নবম শ্রেণি – বাংলা – দাম – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পটি একটি শিক্ষামূলক গল্প। গল্পের মাধ্যমে লেখক শিক্ষা দেন যে, পীড়ন-তাড়ন করে শেখানো হয় না। বরং, ছাত্রদের ভালোবাসা ও সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষাদান করা উচিত।

Table of Contents

গল্পের কথক তার স্কুলজীবনে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে অতিষ্ঠ ছিলেন। মাস্টারমশাই ছিলেন অত্যন্ত কঠোর ও অত্যাচারী। তিনি ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। কথক মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে অঙ্ককে ভয় পাওয়া শুরু করেন। তিনি অঙ্ক পড়াতেন না, পরীক্ষায় খারাপ করতেন।

পরবর্তীকালে কথক কলেজে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি একজন ভালো অধ্যাপকের কাছে অঙ্ক পড়ান। সেই অধ্যাপক ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও সহানুভূতিশীল। তিনি ছাত্রদের ভালোবাসা ও সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষাদান করতেন। কথক সেই অধ্যাপকের কাছে অঙ্ক পড়তে শুরু করেন এবং অঙ্কে ভালো ফল করেন।

নবম শ্রেণি – বাংলা – দাম – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

সব যেন ওঁর মুখস্থ — কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর সব মুখস্থ ছিল বলে ছাত্রদের কেন মনে হত?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা এখানে বলা হয়েছে।

ছাত্রদের মনোভাব – ছাত্রদের মনে হত, পৃথিবীর সব অঙ্ক মাস্টারমশাইয়ের মুখস্থ ছিল। কারণ, যেসব জটিল অঙ্ক তারা কিছুতেই মেলাতে পারত না, মাস্টারমশাই মাত্র একবার সেটি দেখেই বোর্ডে তার সমাধান করে দিতেন। শুধু তাই নয়, এমন অনায়াস ভঙ্গিতে তিনি অঙ্কের সমাধান করতেন যে মনে হত, সেটি যেন অদৃশ্য হরফে বোর্ডে লেখা আছে আর তিনি শুধু তার উপর খড়ি বোলাচ্ছেন।

ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত — কার ভয়ে কারা কেন তটস্থ হয়ে থাকত?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে যারা পরীক্ষায় একশোতে একশো পেত তারাও তটস্থ হয়ে থাকত।

তটস্থ হয়ে থাকার কারণ – স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন অসাধারণ দক্ষ। যে – কোনো জটিল অঙ্কই তিনি অনায়াসে সমাধান করে ফেলতেন। মাস্টারমশাই মনে করতেন, অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা। তাই তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখাতেন। কিন্তু ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে তিনি ভয়ানক রেগে গিয়ে তাদের মারতেন বলেই লেখাপড়ায় ভালো ছাত্ররাও তাঁকে ভয় পেত।

স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলোক! — এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কেন বিভীষিকা ছিলেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

বিভীষিকা মনে হওয়ার কারণ – অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ মাস্টারমশাই যে – কোনো অঙ্কই মুহূর্তে সমাধান করে ফেলতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে অঙ্ক না জানলে জীবন বৃথা। তাই মাস্টারমশাই অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর চেষ্টা করতেন। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে ক্রুদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় তাদের পিঠে নেমে আসত কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না, একারণেই তিনি ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা ছিলেন।

কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না – কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের কাঁদবার জো ছিল না কেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার ও তাঁর স্কুলের সহপাঠীদের কাদবার জো ছিল না।

কাঁদবার জো না থাকার কারণ – সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই মনে করতেন প্রতিটি ছাত্রের উচিত অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা। তিনি ছাত্রদের প্রাণপণে অঙ্ক শেখানোর চেষ্টা করতেন। আর এর জন্য প্রয়োজনে তাদের প্রহার করতেও দ্বিধা করতেন না। মাস্টারমশাইয়ের মতে, অঙ্ক না পেরে কাঁদার বিষয়টি একেবারে পুরুষোচিত নয়। মার খেয়ে ছাত্রদের কান্না পেলেও তারা কাদতে পারত না কারণ কাঁদলে মাস্টারমশাই আরও রেগে যেতেন।

পুরুষ মানুষ হয়ে অঙ্ক পারিসনে বক্তা কে? উক্তিটির আলোকে বক্তার মনোভাব ব্যাখ্যা করো।

বক্তা – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্প থেকে উদ্ধৃত আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই।

বক্তার মনোভাব – মাস্টারমশাই নিজে ছিলেন অঙ্ক-অন্ত প্রাণ। তিনি বিশ্বাস করতেন, অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য। মাস্টারমশাইয়ের কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল। অঙ্ক না পেরে তার হাতে মার খেয়ে ছেলেরা কাঁদলে তিনি তাই তাদের পৌরুষ নিয়ে ধিক্কার জানাতেন।

এখনি পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবো — মন্তব্যটি কার? বক্তা কেন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন?

বক্তা – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্প থেকে নেওয়া  উক্তিটি সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।

মন্তব্যের কারণ – অঙ্ক-অন্তপ্রাণ মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসের কোনো ছাত্র অঙ্ক না পারলেই তার পিঠে নেমে আসত তাঁর প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড়। সেই চড় খেয়ে কোনো ছাত্র কাঁদলেই তাকে তিনি পা ধরে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতেন। তাঁর মতে অঙ্ক না পারা এবং কাঁদা, দুটোই পুরুষমানুষের পক্ষে চরম লজ্জার বিষয়।

ওঁর চড়ের জোর থেকেই আমরা তা আন্দাজ করে নিয়েছিলুম — কার কথা বলা হয়েছে? তার সম্পর্কে কী আন্দাজ করে নেওয়া হয়েছিল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের উদ্ধৃত অংশে কথকের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

আন্দাজের বিষয় – মাস্টারমশাই নিজে অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ ছিলেন। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলেই তাদের পিঠে পড়ত মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড়। চড় খেয়ে ছাত্ররা কাঁদলে তিনি আরও রেগে গিয়ে তাদের পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। সেই চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা আন্দাজ করে নিয়েছিল যে তাদের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার শক্তিও মাস্টারমশাইয়ের রয়েছে।

এমন অঘটন কল্পনাও করতে পারতেন না। — কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কোন্ অঘটন কল্পনা করতে পারতেন না?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

অঘটন কল্পনা করতে না পারা – গল্পকথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কে অসাধারণ দক্ষতা ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন অঙ্ক জানা এবং অঙ্ককে ভালোবাসা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য। তাঁর কাছে পৌরুষ এবং ছেলেদের অঙ্কে দক্ষতা প্রায় সমার্থক ছিল। একজন পুরুষমানুষ অঙ্ক পারে না, এটাই ছিল মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঘটন। এমন অঘটন তিনি কল্পনাও করতে পারতেন না।

প্লেটোর দোরগোড়ায় কী লেখা ছিল, জানিস? — প্লেটো কে ছিলেন? বক্তা প্লেটোর দোরগোড়ায় কোন্ লেখার কথা বলেছেন?

প্লেটো-র পরিচয় – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে উল্লিখিত প্লেটো ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ। তিনি সক্রেটিসের শিষ্য ছিলেন। তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ দ্য রিপাবলিক।

উদ্দিষ্ট লেখা – মাস্টারমশাই বলতেন যে, প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় লেখা ছিল যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষেধ। মাস্টারমশাইয়ের মতে স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে।

সে স্বর্গের চাইতে লক্ষ যোজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বোধ করতুম – এরকম মনে করার কারণ কী?

মনে করার কারণ – দাম ছোটোগল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঙ্ক না পারাটা ছিল অপরাধ। তিনি ছাত্রদের বলতেন যে গ্রিক গণিতজ্ঞ প্লেটোর বাড়ির দোরগোড়ায় লেখা ছিল যারা অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তাদের প্রবেশ নিষেধ। মাস্টারমশাই বলতেন স্বর্গের দরজাতেও নাকি ওই একই কথা লেখা আছে। তাই কথক সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের মনে হত, যে স্বর্গে ঢুকেই জ্যামিতির এক্সট্রা বা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক করতে হয় তার থেকে দূরে থাকাই নিরাপদ।

সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না – বক্তা এখানে কোন্ বিভীষিকার কথা বলেছেন?

বিভীষিকার কথা – দাম ছোটোগল্পে অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ মাস্টারমশাই মনে করতেন অঙ্ককে ভালোবাসা এবং অঙ্ক জানা প্রতিটি ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য। ছাত্ররা অঙ্ক না পারলেই মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড মার খেতে হত তাদের। সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের কাছে তখন অঙ্কের ভয়কে ছাপিয়ে যেত মাস্টারমশাইয়ের মারের ভয়। অঙ্ক এবং অঙ্কের মাস্টারমশাই — এই দুই আতঙ্ক বা বিভীষিকার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

দু-চোখ দিয়ে তাঁর আগুন ঝরছে – কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে কেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।

আগুন ঝরার কারণ – অঙ্কে বরাবর দুর্বল সুকুমার এমএ পাস করার পরও স্বপ্ন দেখতেন যে তিনি যেন অঙ্ক পরীক্ষা দিচ্ছেন। শেষ ঘণ্টা পড়ার সময় হয়ে গেছে কিন্তু তাঁর একটি অঙ্কও মিলছে না। সুকুমারের স্কুলজীবনের অন্যতম আতঙ্ক অঙ্কের মাস্টারমশাই গার্ড হয়ে তাঁর সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। ছাত্র অঙ্ক পারছে না দেখে মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখ থেকে আগুন ঝরছে।

লিখলুম তাঁকে নিয়েই। — বক্তা উল্লিখিত ব্যক্তিকে নিয়ে কী লিখেছিলেন?

অথবা, লিখলুম তাঁকে নিয়েই – বক্তা কাকে নিয়ে কী লিখেছিলেন?

বক্তা ও উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার যখন লেখক হিসেবে অল্পস্বল্প নাম করেছেন তখন এক অনামি পত্রিকা থেকে তাঁর কাছে বাল্যস্মৃতি লেখার প্রস্তাব আসে। সুকুমার তাঁর স্কুলের বিভীষিকাস্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে স্মৃতিকথাটি লেখেন।

লেখার বিষয় – লেখাটিতে তিনি ভয় দেখিয়ে এবং মারধর করে মাস্টারমশাইয়ের অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতিকে রীতিমতো সমালোচনা করেন। তাঁর মতে, ভয় কোনো বিষয়কে ভালোবাসতে সাহায্য করে না বরং সেই বিষয়টি থেকে ছাত্রকে আরও দূরে ঠেলে দেয়।

গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করতে গেলে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায় — উক্তিটির তাৎপর্য কী?

তাৎপর্য – গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করার অর্থ হল, যে যা নয় তাকে জোর করে সেটি বানানোর চেষ্টা করা বা সেরকম হতে বাধ্য করা। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে সুকুমার তাঁর লেখা বাল্যস্মৃতিতে মাস্টারমশাইয়ের একরকম জোর করে ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর প্রসঙ্গে কথাটি লিখেছেন। তাঁর মতে, এমন জোরাজুরিতে গাধাটাই পঞ্চত্ব পায় অর্থাৎ মারা যায়। নিজের উদাহরণ দিয়ে সুকুমার বলেছেন যে মাস্টারমশাইয়ের এত মার খেয়েও তিনি অঙ্ক তো শেখেননি উপরন্তু সারাজীবনের মতো তাঁর অঙ্কভীতি রয়ে গেছে।

ছবিটা যা ফুটল তা খুব উজ্জ্বল নয় — এখানে কোন ছবির কথা বলা হয়েছে? ছবিটা উজ্জ্বল নয় কেন?

উদ্দিষ্ট ছবি – আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ছবি বলতে কথক সুকুমারের লেখায় মাস্টারমশাইয়ের যে রূপ ধরা পড়েছিল তার কথা বলা হয়েছে।

ছবিটার উজ্জ্বল না হওয়ার কারণ – ছবি উজ্জ্বল হয়নি, কারণ বাস্তব আর কল্পনার খাদ মিলিয়ে মাস্টারমশাইয়ের যে ছবি আঁকা হয়েছিল তাতে তাঁর সমালোচনাই ছিল সর্বত্র। কথক লিখেছিলেন যে, অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না। মাস্টারমশাই এত প্রহার করেও তাঁকে অঙ্ক শেখাতে পারেননি, বরং যা শিখেছিলেন তাও ভুলে গিয়েছিলেন। এইভাবে যে নেতিবাচক ছবি মাস্টারমশাইয়ের আঁকা হয়েছিল তা তাঁর চরিত্রকে পাঠকদের কাছে উজ্জ্বল করেনি।

এইটুকুই আমার নগদ লাভ – বক্তা কে? এই উক্তিতে নগদ লাভ কথাটির তাৎপর্য কী?

বক্তা – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা।

তাৎপর্য – স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে বাল্যস্মৃতি লিখে সুকুমার পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দশ টাকা পেয়েছিলেন। সুকুমারের কাছে অঙ্ক এবং অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন আতঙ্কস্বরূপ। ছাত্রজীবনে সুকুমারের মনে হত মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে মার খাওয়া ছাড়া তাঁর কিছু পাওয়ার নেই। মাস্টারমশাইকে নিয়ে বাল্যস্মৃতি লিখে পাওয়া দশ টাকাকে তাই মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে সারাজীবনের একমাত্র নগদ লাভ বলে মনে হয়েছিল সুকুমারের।

এখানকার চড়ই পাখিও সেখানে রাজহংসের সম্মান পায় — উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

তাৎপর্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের কথক সুকুমার বাংলাদেশের এক প্রান্তিক কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ার ও বক্তৃতা দেওয়ার ডাক পাওয়ার প্রসঙ্গেই প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন। শহর কলকাতার মানুষ সম্পর্কে মফস্সলের লোকজন অযথা উচ্চ ধারণা পোষণ করেন। কলকাতা থেকে সাধারণ মানের লেখক সেখানে গেলেও খ্যাতনামা সাহিত্যিকের সংবর্ধনা পান। তাই সুকুমার বলেছেন কলকাতার চড়ুই পাখিও সেখানে রাজহংসের সম্মান পায় ৷

আর হল – ফাটানো হাততালিতে কান বন্ধ হওয়ার জো — এই হল – ফাটানো হাততালির কারণ কী?

হাততালির কারণ – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার বাংলাদেশের একটি প্রান্তিক কলেজের বার্ষিক উৎসবে ভাষণ দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের বারোটি উদ্ধৃতি এবং ভুল করে বার্নার্ড শ-র নামে অন্য লেখকের ইংরেজি কোটেশন চালিয়ে দেন। সবশেষে অত্যন্ত আবেগের বশে দেশের তরুণদের জেগে উঠতে বলে টেবিলে এমন এক কিল মারেন যে ফুলদানিটা পড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। সুকুমারের এই আবেগময় ভাষণ শুনে উচ্ছ্বসিত শ্রোতারা হল- ফাটানো হাততালি দিয়ে সুকুমারকে অভিনন্দন জানায়।

আমাদের মতো নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ – আমাদের বলতে যাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের কাছে কোন্ বিষয় সুখাবহ?

উদ্দিষ্ট আমাদের – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার আমাদের বলতে তাঁর মতো অনামী লেখকদের বুঝিয়েছেন।

সুখাবহ বিষয় – বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ার ডাক পেয়ে সুকুমার আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। কলকাতার একজন লেখকের প্রকৃত প্রতিভা বা গুরুত্ব সম্পর্কে গ্রামের মানুষের স্বচ্ছ ধারণা থাকে না। এই কারণেই কলকাতার একজন সাধারণ মানের লেখকও গ্রামে গিয়ে প্রথম শ্রেণির লেখকের মর্যাদা এবং সম্মান পান। এই ব্যাপারটিকেই সুকুমার সুখাবহ বলেছেন।

ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল – ছেলেরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল কেন?

ছেলেদের পরিচয় – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজে যেখানে কথক সুকুমার বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন সেখানকার ছাত্রদের কথা বলা হয়েছে।

বিস্ময়ের কারণ – সুকুমারের আবেগময় বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর কলেজের বৃদ্ধ প্রিন্সিপাল তাঁর প্রশংসা করতে থাকেন। তখন সুকুমার বলেন যে তাঁর শরীরটা ভালো না থাকায় তিনি মনের মতো বক্তৃতা করতে পারেননি। এ কথা শুনে ছেলেরা বিস্মিত হয় এই ভেবে যে শরীর ভালো থাকলে তিনি আরও কত ভালো বক্তৃতা দিতেন। এই বিস্ময়েই তাদের চোখ কপালে উঠে যায়।

এটাকেই এদিক ওদিক করে চালিয়ে দিই – কোন্ বিষয়ের কথা বলা হয়েছে? তা নিয়ে এরকম বলার কারণ কী?

উদ্দিষ্ট বিষয় – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে এটা বলতে কথক সুকুমারের সর্বার্থসাধক বক্তৃতার কথা বলা হয়েছে।

উদ্ধৃত বক্তব্যের কারণ – প্রতিটি সভায় নিত্যনতুন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যে পরিশ্রম প্রয়োজন তা করার ইচ্ছা কথকের ছিল না। সেজন্য তিনি বক্তৃতার একটা সাধারণ কাঠামো তৈরি করে রেখেছিলেন। রবীন্দ্রজন্মোৎসব থেকে বনমহোৎসব পর্যন্ত যে – কোনো অনুষ্ঠানেই তিনি ওই কাঠামোটিকেই একটু পালটে নিয়ে চালিয়ে দিতেন। একেই সুকুমার তাঁর সর্বার্থসাধক বক্তৃতা বলেছেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত কলেজের অনুষ্ঠানেও তিনি ওই বক্তৃতাটিই দিয়েছিলেন।

একটা ভয়ের মৃদু শিহরণ আমার বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে গেল — কখন এবং কেন বক্তার মধ্যে ভয়ের শিহরণ হয়েছিল?

প্রসঙ্গ – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজের অন্ধকারে ঢাকা মাঠে এক ভদ্রলোক কথক সুকুমারকে নাম ধরে ডাকলে তাঁর ভয়ের শিহরণ হয়।

শিহরণের কারণ – অচেনা এলাকায় অপরিচিত ব্যক্তির মুখে নিজের নাম শুনে অবাক হওয়ার পরমুহূর্তেই সুকুমার কণ্ঠস্বরটি চিনতে পারেন। স্কুলের বিভীষিকাস্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের গলার আওয়াজ কথকের মনে তাঁর ছোটোবেলায় অঙ্ক না পেরে মার খাওয়ার স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে। এটিই ছিল তাঁর ভয়ের প্রকৃত কারণ।

আমার গায়ের রক্ত হিম হয়ে এসেছে – বক্তা কে? তাঁর গায়ের রক্ত কেন হিম হয়ে যেত?

বক্তা – উদ্ধৃতিটির বক্তা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার।

রক্ত হিম হওয়ার কারণ – স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই তাঁর নাম ধরে ডাকলেই সুকুমারের গায়ের রক্ত হিম হয়ে যেত। সুকুমার বরাবর অঙ্কে দুর্বল ছিলেন। অপরপক্ষে মাস্টারমশাই মনে করতেন অঙ্ক না পারাটা ভয়ানক লজ্জার। তাই কোনো ছাত্র অঙ্ক না পারলেই তার পিঠে নেমে আসত মাস্টারমশাইয়ের প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড়। এই মারের ভয়েই ছেলেবেলায় বহুদিন সুকুমারের গায়ের রক্ত হিম হয়ে যেত।

সেই ভয়টার কঙ্কাল লুকিয়ে ছিল মনের চোরাকুঠুরিতে — বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

বক্তা – উদ্ধৃতিটির বক্তা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার।

তাৎপর্য – সুকুমার বরাবরই অঙ্কে দুর্বল ছিলেন। স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন অঙ্ক-অন্তপ্রাণ। অঙ্ক না পারলেই ছাত্রদের জুটত মাস্টারমশাইয়ের প্রচণ্ড মার। সুকুমারকে নিয়মিতই তাঁর মার খেতে হত। তাই বড়ো হয়েও অঙ্ক ও মাস্টারমশাইয়ের মারের ভয় তাঁর মনের গভীরে লুকিয়ে ছিল। দীর্ঘকাল পর হঠাৎ মাস্টারমশাইয়ের গলার স্বর সুকুমারের সেই ভয়কে আবার জাগিয়ে তুলেছিল।

ওঁর মনেরও বয়স বেড়েছে – কার মনের কথা বলা হয়েছে? তাঁর বিষয়ে বক্তার কেন এরকম মনে হয়েছে?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের মনের কথা বলা হয়েছে।

বক্তার মনোভাবের কারণ – বৃদ্ধ মাস্টারমশাই বাংলাদেশের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে ছাত্র সুকুমারের দেওয়া বক্তৃতার প্রশংসা করায় স্বয়ং সুকুমারেরই এরকম মনে হয়েছে। শ্রোতারা সকলে উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রশংসা করলেও সুকুমার নিজে জানতেন তাঁর বক্তৃতা কতটা অন্তঃসারশূন্য ও আবেগসর্বস্ব। মাস্টারমশাইয়ের মতো ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যখন ওই বক্তৃতার প্রশংসা করেন তখন সুকুমারের মনে হয় যে দেহের সঙ্গে সঙ্গে মাস্টারমশাইয়ের মনের বয়সও বেড়েছে।

মাস্টারমশাই আমাকে বলতে দিলেন না। — বলতে না দিয়ে মাস্টারমশাই নিজে কী বলেছিলেন?

মাস্টারমশাইয়ের বক্তব্যের বিষয় – মাস্টারমশাই কথক সুকুমারের বক্তৃতার প্রশংসা করলে, লজ্জায় কথক তাকে বাধা দিতে গেলে মাস্টারমশাই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন যে, ছাত্ররাই প্রকৃত অর্থে শিক্ষকদের গর্ব ও পরিচয়। অথচ শিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রদের কিছুই দিতে পারেননি, খালি শাসন-পীড়ন করেছেন। এরপরে পকেট থেকে এক জীর্ণ পত্রিকা বের করে মাস্টারমশাই কথকের লেখাটি দেখিয়ে বলেন ছাত্র তাঁকে নিয়ে গল্প লিখে তাঁকে অমর করে দিয়েছেন।

পড়ে আনন্দে আমার চোখে জল এল — কোন লেখার কথা বলা হয়েছে? সেটি পড়ে বক্তার চোখে জল এল কেন?

লেখাটির পরিচয় – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে কথক সুকুমার একটি অনামী পত্রিকায় তাঁর ছেলেবেলার কথা লিখেছিল। সেই লেখার কথা বলা হয়েছে।

চোখে জল আসার কারণ – অঙ্কে দুর্বল সুকুমারকে মাস্টারমশাইয়ের হাতে অনেক মার খেতে হয়েছে। তাই স্কুলের সেই বিভীষিকাস্বরূপ মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা বাল্যস্মৃতিতে সুকুমার মোটেই তাঁর প্রশংসা করেননি বরং যথেষ্ট সমালোচনাই করেছিলেন। মাস্টারমশাই কিন্তু সেই সমালোচনাকে উদারমনে গ্রহণ করেছিলেন। ছাত্র এত বছর বাদে তাঁর কথা মনে করে তাঁকে নিয়ে গল্প লিখেছে তাতেই তাঁর পরম আনন্দ। আনন্দ ও আবেগে তাঁর চোখ জলে ভরে গিয়েছিল।

আমাকে নিয়ে গল্প লিখেছে – বক্তাকে নিয়ে কেন গল্প লেখা হয়েছে?

গল্প লেখার কারণ – দাম গল্পে কথক সুকুমার তাঁর স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখেছেন।
মাস্টারমশাই যেটিকে গল্প বলেছেন, সেটি আসলে বাল্যস্মৃতি। অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ মাস্টারমশাই পরম নিষ্ঠায় ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর চেষ্টা করতেন। অঙ্ক না পারলে ছাত্রদের প্রচণ্ড মারতেন তিনি। অঙ্কে দুর্বল সুকুমারের কাছে মাস্টারমশাই ছিলেন মূর্তিমান বিভীষিকা। পরবর্তীকালে পত্রিকায় বাল্যস্মৃতি লেখার প্রস্তাব পেয়ে সুকুমার তাই ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়েই গল্পটি লেখেন।

আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে – বক্তার ছাত্র কাকে কীভাবে অমর করেছে?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে ছাত্র তাঁর ছোটোবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইকে অমর করে দিয়েছে।

অমরতা দান – অঙ্কে অসাধারণ দক্ষ মাস্টারমশাই ভাবতেই পারতেন না যে তাঁর ছাত্ররা অঙ্ক পারবে না। মেরে-বকে ছাত্রদের তিনি অঙ্ক শেখাতে চাইতেন। ফলে ছাত্রদের কাছে তিনি ছিলেন বিভীষিকা। তাঁর এক ছাত্র সুকুমার পরবর্তীকালে মাস্টারমশাইকে নিয়ে তাঁর বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা একটি পত্রিকায় লিখেছিলেন। সেটি পড়েই মাস্টারমশাইয়ের মনে হয়েছিল ছাপার অক্ষরে তাঁর কথা লিখে তাঁকে অমর করে দিয়েছে।

মুহূর্তে আমার জিভ শুকিয়ে গেল — বক্তার জিভ শুকিয়ে গেল কেন?

জিভ শুকিয়ে যাওয়ার কারণ – দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার তাঁর স্কুলজীবনের বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে একটি পত্রিকায় লেখা বাল্যস্মৃতিতে মাস্টারমশাইয়ের ছাত্রদের মেরে অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতির সমালোচনা করেছিলেন। এর বহু বছর পর একটি কলেজের অনুষ্ঠানে মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। আনন্দে আপ্লুত মাস্টারমশাই সুকুমারের সেই লেখাটির উল্লেখ করলে লজ্জায়, আত্মগ্লানিতে সুকুমারের জিভ শুকিয়ে যায়।

তেমনি বেশ শুনিয়ে দিয়েছে আপনাকে — এখানে আপনি কে? উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

আপনি – র পরিচয় – উল্লিখিত অংশে আপনি বলতে কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে বোঝানো হয়েছে।

তাৎপর্য – কথক সুকুমার তাঁর স্কুলজীবনের বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতিকে যথেষ্ট সমালোচনা করে একটি পত্রিকায় বাল্যস্মৃতি লিখেছিলেন। জোর করে কাউকে কিছু শেখানো যায় না, সে-কথাই সুকুমার লিখেছিলেন। মাস্টারমশাই পত্রিকাটি পাওয়ার পর আনন্দে সকলকে সেটি দেখিয়ে বেড়াতেন। কেউ কেউ তাঁকে বলত যে, কর্মজীবনে যেমন তিনি ছাত্রদের মারতেন তেমনি ছাত্রও সুযোগ পেয়ে তাঁকে দু-কথা শুনিয়ে দিয়েছে।

কত শ্রদ্ধা নিয়ে লিখেছে — উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

তাৎপর্য বিশ্লেষণ – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পে ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে অঙ্ক-অন্তপ্রাণ মাস্টারমশাই তাদের ভয়ানক প্রহার করতেন। তাঁর এক ছাত্র সুকুমার পরবর্তীকালে একটি পত্রিকায় মাস্টারমশাইয়ের সেই বিভীষিকাময় শাসনের কথা লিখে যথেষ্ট সমালোচনাও করেন। মাস্টারমশাই কিন্তু সেই সমালোচনাকে ছাত্র তথা সন্তানের অধিকার বলেই গ্রহণ করেন। তাঁর মনে হয়, ছাত্র তাঁর কথা মনে রেখে অনেক শ্রদ্ধা নিয়েই তাঁকে নিয়ে গল্প লিখেছে। সুকুমারের সব সমালোচনা তাঁর কাছে ছাত্রের শ্রদ্ধার প্রকাশ বলে মনে হয়।

কিন্তু পাঠাতে সাহস হয়নি — উক্তিটি কার? কী পাঠাতে বক্তার সাহস হয়নি কেন?

বক্তা – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্প থেকে সংগৃহীত আলোচ্য উক্তিটি অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের।

সাহস না হওয়ার কারণ – মাস্টারমশাইয়ের অঙ্কে দুর্বল ছাত্র সুকুমার, পরবর্তীকালে লেখক হয়ে একটি পত্রিকায় বাল্যস্মৃতি লিখেছিলেন। সেই লেখায় মাস্টারমশাইয়ের মেরে অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতিকে সমালোচনা করেন তিনি। সেটি পড়ে সরল মনের মাস্টারমশাই তাকে ছাত্রের শ্রদ্ধার্ঘ্য বলেই গ্রহণ করেছিলেন। এরপর – আনন্দে তিনি সুকুমারকে একটি চিঠিও লিখেছিলেন কিন্তু তাঁকে পাঠাতে সাহস পাননি। কারণ তাঁর ছাত্র এখন কত বড়ো হয়ে গেছে, এই সংকোচ তাঁর মনে কাজ করছিল।

স্নেহ-মমতা ক্ষমার এক মহাসমুদ্রের ধারে এসে দাঁড়িয়েছি – কোন্ পরিপ্রেক্ষিতে বক্তার এ কথা মনে হয়েছে?

পরিপ্রেক্ষিত – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটোগল্পের কথক সুকুমার তাঁর স্কুলের বিভীষিকাস্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনা করে পত্রিকায় বাল্যস্মৃতি লিখেছিলেন। এর বহু বছর পর হঠাৎ মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে দেখা হতে তিনি জানতে পারেন যে এই সরল মনের মানুষটি এত বছর ধরে সেই লেখাটিকে পড়ে সযত্নে সঙ্গে রেখেছেন। ছাত্রের সমালোচনাকে তিনি উদারমনে গ্রহণ করে তাকে ছাত্র তথা সন্তানের অধিকার বলে স্বীকৃতিও দিয়েছেন। তখনই লজ্জাবশত সুকুমারের এই কথা মনে হয়েছে।

দাম গল্পটি একটি চিরন্তন সত্যের প্রতিফলন। এই গল্পটি আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। এই গল্পটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, শিক্ষার ক্ষেত্রে পীড়ন-তাড়ন কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। ছাত্রদেরকে ভালোবাসা ও সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষাদান করা উচিত।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer