পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে আসা শক্তি দ্বারা পৃথিবীতে পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমভূমি সৃষ্টি হয়েছে, আর এই মালভূমি, সমভূমি, পাহাড়, পর্বত প্রভৃতি বাইরের অনেক শক্তি এদের উপর সক্রিয় হয় এবং ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায়। আর যে শক্তি বা প্রক্রিয়া ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় ও তারফলে বিবর্তন ঘটে সেটাই হলো বহির্জাত প্রক্রিয়া।
মাধ্যমিক ভূগোল বিষয়ের প্রথম অধ্যায় হলো বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ঠ ভূমিরূপ, ছাত্র ছাত্রীরা যারা মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ তাদের জন্য নিচে বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায় সংক্রান্ত কিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো।
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
গঙ্গানদীর পার্বত্য প্রবাহ কতদূর বিস্তৃত?
গোমুখ থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত।
পৃথিবীর বৃহত্তম গিরিখাত কোনটি?
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।
ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত কোনটি?
সরাবতী নদীর ওপর যোগ জলপ্রপাত।
পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত কোনটি?
ভেনেজুয়েলার অ্যাঞ্জেল জলপ্রপাত।
আঁকাবাঁকা নদীর গতিপথকে কী বলে?
মিয়েন্ডার।
হাতপাখার মতো আকারবিশিষ্ট নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ কী নামে পরিচিত?
পলল ব্যজনী।
নদীগঠিত তীব্র বাঁকসম্পন্ন হ্রদের নাম কী?
অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ।
ফানেল আকৃতির নদীর মোহানাকে কী বলে?
খাড়ি।
প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত প্রতি ঘনফুট জলকে কী বলে?
কিউসেক।
বুদ্বুদের ফলে শিলার গায়ে সৃষ্টি হওয়া ছোটো ছোটো গর্তকে কী বলে?
ক্যাভিটেশন।
নদীর ক্ষয়ের শেষ সীমা কোথায়?
সমুদ্রপৃষ্ঠে।
যে নদীর গতিপথে তিনটি গতি স্পষ্টভাবে দেখা যায় তাকে কী বলে?
আদর্শ নদী।
নদীর জলের প্রবাহ পরিমাপের একককে কী বলে?
কিউসেক / কিউমেক।
ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত একটি নিমজ্জমান দ্বীপের নাম করো।
নিউমুর বা দক্ষিণ তালপট্টি।
কোন্ ঘূর্ণিঝড় থেকে নিউমুর দ্বীপটি নিমজ্জিত হতে শুরু করে?
ভোলা ঘূর্ণিঝড় থেকে (1970 সালে)।
বহির্জাত শক্তিকে কী ধরনের শক্তি বলে?
বিনাশকারী শক্তি।
ঘোড়ামারা দ্বীপে কত মানুষের বাস ছিল?
2001 সালের হিসেবে 5000 জন।
ঘোড়ামারা দ্বীপটি কলকাতার কত দক্ষিণে অবস্থিত?
কলকাতা থেকে 150 কিমি দক্ষিণে।
ঘোড়ামারা, লোহাচড়া দ্বীপগুলি ডুবে যাবার কারণ কী?
সমুদ্রজলের উচ্চতা বৃদ্ধি।
নিউমুর দ্বীপটি কোন্ নদীর মোহানায় অবস্থিত?
হাড়িভাঙা নদীর।
1974 সালে নিউমুরের আয়তন কত ছিল?
2500 বর্গমিটার।
আরও দুটি নিমজ্জমান দ্বীপের নাম করো।
সুপারিভাঙা এবং কাপাসগদি।
ভূমিরূপ বিদ্যায় গ্রেড কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন?
গিলবার্ট।
ভূমিরূপ বিদ্যায় পর্যায়নের ধারণাটি কে প্রবর্তন করেন?
চেম্বারলিন ও সলিসবেরি।
বহির্জাত প্রক্রিয়ায় শক্তির মূল উৎস কী?
সূর্য।
আবহবিকারজাত বিচূর্ণীভূত শিলার স্থানান্তরকে কী বলে?
ক্ষয়ীভবন।
ভূপৃষ্ঠের উঁচু ভূমিভাগের উচ্চতা হ্রাসের প্রক্রিয়াকে কী বলে?
অবরোহণ।
ভূমির ঢাল বরাবর আলগা মাটি ও শিলাখন্ডের স্খলনকে কী বলে?
পুঞ্জিত ক্ষয়।
কোন্ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়, বহন এবং সঞ্চয়ের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য তৈরি হয়?
পর্যায়ন।
পর্যায়ন কোন্ ধরনের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার অংশ?
বহির্জাত প্রক্রিয়া।
ভূমির সমতলীকরণ প্রক্রিয়ার নাম কী?
পর্যায়ন।
মরু অঞ্চলে কোন ধরনের আবহবিকার বেশি হয়?
যান্ত্রিক।
আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন এবং পুঞ্জিত ক্ষয়ের সম্মিলিত রূপকে কী বলে?
নগ্নীভবন।
পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহের নাম করো।
আলাস্কার মালাসপিনা।
পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম করো।
অ্যান্টার্কটিকা ল্যামবার্ট।
হিমবাহের ওপর বরফের ফাটলকে কী বলে?
ক্রেভাস।
পৃথিবীর গভীরতম ফিয়র্ড কোনটি?
নরওয়ের সোভনে ফিয়র্ড।
অনেকগুলি ড্রামলিন একসাথে থাকলে ভূমিরূপ দেখতে কেমন হয়?
ডিমভর্তি ঝুড়ির মতো।
ভারতের সিয়াচেন কী ধরনের হিমবাহ?
পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ।
ভারতের কোথায় রসে মতানে ভূমিরূপের দেখা মেলে?
কাশ্মীরে লিডার নদীর উপত্যকায়।
নেপালের মাকালু কী ধরনের ভূমিরূপ?
পিরামিড চূড়া।
দুটি পার্শ্ব গ্রাবরেখা মিশে কী ধরনের গ্রাবরেখা তৈরি হয়?
মধ্য গ্রাবরেখা।
হিমবাহ-বাহিত ক্ষয়জাত পদার্থকে কী বলে?
গ্রাবরেখা বা মোরেন।
জমাটবদ্ধ তুষারকণাকে কী বলে?
ফার্ন।
কোন্ মহাদেশে সর্বাধিক হিমবাহ দেখা যায়?
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে।
ইয়ারদাং তীক্ষ্ণ হয়ে গেলে তাকে কী বলে?
নিডিল।
বিশাল এলাকা জুড়ে বালি গঠিত মরুভূমিকে সাহারায় কী বলে?
আৰ্গ।
আধখানা চাঁদের মতো বালিয়াড়িকে কী বলে?
বারখান।
বায়ুর অবনমনে সৃষ্ট গর্তগুলির নাম কী?
ধান্দ।
পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি কোনটি?
সাহারা।
আরবি সিফ কথাটির অর্থ কী?
তরবারি।
দুটি সিফ বালিয়াড়ির মধ্যবর্তী অংশকে কী বলে?
করিডর।
পৃথিবীর সর্বাধিক লোয়েস সমভূমি কোথায় হয়েছে?
চিনের হোয়াংহো নদীর উপত্যকায়।
বিউট কথাটির অর্থ কী?
টিপি।
কোন্ কোন্ অঞ্চলে বায়ুর কাজ বেশি দেখা যায়?
মরু অঞ্চলে ও সমুদ্রতীরবর্তী অংশে।
শিলাময় মরুভূমিকে কী বলে?
হামাদা।
কোন্ কোন্ অঞ্চলে বালিয়াড়ি দেখা যায়?
উপকূল ও মরু অঞ্চলে।
অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ির অন্য নাম কী?
সিফ বালিয়াড়ি।
পৃথিবীর বৃহত্তম মরু খাতটির নাম কী?
মিশরের কাতারা।
পৃথিবীর পৃষ্ঠের ভূমিরূপগুলি বহির্জাত প্রক্রিয়াগুলির দ্বারা গঠিত হয়। এই প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে আবহাওয়া, ক্ষয়, জমা এবং গণ অপচয়। আবহাওয়া প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে শিলার ক্ষয়, মাটির ক্ষয় এবং শিলা গঠন। ক্ষয় প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে নদীর ক্ষয়, হিমবাহের ক্ষয় এবং বায়ু ক্ষয়। জমা প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে নদীর বহন এবং সঞ্চয়, হিমবাহের সঞ্চয় এবং বায়ু সঞ্চয়। গণ অপচয় প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা শিলা এবং মাটির ক্ষয়।
এই প্রক্রিয়াগুলির প্রভাব বিভিন্ন কারণ দ্বারা নির্ধারিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ভূতাত্ত্বিক গঠন, ভূমির ঢাল, জলবায়ু, উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগত। এই প্রক্রিয়াগুলির ফলে পৃথিবীর পৃষ্ঠের ভূমিরূপগুলি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়।
এই অধ্যায়টি পড়ে আমরা বহির্জাত প্রক্রিয়াগুলি এবং তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি সম্পর্কে জানতে পারি। এই জ্ঞান আমাদের পৃথিবীর ভূমিরূপগুলির গঠন এবং বিবর্তন সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন – পরিবেশের জন্য ভাবনা – CLASS 10 PHYSICAL SCIENCE SHORT QUESTION