নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

Diptesh Khamaru

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণী ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদের কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

Table of Contents

বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ননবম

ডিরেক্টরির শাসন বলতে কী বোঝো?

১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দের সংবিধান অনুসারে ফ্রান্সের শাসনভার ৫ জন ডিরেক্টর বা ব্যক্তির এক কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই শাসন ডিরেক্টরির শাসন (১৭৯৫-১৭৯৯ খ্রি.) নামে পরিচিত। এই শাসনব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত অদক্ষ ও দুর্নীতিগ্রস্ত। ডিরেক্টরদের শাসনকালে ফ্রান্সের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল।

নেপোলিয়ন কীভাবে ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটান?

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর সেন্ট ক্লাওডে অধিবেশন চলাকালীন নেপোলিয়ন সৈন্যসহ সেখানে প্রবেশ করেন। অধিকাংশ সদস্যদের বিতাড়িত করে তিনি ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটান।

অষ্টম বর্ষের সংবিধান কী? এই সংবিধান দ্বারা প্রবর্তিত শাসনের নাম কী?

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর (প্রজাতন্ত্রী বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৮ ব্রুমেয়ার) নেপোলিয়ন ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটান। ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর আবে সিয়েসের নেতৃত্বে যে সংবিধান প্রবর্তিত হয়, তাকে অষ্টম বর্ষের সংবিধান বলা হয়। এই সংবিধান দ্বারা প্রবর্তিত হয় কনস্যুলেট-এর শাসন।

কনস্যুলেটের শাসন বলতে কী বোঝায়?

নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর ফ্রান্সে ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে কনস্যুলেটের শাসন প্রবর্তন করেন। এই শাসনব্যবস্থায় তিনজন কনসালের হাতে শাসনক্ষমতা অর্পিত হয়। এতে নেপোলিয়ন ছিলেন সর্বশক্তিমান প্রথম কনসাল। নেপোলিয়ন প্রবর্তিত এই শাসনব্যবস্থাকে কনস্যুলেটের শাসন বলা হয়।

১৮ ব্রুমেয়ার ঘটনা বলতে কী বোঝায়?

নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর ফ্রান্সে ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে কনস্যুলেট নামে এক নতুন শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ফ্রান্সের বিপ্লবী ক্যালেন্ডার অনুসারে এই দিনটি ছিল ১৮ ব্রুমেয়ার। তাই এই ঘটনাকে ১৮ ব্রুমেয়ার ঘটনা বলা হয়। এই সময় থেকে ফ্রান্সে নেপোলিয়নের যুগ শুরু হয়।

নেপোলিয়নের যুগ বলতে কী বোঝায়?

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর ডিরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সের শাসনক্ষমতা দখল করেন। এরপর তিনি ফ্রান্সে কনস্যুলেট (Consulate) নামে এক নতুন শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং সর্বশক্তিমান প্রথম কনসাল রূপে পরিচিত হন। এইসময় থেকে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নেপোলিয়ন পূর্ণ কর্তৃত্বের সঙ্গে ফ্রান্স শাসন করেন এবং সমগ্র ইউরোপে তাঁর আধিপত্য বিস্তার করেন। তাই ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে ফ্রান্স তথা ইউরোপের ইতিহাসে নেপোলিয়নের যুগ (Age of Napoleon) বলা হয়।

প্রিফেক্ট ও সাব-প্রিফেক্ট বলতে কী বোঝো? অথবা, নেপোলিয়ন কীভাবে প্রাদেশিক শাসনের বিভাজন ঘটান?

প্রথম কনসাল হিসেবে নেপোলিয়ন সংবিধান সভার (১৭৮৯-৯১ খ্রিস্টাব্দ) আমলে প্রতিষ্ঠিত ৮৩টি প্রদেশকে অব্যাহত রেখে প্রতিটি প্রদেশে একজন করে নিজ মনোনীত প্রার্থী নিয়োগ করেন, যাদের প্রিফেক্ট বলা হত। আবার প্রতিটি প্রদেশকে ৫৪৭টি জেলা বা ক্যান্টনে বিভক্ত করে সেখানে নেপোলিয়ন যাদেরকে নিয়োগ করেন, তাদের বলা হত সাব-প্রিফেক্ট।

নেপোলিয়ন কবে ফ্রান্সের প্রথম কনসাল, যাবজ্জীবন কনসাল এবং ফ্রান্সের সম্রাট নিযুক্ত হন?

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ২৪ ডিসেম্বর নেপোলিয়ন প্রথম কনসাল এবং ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে তিনি সারা জীবনের জন্য কনসাল পদে নিযুক্ত হন।

১৮০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মে তিনি সিনেট দ্বারা সম্রাট-এর মর্যাদায় উন্নীত হন। ওই বছরই ২ ডিসেম্বর পোপ সপ্তম পায়াস কর্তৃক নোটরডাম গির্জায় তাঁর অভিষেকক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

মন্টজেলার্ড কে?

নেপোলিয়ন বোনাপার্টের বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন মন্টজেলার্ড। ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দের এক রিপোর্টে তিনি অর্থনৈতিক অবরোধের দ্বারা ইংল্যান্ডের শক্তি ধ্বংস করার প্রস্তাব দেন। মন্টজেলার্ড রিপোর্ট-কে তাই মহাদেশীয় অবরোধ প্রথার খসড়া বলা হয়।

সার্ডিনিয়াকে পরাস্ত করে নেপোলিয়ন কোন্ কোন্ অঞ্চল অধিকার করেন?

নেপোলিয়ন এক মাসেরও কম সময়ে ৫টি যুদ্ধে সার্ডিনিয়াকে পরাস্ত করেন। এর ফলে তিনি স্যাভয় ও নিস অঞ্চলের উপর ফ্রান্সের কর্তৃত্ব স্থাপন করেছিলেন।

ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

ফ্রান্সের নেপোলিয়ন ও অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রান্সিসের মধ্যে ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধির শর্ত কী ছিল?

১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন ও অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রান্সিসের মধ্যে ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।
সন্ধির শর্ত – ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধির শর্ত অনুযায়ী —

  1. অস্ট্রিয়া ফ্রান্সকে লোম্বার্ডি, জেনোয়া এবং নেদারল্যান্ডের কিছু অংশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
  2. বেলজিয়াম প্রদেশের উপর ফ্রান্সের কর্তৃত্ব অস্ট্রিয়া মেনে নেয়।

নেপোলিয়নের মিশর অভিযান সম্পর্কে কী জান?

ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ উপনিবেশ ভারত থেকে ইংল্যান্ডে পণ্যদ্রব্য আমদানি বন্ধ করার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন মিশর থেকে ভারত আক্রমণের উদ্যোগ নেন। এই কারণে ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি মিশর আক্রমণ করেন এবং পিরামিডের যুদ্ধে মামেলুকদের বিরুদ্ধে জয়ী হন। কিন্তু নীলনদের যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাপতি নেলসনের বাহিনীর কাছে নেপোলিয়নের বাহিনী পর্যুদস্ত হয়। পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় হতাশ নেপোলিয়ন মিশর অভিযান ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেন

নেপোলিয়ন কেন মিশর অভিযান করেছিলেন? মিশর অভিযানের ফল কী হয়েছিল?

উদ্দেশ্য – ফ্রান্সে ডিরেক্টরির শাসনকালে ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন মিশর অভিযান করেন। তাঁর মিশর অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল –

  1. মিশর থেকে ফ্রান্সের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইংল্যান্ডকে বিতাড়িত করা।
  2. মিশরে ফ্রান্সের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

ফলাফল – মিশর অভিযানে পিরামিডের যুদ্ধে (১৭৯৮ খ্রি.) নেপোলিয়ন জয়লাভ করেন। কিন্তু নীলনদের যুদ্ধে (আগস্ট, ১৭৯৮ খ্রি.) তিনি ইংরেজ সেনাপতি নেলসনের কাছে পরাজিত হন এবং ফ্রান্সে ফিরে আসেন।

কত খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণা করেন? কোন্ পোপ নেপোলিয়নকে সম্রাট পদে অভিষিক্ত করেন?

১৮০৪ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বর নেপোলিয়ন নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণা করেন।

পোপ সপ্তম পায়াস প্যারিসের নোটরডাম চার্চে উপস্থিত থেকে নেপোলিয়নকে সম্রাট পদে অভিষিক্ত করেন। নেপোলিয়ন ফরাসি জাতির সম্রাট উপাধি ধারণ করেন।

প্রথমে নেপোলিয়ন আইনসভার কয়টি কক্ষ প্রবর্তন করেন? সেগুলির নাম কী?

প্রথমে নেপোলিয়ন কনস্যুলেটের সংবিধান দ্বারা আইনসভাকে চারটি কক্ষে বিভক্ত করেছিলেন। এই কক্ষগুলি ছিল –

  1. কাউন্সিল অফ স্টেট স্থির হয় ২৫ জন সদস্যবিশিষ্ট এই সভা আইনের প্রস্তাব রচনা করবে
  2. ট্রাইবুনেট ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইবুনেট সেই প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা করবে, কিন্তু ভোট দিতে পারবে না
  3. লেজিসলেটিভ বডি ৩০০ জন সদস্যবিশিষ্ট এই সভা কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই ভোট মারফত প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারবে
  4. সিনেট ৮৫ জন সদস্যবিশিষ্ট এই সভা প্রস্তাবগুলির চূড়ান্ত অনুমোদন বা বর্জন করতে পারবে।

নেপোলিয়নের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের নাম লেখো।

নেপোলিয়নের উল্লেখযোগ্য দুটি সংস্কার হল –

  1. ধর্মীয় বিবাদ মেটানোর জন্য ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে পোপ সপ্তম পায়াসের সঙ্গে কনকর্ডাট চুক্তি সম্পাদন।
  2. কোড নেপোলিয়ন প্রণয়ন করে আইনের চোখে সকলকে সমতা প্রদান।

কনকর্ডাট বলতে কী বোঝায়?

১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দ্য ক্লার্জি নামক আইন দ্বারা পোপের ক্ষমতা বিনষ্ট করা হয় এবং ফ্রান্সের চার্চগুলির জাতীয়করণ করা হয়। এর ফলে পোপের সঙ্গে ফরাসি সরকারের বিরোধ বাধে।

১৮০১ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন চার্চের জাতীয়করণ নীতির সঙ্গে পোপের দাবির সমতা রক্ষা করে যে মীমাংসা সূত্র বা সমাধান সূত্র রচনা করেন, তা কনকর্ডাট নামে পরিচিত।

কনকর্ডাট-এ কী বলা হয়?

১৮০১ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন ও পোপ সপ্তম পায়াস দ্বারা যৌথভাবে প্রবর্তিত কনকর্ডাটে বলা হয় —

  1. ফ্রান্সে চার্চের যাজকগণ সরকার দ্বারা নিযুক্ত হওয়ার পর পোপ সেই নিয়োগ অনুমোদন করবেন।
  2. প্রত্যেক যাজক ফরাসি সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট বেতন পাবেন।
  3. ফ্রান্সে ক্যাথলিক ধর্ম চালু থাকবে তবে তার উপর ফরাসি সরকারের নিয়ন্ত্রণ জারি করা হবে।
  4. বিপ্লবী আমলে ফরাসি সরকার রাষ্ট্রের যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল পোপ তা স্বীকার করে নেবেন।

অর্গানিক শর্তাবলি কী?

নেপোলিয়ন পোপ সপ্তম পায়াস-এর সঙ্গে ধর্মমীমাংসা চুক্তি (১৮০১ খ্রি.) স্বাক্ষরের পর কতকগুলি আইন প্রচলন করেন, যা অর্গানিক শর্তাবলি নামে পরিচিত। এতে বলা হয় –

  1. ফ্রান্সে পোপের আদেশনামা ও পোপের কোনো প্রতিনিধি প্রেরণ সরকারের অনুমতি ছাড়া বৈধ হবে না
  2. বিশপগণ জেলার প্রিফেক্টদের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন;
  3. পোপের নির্দেশে রবিবার ছুটির দিন বলে ধার্য হবে;
  4. সর্বোপরি প্রোটেস্ট্যান্ট ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের খ্রিস্টানরাও ধর্মীয় স্বাধীনতা পাবে।

এইভাবে গ্যালিকান মতবাদ ও ভ্যাটিকান মতবাদ-এর সমন্বয় সাধিত হয়।

কাকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলে অভিহিত করা হয় এবং কেন?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলা হয়। মধ্যযুগে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য বা বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের সম্রাট জাস্টিনিয়ান তাঁর সাম্রাজ্যের বিভিন্ন আইনগুলিকে প্রথম একটি গ্রন্থে সংকলিত করেন। ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নও ফ্রান্সে বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত আইনগুলির সমন্বয়সাধন করে ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে কোড নেপোলিয়ন নামে নতুন আইন সংহিতা প্রণয়ন করেন। তাই নেপোলিয়নকে জাস্টিনিয়ানের সঙ্গে তুলনা করে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলে অভিহিত করা হয়।

কোড নেপোলিয়ন বা নেপোলিয়নের আইন সংহিতা বলতে কী বোঝায়? কোড নেপোলিয়ন-এ কোন্ নীতির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়?

নেপোলিয়ন ফরাসি বিপ্লবের সাম্য-এর আদর্শের দ্বারা প্রচলিত পরস্পরবিরোধী (রোমান ও প্রাকৃতিক) আইনগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে সমগ্র ফ্রান্সে এক ধরনের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেন। তাঁর উদ্যোগে আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুসারে ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে নতুন আইনবিধি প্রবর্তিত হয়। ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন এর নামকরণ করেন কোড নেপোলিয়ন (Code Napoleon)। এতে বলা হয় আইনের চোখে সকলেই সমান।

কোড নেপোলিয়নের আইনগুলির শ্রেণিবিভাগ করো।

কোড নেপোলিয়নে মোট ২২৮৭টি বিধি ছিল। এই বিধিগুলি প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত। যথা –

  1. দেওয়ানি আইন
  2. ফৌজদারি আইন
  3. বাণিজ্যিক আইন।

কোড নেপোলিয়নের প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

কোড নেপোলিয়ন-এর প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ছিল –

  1. আইনের চোখে সকলে সমান,
  2. সামন্ততান্ত্রিক অসাম্যের বিলোপ,
  3. সরকারি চাকরিতে যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ,
  4. ব্যক্তিস্বাধীনতার স্বীকৃতি,
  5. সম্পত্তির অধিকারের স্বীকৃতি এবং
  6. ধর্মীয় সহিষ্কৃতা ইত্যাদি।

কোড নেপোলিয়ন-এর ত্রুটির উল্লেখ করো।

কোড নেপোলিয়ন-এর প্রধান কয়েকটি ত্রুটি ছিল –

  1. সমাজে নারীদের মর্যাদা হ্রাস,
  2. শ্রমিকের গুরুত্বহীনতা ইত্যাদি।

কোড নেপোলিয়নের গুরুত্ব লেখো।

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট প্রবর্তিত কোড নেপোলিয়নের মাধ্যমে –

  1. ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রদেশে একই ধরনের আইন প্রচলিত হয়।
  2. এর ফলে প্রশাসনিক ও বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে সংহতি দৃঢ় হয়।
  3. পরবর্তীকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আইনব্যবস্থায় এই আইনগুলি স্থান পায়।

কে, কত খ্রিস্টাব্দে জাতীয় ব্যাংক বা ব্যাংক অফ ফ্রান্স প্রতিষ্ঠা করেন? এর খসড়া কে রচনা করেছিলেন?

অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনয়নে তথা আর্থিক পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় ব্যাংক বা ব্যাংক অফ ফ্রান্স প্রতিষ্ঠা করেন।
এর খসড়া রচনা করেন প্যারিসের বিখ্যাত ব্যাংকার পেরেগল্প (Perregaux)। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে এই ব্যাংক-কে নোট জারি করার পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়।

লাইসি কী?

১৮০২ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ফরাসি শহরগুলিতে কয়েকটি আদর্শ সরকারি নবম শ্রেণীর স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যেগুলি লাইসি বা লিসে নামে পরিচিত হয়। লিসেগুলি ছিল আধাসামরিক বিদ্যালয়। এই সমস্ত এলিট বিদ্যালয়গুলিতে সামরিক ও অসামরিক কর্মচারীদের সন্তানরা পড়াশোনা করত।

লিজিয়ন অফ অনার কী?

লিজিয়ন অফ অনার হল এক বিশেষ ধরনের সম্মান বা উপাধি। নেপোলিয়ন রাষ্ট্রের প্রতি সেবা ও আনুগত্যের পুরস্কার স্বরূপ সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিদের লিজিয়ন অফ অনার প্রদানের প্রথা চালু করেছিলেন। নেপোলিয়ন মনে করতেন, এর ফলে জনগণের মধ্যে দেশসেবার মানসিকতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। লিজিয়ন অফ অনার ছিল ফ্রান্সের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান।

পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অবসান কে, কখন ঘটিয়েছিলেন?

১৮০৬ খ্রিস্টাব্দের ৬ আগস্ট অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রান্সিস পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট উপাধি ত্যাগ করে অস্ট্রিয়ার রাজা হিসেবে প্রথম ফ্রান্সিস উপাধি গ্রহণ করলে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এই সাম্রাজ্যের অবসান ঘটিয়েছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রথম শক্তিজোট কবে, কাদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল?

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রথম শক্তিজোট গঠিত হয়েছিল ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে। এই জোটে ছিল — ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, স্পেন ইত্যাদি ইউরোপীয় দেশগুলি।

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শক্তিজোট কবে, কাদের নিয়ে গঠিত হয়?

১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ ডিরেক্টরি শাসনের শেষ পর্বে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, তুরস্ক, নেপলস ও পোর্তুগালকে নিয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শক্তিজোট গঠিত হয়। নেপোলিয়নের সাফল্যে আতঙ্কিত হয়ে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি এই শক্তিজোট গড়ে তুলেছিল।

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তৃতীয় শক্তিজোট কবে ও কাদের নিয়ে গঠিত হয়?

ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ আক্রমণ থেকে ইউরোপকে রক্ষা ও ইউরোপের শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের উদ্যোগে ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দের জুলাই-এ ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও সুইডেনকে নিয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তৃতীয় শক্তিজোট গঠিত হয়েছিল।

নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে কোন্ কোন্ রাষ্ট্র চতুর্থ জোটে যোগ দিয়েছিল?

অথবা, কোন্ কোন্ দেশ মিলিতভাবে ফ্রান্সবিরোধী চতুর্থ শক্তিজোট গঠন করে?

নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া, প্রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, সুইডেন, ইংল্যান্ড ও তুরস্ক চতুর্থ শক্তিজোটে যোগ দিয়েছিল।

অ্যামিয়েন্সের চুক্তি কত খ্রিস্টাব্দে ও কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

১৮০২ খ্রিস্টাব্দে অ্যামিয়েন্সের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে অ্যামিয়েন্সের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

অ্যামিয়েন্সের চুক্তির শর্ত কী ছিল?

১৮০২ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে অ্যামিয়েন্সের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। অ্যামিয়েন্সের সন্ধির শর্ত ছিল –

  1. মিশর, নেপলস ও পোপের রাজ্য থেকে ফ্রান্স সেনা প্রত্যাহার করবে।
  2. সিংহল ও ত্রিনিদাদ বাদে ইংল্যান্ড সকল বিজিত অঞ্চল ফ্রান্স ও তার মিত্রদের ফিরিয়ে দেবে।

অ্যামিয়েন্সের সন্ধির গুরুত্ব কী ছিল?

১৮০২ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে অ্যামিয়েন্সের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধি গুরুত্বপূর্ণ ছিল নানা কারণে –

  1. অ্যামিয়েন্সের সন্ধি ছিল নেপোলিয়নের বিরাট কূটনৈতিক জয়।
  2. এই সন্ধির ফলে দ্বিতীয় শক্তিজোট ভেঙে যায়।
  3. ইউরোপের শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্স স্বীকৃতি লাভ করে।

ট্রাফালগারের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়?

১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ট্রাফালগারের যুদ্ধ হয়।

ট্রাফালগারের যুদ্ধ হয়েছিল ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে। এই যুদ্ধে ইংরেজ নৌসেনাপতি অ্যাডমিরাল নেলসন নেপোলিয়নের বাহিনীকে পরাজিত করেন।

কবে, কাদের মধ্যে ফ্রিডল্যান্ডের যুদ্ধ হয়? এই যুদ্ধের পর কোন্ সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে ফ্রিডল্যান্ডের যুদ্ধ হয়। ফ্রিডল্যান্ডের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাশিয়া টিলসিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) স্বাক্ষরে বাধ্য হয়।

টিলসিটের চুক্তি কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

অথবা, টিলসিটের সন্ধির গুরুত্ব কী?

১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ও রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডারের মধ্যে টিলসিটের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির গুরুত্ব নিম্নরূপ।

  1. টিলসিটের চুক্তির ফলে ইউরোপে নেপোলিয়নের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল।
  2. ইংল্যান্ড ছাড়া ইউরোপের সমস্ত বৃহৎ শক্তি নেপোলিয়নের অধীনতা স্বীকার করেছিল। তারা নেপোলিয়নের নির্দেশ মানতেও বাধ্য হয়েছিল।

অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রান্সিস কেন নেপোলিয়নের সঙ্গে প্রেসবার্গের সন্ধি স্বাক্ষর করেন?

অস্টারলিজের যুদ্ধে অস্ট্রিয়া এবং রাশিয়ার যুগ্মবাহিনী নেপোলিয়নের কাছে দারুণভাবে পরাজিত হয়। এর ফলে পরাজিত অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় ফ্রান্সিস প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে বাধ্য হয়ে নেপোলিয়নের সঙ্গে ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ‘প্রেসবার্গের সন্ধি’ স্বাক্ষর করেন।

ঐতিহাসিক এইচ জি ওয়েলস নেপোলিয়ন সম্পর্কে বলেন – “মুরগির বাচ্চা হীরকখণ্ড পড়ে থাকলেও তাতে আকৃষ্ট না হয়ে যেমন গোবরের গাদা খুঁজে বেড়ায়, তেমনি ইতিহাস তাঁকে নতুন সমাজ স্থাপনের সুযোগ দিলেও তিনি তা ত্যাগ করে চিরাচরিত রাজ্যবিস্তার নীতিতে আসক্ত হয়ে পড়েন।”

জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য নেপোলিয়ন কোন্ কোন্ সন্ধি করেছিলেন?

জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য নেপোলিয়ন অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়াকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাস্ত করে ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে ব্যসলের সন্ধি, ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যাম্পো ফর্মিও-র সন্ধি এবং ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে লুনিভিলের সন্ধি স্বাক্ষর করে জার্মানিকে পুনর্গঠিত করেন।

নেপোলিয়ন জার্মানির পুনর্গঠনে কী উদ্যোগ নেন?

জার্মানির পুনর্গঠন নেপোলিয়নের সংগঠনী প্রতিভার এক বিশিষ্ট নিদর্শন। তিনি রাইন উপত্যকা অঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নিয়ে ‘রাইন রাজ্যসংঘ’, এলব নদীর পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে ‘ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য’, প্রাশিয়ার একাংশ নিয়ে ‘গ্র্যান্ড ডাচি অফ বার্গ’ এবং প্রাশিয়ার অধিকারভুক্ত পোল্যান্ড নিয়ে ‘গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ’ গঠন করেন। ফলে জার্মানির মধ্যযুগীয় জটিল মানচিত্রের সরলীকরণ হয়েছিল।

কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন কী?

নেপোলিয়ন প্রাশিয়াকে পরাজিত করার পর বিজেতা হিসেবে বার্লিনে উপস্থিত হন। এখানে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যের রাজাদের নিয়ে একটি সংঘ বা ফেডারেশন গঠন করেন। একে ‘কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন’ বা রাইনের রাষ্ট্রজোট বলা হয়। এই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল নেপোলিয়নের উপর।

কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন কীভাবে গঠিত হয়?

অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়াকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্য সামনে রেখে নেপোলিয়ন রাইন উপত্যকার রাজ্যগুলিকে নিয়ে রাইন রাজ্যসংঘ গড়ে তোলেন (১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে)। প্রথমে ব্যাভেরিয়া, পরে উইটেনবার্গ ও ব্যাডেন-সহ দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির আরও ১৩টি ক্ষুদ্র রাজ্য নিয়ে (মোট ১৬টি রাজ্য) এই রাজ্যসংঘ গঠিত হয়। পরে স্যাক্সনি ও টাইরল যোগ দেওয়ায় ‘কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন’-এর সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮।

কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন – এর গুরুত্ব কী?

নেপোলিয়ন ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির রাজাদের নিয়ে একটি রাষ্ট্রজোট গঠন করেন। ফ্রান্স ও ইউরোপের ইতিহাসে এর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।

  1. ফ্রান্সের পূর্ব সীমান্তে নেপোলিয়ন সৃষ্ট একটি রাষ্ট্রজোট গড়ে ওঠে। ফলে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।
  2. কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন ভবিষ্যৎ জার্মানির রাজনৈতিক ঐক্যের পথ প্রশস্ত করে।

ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য কে, কোন্ অঞ্চল নিয়ে গঠন করেন?

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট জার্মানি থেকে প্রাশিয়ার প্রভাব দূর করার জন্য এলবা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী হ্যানোভার, স্যাক্সনি, কটিংগেন প্রভৃতি রাজ্যের অংশ নিয়ে একটি রাষ্ট্রসমবায় গড়ে তোলেন, যা ‘কিংডম অফ ওয়েস্টফেলিয়া’ নামে পরিচিত। এর শাসনভার দেওয়া হয় নেপোলিয়নের ভাই জেরোম বোনাপার্টকে।

গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ কে, কোন্ কোন্ অঞ্চল নিয়ে গড়ে তোলেন?

নেপোলিয়ন অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া ও রাশিয়া অধিকৃত পোল্যান্ডের কিছু অংশ নিয়ে ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ‘গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ’ গঠন করেন। স্যাক্সনির রাজা এখানকার শাসন পরিচালনার দায়িত্ব পান। গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ ছিল পোল জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতির প্রতীক।

সুইস কনফেডারেশন কী?

ইটালির উত্তরে প্রজাতন্ত্রের যুগের হেলেভেটিক প্রজাতন্ত্র নেপোলিয়নের যুগে ‘সুইস কনফেডারেশন’-এ পরিণত হয়। এই কনফেডারেশনের ১৯টি ক্যান্টন ফ্রান্সের উপর নির্ভরশীল ছিল।

নেপোলিয়নকে ইটালির মুক্তিদাতা বলা হয় কেন?

ইটালির উত্তর অংশ ছিল অস্ট্রিয়ার দখলে। নেপোলিয়ন অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে ইটালিকে অস্ট্রিয়ার শাসন থেকে মুক্ত করেছিলেন। এইজন্য ইটালির জনগণ নেপোলিয়নকে ‘মুক্তিদাতা’ বলে অভিহিত করেন।

বোনাপার্টিস্ট কোলবার্টিজম (Bonapartist Colbertism) বলতে কী বোঝায়?

নেপোলিয়ন আশা করেছিলেন যে, ইউরোপে ইংল্যান্ড বাজার হারালে ফ্রান্স তা দখল করবে। ফলে ফ্রান্সের শিল্প পুনরুজ্জীবন লাভ করবে এবং ফ্রান্স সমৃদ্ধিশালী হয়ে উঠবে। অর্থাৎ শিল্পক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য নেপোলিয়নের এই প্রচেষ্টাকে ঐতিহাসিক কোবান ‘বোনাপার্টিস্ট কোলবার্টিজম’ বলে অভিহিত করেছেন।

সমুদ্রের রানি কাকে, কেন বলা হয়?

অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে সমগ্র ইউরোপে ইংল্যান্ড শক্তিশালী নৌবহরের সাহায্যে সমুদ্রের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছিল। তাই ইংল্যান্ডের একচেটিয়া জলপথ অধিকারের ক্ষমতা তাকে ‘সমুদ্রের রানি’ উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

বার্লিন ডিক্রি কী?

নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ নভেম্বর ‘বার্লিন ডিক্রি’ বা বার্লিন হুকুমনামা জারি করেন। এতে বলা হয়, ফ্রান্স বা তার মিত্রদেশ বা নিরপেক্ষ দেশের বন্দরগুলিতে ইংল্যান্ডের কোনো জাহাজ ঢুকতে দেওয়া হবে না। যদি ইংল্যান্ডের কোনো জাহাজ এই নির্দেশ অমান্য করে তবে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

ঐতিহাসিক মার্শাল ফচ বলেন যে, “নেপোলিয়ন ভুলে যান যে মানুষ কখনও ঈশ্বর হতে পারে না, তিনি এ কথাও ভুলে যান যে, যুদ্ধ অপেক্ষা শান্তিই হল মানুষের সর্বোচ্চ লক্ষ্য।”

অর্ডারস-ইন-কাউন্সিল কী?

ফ্রান্সের বার্লিন ডিক্রির প্রত্যুত্তরে ইংল্যান্ডের মন্ত্রীসভা ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ‘অর্ডারস-ইন-কাউন্সিল’ জারি করে। ফ্রান্স ও তার মিত্রদেশের বন্দরে কোনো দেশের এমনকি নিরপেক্ষ দেশের জাহাজও ঢুকতে পারবে না। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করলে ইংল্যান্ড ওই জাহাজ ও মালপত্র বাজেয়াপ্ত করবে। যদি একান্তই যেতে হয় তবে ইংল্যান্ডের কোনো বন্দরে এসে অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।

মিলান ডিক্রি কী?

ইংল্যান্ডের অর্ডারস-ইন-কাউন্সিলের প্রত্যুত্তরে নেপোলিয়ন ‘মিলান ডিক্রি’ জারি করেন (১৮০৭ খ্রি. অক্টোবর-ডিসেম্বর)। কোনো নিরপেক্ষ বা মিত্রদেশের জাহাজ অর্ডারস-ইন-কাউন্সিল মেনে ইংল্যান্ডের কাছ থেকে লাইসেন্স বা অনুমতি নিলে তা ইংল্যান্ডের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে এবং ফ্রান্সের দ্বারা তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

কন্টিনেন্টাল সিস্টেম বলতে কী বোঝায়?

নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডকে সামরিক শক্তিতে জব্দ করতে না পেরে অর্থনৈতিক দিক থেকে জব্দ করার চেষ্টা করেন। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি বার্লিন থেকে ঘোষণা (বার্লিন ডিক্রি) করেন যে, ইউরোপের কোনো দেশের কোনো বন্দরে ইংল্যান্ডের জাহাজ ঢুকতে পারবে না বা ইংল্যান্ডের তৈরি কোনো জিনিস কিনতে পারবে না। নেপোলিয়ন প্রবর্তিত এই ব্যবস্থাকে ‘কন্টিনেন্টাল সিস্টেম’ বা ‘মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা’ বলা হয়।

কন্টিনেন্টাল সিস্টেম বা মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ কী ছিল?

অথবা, নেপোলিয়ন কোন্ দেশের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় প্রথা প্রবর্তন করেন এবং কেন?

অথবা, কন্টিনেন্টাল সিস্টেম বা মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে নেপোলিয়নের উদ্দেশ্য কী ছিল?

মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ –

  1. ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন ট্রাফালগারের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে বার্লিন ডিক্রির দ্বারা মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা ঘোষণা করেন।
  2. নেপোলিয়ন বুঝেছিলেন ইউরোপে ইংল্যান্ডের বাণিজ্য বন্ধ হলে ইংল্যান্ড অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়বে। সর্বোপরি, ইংল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে ইউরোপীয় বাজার দখলের মাধ্যমে ফরাসি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা তথা ফরাসি মহিমা বৃদ্ধি করাও ছিল এই ব্যবস্থার অন্যতম উদ্দেশ্য।

মহাদেশীয় অবরোধকে দ্বিমুখী অস্ত্র বলা হয় কেন?

ইংল্যান্ডের ব্যাবসাবাণিজ্যকে বিপর্যস্ত করার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন ‘মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা’ চালু করেছিলেন, কিন্তু এই ব্যবস্থা ইংল্যান্ডের পরিবর্তে ফ্রান্সেরই বেশি ক্ষতি করেছিল। সেজন্য একে ‘দ্বিমুখী অস্ত্র’ বলা হয়।

মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার দুটি কুফল লেখো।

নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ফলে –

  1. সমগ্র ইউরোপ এমনকি ফরাসিরাও তাঁর বিরোধিতা করতে শুরু করে।
  2. নেপোলিয়ন পোপ, স্পেন ও রাশিয়ার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন, যা তাঁর পতনকে ত্বরান্বিত করে।

মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছিল কেন?

নিরপেক্ষ দেশগুলির স্বার্থজনিত অসহযোগিতা, ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সীমাবদ্ধতা, ভৌগোলিক সীমারেখার অসুবিধা, ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ শিল্পের অনগ্রসরতা, অবাস্তব পরিকল্পনা ইত্যাদি মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থাকে ব্যর্থ করে দেয়। সর্বোপরি ইংল্যান্ডের শক্তিশালী অর্থনীতি ও নৌবাহিনীর অভূতপূর্ব দক্ষতা নেপোলিয়নকে এই অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য করে।

জুন্টা (Junta) কী?

জুন্টা (Junta) বলতে বোঝায় বিদ্রোহী প্রতিরোধ সমিতিকে। নেপোলিয়নের স্পেন অভিযানকালে (১৮০৮ খ্রি.) স্পেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ‘জুন্টা’ বা ‘কমিউন’ স্থাপন করে দেশপ্রেমিক নেতারা স্থানীয় শাসন নিজ হাতে তুলে নেয় এবং আগ্রাসী ফরাসি সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে থাকে।

উপদ্বীপের যুদ্ধ কী?

নেপোলিয়ন আইবেরীয় উপদ্বীপ বা পোর্তুগাল ও স্পেন দখল করতে সচেষ্ট হন। পোর্তুগাল নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করলে তিনি পোর্তুগাল আক্রমণ করেন। পোর্তুগাল জয়ের পর তিনি স্পেন দখল করেন। জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ স্পেন ও পোর্তুগালের জনগণ, নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ শুরু করে (১৮০৮-১৮১৩ খ্রিস্টাব্দ), তা ‘উপদ্বীপের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।

টোরেস ভেড্রাস (Torres Vedras) কী?

উপদ্বীপের যুদ্ধের সময় (১৮০৮-১৮১৩ খ্রিস্টাব্দ) নেপোলিয়নের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য পোর্তুগালে অবস্থানরত ইংরেজ সেনাপতি আর্থার ওয়েলেসলি ট্যাগাস নদী থেকে আটল্যান্টিক সমুদ্র পর্যন্ত একটি আত্মরক্ষামূলক দুর্গ প্রাকার তৈরি করে নিজেদের রক্ষা করেন – এটি ‘টোরেস ভেড্রাসের সুরক্ষা রেখা’ নামে বিখ্যাত।

স্পেনীয় ক্ষত কী?

স্পেনের অভ্যন্তরীণ বিরোধের সুযোগে নেপোলিয়ন ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের সিংহাসনে নিজের ভাই জোসেফ বোনাপার্টকে বসান। এতে স্পেনবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে পোর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে একযোগে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই যুদ্ধে নেপোলিয়ন পরাজিত হন ও তাঁর মানমর্যাদা ভুলুণ্ঠিত হয়। তাঁর এই ব্যর্থতা ‘স্পেনীয় ক্ষত’ নামে পরিচিত।

স্পেনীয় ক্ষত কীভাবে নেপোলিয়নের পতনকে অনিবার্য করে তোলে?

নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবাদী অভিলিঙ্গা স্পেনবাসীর আত্মমর্যাদা ও জাতীয়তাবোধে আঘাত হানে। ক্ষুব্ধ স্পেন, পোর্তুগাল ও চতুর্থ শক্তিজোটের মিলিত বাহিনী নেপোলিয়নকে পরাস্ত করলে তাঁর সামরিক মর্যাদা বিনষ্ট হয়, আর্থিক স্থিতি নষ্ট হয় এবং ইউরোপে নেপোলিয়নবিরোধী হাওয়া প্রবল হয়ে ওঠে। ফলে তাঁর পতন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

পোড়ামাটি নীতি কী?

পোড়ামাটি নীতি হল এক ধরনের রণকৌশল। আক্রমণকারী সৈন্যরা যাতে আক্রান্ত দেশের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য আক্রান্ত দেশের সৈন্যরা নিজেদের জিনিসপত্র নিজেরাই পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিত। ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন যখন রাশিয়া আক্রমণ করেছিলেন তখন রাশিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধ না করে পিছিয়ে গিয়ে খাদ্য ও শস্যভান্ডারগুলি জ্বালিয়ে দেয়, পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দেয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে শত্রুপক্ষের অগ্রগতি ব্যাহত করে – এই রণকৌশলই ‘পোড়ামাটির নীতি’ নামে পরিচিত।

লিপজিগের যুদ্ধ কবে ও কাদের মধ্যে হয়?

অথবা, কোন্ যুদ্ধকে জাতিসমূহের যুদ্ধ বা জাতিপুঞ্জের যুদ্ধ বলা হয় ও কেন?

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের লিপজিগের যুদ্ধকে জাতিসমূহের যুদ্ধ বলা হয়।

কারণ –

নেপোলিয়নের মস্কো অভিযান ব্যর্থ হলে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে নেপোলিয়নবিরোধী পরিমণ্ডল রচিত হয়। ইংল্যান্ড, রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, সুইডেন ‘চতুর্থ শক্তিজোট’ গড়ে তুলে সম্মিলিতভাবে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে লিপজিগের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল বলে এই যুদ্ধ ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ নামেও অভিহিত।

ফ্রাঙ্কফোর্ট প্রস্তাব কী?

লিপজিগের যুদ্ধে বিজয়ী মিত্রশক্তিবর্গ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে নেপোলিয়নকে সম্মানজনক যে কয়েকটি শর্তে সন্ধির প্রস্তাব দেয়, সেগুলি ‘ফ্রাঙ্কফোর্ট প্রস্তাব’ নামে পরিচিত। এতে বলা হয় –

  1. ফ্রান্সকে তার প্রাকৃতিক সীমারেখায় ফিরে যেতে হবে অর্থাৎ জার্মানির দিকে রাইন, ইটালির দিকে আল্পস ও স্পেনের দিকে পিরেনিজ হবে ফ্রান্সের সীমান্ত এবং
  2. নেপোলিয়নকে ‘ফ্রান্সের সম্রাট’ বলে স্বীকার করা হবে।

শত দিবসের রাজত্ব বলতে কী বোঝায়?

১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে মিত্রশক্তির কাছে পরাজিত নেপোলিয়নকে ফ্রান্সের সিংহাসনচ্যুত করে এলবা দ্বীপে পাঠানো হয়। নেপোলিয়ন এক বছরের মধ্যেই ১০৫০ জন্য সৈন্য নিয়ে এলবা দ্বীপ থেকে ফ্রান্সে ফিরে আসেন। এই সময় নেপোলিয়ন ফ্রান্সে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত ১০০ দিন রাজত্ব করেন। একে ‘শত দিবসের রাজত্ব’ বলা হয়।

ওয়াটারলু-র যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে ও কাদের মধ্যে হয়?

১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াটারলু-র যুদ্ধ হয়।

ওয়াটারলু-র যুদ্ধ হয় নেপোলিয়ন ও ইউরোপের সম্মিলিত শক্তিবর্গের মধ্যে। এই যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাপতি ডিউক অফ ওয়েলিংটন ও প্রাশিয়ার সেনাপতি ব্রুকারের হাতে নেপোলিয়ন পরাজিত হন।

ওয়াটারলু-র যুদ্ধের গুরুত্ব কী ছিল?

ওয়াটারলু-র যুদ্ধের ফলে –

  1. নেপোলিয়ন চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয় এবং তাঁকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত করা হয়।
  2. নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী শক্তিবর্গ (প্রাশিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া) ইউরোপের রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের জন্য ভিয়েনা সম্মেলন আহ্বান করে।

নেপোলিয়নকে অশ্বপৃষ্ঠে বিপ্লব বা বিপ্লবের অগ্নিময় তরবারি বলা হয় কেন?

নেপোলিয়ন তরবারির সাহায্যে যে সাম্রাজ্য তৈরি করেন –

  1. সেখানে ‘কোড নেপোলিয়ন’ প্রবর্তন করে আইনগত সাম্য ও যোগ্যতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেন,
  2. সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটান,
  3. ও ইটালি, জার্মানি ইত্যাদি দেশকে একই শাসনাধীনে এনে সেখানে জাতীয় ঐক্যের আকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি করেন,
  4. সর্বোপরি অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া ও রাশিয়াকে পরাস্ত করে ইউরোপে বৃহৎ সাম্রাজ্য গঠন করেন।

তাই ঐতিহাসিক এ জে পি টেলর ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ ও সংস্কারগুলিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নেপোলিয়নকে ‘অশ্বপৃষ্ঠে বিপ্লব’ বা ‘বিপ্লবের অগ্নিময় তরবারি’ বলে অভিহিত করেছেন।

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে নবম শ্রেণী ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদের কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণীর পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer