কবিতাটিতে কবি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, জীবনে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য না থাকলে মানুষ অনিশ্চিত ও উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে। জীবনে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকলে মানুষ সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে। লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে মানুষ জীবনে সাফল্য ও আনন্দ লাভ করে।
নোঙর কবিতাটি যে মূলগ্রন্থের অন্তর্গত তার নাম লেখো।
নোঙর’ কবিতাটি কবি অজিত দত্তের যে মূলগ্রন্থের অন্তর্গত তার নাম শাদা মেঘ কালো পাহাড় (১৯৭০)।
অজিত দত্ত কোন্ সময়ের কবি?
অজিত দত্ত বিশ শতকের তিরিশ-চল্লিশ দশকের কবি।
কবি অজিত দত্তের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
কবি অজিত দত্ত রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হল — কুসুমের মাস (১৯৩০), ও পাতালকন্যা (১৯৩৮)।
অজিত দত্ত কোন্ বিখ্যাত পত্রিকাগোষ্ঠীর কবি ছিলেন?
অজিত দত্ত কল্লোল পত্রিকাগোষ্ঠীর কবি ছিলেন।
অজিত দত্তের সমকালীন দুজন বিখ্যাত কবির নাম লেখো।
কবি অজিত দত্তের সমসাময়িক দুজন বিখ্যাত কবি হলেন বুদ্ধদেব বসু এবং প্রেমেন্দ্র মিত্র।
পাড়ি দিতে দূর সিন্ধুপারে — কবি কীসের মাধ্যমে পাড়ি দিতে চান?
কবি নৌকার মাধ্যমে দূর সিন্ধুপারে পাড়ি দিতে চান।
দূর সিন্ধুপারে পাড়ি দিতে চেয়েও কবি ব্যর্থ হন কেন?
দূর সিন্ধুপারে পাড়ি দিতে চেয়েও কবি ব্যর্থ হন কারণ তাঁর নৌকার নোঙর তটের কিনারে পড়ে গেছে।
নোঙর গিয়েছে পড়ে – নোঙর কোথায় পড়ে গিয়েছে?
নোঙর পড়ে গিয়েছে তটের কিনারায়।
সারারাত মিছে দাঁড় টানি — সারারাত দাঁড় টানা কেমন করে মিছে হয়ে যায়?
কবির নৌকা তটের কিনারে নোঙরে বাঁধা পড়েছে, দাঁড় টেনে তাকে এগোনো যায় না।
জোয়ারের ঢেউগুলি ফুলে ফুলে ওঠে — জোয়ারের ঢেউ ফুলে উঠে কী করে?
জোয়ারের ঢেউগুলি ফুলে ফুলে ওঠে আর কবির নৌকায় মাথা ঠুকে সমুদ্রের দিকে ছুটে যায়।
তারপর ভাঁটার শোষণ — ভাঁটার শোষণ কী করে?
ভাঁটার শোষণ স্রোতের প্রবল প্রাণ আহরণ করে অর্থাৎ জলপ্রবাহের তীব্রগতিকে স্তিমিত করে।
আমার বাণিজ্য-তরী বাঁধা পড়ে আছে। — কবির বাণিজ্য-তরি কোথায় কীভাবে বাঁধা পড়ে আছে?
জোয়ারভাটায় বাঁধা তটের কাছে কবির বাণিজ্যতরি নোঙরে বাঁধা পড়ে আছে।
নোঙর কবিতায় দাঁড় টানা ও মাস্তুলে পাল বাঁধা সত্ত্বেও কী হল না এবং কেন হল না?
দাঁড় টানা ও মাস্তুলে পাল বাঁধা সত্ত্বেও নৌকা এগোল না, কারণ নোঙরের কাছিতে নৌকা বাঁধা পড়ে আছে।
কবির সপ্তসিন্ধুপারে পাড়ি দেওয়ার সংকল্প পূরণ হয় না কেন?
তটের কিনারায় নোঙর পড়ে যাওয়ায় কবির সপ্তসিন্ধুপারে পাড়ি দেওয়ার সংকল্প পূরণ হয় না।
নোঙর কবিতায় কবির জীবনের নিস্তব্ধ মুহূর্তগুলি কেমন?
নোঙর কবিতায় কবির জীবনের নিস্তব্ধ মুহূর্তগুলি সাগরগর্জনে কেঁপে ওঠে এবং প্রতিবার দাঁড় টানায় কবি স্রোতের বিদ্রুপধ্বনি শোনেন।
কবি কখন স্রোতের বিদ্রুপ শোনেন?
প্রতিবার যখন কবি স্রোতের মধ্য দিয়ে দাঁড় টানেন তখন স্রোতের বিদ্রুপ শোনেন।
তারার দিকে চেয়ে কবি কী করেন?
তারার দিকে চেয়ে কবি দিকের নিশানা করেন।
সপ্তসিন্ধুপারে কবির যাওয়ার উদ্দেশ্য কী?
সপ্তসিন্ধুপারে কবি তরি ভরা পণ্য নিয়ে পাড়ি দিতে চান।
সারারাত তবু দাঁড় টানি। — এই তবু শব্দটি কেন কবি ব্যবহার করেছেন?
তটের কিনারায় নোঙর পড়ে গেলেও যেহেতু দাঁড় টানা চলতেই থাকে, সেহেতু সেই বিরামহীনতাকে বোঝানোর জন্যই তবু শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে।
নোঙর কবিতায় নোঙর ও নৌকা’ কীসের প্রতীক?
নোঙর কবিতায় নোঙর বন্ধন বা স্থিতির প্রতীক এবং নৌকা গতির প্রতীক।
অজিত দত্তের নোঙর কবিতাটি একটি রূপকধর্মী কবিতা। কবিতায় নোঙরকে জীবনের লক্ষ্য, স্থিতিস্থাপকতা এবং আস্থার প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। কবি বলেন, নোঙর ছাড়া জাহাজ সমুদ্রে হারিয়ে যায়। ঠিক তেমনি, জীবনে লক্ষ্য ও আদর্শ ছাড়া মানুষ পথ হারিয়ে যায়। নোঙর জীবনের ভিত্তি। এটি মানুষকে স্থিতিশীলতা ও আস্থা প্রদান করে।
কবিতাটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, জীবনে আমাদের একটি লক্ষ্য থাকা উচিত। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের দৃঢ় সংকল্প ও আস্থা থাকা দরকার। নোঙর ছাড়া জাহাজ যেমন সমুদ্রে হারিয়ে যায়, তেমনি লক্ষ্য ও আদর্শ ছাড়া মানুষও জীবনে হারিয়ে যায়।