভূ + ঊর্ধ্ব = ভূর্ধ্ব
মহেশ্বরের এক ছেলে গণেশ। – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদগুলিকে সন্ধিবিচ্ছেদ করে দেখাও। এখানে সন্ধির কোন্ সূত্রটি মেনে সন্ধি হয়েছে? সেই সূত্রের অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘মহেশ্বর’ ও ‘গণেশ’। অর্থাৎ, মহা + ঈশ্বর = মহেশ্বর; গণ + ঈশ = গণেশ।
সূত্র – ‘অ’-কার কিংবা বা ‘আ’-কার -এর পর ‘ই’ বা ‘ঈ’ থাকলে উভয়ে মিলে ‘এ’ উচ্চারিত হয়। এবং ওই ‘এ’ পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- আ + ই = এ → যথা + ইচ্ছা = যথেচ্ছা
- আ + ঈ = এ → সারদা + ঈশ্বরী = সারদেশ্বরী
- অ + ই = এ → স্ব + ইচ্ছা = স্বেচ্ছা
- অ + ঈ = ঈ → রাজ্য + ঈশ্বর = রাজ্যেশ্বর
“পরোপকার মানবধর্ম”। – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করে দেখাও। এখানে সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো। এ জাতীয় অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘পরোপকার’। অর্থাৎ, পর+ উপকার = পরোপকার।
সূত্র – ‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার -এর পর ‘উ’ কিংবা ‘ঊ’ থাকলে উভয়ে মিলে ‘ও’ উচ্চারিত হয় এবং সেটি পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- অ + উ = ও → সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়
- অ + উ = ও → চল + ঊর্মি = চলোমি
- আ + উ = ও → যথা + উচিত = যথোচিত
- আ + উ = ও → গঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি
“দেবর্ষি ও রাজর্ষি দুই ভাই।” – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো। এখানে সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো। এ জাতীয় অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘দেবর্ষি’ ও ‘রাজর্ষি’। অর্থাৎ, দেব + ঋষি = দেবর্ষি; রাজা + ঋষি = রাজর্ষি।
সূত্র – ‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার -এর পর ‘ঋ’ থাকলে উভয়ে মিলে ‘অর্’ হয়। ওই ‘অর্’ -এর ‘অ’ পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় এবং ‘র’ রেফ হয়ে পরবর্ণের মাথায় বসে। এই জাতীয় উদাহরণ হল –
উদাহরণ –
- অ + ঋ = অর্ → সপ্ত + ঋষি = সপ্তর্ষি
- আ + ঋ = অর্ → মহা + ঋষি = মহর্ষি
‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার -এর পর ‘এ’ কিংবা ‘ঐ’ থাকলে উভয়ে মিলে কোন্ ধ্বনি উচ্চারিত হয়? উদাহরণ দাও।
সূত্র – ‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার -এর পর ‘এ’ কিংবা ‘ঐ’ থাকলে উভয়ে মিলে ‘ঐ’ হয়। এবং ‘ঐ’ প্রথম অংশের শেষ বর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- অ + এ = ঐ → জন + এক = জনৈক
- অ + ঐ = ঐ → পথ + ঐক্য = পথৈক্য
- আ + এ = ঐ → সদা + এব = সদৈব
- আ + ঐ = ঐ → মহা + ঐশ্বর্য = মহৈশ্বর্য
‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার -এর পর ‘ও’ কিংবা ‘ও’ থাকলে উভয়ে মিলে কোন্ ধ্বনি উচ্চারিত হয়? উদাহরণ দাও।
সূত্র – ‘অ’-কার কিংবা ‘আ’-কার-এর পর ‘ও’ কিংবা ‘ও’ থাকলে উভয়ে মিলে ‘ও’ হয় এবং ‘ঔ’ প্রথম অংশের শেষ বর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- অ + ও = ঔ → বন + ওষধি = বনৌষধি
- অ + ঔ = ঔ → পরম + ঔষধ = পরমৌষধ
- আ + ও = ঔ → মহা + ওষধি = মহৌষধি
- আ + ঔ = ঔ → মহা + ঔষধ = মহৌষধ
‘ই’ বা ‘ঈ’ -এর পর ‘ই’ কিংবা ‘ঈ’ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে উভয়ে মিলে কী পরিবর্তন ঘটে? উদাহরণ দাও।
সূত্র – ‘ই’ বা ‘ঈ’-এর পর ‘ই’ কিংবা ‘ঈ’ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে উভয়ে মিলে ‘য’ (য-ফলা) হয় এবং সেই য-ফলা প্রথম অংশের শেষ বর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- ই + অ = য্ → অতি + অন্ত = অত্যন্ত
- ই + আ = য্→ ইতি + আদি = ইত্যাদি
- ঈ + অ = য্ → নদী + অম্বু = নম্বু
- ঈ + আ = য্ → মসী + আধার = মস্যাধার
‘উ’ বা ‘উ’ -এর পর ‘উ’ বা ‘উ’ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে উভয়ে মিলে কী পরিবর্তন ঘটে? উদাহরণ দাও।
সূত্র – ‘উ’ বা ‘উ’ -এর পর ‘উ’ বা ‘ঊ’ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে উভয়ে মিলে ‘ব’ (ব-ফলা) হয় এবং সেই ব-ফলা পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়।
উদাহরণ –
- উ + অ → পশু + অধম = পশ্বাধম
- উ + আ → মনু + আদি = মন্বাদি
- উ + ই → অনু + ইত = অন্বিত
- উ + ঈ → অনু + ঈক্ষা = অন্বীক্ষা
- উ + এ → অনু + এষণ = অন্বেষণ
- ঊ + আ → বধূ + আসন = বধ্বাসন
“মধুর পবন বহিছে”। – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদটি খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করে দেখাও। এখানে সন্ধির কোন্ সূত্র মেনে সন্ধি হয়েছে তা আলোচনা করো। এ জাতীয় অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘পবন’। অর্থাৎ, পো + অন = পবন।
সূত্র – ‘এ’, ‘ঐ’, ‘ও’, ‘ঔ’ -এর পর অন্য স্বর থাকলে ‘এ’ স্থানে ‘অয়’, ‘ঐ’ স্থানে ‘আয়’, ‘ও’ স্থানে ‘অব্’ এবং ‘ও’ স্থানে ‘আব্’ হয়।
উদাহরণ –
- ও + অ → ভো + অন = ভবন
- ও + আ → গো + আদি = গবাদি
- ও + ই → পো + ইত্র = পবিত্র
- ও + অ → পৌ + অক = পাবক
- ও + ই → নৌ + ইক = নাবিক
- ও + উ → ভৌ + উক = ভাবুক
স্বরসন্ধির দুটি উদাহরণ দাও।
স্বরসন্ধির দুটি উদাহরণ হল –
দেব + আলয় = দেবালয় (অ + আ = আ)
বধূ + উৎসব = বধূৎসব (ঊ + ঊ = ঊ)
‘মহা’ শব্দটির প্রকৃত রূপ কী?
মহা’ শব্দটির প্রকৃত রূপ আসলে ‘মহান’ বা ‘মহৎ’।
‘দিল্লীশ্বর’ ও ‘লঘূর্মি’ শব্দ দুইটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো।
দিল্লীশ্বর = দিল্লি + ঈশ্বর (ই + ঈ = ঈ)
লঘূর্মি = লঘু + ঊর্মি (উ + ঊ = ঊ)
বাংলা ভাষায় অপ্রচলিত তিনটি শব্দের উদাহরণ দাও।
বাংলা ভাষায় অপ্রচলিত তিনটি শব্দ হল – বধূক্তি, ভূর্ধ্ব, বহুর্ধ্ব।
নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমস্ত স্বরসন্ধি সংস্কৃত স্বরধ্বনির কোনো সূত্রের আওতায় পড়ে না অর্থাৎ যে সমস্ত শব্দ সংস্কৃত স্বরধ্বনির নিয়ম না মেনেও ব্যাকরণগতভাবে সন্ধিবদ্ধ হয় এবং বিশেষরূপ লাভ করে, নিয়ম বহির্ভূত সেইসব সন্ধিকেই নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি বলে। উদাহরণ –
- সার + অঙ্গ = সারঙ্গ
- গো + ইন্দ্র = গবেন্দ্র
নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধির নিয়মে সন্ধি করো –
- শুদ্ধ + ওদন = শুদ্ধোদন
- সম + অর্থ = সমার্থ
- স্ব + ঈর = স্বৈর
- মার্ত + অন্ড = মার্তন্ড
- রক্ত + ওষ্ঠ = রক্তোষ্ঠ
- প্র + উঢ় = প্রৌঢ়
- বিম্ব + ওষ্ঠ = বিম্বোষ্ঠ
- কুল + ওটা = কুলটা
- গো + অক্ষ = গবাক্ষ
- ক্ষণ + এক = ক্ষণেক
ব্যাঞ্জনসন্ধি
ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে?
যখন দুটি সন্নিহিত ধ্বনির একটি ব্যঞ্জনধ্বনি ও অন্যটি স্বরধ্বনি অথবা দুটি ধ্বনিই ব্যঞ্জনধ্বনি হয়, তখন ধ্বনিগুলির মধ্যে মিলন, বিলোপ অথবা পরিবর্তন সাধিত হলে তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে।
উদাহরণ – উৎ + চারণ (উ + ত্ + চ্ + আ + র্ + অ + ণ্ + অ) = উচ্চারণ।
ব্যঞ্জনসন্ধি কত ভাবে ঘটতে পারে? কী কী?
ব্যঞ্জনসন্ধি তিনভাবে ঘটতে পারে। যথা –
- স্বরধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি (আ + ছন্ন = আচ্ছন্ন)।
- ব্যঞ্জনধ্বনি + স্বরধ্বনি (দিক্ + অন্ত = দিগন্ত)।
- ব্যঞ্জনধ্বনি + ব্যঞ্জনধ্বনি (উৎ+ জ্বল = উজ্জ্বল)।
“বৃক্ষচ্ছায়ায় দাঁড়াও”। বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদটি খুঁজে বের করো। কোন্ কোন্ ধ্বনির মধ্যে সন্ধি হয়েছে দেখাও। কোন্ সূত্র অনুযায়ী এই সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘বৃক্ষচ্ছায়া’। অর্থাৎ, বৃক্ষ ছায়া = বৃক্ষচ্ছায়া (অ + ছ্ = চ্ছ)।
এখানে স্বরধ্বনি (অ) ও ব্যঞ্জনধ্বনি (ছ)-এর মধ্যে সন্ধি হয়েছে।
সূত্র – পূর্বপদের শেষ ধ্বনিটি স্বরধ্বনি এবং পরপদের প্রথম ধ্বনিটি ব্যঞ্জনধ্বনি ‘ছ্’ হলে ‘ছ্’-এর স্থানে ‘চ্ছ’ হয়।
উদাহরণ – বি + ছেদ = বিচ্ছেদ (ই + ছ্ = চ্ছ)
“দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার।” – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদটি খুঁজে বের করো। কোন্ কোন্ ধ্বনির মধ্যে সন্ধি হয়েছে দেখাও। কোন্ সূত্রানুযায়ী সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘দিগন্ত’। অর্থাৎ, দিক্ + অন্ত (ক্ + অ = গ্) = দিগন্ত।
এখানে ব্যঞ্জনধ্বনি (ক)-র সঙ্গে স্বরধ্বনি (অ)-র সন্ধি হয়েছে।
সূত্র – যে-কোনো বর্গের প্রথম ধ্বনি যদি পরবর্তী পদের প্রথমে থাকা স্বরধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হয় তবে প্রথম ধ্বনিটি ওই বর্গেরই তৃতীয় ধ্বনিতে বদলে যায়। অর্থাৎ, ক্ > গ্, চ্ > জ্, ট্ > ড্, ত্ > দ্, ফ্ > ব্ হয়ে যায়।
উদাহরণ – বিদ্যুৎ + আলোক বিদ্যুদালোক (ত্ + আ = দ্)
‘বাগদত্তা’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করে দেখাও। এখানে কোন্ কোন্ ধ্বনির মধ্যে সন্ধি হয়েছে এবং কোন্ সূত্র অনুযায়ী সন্ধি হয়েছে সেটি আলোচনা করো।
বাক্ + দত্তা = বাগদত্তা (ক্ + দ্ = গ্)।
এখানে ব্যঞ্জনধ্বনি (ক্)-র সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনি (দ্)-র সন্ধি হয়েছে।
সূত্র – পূর্বপদে যে-কোনো বর্গের প্রথম ধ্বনি এবং পরপদে যে-কোনো বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনি বা য্, র্, ল্, ব্, হ্ থাকলে প্রথম ধ্বনিটি সেই বর্গেরই তৃতীয় ধ্বনিতে বদলে যায়।
উদাহরণ – দিক্ + গজ = দিগ্গজ (ক্ + গ্ = গ্)
‘উচ্চারণ’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো এবং দেখাও সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে এখানে সন্ধি হয়েছে।
উৎ + চারণ = উচ্চারণ (ত্ + চ্ = চ্চ)।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ’-র সঙ্গে ‘চ্’ বা ‘ছ্’ সংযুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ্’-র বদলে ‘চ্ ‘হয়।
উদাহরণ – বিপদ্ + চয় = বিপচ্চয়। (দ্ + চ্ = চ্চ)
‘ত্’ বা ‘দ্’ -র সঙ্গে ‘চ্’ বা ‘ছ্’ সংযুক্ত হলে কী পরিবর্তন ঘটে উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্’-র সঙ্গে ‘চ্’ বা ‘ছ্’ সংযুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ’-র বদলে ‘জ্’ হয়
উদাহরণ – সৎ + জন = সজ্জন (ত্ + জ্ = জ্জ)
‘ত্’ বা ‘দ’ -এর সঙ্গে ‘ট্’ বা ‘ঠ্’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘ট্’ বা ‘ঠ্’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বা দ্’ -এর বদলে ‘ট্’ হয়।
উদাহরণ – বৃহৎ + টঙ্ক = বৃহট্টঙ্ক (ত্ + ট্ = ট্ট)
‘ত্’ বা ‘দ্ ‘ -এর সঙ্গে ‘ড্’ বা ‘চ্’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘ড্’ বা ‘ঢ্’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর বদলে ‘ড্’ হয়।
উদাহরণ – উৎ + ডীন = উড্ডীন (ত্ + ড্ = ড্ড)
‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘ন’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘ন’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর বদলে ‘ন্’ হয়
উদাহরণ – জগৎ + নাথ = জগন্নাথ (ত্ + ন্ = ন্ন)
‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘ল্’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্ ‘-এর সঙ্গে ‘ল’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর বদলে ‘ল্’ হয়
উদাহরণ – উৎ + লেখ = উল্লেখ (ত্ + ল্ = ল্ল)
“উচ্ছ্বসিত রক্ত আজি বক্ষস্থল ফেলিছে গ্রাসি।” – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে বের করে সন্ধিবিচ্ছেদ করো। এখানে সন্ধির কোন্ নিয়মটি প্রযোজ্য তা লেখো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘উচ্ছ্বসিত’। অর্থাৎ, উৎ + শ্বসিত = উচ্ছ্বসিত।
সূত্র – ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর সঙ্গে ‘শ্’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বা ‘দ্’ -এর বদলে ‘চ্’ হয়, ‘শ্’ বদলে ‘ছ্’ হয়। অর্থাৎ ‘ত্’ বা ‘দ্’ এবং ‘শ্’ দুজনেই বদলে ‘চ্ছ’ হয়।
উদাহরণ – চলৎ + শক্তি = চলচ্ছক্তি
উদ্ + তৃতি – সন্ধি করো এবং সন্ধির সূত্রটি উদাহরণ-সহ লেখো।
সন্ধিবদ পদ – উদ্ + হৃতি = উদ্ধৃতি।
সূত্র – ‘ত্’ -এর সঙ্গে ‘হ্’ যুক্ত হলে ‘ত্’ বদলে ‘দ্’ হয়ে যায় এবং ‘হ্’ বদলে ‘ধ্’ হয়ে যায়। অর্থাৎ ‘ত্’ ও ‘হ্’ মিলিত হয়ে দুজনের বদলে ‘দ্ধ্’হয়।
উদাহরণ – পদ্ + হতি = পদ্ধতি
‘চ’ বর্গের পরে ‘ন’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ লেখো।
সূত্র – ‘চ্’ বর্গের পরে ‘ন্’ যুক্ত হলে ‘ন্’ বদলে ‘ঞ্’ হয়ে যায়।
উদাহরণ – যাচ্ + না = যাচঞা
‘ন্’ -এর পর উষ্মধ্বনি (শ্, ষ্, স্, হ্) থাকলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ লেখো।
সূত্র – ‘ন্’ -এর পর উষ্মধ্বনি শ্, ষ্, স্, হ্) থাকলে ‘ন্ ‘-এর বদলে ‘ং’ হয়।
উদাহরণ – দন্ + শ = দংশ
‘ষ্’ -এর সঙ্গে ‘ত্’ বা ‘থ্’ যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখা।
সূত্র – ‘স্’ -এর সঙ্গে ‘ত্’ বা ‘থ্’ যুক্ত হলে ‘ত্’ -এর বদলে ‘ট্’, ‘থ্’ -এর বদলে ‘ঠ্’ হয়।
উদাহরণ – নষ্ + ত = নষ্ট
যে-কোনো স্পর্শধ্বনি ‘ম্’ -এর সঙ্গে যুক্ত হলে কী পরিবর্তন ঘটে উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – যে-কোনো স্পর্শধ্বনি ‘ম্’ -এর সঙ্গে যুক্ত হলে যে বর্গের ধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, ‘ম্’ সেই বর্গের পঞ্চম ধ্বনি হয়ে যায়।
উদাহরণ – সম্ + কীর্ণ = সঙ্কীর্ণ (ম্ + ক্ = ঙ) অর্থাৎ ‘ক’ বর্গের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বলে ম্ > ঙ্ -তে রূপান্তরিত হল।
‘ম্’ -এর সঙ্গে অন্তঃস্থ বর্ণ (য্, র্, ল্, ব্) কিংবা উষ্মবর্ণ (শ, স্, স্, হ্) যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ম’ -এর সঙ্গে অন্তঃস্থ বর্ণ (য্, র্, ল্, ব্) কিংবা উষ্মবর্ণ (শ্, ষ্, স্, হ্) যুক্ত হলে ‘ম্’ বদলে ‘ং’ হয়ে যায়।
উদাহরণ – সম্ + শয় = সংশয়
‘উদ’ উপসর্গের পর ‘স্থা’ ও ‘স্তন্ভ্’ ধাতু থাকলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও?
সূত্র – ‘উদ্’ উপসর্গের পর ‘স্থা’ ও ‘স্তন্ভ্’ ধাতুর ‘স’ লোপ পায়।
উদাহরণ – উদ্ + স্থান = উত্থান
‘সম্’ ও ‘পরি’ উপসর্গের পর ‘কৃ’ ধাতু থাকলে কী পরিবর্তন হয়, উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘সম্’ ও ‘পরি’ উপসর্গের পর ‘কৃ’ ধাতু থাকলে ধাতুর আগে ‘স্’ আগম ঘটে এবং ‘ম্’ অনুস্বর (ং) হয়ে যায়।
উদাহরণ – সম্ + কার = সংস্কার
‘তড়িদালোক’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো। এখানে সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – তড়িৎ + আলোক = তড়িদালোক।
সূত্র – পূর্বপদের শেষে ‘ত্’ বা ‘দ্’ এবং পরপদের প্রথমে স্বরবর্ণ, গ্, ঘ্, দ্, ধ্, ব্, ভ্ কিংবা য্, র্, ব্ থাকলে পূর্বপদের শেষে ‘ত্’ বা ‘দ্ ‘ -এর জায়গায় ‘দ্’ হয়। ‘য্’ পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনে যুক্ত হলে য্-ফলা (্য) হয় এবং ‘র্’ পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনে যুক্ত হলে র্-ফলা (্র) হয়।
উদাহরণ – সৎ+ আশয় = সদাশয়
‘ন’ কিংবা ‘ম’ পরে থাকলে পূর্বপদের শেষে অবস্থিত ‘ক্’, ‘ট্’, ‘ত্’ বা ‘দ্’, ‘প্’ স্থানে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – ‘ন্’ কিংবা ‘ম্’ পরে থাকলে পূর্বপদের শেষে অবস্থিত ‘ক্’ স্থানে ‘ভূ’, ‘ট্’ স্থানে ‘ন্’, ‘ত্’ বা ‘দ্’ স্থানে ‘ন্’ এবং ‘প্’ স্থানে ‘ম্’ বা ‘ব্’ হয়
উদাহরণ –
- দিক্ + নাগ = দিঙ্নাগ
- দিগ্ + মণ্ডল = দিঙমণ্ডল
‘তৎসম’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো এবং সন্ধির কোন্ নিয়ম অনুযায়ী সন্ধিটি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – তদ্ + সম = তৎসম।
সূত্র – ‘দ্’, ‘ধ্’ -এর পর ক-বর্গ বা ত-বর্গ বা প-বর্গের প্রথম বর্ণ, দ্বিতীয় বর্ণ বা ‘স্’ থাকলে ‘দ্’ ও ‘ধ্ ‘-এর জায়গায় ‘ত্’ (ৎ) হয়।
উদাহরণ – হৃদ্ + পদ্ম = হৃৎপদ্ম
‘বিমুগ্ধ’ পদটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো এবং সন্ধির কোন্ নিয়ম তাই অনুযায়ী সন্ধিটি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্ধিবদ্ধ পদ – বিমুহ্ + ত = বিমুগ্ধ।
সূত্র – পদের মধ্যে ‘হ্’, ‘ধ্’ কিংবা ‘ভ্’ -এর পরে ‘ত্’ থাকলে ‘হ্’ ও ‘ত্’, ‘ধৃ’ ও ‘ত্’ এবং ভ্’ ও ‘ত’ যথাক্রমে ‘গ্ধ’, ‘দ্ধ’ এবং ‘ন্ধ’-এ পরিণত হয়।
উদাহরণ – লভ্ + ত = লব্ধ
‘বসুন্ধরা’ শব্দের সন্ধিবিচ্ছেদ করো। এখানে সন্ধির কোন্ নিয়ম মেনে সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো।
সন্নিবদ্ধ পদ – বসুম্ + ধরা = বসুন্ধরা।
সূত্র – ‘চ্’ থেকে ‘ম্’ পর্যন্ত যে-কোনো বর্ণ পরে থাকলে পূর্বপদের শেষে অবস্থিত ‘ম্’-স্থানে পরবর্তী বর্গীয় বর্ণটির পঞ্চম বর্ণ হয়। অর্থাৎ ‘চ্’ স্থানে ‘ঞ’ এবং ‘ধ্’ স্থানে ‘ন্’ হয়।
উদাহরণ – সম্ + চিত = সঞ্চিত
‘ত্’ -এর সঙ্গে সন্ধির নিয়মের কিছু উদাহরণ দেখাও।
- হ্ + ত্ = গ্ধ → দুহ্ + ত = দুগ্ধ; দহ্ + ত = দগ্ধ
- ধ্ + ত্ = দ্ধ → বুধ্ + ত = বুদ্ধ; রুধ্ + ত = রুদ্ধ
- ভ্ + ত্ = ব্ধ → লভ্ + ত = লব্ধ
নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমস্ত শব্দ ব্যঞ্জনসন্ধির প্রচলিত নিয়ম মেনে সন্ধিবদ্ধ হয়নি, সেইসব শব্দের সন্ধিকে নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি বলা হয়।
উদাহরণ –
- অষ্ট + দশ = অষ্টাদশ
- আ + চর্য = আশ্চর্য
নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধিকে কি অশুদ্ধ বলা চলে?
নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধিগুলি সিদ্ধ অর্থাৎ ব্যাকরণস্বীকৃত এবং শব্দগুলিও শুদ্ধ। তাই একে অশুদ্ধ বলা চলে না।
সন্ধিবদ্ধ করো –
- ষট্ + দশ = ষোড়শ
- পতৎ + অঞ্জলি = পতঞ্জলি
- পর + পর = পরস্পর
- পতৎ + অঙ্গ = পতঙ্গ
- পুনস্ + লিঙ্গ = পুংলিঙ্গ
- পর + পরা = পরম্পরা
- পশ্চাৎ + অর্ধ = পশ্চার্ধ
- আ + পদ = আস্পদ
- বৃহৎ + পতি = বৃহস্পতি
- হিনস + অ = সিংহ
- এক + দশ = একাদশ
- বন + পতি = বনস্পতি
- বিশ্ব + মিত্র = বিশ্বামিত্র
- হিরণ্য + ময় = হিরন্ময়
- হরি + চন্দ্র = হরিশ্চন্দ্র
- দিক্ + লোক = দ্যুলোক
বিসর্গসন্ধি
বিসর্গসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
বিসর্গের সঙ্গে পরবর্তী স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনির যে সন্ধি হয়, সেই সন্ধিকে বলা হয় বিসর্গসন্ধি।
উদাহরণ –
- বয়ঃ + অতিরিক্ত = বয়োতিরিক্ত
- শিরঃ + চ্ছেদ = শিরশ্ছেদ
বিসর্গ কত প্রকারের এবং কী কী আলোচনা করো।
বিসর্গ দু-প্রকারের হয়। যথা-
- র্-জাত বিসর্গ – শব্দের শেষে যদি র্ থাকে এবং সেটি বিসর্গে পরিণত হয়, তাকে বলে র্-জাত বিসর্গ। যেমন – অন্তর-অন্তঃ, নির্-নিঃ, দুর-দুঃ, পুনর্-পুনঃ, প্রাতর্-প্রাতঃ – এইসব বিসর্গর-জাত।
- স্-জাত বিসর্গ – শব্দের শেষে যদি স্ থাকে এবং সেই স্ যদি বিসর্গে পরিণত হয়, তাহলে সেই বিসর্গকে স্-জাত বিসর্গ বলে। যেমন – শিরস্-শিরঃ, নমস্-নমঃ, যশস্-যশঃ, বয়স্-বয়ঃ, মনস্-মনঃ- এইসব বিসর্গ স্-জাত।
বিসর্গসন্ধি কি ব্যঞ্জনসন্ধি?
বিসর্গকে ব্যঞ্জনধ্বনির অন্তর্ভুক্ত মনে করলে বিসর্গসন্ধিকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলা চলে। আসলে বাংলায় বিসর্গের উচ্চারণ না থাকায় এ কথা বলার দাবি জোরালো হয় না।
বিসর্গ সন্ধি কতভাবে হয়?
বিসর্গ সন্ধি দু-ভাবে হয়। যথা –
- বিসর্গের (ঃ) সঙ্গে স্বরধ্বনি যুক্ত হয়ে। উদাহরণ – মনঃ + অভিলাষ = মনোভিলাষ
- বিসর্গের (ঃ) সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনি যুক্ত হয়ে। উদাহরণ – নভঃ + চর = নভশ্চর
যদি পূর্বধ্বনি বিসর্গ (ঃ) এবং পরধ্বনি ‘অ’ হয় তবে সন্ধির সময় কী পরিবর্তন হয়?
সূত্র – যদি পূর্বধ্বনি বিসর্গ (ঃ) এবং পরধ্বনি ‘অ’ হয়, তাহলে উভয়ে মিলে ‘ও’ কার হয়ে পূর্বধ্বনিতে যুক্ত হয়।
উদাহরণ – ততঃ + অধিক = ততোধিক
প্রথম পদের শেষে অ-কারের পর যদি বিসর্গ থাকে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ যদি অ-কার বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্বরবর্ণ হয়, তখন কী পরিবর্তন হয়? উদাহরণ দাও।
সূত্র – প্রথম পদের শেষে অ-কারের পর যদি বিসর্গ থাকে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ যদি অ-কার বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্বরবর্ণ হয়, তখন বিসর্গের লোপ হয়। লোপের পর আর কোনো সন্ধি হয় না।
উদাহরণ – মনঃ + আশা = মন-আশা
সন্ধি বিচ্ছেদ করো –
- শির-উপরি = শিরঃ + উপরি
- বক্ষ-উপরি = বক্ষঃ + উপরি
- অতএব = অতঃ + এব
- বয়-আধিক্য = বয়ঃ + আধিক্য
প্রথম পদের শেষে অ-কারের পরবর্তী বিসর্গের পরে বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণের ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণের য্, র্, ল্, ব্, হ্ থাকলে কী পরিবর্তন হয়? উদাহরণ দাও।
সূত্র – প্রথম পদের শেষে অ-কারের পরবর্তী বিসর্গের পরে বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণের ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণের য্, র্, ল্, ব্, হ্ থাকলে অ-কার এবং তার পরের বিসর্গ মিলে ও-কার হয়। উদাহরণ – পুরঃ + হিত = পুরোহিত
“পুরস্কার চেয়ে সে তিরস্কার পেল।” – বাক্যটি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো। সন্ধির কোন্ নিয়ম এখানে প্রযুক্ত হয়েছে আলোচনা করো। এ জাতীয় অন্য উদাহরণ দাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘পুরস্কার’, ‘তিরস্কার’। অর্থাৎ, পুরঃ + কার = পুরস্কার; তিরঃ + কার = তিরস্কার।
সূত্র – অ-কার বা আ-কারের পর বিসর্গ থাকলে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ ক্, খ, প্, ফ্ – এদের যে-কোনো একটি হলে সেই বিসর্গ স্থানে ‘স্’ হয়। উদাহরণ – মনঃ + কামনা = মনস্কামনা
বিসর্গের (ঃ) পর চ্ কিংবা ছ্ থাকলে বিসর্গটির কী পরিবর্তন ঘটে উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – বিসর্গের পর ঢ় কিংবা ‘ছ’ থাকলে বিসর্গ (ঃ) ‘শ’ হয়ে যায়। উদাহরণ – নিঃ+ চয় = নিশ্চয়।
“নিষ্ঠুরতা ত্যাগ করো” – বাক্যটিতে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করে দেখাও। সন্ধির কোন্ নিয়মানুসারে এখানে সন্ধি হয়েছে?
সন্ধিবদ্ধ পদ – ‘নিষ্ঠুর’। অর্থাৎ নিঃ+ ঠুর = নিষ্ঠুর। সূত্র – বিসর্গের পর ‘ট্’ বা ‘ঠ্’ থাকলে বিসর্গটি (ঃ) ‘ষ্’ হয়ে যায়।
উদাহরণ – ধনুঃ + টংকার = ধনুষ্টংকার
বিসর্গের পর ‘ত্’ বা ‘থ্’ থাকলে বিসর্গটির কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – বিসর্গের পর ‘ত্’ কিংবা ‘থ্’ থাকলে বিসর্গটি (ঃ) স্ হয়ে যায়। উদাহরণ – ইতঃ + তত = ইতস্তত
বিসর্গের (ঃ) পর ‘র’ থাকলে সন্ধির সময় কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – বিসর্গের পর ‘র’ থাকলে সন্ধির সময় বিসর্গটি লোপ পায় এবং বিসর্গের আগের স্বরটি দীর্ঘ হয়।
উদাহরণ –
- নিঃ + রক্ত = নীরক্ত
- নিঃ + রস = নীরস
‘নিষ্কলঙ্ক’, ‘নিষ্পত্র’ – এই শব্দ দুটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো এবং বিসর্গসন্ধির কোন্ নিয়ম অনুসারে এখানে সন্ধি হয়েছে তা দেখাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – নিঃ + কলঙ্ক = নিষ্কলঙ্ক; নিঃ + পত্র = নিষ্পত্র।
সূত্র – অ-কার, আ-কার ভিন্ন স্বরবর্ণের পরবর্তী বিসর্গের পর (নিঃ, আবিঃ, দুঃ, চতুঃ, বহিঃ, পরিঃ প্রভৃতি পদের পর) ক্, খ, প্, ফ্ থাকলে বিসর্গটি (ঃ) ষ্ হয়ে যায়। উদাহরণ – নিঃ + কাম = নিষ্কাম
‘অন্তরঙ্গ’, ‘পুনর্বার’ – শব্দগুলির সন্ধি করো। বিসর্গসন্ধির কোন্ নিয়মানুসারে সন্ধি হয়েছে তা দেখাও।
সন্ধিবদ্ধ পদ – অন্তঃ + অঙ্গ = অন্তরঙ্গ; পুনঃ + বার = পুনর্বার।
সূত্র – অ-কারের পর র্-জাত বিসর্গ এবং তার পরে স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ কিংবা ষ্, র্, ল্, ব্, হ্ থাকলে ওই বিসর্গ (ঃ) র্-হয়ে পরবর্তী বর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরবর্তী পদে স্বরবর্ণ থাকলে তা ‘র’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়, আর ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে ‘র্’ রেফ (´) হয়ে মাথায় যায়।
উদাহরণ – প্রাতঃ + ভ্রমণ = প্রাতভ্রমণ
‘নিরবধি’, ‘নির্মল’, ‘নির্ঘাত’, ‘ধনুর্বিদ্যা’ – শব্দগুলির সন্ধি করো এবং বিসর্গ সন্ধির কোন্ নিয়মানুসারে এখানে সন্ধি হয়েছে আলোচনা করো।
- নিঃ + অবধি = নিরবধি
- নিঃ + মল = নির্মল
- নিঃ + ঘাত = নির্ঘাত
- ধনুঃ + বিদ্যা = ধনুর্বিদ্যা
সূত্র – অ, আ ভিন্ন স্বরবর্ণের পর বিসর্গ থাকলে এবং তারপর স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বর্ণ কিংবা য্, র্, ল্, ব্, হ্ থাকলে র্-জাত কিংবা স্-জাত বিসর্গ ‘র্’ হয়। বিসর্গের পর স্বরবর্ণ থাকলে সেই ‘র্’ স্বরবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে ‘র্’ রেফ (´) হয়ে ব্যঞ্জনবর্ণের মাথায় বসে।
উদাহরণ – দুঃ + আরোগ্য = দুরারোগ্য
পরপদের প্রথমে স্ত, স্থ, স্প থাকলে পূর্বপদের অন্তস্থিত বিসর্গের কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – পরপদের প্রথমে স্ত, স্থ, স্প থাকলে পূর্বপদের অন্তস্থিত বিসর্গ বিকল্পে লুপ্ত হয়।
উদাহরণ –
- নিঃ + স্পৃহ = নিঃস্পৃহ/নিস্পৃহ
- মনঃ + স্থ = মনঃস্থ/মনস্থ
নিপাতনে সিদ্ধ বিসর্গসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমস্ত বিসর্গসন্ধি বিসর্গ সন্ধিবিধি না মেনেই হয় তাদের নিপাতনে সিদ্ধ বিসর্গসন্ধি বলে।
উদাহরণ –
- অহঃ + রাত্র = অহোরাত্র
- মনঃ + ঈষা = মনীষা
- অহঃ + নিশ = অহর্নিশ
- গীঃ + পতি = গীষ্পতি
খাঁটি বাংলা সন্ধি
খাঁটি বাংলা সন্ধি কাকে বলে?
দ্রুত উচ্চারণের জন্য সন্নিহিত ধ্বনির মিলন, লোপ বা পরিবর্তনে বাংলা শব্দে পরিবর্তন ঘটার প্রক্রিয়াকেই বলে বাংলা সন্ধি বা খাঁটি বাংলা সন্ধি। উদাহরণ: এত এক এতেক কহিয়া রাজা….। এখানে ‘এতেক’ খাঁটি বাংলা সন্ধির উদাহরণ।
খাঁটি বাংলা সন্ধি কত প্রকার ও কী কী?
খাঁটি বাংলা সন্ধি দু-প্রকার। যথা –
- খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধি,
- খাঁটি বাংলা ব্যঞ্জনসন্ধি।
বিসর্গের উচ্চারণ বাংলায় নেই বলে খাঁটি বাংলা বিসর্গসন্ধি হয় না।
খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধির ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুটি স্বরধ্বনি থাকলে কী হয়, উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধির ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুটো স্বরধ্বনি থাকলে একটি লোপ পায়।
উদাহরণ –
- আধ + এক = আধেক
- ছেলে + আমি ছেলেমি
- যত + এক = যতেক
- ছোটো + এর = ছোটোর
খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধির ক্ষেত্রে মৌলিক স্বরধ্বনির পর এ-কার থাকলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধির ক্ষেত্রে মৌলিক স্বরধ্বনির পর এ-কার থাকলে এ-কার ‘য়’, ‘য়ে’ হয়ে যায়।
উদাহরণ –
- আলো + এ = আলোয়
- ভাই + এর = ভায়ের
খাঁটি বাংলা স্বরসন্ধির ক্ষেত্রে কখনো-কখনো সংস্কৃত সন্ধি অনুসরণ করে শব্দ মিলিত হয়। এরকম চারটি উদাহরণ দাও।
- ঢাকা + ঈশ্বরী = ঢাকেশ্বরী
- রথ + উৎসব = রথোৎসব
- মত + অন্তর = মতান্তর
- দিল্লি + ঈশ্বর = দিল্লীশ্বর
খাঁটি বাংলা ব্যঞ্জনসন্ধির ক্ষেত্রে পরপদের প্রথমে ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে কী পরিবর্তন হয় উদাহরণ-সহ দেখাও।
সূত্র – খাঁটি বাংলা ব্যঞ্জনসন্ধির ক্ষেত্রে পরপদের প্রথমে ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে পূর্বপদের শেষ ধ্বনি লোপ পায়।
উদাহরণ –
- পিসি + শাশুড়ি = পিশাশুড়ি
- উঁচু + কপালী = উঁচকপালী
সন্ধি বিচ্ছেদ করো – কাঁচকলা, কোত্থেকে, টাক্শাল, মহারাজা, ঢেঁকশাল, পানফল।
- কাঁচা + কলা = কাঁচকলা
- কোথা + থেকে = কোথেকে
- টাকা + শাল = টাক্শাল
- মহান + রাজা = মহারাজা
- ঢেঁকি + শাল = ঢেঁকশাল
- পানি + ফল = পানফল
খাঁটি বাংলা ব্যঞ্জনসন্ধির ক্ষেত্রে পরপদের প্রথম ধ্বনি সঘোষ হলে পূর্বপদের শেষ অঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনির কী পরিবর্তন হয়?
সূত্র – খাঁটি বাংলা ব্যঞ্জনসন্ধির ক্ষেত্রে পরপদের প্রথম ধ্বনি সঘোষ হলে পূর্বপদের শেষ অঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি সঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি হয়ে যায়।
উদাহরণ –
- এক + গুণ = এগুণ
- পাঁচ + জন = পাঁজ্জন
সন্ধি বিচ্ছেদ করো – এদ্দিন, ছোড়দাদা।
- এত + দিন = এদ্দিন
- ছোটো + দাদা = ছোড়দাদা
পরপদের প্রথম ধ্বনি সঘোষ হলে পূর্বপদের শেষ ধ্বনির কী পরিবর্তন হয়?
সূত্র – পরপদের প্রথম ধ্বনি সঘোষ হলে পূর্বপদের শেষ ধ্বনি লোপ পায়।
উদাহরণ –
- জগৎ + জন = জগজ্জন
- জগৎ + বাসী = জগদ্বাসী
‘চ্’ এর পর ‘শ্’, ষ্’, ‘স্’ থাকলে কী পরিবর্তন হয় লেখো।
সূত্র – ‘চ্’ -এর পর ‘শ্’, ষ্’, ‘স্’ থাকলে ‘চ’ ‘শ্’-তে পরিণত হয়।
উদাহরণ –
- পাঁচ + শো = পাঁশশো
- পাঁচ + সের = পাঁশসের
‘ত’ বর্গের সঙ্গে ‘চ’ বর্গের ধ্বনি যুক্ত হলে কী পরিবর্তন হয়?
সূত্র – ‘ত্’ বর্গের সঙ্গে ‘চ্’ বর্গের ধ্বনি যুক্ত হলে ‘ত্’ বর্গের ধ্বনিটি ‘চ্’ বর্গের ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়।
উদাহরণ –
- নাত + জামাই = নাজ্জামাই
- সাত + জন্ম = সাজ্জন্ম
বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো
ব্যাকরণের পরিভাষায় সন্ধি হল –
- মিলন
- যোগ
- বিস্তার
- ভাগাভাগি
উত্তর – 1. মিলন
সন্নিহিত ধ্বনি হল পাশাপাশি দুটি শব্দের –
- প্রথম শব্দের শেষ ও দ্বিতীয়ের প্রথম ধ্বনি
- প্রথম শব্দের সমস্ত ধ্বনি
- দ্বিতীয় শব্দের সমস্ত ধ্বনি
- প্রথম শব্দের প্রথম ও দ্বিতীয় শব্দের শেষ ধ্বনি
উত্তর – 1. প্রথম শব্দের শেষ ও দ্বিতীয়ের প্রথম ধ্বনি
যেসব নিয়ম মেনে সন্ধি হয় তাদের বলে –
- সন্ধিবদ্ধ পদ
- সন্ধিবিচ্ছেদ
- বিসর্গ সন্ধি
- সন্ধির সূত্র
উত্তর – 4. সন্ধির সূত্র
‘মিষ্টান্ন’ শব্দের প্রকৃত সন্ধিবিচ্ছেদ –
- মিষ্টি + অন্ন
- মিষ্টা + অন্ন
- মিষ্ট + অন্ন
- মিষ্ঠা + ন
উত্তর – 3. মিষ্ট + অন্ন
স্বরসন্ধির সূত্রানুযায়ী সঠিক জোড়াটি হল –
- অ + ঈ = উ
- আ + ঈ = উ
- আ + উ = ও
- ই + উ = ও
উত্তর – 3. আ + উ = ও
‘মহোৎসব’ শব্দটিকে সন্ধি ভাঙলে আমরা পাই –
- মহান + উৎসব
- মহো + উৎসব
- মহা + উৎসব
- মহৎ + উৎসব
উত্তর – 3. মহা + উৎসব
‘শঙ্কার্ত’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছিন্ন রূপ হল-
- শঙ্কা + অর
- শঙ্কা + অরত
- শঙ্কা + ঋত
- শঙ্কা + আর্ত
উত্তর – 3. শঙ্কা + ঋত
‘সদানন্দ’ শব্দটিকে বিচ্ছিন্ন করলে পাই –
- সদা + নন্দ
- সদা + নন্দ
- সদ + আনন্দ
- সদা + আনন্দ
উত্তর – 4. সদা + আনন্দ
‘অধীশ্বর’ শব্দটিকে বিচ্ছিন্ন করলে পাই –
- অধী + শ্বর
- অধী + ঈশ্বর
- অধি + ঈশ্বর
- অধি + শ্বর
উত্তর – 3. অধি + ঈশ্বর
নিয়ম বহির্ভূত স্বরসন্ধিকে বলে –
- বিক্ষিপ্ত স্বরসন্ধি
- বিস্মৃত স্বরসন্ধি
- বিকৃত স্বরসন্ধি
- নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি
উত্তর – 4. নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি
ব্যঞ্জনসন্ধি ঘটতে পারে –
- দুভাবে
- তিনভাবে
- চারভাবে
- একভাবে
উত্তর – 2. তিনভাবে
স্বর + ব্যঞ্জন সূত্রের একটি উদাহরণ –
- আ + ছ্ = চ্ছ
- ই + র্ = রি
- আ + জ্ = জ্জ
- ই + ব = বি
উত্তর – 1. আ + ছ্ = চ্ছ
শুদ্ধ সূত্রটি হল –
- ত্ + দ্ = ল্ল
- ত্ + চ্ = চ্চ
- ত্ + ল্ = ল্ল
- ত্ + প্ = প্প
উত্তর – 4. ত্ + প্ = প্প
‘উড্ডয়ন’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করলে পাই –
- উড্ড + অন
- উড্ + ডয়ন
- উৎ + এয়ন
- উৎ + ডয়ন
উত্তর – 4. উৎ + ডয়ন
পৎ + হতি সন্ধিযুক্ত করলে পাই –
- পদ্ধতি
- পাহতি
- পততি
- পত্ততি
উত্তর – 1. পদ্ধতি
‘ন’ -এর বদল হয় না আগে যখন থাকে –
- ন্
- ণ্
- শ্
- স্
উত্তর – 2. ণ্
বাংলায় একই উচ্চারণ –
- ‘ড’ ও ‘চ’ -এর
- ‘ত’ ও ‘ৎ’ -এর
- ‘ঙ’ ও ‘ং’ -এর
- ‘ ঃ’ ও ‘ং’ -এর
উত্তর – 2. ‘ত’ ও ‘ৎ’ -এর
বিকল্পে অনুস্বর (ং) হয় –
- ‘ক্’ বর্গের আগে
- ‘চ্’ বর্গের আগে
- ‘ট্’ বর্গের আগে
- ‘ত্’ বর্গের আগে
উত্তর – 1. ‘ক্’ বর্গের আগে
অ-কার আ-কার হয়ে যায় ‘ম’ -এর স্থানে যখন –
- বর্গের প্রথম ধ্বনি আসে
- বর্গের পঞ্চম ধ্বনি আসে
- উষ্মধ্বনি আসে
- শিসধ্বনি আসে
উত্তর – 2. বর্গের পঞ্চম ধ্বনি আসে
‘পতঙ্গ’ শব্দটিকে বিচ্ছিন্ন করলে পাই –
- পত + অঙ্গ
- পতৎ + অঙ্গ
- পতা + অঙ্গ
- এদের কোনোটিই নয়
উত্তর – 2. পতৎ + অঙ্গ
একটি নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধির উদাহরণ –
- পরি + কার = পরিষ্কার
- বরম্ + চ = বরঞ্চ
- জিঘান্ + সা = জিঘাংসা
- হিনস্ + অ = সিংহ
উত্তর – 4. হিনস্ + অ = সিংহ
বাংলা ভাষায় বিসর্গের –
- স্বতন্ত্র ধ্বনি নেই
- স্বতন্ত্র বর্ণ নেই
- স্বতন্ত্র উচ্চারণ নেই
- স্বতন্ত্র নাম নেই
উত্তর – 3. স্বতন্ত্র উচ্চারণ নেই
বিসর্গ একটি –
- উষ্মবর্ণ
- তালব্য বর্ণ
- নাসিক্য বর্ণ
- আশ্রয়ভাগী বর্ণ
উত্তর – 4. আশ্রয়ভাগী বর্ণ
একসময় লুপ্ত ‘অ’ -এর স্থানে ব্যবহৃত হত –
- আ
- অ্যা
- হ
- য়
উত্তর – 3. হ
শুদ্ধ বানানটি হল –
- চক্ষুরগ
- চক্ষুরোগ
- চক্ষুরোগ
- চক্ষুঃরোগ
উত্তর – 2. চক্ষুরোগ
‘বয়স্ক’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছিন্ন করলে পাই –
- বয়ঃ + থ
- বয়সঃ + অ
- বয়ো + ম
- বয়ঃ + স্থ
উত্তর – 1. বয়ঃ + থ
বিসর্গের পর স্বরধ্বনি থাকলে ‘ ঃ’ -এর পরিবর্তে –
- ‘অ’ হয়
- ‘ও’ হয়
- ‘র্’ হয়
- ‘শ্’ হয়
উত্তর – 3. ‘র্’ হয়
‘শ্রেয়স্কর’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ হল –
- শ্রেয়স্ + কর
- শ্রেয়াঃ + কর
- শ্রেয়ঃ + কর
- শ্রেয়সঃ + অ
উত্তর – 3. শ্রেয়ঃ + কর
ই > ঈ, উ > ঊ হয়ে যায় –
- ঃ + র্ হলে
- ঃ + ই, উ হলে
- ঃ+ শ্ হলে
- ঃ + স্ বলে
উত্তর – 1. ঃ + র্ হলে
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
বিচ্ছিন্ন পদটি যুক্ত করে বাক্যটি আবার লেখো –
1. তিনি কিম্ + বদন্তী শিল্পী।
তিনি কিংবদন্তী শিল্পী।
2. পাখিটি তরু + উর্ধ্বে আছে।
পাখিটি তরূর্ধ্বে আছে।
3. পর + উপকার মানবধর্ম।
পরোপকার মানবধর্ম।
4. আমি ক্ষুধা + ঋত বোধ করছি।
আমি ক্ষুধার্ত বোধ করছি।
5. শিশুটি মসী + আধার ভেঙে ফেলেছে।
শিশুটি মস্যাধার ভেঙে ফেলেছে।
6. তানসেন ছিলেন বিখ্যাত গৈ + অক।
তানসেন ছিলেন বিখ্যাত গায়ক।
7. তিনি প্র + উঢ় হয়েছেন।
তিনি প্রৌঢ় হয়েছেন।
8. শীতকালে আ + ছাদন লাগে।
শীতকালে আচ্ছাদন লাগে।
9. ষট্ + আনন কার্তিকের অপর নাম।
ষড়ানন কার্তিকের অপর নাম।
10. বিদ্যাসাগরের উৎ + যমে কখনও খামতি ছিল না।
বিদ্যাসাগরের উদ্যমে কখনও খামতি ছিল না।
11. তুমিই আমার জগৎ + জননী।
তুমিই আমার জগজ্জননী।
12. ক্ষুৎ + নিবৃত্তি করাও আজ দরিদ্রের দায়।
ক্ষুন্নিবৃত্তি করাও আজ দরিদ্রের দায়।
13. বর্ষার আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুৎ + লেখা দেখা যায়।
উত্তর – বর্ষার আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুল্লেখা দেখা যায়।
14. পর + পর মিলেমিশে থাকো।
পরস্পর মিলেমিশে থাকো।
15. পতৎ + অঙ্গের অগ্নিতেই মৃত্যু।
পতঙ্গের অগ্নিতেই মৃত্যু।
16. ইতিহাসে ষট্ + দশ মহাজন পদের কথা পাই।
ইতিহাসে ষোড়শ মহাজন পদের কথা পাই।
17. সুসংবাদে শির + উপরি বোঝা নেমে যায়।
সুসংবাদে শিরোপরি বোঝা নেমে যায়।
18. রবীন্দ্রনাথের একটি কাব্যগ্রন্থ পুনঃ + চ।
রবীন্দ্রনাথের একটি কাব্যগ্রন্থ পুনশ্চ।
19. জীবনস্বরূপা সে স্বামীর শিরঃ + মণি।
জীবনস্বরূপা সে স্বামীর শিরোমণি।
20. পিতামাতার আশীঃ + বাদ কাম্য।
পিতামাতার আশীর্বাদ কাম্য।
21. প্রণামের প্রতিশব্দ নমঃ + কার।
প্রণামের প্রতিশব্দ নমস্কার।
22. দুঃ + সাহস বিপ্লবীদের সহজাত।
দুঃসাহস বিপ্লবীদের সহজাত।
23. বার + এক ভিড়াও তরি কুলেতে এসে।
বারেক ভিড়াও তরি কুলেতে এসে।
24. ভাই + এর মা + এর এত স্নেহ।
ভায়ের মায়ের এত স্নেহ।
25. শরৎকালে বাঙালিরা দুর্গা + উৎসবে মেতে ওঠে।
শরৎকালে বাঙালিরা দুর্গোৎসবে মেতে ওঠে।
26. সু + অল্পে সে সন্তুষ্ট।
স্বল্পে সে সন্তুষ্ট।
27. যুদ্ধ নয় শম্ + তি চাই।
যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।
28. কলকাতায় ইদানীং ডেঙ্গুর প্রাদুঃ + ভাব ঘটেছে।
কলকাতায় ইদানীং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।
29. এখন তার বৃহৎ + পতি তুঙ্গে।
এখন তার বৃহস্পতি তুঙ্গে।
30. আলেকজান্ডার দিক্ + বিজয়ী বীর ছিলেন।
আলেকজান্ডার দিগবিজয়ী বীর ছিলেন।
31. সম্ + ন্যাসীর গৃহে থাকার অধিকার নেই।
সন্ন্যাসীর গৃহে থাকার অধিকার নেই।
32. সরঃ + বরে পদ্ম ফুটে আছে।
সরোবরে পদ্ম ফুটে আছে।
33. সম্ + ধি বিচ্ছেদ করো।
সন্ধি বিচ্ছেদ করো।
34. ম্যালেরিয়া জীব + অণু ঘটিত রোগ।
ম্যালেরিয়া জীবাণুঘটিত রোগ।
প্রয়োগ ও নির্ণয়মূলক প্রশ্নোত্তর
কলিঙ্গাদেশে ঝড়-বৃষ্টি
1. পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা-দিবস রজনী।
পরিচ্ছিন্ন = পরি + ছিন্ন
2. ধূলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত।
আচ্ছাদিত = আ + ছাদিত।
3. নিরবধি সাতদিন বৃষ্টি নিরন্তর।
নিরবধি = নিঃ+ অবধি।
বৃষ্টি = বৃষ্ +তি।
নিরন্তর = নিঃ+ অন্তর।
4. বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।
ভবন = ভো + অন।
5. জলে মহী একাকার পথ হইল হারা।
একাকার = এক + আকার।
নোঙর
1. পাড়ি দিতে দূর সিন্ধুপারে।
সিন্ধু = সিম্ + ধু।
2. নিস্তব্ধ মুহূর্তগুলি সাগর গর্জনে ওঠে কেপে।
নিস্তব্ধ = নিঃ+ তব্ধ।
খেয়া
1. সকাল হইতে সন্ধ্যা করে আনাগোনা।
সন্ধ্যা = সম্ + ধা।
2. খেয়ানৌকা পারাপার করে নদীস্রোতে।
পারাপার = পার + অপার।
আকাশে সাতটি তারা
1. আসিয়াছে শান্ত অনুগত বাংলার নীল সন্ধ্যা।
শান্ত = শম্ + ত।
আবহমান
1. ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা।
দুরন্ত = দুঃ + অন্ত।
2. কিন্তু মুড়য় না।
কিন্তু = কিম্ + তু।
ভাঙার গান
1. মুক্ত স্বাধীন সত্যকে রে।
স্বাধীন = স্ব + অধীন।
আমরা
1. বিধাতার কাজ সাধিবে বাঙালি ধাতার আশীর্বাদে।
আশীর্বাদে = আশীঃ + বাদে।
2. আমাদের সেনা যুদ্ধ করেছে সজ্জিত চতুরঙ্গে।
চতুরঙ্গে = চতুঃ + অঙ্গে।
3. দশানন জয়ী রামচন্দ্রের প্রপিতামহের সঙ্গে।
দশানন = দশ + আনন।
4. বাঙালি অতীশ লঙ্ঘিল গিরি তুষারে ভয়ঙ্কর।
অতীশ = অতি + ঈশ।
5. করেছে সুরভি সংস্কৃতের কাঞ্চন কোকনদে।
সংস্কৃতের = সম্ + কৃত + এর।
6. শ্যাম-কম্বোজ ‘ওঙ্কার-ধাম’ – মোদেরি প্রাচীন কীর্তি।
ওঙ্কার = ওম্ + কার।
7. মন্বন্তরে মরিনি আমরা মারী নিয়ে ঘর করি।
মন্বন্তর = মনু + অন্তর।
8. বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে জগৎময়।
সন্ন্যাসী = সম্ + ন্যাসী।
9. বাঙালির ছেলে ব্যাঘ্রে বৃষভে ঘটাবে সমন্বয়।
সমন্বয় = সম্ + অন্বয়।
10. সাগরের হাওয়া নিয়ে নিশ্বাসে গম্ভীরা নিশি কাটে।
নিশ্বাসে = নিঃ+ শ্বাস + এ।
ইলিয়াস
1. সকলকেই স্বাগত জানিয়ে সে তাদের ভোজ্য পানীয় দিয়ে সেবা করে।
স্বাগত = সু + আগত।
2. দূর দূরান্তর থেকে অতিথিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।
দূরান্তর = দূর + অন্তর।
3. তারপরের বছর দেখা দিল দুর্ভিক্ষ।
দুর্ভিক্ষ = দুঃ + ভিক্ষ। আ
4. ইলিয়াস অতিথি ও গৃহস্বামীকে নমস্কার করল।
নমস্কার = নমঃ + কার।
5. ফলে প্রতি বছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল।
উন্নতি = উদ্ + নতি।
দাম
1. কিংবা মুখস্থ বললেও ঠিক হয় না।
কিংবা = কিম্ + বা।
2. স্বর্গের খবরটা মাস্টারমশাই কোত্থেকে যোগাড় করলেন।
কোত্থেকে = কোথা + থেকে।
3. পরীক্ষার লাস্ট বেল পড়ো-পড়ো।
পরীক্ষা = পরি + ঈক্ষা।
4. জামার পকেট থেকে বের করলেন শতচ্ছিন্ন এক জীর্ণ পত্রিকা।
শতচ্ছিন্ন = শত + ছিন্ন।
5. ওরা ছাত্র, ওরা সন্তান।
সন্তান = সম্ + তান।
6. আবছা আলোটায় এখন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলুম।
অভ্যস্ত = অভি + অস্ত।
7. সে স্বর্গের চাইতে লক্ষযোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম।
নিরাপদ = নিঃ + আপদ।
8. তা হলে নির্ভয়ে লিখতে পারি।
নির্ভয়ে = নিঃ + ভয় + এ।
9. ছবিটা যা ফুটল, তা খুব উজ্জ্বল নয়।
উজ্জ্বল = উৎ + জ্বল।
10. সেই সঙ্গে সদুপদেশও একটু বর্ষণ করেছিলুম।
সদুপদেশ = সৎ + উপদেশ।
11. বর্তমানের দাবিটা এত বেশি জোরালো যে স্মৃতির দিকে তাকাবার অবসর পর্যন্ত মেলে না।
পর্যন্ত = পরি + অন্ত।
12. তাছাড়া কলকাতা থেকে কেউ বাইরে গেলেই তার রাজোচিত সম্বর্ধনা মেলে।
রাজোচিত = রাজা + উচিত।
13. আমাদের মত নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ।
সুখাবহ = সুখ + আবহ।
14. গিয়ে পৌঁছতে চা-খাবার আতিথেয়তার উচ্ছ্বাস।
উচ্ছ্বাস = উৎ + শ্বাস।
15. রবীন্দ্রনাথ থেকে বারোটা উদ্ধৃতি দিলুম।
উদ্ধৃতি = উৎ + হৃতি।
16. এই একটি সর্বার্থসাধক বক্তৃতাই আমার সম্বল।
সর্বার্থসাধক = সর্ব + অর্থসাধক।
17. রবীন্দ্র জন্মোৎসব থেকে বনমহোৎসব পর্যন্ত এটাকেই এদিক-ওদিক করে চালিয়ে দিই।
রবীন্দ্র = রবি + ইন্দ্র।
জন্মোৎসব = জন্ম + উৎসব।
মহোৎসব = মহা + উৎসব।
18. আমার বক্তৃতায় নিশ্চয় কেউ অভিভূত হয়েছেন।
নিশ্চয় = নিঃ + চয়।
19. ওই স্বর বিদ্যুতের আলোর মতো তাকে উদ্ভাসিত করে তুলেছে।
উদ্ভাসিত = উৎ + ভাসিত।
20. জানি এখনই একটা ভয়ংকর চড় আমার পিঠের উপর নেমে আসবে।
ভয়ংকর = ভয়ম্ + কর।
21. তাই নিজের মধ্যে সন্দেহ জাগে।
সন্দেহ = সম্ + দেহ।
22. আশ্চর্য পরিষ্কার ছিল মাথা।
আশ্চর্য = আ + চর্য।
পরিষ্কার = পরি + কার।
নিরুদ্দেশ
1. কিন্তু মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও ম্লান পৃথিবী কেমন মৃতের মতো অসাড় হইয়া আছে।
মেঘাচ্ছন্ন = মেঘ + আচ্ছন্ন।
2. আজকের কাগজে একসঙ্গে সাত-সাতটা নিরুদ্দেশ -এর বিজ্ঞাপন।
নিরুদ্দেশ = নিঃ+ উদ্দেশ।
3. আর সমস্তই নিশ্চল স্তব্ধ।
নিশ্চল = নিঃ+ চল।
4. এবারও কী করে কৃতার্থ করবেন বুঝতেই পারছি।
কৃতার্থ = কৃত + অর্থ।
5. মা-র কান্না আবার উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে।
উচ্ছ্বসিত = উৎ + শ্বসিত।
6. সকলে নীরব।
নীরব = নিঃ + রব।
7. অমন কুলাঙ্গার তো তুই হয়েছিস।
কুলাঙ্গার = কুল + অঙ্গার।
8. এইটুকু যদি কেউ সন্ধান দিতে পারে তাহলে পুরস্কার পাওয়া যাবে।
পুরস্কার = পুরঃ + কার।
9. একটু বকুনি খেয়েছে বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে এত বড়ো আস্পর্ধা!
আস্পর্ধা = আ + স্পর্ধা।
রাধারাণী
1. সে হারিবামাত্র, ডিক্রীদার জ্ঞাতি ডিক্রী জারি করিয়া ভদ্রাসন হইতে উহাদিগকে বাহির করিয়া দিল।
ভদ্রাসন = ভদ্র + আসন।
2. কিন্তু রথের টান অর্ধেক হইতে না হইতেই বড় বৃষ্টি আরম্ভহইল।
অর্ধেক = অর্দ্ধ + এক।
3. দুই গণ্ডবিলম্বী ঘন কৃষ্ণ অলকাবলী বহিয়া, কবরী বহিয়া, বৃষ্টির জল পড়িয়া ভাসিয়া যাইতেছিল।
অলকাবলী = অলক + আবলী।
4. এক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিল।
উচ্চৈঃস্বরে = উচ্চৈঃ + স্বরে।
5. মাতার অন্নাভাব মনে করিয়া।
অন্নাভাব = অন্ন + অভাব।
6. মায়ের পথ্যের উদ্যোগের জন্য বাজারে গেল।
উদ্যোগ = উৎ + যোগ।
7. এমত কোনো সন্ধান পাইল না।
সন্ধান = সম্ + ধান।
চন্দ্রনাথ
1. আগ্নেয়গিরি গর্ভের মধ্যে কল্পনাতীত বিচিত্র সমাবেশে যত কিছু প্রলয়ংকর দাহ্য বস্তু সমাবিষ্ট হয়।
কল্পনাতীত = কল্পনা + অতীত।
সমাবেশ = সম্ + আবেশ।
প্রলয়ংকর = প্রলয়ম্ + কর।
2. আমার দিকে চিন্তাকুল নেত্রে চাহিয়া বসিয়া আছে।
চিন্তাকুল = চিন্তা + আকুল।
3. অতীতের রূপ এই অন্ধকার।
অতীতের = অতি + ইত + এর।
4. আলোকিত প্রত্যক্ষের মধ্যে ফেরে না।
প্রত্যক্ষের = প্রতি + অক্ষ + এর।
5. দীর্ঘাকৃতি সবল সুস্থ দেহ নির্ভীক দৃষ্টি কিশোর।
দীর্ঘাকৃতি = দীর্ঘ + আকৃতি।
নির্ভীক = নিঃ+ ভীক।
6. অসাধারণ তাহার মুখাকৃতি।
মুখাকৃতি = মুখ + আকৃতি।
7. অদ্ভুত মোটা নাক।
অদ্ভুত = অদ্ + ভূত।
8. হেডমাস্টার মহাশয়কে মনে পড়িতেছে।
মহাশয়কে = মহা + আশয় + কে।
9. চন্দ্রনাথ প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করিয়া পত্র দিয়াছে।
প্রত্যাখ্যান = প্রতি + আখ্যান।
10. দারিদ্র্য-জীর্ণ স্বল্পালোকিত চন্দ্রনাথের ঘরখানা।
স্বপ্ন = সু + অল্প।
স্বল্পালোকিত = স্বল্প + আলোকিত।
11. আমার সম্মুখে ফেলিয়া দিয়া বলিল।
সম্মুখে = সম্ + মুখে।
12. ভদ্রলোক নির্বিরোধী শান্ত প্রকৃতির মানুষ।
নির্বিরোধী = নিঃ+ বিরোধী।
13. কোনো সংস্রব রইল না।
সংস্রব = সম্ + অব।
14. তিনি নিশ্চয়ই এ উত্তর প্রত্যাশা করেন নাই।
নিশ্চয় = নিঃ+ চয়।
প্রত্যাশা = প্রতি + আশা।
15. এমন সংযত নিরুচ্ছ্বসিত কণ্ঠের উত্তর।
সংযত = সম্ + যত।
16. জন দুয়েক ডেপুটি।
দুয়েক = দুই + এক।
17. পরম সমাদর করিয়া বসাইল।
সমাদর = সম্ + আদর।
18. তুমি পড়বে নিশ্চয় নরেশ।
নরেশ = নর + ঈশ।
নব নব সৃষ্টি
1. ভারতবর্ষে সেই সংঘর্ষের ফলে সিন্ধি, উর্দু ও কাশ্মীরি সাহিত্যের সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষ = সম্ + ঘর্ষ।
2. উর্দুকে ফার্সির অনুকরণ থেকে কিঞ্চিৎ নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
কিঞ্চিৎ = কিম্ + চিৎ।
নিষ্কৃতি = নিঃ + কৃতি।
3. এই পরিস্থিতির সামনে জীবস্মৃত এসব শব্দের একটা নূতন খতেন নিলে ভালো হয়।
জীবস্মৃত = জীবৎ + মৃত।
4. সংস্কৃত ধার করার কথা না ভেবে আপন ভাণ্ডারে অনুসন্ধান করে।
সংস্কৃত = সম্ + কৃত।
5. কোনো সুস্পষ্ট ধারণা এখনও আমাদের মনের মধ্যে নেই।
সুস্পষ্ট = সু + স্পষ্ট।
6. পৃথিবীতে কোনো জিনিসই সম্পূর্ণ অসম্ভব নয়।
সম্পূর্ণ = সম্ + পূর্ণ।
7. ততোধিক প্রয়োজনীয় বিজ্ঞানের শব্দ আমরা চাই।
ততোধিক = ততঃ + অধিক।
8. যখন সে বিদ্রোহ উচ্ছৃঙ্খলতায় পরিণত হতে চেয়েছে।
উচ্ছৃঙ্খলতা = উৎ + শৃঙ্খলতা।
হিমালয় দর্শন
1. ইস্ট ইন্ডিয়ান গাড়ির অপেক্ষা ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি ছোটো।
অপেক্ষা = অপ + ঈক্ষা।
2. পথের দুই ধারে মনোরম দৃশ্য।
মনোরম = মনঃ + রম।
3. মাঝে মাঝে ন্যায় দেখায়। মানুষের চলিবার সংকীর্ণ পথগুলি ধরণীর সীমন্তের
সংকীর্ণ = সম্ + কীর্ণ।
4. ইহার সৌন্দর্য বর্ণনাতীত।
বর্ণনাতীত = বর্ণনা + অতীত।
5. ভীমবেগে হিমাদ্রির পাষাণ হৃদয় বিদীর্ণ করিতে করিতে ইহারা কোথায় চলিয়াছে।
হিমাদ্রির = হিম + অদ্রির।
6. আমাদের মনোরথ পূর্ণ হইল।
মনোরথ = মনঃ + রথ।
7. গরমের জ্বালায় যে এতক্ষণ প্রাণ কণ্ঠাগত ছিল।
কণ্ঠাগত = কণ্ঠ + আগত।
8. মেঘ লইয়া মনোহর সৌন্দর্যের রাজ্য রচনা করে।
মনোহর = মনঃ + হর।
9. তাই নির্ভয়ে বেড়াইতে পারি।
নির্ভয়ে = নিঃ+ ভয় + এ
10. ইহারা উদরান্নের জন্য পুরুষদের প্রত্যাশী নহে।
উদরান্নের = উদর + অন্ন + এর।
11. তখন একথা মুখে উচ্চারণের প্রয়োজনও হয় না।
উচ্চারণের উৎ + চারণ + এর।
চিঠি
1. সর্বোপরি তোমার ধমনীতে প্রবাহিত।
সর্বোপরি = সর্ব + উপরি।
2. পক্ষান্তরে শ্বেতাঙ্গেরা তোমাকে…।
পক্ষান্তরে = পক্ষ + অন্তর + এ।
3. প্রত্যেকটি গতিবিধি সন্দেহের চোখে দেখবে।
প্রত্যেকটি = প্রতি + একটি।
4. জলবায়ু অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান।
অত্যন্ত = অতি + অন্ত।
5. দক্ষিণাঞ্চলে তো সর্বদাই আগুনের হল্কা চলছে।
দক্ষিণাঞ্চলে = দক্ষিণ + অঞ্চলে + এ।
6. আমার দিক থেকে নিশ্চয় জেনো।
নিশ্চয় = নিঃ + চয়।
7. বেদান্ত-ধর্ম ত্যাগই কর আর ধরেই থাকো।
বেদান্ত = বেদ + অন্ত।
8. এই মনোভাব তাঁর অজ্ঞাতসারেই বারবার মাথা তুলছে।
মনোভাব = মনঃ + ভাব।
9. তাঁর বর্তমান সংকল্প এই যে…।
সংকল্প = সম্ + কল্প।
10. সদা ভগবৎ-পদাশ্রিত, বিবেকানন্দ।
পদাশ্রিত = পদ + আশ্রিত।
বিবেকানন্দ = বিবেক + আনন্দ।
11. দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারণা ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মাথায় ঢুকেছে।
দুর্ভাগ্য = দুঃ + ভাগ্য।
12. তাঁর মঠাধ্যক্ষাসুলভ সংকল্পটি দুটি কারণে এখনও সফল হয়নি।
মঠাধ্যক্ষা = মঠ + অধ্যক্ষা।
সংকল্প = সম্ + কল্প।
13. আমেরিকার সংবাদে জানলাম যে….।
সংবাদ = সম্ + বাদ।
ধীবর-বৃত্তান্ত
1. যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।
নির্দয় = নিঃ+ দয়।
2. সদর দরজায় সাবধানে এই চোরকে নিয়ে অপেক্ষা কর।
সাবধানে = স + অবধান + এ।
3. আজ আমার সংসার চলবে কীভাবে?
সংসার = সম্ + সার।
4. মহাশয় এই পারিতোষিকের অর্ধেক আপনাদের ফুলের দাম হিসাবে দিচ্ছি।
মহাশয় = মহা + আশয়।
অর্ধেক = অর্ধ + এক।
5. একবার অনুসন্ধান করে দেখতে হবে।
অনুসন্ধান = অনু + সম্ + ধান।
ব্যোমযাত্রীর ডায়রি
1. প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়রিটা আমি পাই তারক চাটুজ্জ্যের কাছ থেকে।
ত্রিলোকেশ্বর = ত্রিলোক + ঈশ্বর।
2. ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা।
বসন্ধুরা = বসুম্ + ধরা।
3. যেন স্বচ্ছ পেয়াবার জেলি।
স্বচ্ছ = সু + অচ্ছ।
4. গহ্বরের ভিতর থেকে অগ্ন্যুদ্গার হচ্ছে।
অগ্ন্যুদ্গার = অগ্নি + উদ্দ্গার।
5. তার মধ্যে কি গুটি চারেক বাঘও পড়ে থাকবে না?
চারেক = চার + এক।
6. তারপর হাত দুটোকে পরস্পরের কাছে…।
পরস্পরের = পর + পর + এ।
7. এই ক’মাস নির্বিঘ্নে কেটেছে।
নির্বিঘ্নে = নিঃ+ বিঘ্ন + এ।
8. প্রহ্লাদের কথাবার্তা এখনও অসংলগ্ন।
অসংলগ্ন = অ + সম্ + লগ্ন।
9. বিধুশেখর বলল, গবাক্ষ উদ্ঘাটন করছ?
গবাক্ষ = গো + অক্ষ।
কর্ভাস
1. অসংখ্য পাখির আশ্চর্য সংগীত প্রতিভা।
সংগীত = সম্ + গীত।
2. বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্যে ওটা নিয়ে আর চর্চা করা হয়নি।
গবেষণার = গো + এষণা + র।
3. গাড়ি এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে।
দুর্বার = দুঃ + বার।
4. কিছু দূরে চিৎকার আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
চিৎকার = চিদ্ + কার
5. আজ পর্যন্ত আমার কোনও অভিযানই ব্যর্থ হয়নি।
পর্যন্ত = পরি + অন্ত।
6. সে আমার দিকে দৃষ্টি ফেরাল।
দৃষ্টি = দৃশ্ + তি।
স্বর্ণপণী
1. মনটা অতীতের দিকে চলে যাচ্ছে।
অতীতের = অতি + ইত + এর।
2. আমার খ্যাতি প্রধানত ইনভেন্টর বা আবিষ্কারক হিসাবে।
আবিষ্কারক = আবিঃ + কারক।
3. যা শত্রুকে নিহত না করে নিশ্চিহ্ন করে।
নিশ্চিহ্ন = নিঃ+ চিহ্ন।
4. ঘুমের অব্যর্থ বড়ি সমনোলিন।
অব্যর্থ = অবি + অর্থ।
5. বাবার নাম ছিল ত্রিপুরেশ্বর শঙ্কু।
ত্রিপুরেশ্বর = ত্রিপুর + ঈশ্বর।
6. অঢেল উপার্জন করতে হবে তার কোনও মানে নেই।
উপার্জন = উপ + অর্জন।
7. অ্যাদ্দিন তো বিজ্ঞান পড়লি।
অ্যাদ্দিন = এত + দিন।
8. কিছু দুরারোগ্য ব্যারামের চিকিৎসা করতে হয়েছিল।
দুরারোগ্য = দুঃ + আরোগ্য।
9. চেনাশোনার মধ্যে শুনি কেউ কঠিন ব্যারামে মরণাপন্ন।
মরণাপন্ন = মরণ + আপন্ন।
10. আমি ঘটনাটা আদ্যোপান্ত সন্ডার্সকে বললাম।
আদ্যোপান্ত = আদ্য + উপান্ত।
11. তুমি মৃত্যুর কবল থেকে উদ্ধার করেছ।
উদ্ধার = উৎ + হার।
12. গাছের উল্লেখ সংস্কৃত ডাক্তারিশাস্ত্রে পাওয়া যায়।
উল্লেখ = উৎ + লেখ।
13. মধ্যাহ্নের সূর্য জার্মানির মাথার উপরে।
মধ্যাহ্ন = মধ্য + অহ্ন।
14. ইতস্তত ভাব করে জিজ্ঞেস করলাম।
ইতস্তত = ইতঃ + তত।
15. তিমিরাতীত জ্যোতির্ময় মহাপুরুষকে চিনিয়াছি।
তিমিরাতীত = তিমির + অতীত।
জ্যোতির্ময় – জ্যোতিঃ + ময়।
16. তদ্ভিন্ন মুক্তিপ্রাপ্তির আর অন্য পথ নাই।
তদ্ভিন্ন = তৎ + ভিন্ন।
17. চার বছর তো দুর্যোগ ছাড়া কিছু জোটেনি।
দুর্যোগ = দুঃ + যোগ।
18. এরা তোমার বাবার উপর অত্যাচার করবে।
অত্যাচার = অতি + আচার।
19. শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে চলে এসেছি।
গ্রামাঞ্চল = গ্রাম + অঞ্চল।
20. মিনিট পাঁচেক বসার পর প্রাসাদের চতুর্দিক থেকে নানান ঘড়িতে ঢং ঢং করে আটটা বাজছে।
চতুর্দিক = চতুঃ + দিক।
21. আমার কয়েক মুহূর্ত ভাবতে হল।
কয়েক = কয় + এক।
22. ল্যাবরেটরির রিপোর্ট যতদিন না আসে, তদ্দিন তোমাকে এখানে থাকতে হবে।
তদ্দিন = তত + দিন।
23. আমার ধারণা নির্ভুল।
নির্ভুল = নিঃ + ভুল।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণের “ব্যাকরণ ও নির্মিতি” থেকে “ধ্বনি, ধ্বনি পরিবর্তন ও সন্ধি” -এর উপবিভাগ “সন্ধি” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই অংশটি নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন নিয়মিত আসে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন